আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদে সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সরকারের পাশাপাশি এ ঘটনায় ফুঁসে উঠছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, ছাত্রসহ বিভিন্ন সংগঠন। ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন তারা। প্রতিবাদে একাট্টা হচ্ছেন হিন্দু-মুসলিমরাও। এ পরিস্থিতিতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিও গতকাল সীমান্তে ‘সম্পূর্ণ প্রস্তুত ও সতর্ক রয়েছে’ বলে জানিয়েছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে ব্যাখ্যা নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি সন্ধ্যায় ছাত্র নেতাদের সঙ্গেও এ বিষয়ে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজ বুধবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এবং পরের দিন বৃহস্পতিবার ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন, মিছিল ও বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। এর মধ্যে পল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিস, এবি পার্টি, জাতীয় নাগরিক কমিটি, গণঅধিকার পরিষদ (একাংশ), একাধিক বামপন্থি রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন গতকাল মিছিল, বিক্ষোভ-বিবৃতিসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে অনেক স্থানে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এমন এক উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ঢাকার কূটনৈতিক জোনে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্যাখ্যা দিতে যাওয়ার সময় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ে কঠোর নিরাপত্তায় চলাচল করতে দেখা যায়। পাশাপাশি গুলশানের কূটনৈতিক জোনেও বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিজিবি সম্পূর্ণ প্রস্তুত ও সতর্ক
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘সীমান্তে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি কিংবা অপতৎপরতা রোধে বিজিবি সম্পূর্ণ প্রস্তুত ও সতর্ক রয়েছে।’
জাতীয় ঐক্য চান প্রধান উপদেষ্টা
ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে মিথ্যা প্রচার ও মিশনে হামলার পর জাতীয় ঐক্য চান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল, সংগঠন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোকে ঐক্যবদ্ধের আহ্বান
আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে শাহবাগে এক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। এ সময় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার যেসব রাষ্ট্র ভারতের আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে, তাদের আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা ঐক্যবদ্ধ হন। সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে দিল্লির সেই হিন্দুত্ববাদী রাজত্ব ভেঙে চুরমার করে দেব। বিশ্বমঞ্চে শান্তিপ্রিয় মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ একটু সুখে আছে, ভারতের এই বিষয়টি সহ্য হচ্ছে না। বন্ধুত্বের সংজ্ঞা আমাদের কাছে এখনো পরিষ্কার হয়ে ওঠেনি। হাসিনার মন্ত্রী আবুল মোমেন বলেছিল, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বামী-স্ত্রীর মতো সম্পর্ক। এই স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক কর্তৃত্ব ও অধীনতার সম্পর্ক। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কোনোভাবেই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নয়। সম্পর্ক যদি হতে হয়, তাহলে তা হবে ন্যায্যতার সম্পর্ক।’
সমাবেশ শেষে জাতীয় জাদুঘর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য হয়ে শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখার দৃঢ় প্রত্যয়ে এবং ভারতের আগ্রাসনবিরোধী নানা স্লোগান দেওয়া হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
গতকাল বিকেলে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ভারত তাদের স্বার্থে আঘাত লাগায় বাংলাদেশের ওপর ক্ষেপে গেছে। বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ভারতের স্বার্থে সব কিছু করে দেশকে গিলে খাওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছিল। দেশ ভারতের রাহুমুক্ত হয়েছে। ভারতের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ে এখন আর কিছু হচ্ছে না। তাই ভারতের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এখন পায়ে পাড়া দিয়ে যুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করছে। ভারতের বিভিন্ন হাইকমিশন, উপ-হাইকমিশনে হামলা ও পতাকা ছিঁড়ে চরম সীমা লঙ্ঘন ও অসভ্যতার পরিচয় দিয়েছে। মুসলমানদের হত্যা করে দেশে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা সৃষ্টি করে দেশে গৃহযুদ্ধ লাগাতে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে ভারত।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম প্রমুখ।
খেলাফত মজলিস
গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশের আয়োজন করে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী বলেছেন, আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে উগ্রবাদীদের হামলার সুযোগ করে দিয়ে ভারত ভিয়েনা কনভেনশন চুক্তির লঙ্ঘন করেছে। বাংলাদেশ মিশনে হামলার মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হেনেছে। এ হামলার জন্য ভারতকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের জনগণ এর দাঁতভাঙা জবাব দিবে। ভারতের আগ্রাসন মোকাবিলায় বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজীজুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম মহাসচিব ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল, প্রশিক্ষণ সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, ইসলামী যুব মজলিসের সভাপতি তাওহিদুল ইসলাম তুহিন প্রমুখ।
এবি পার্টির বিক্ষোভ মিছিল
আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে ভারতীয় উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলার প্রতিবাদে গতকাল আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে পার্টির নেতারা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ কখনো কারও দাসত্ব মেনে নেয়নি। জুলাই বিপ্লবের পর বাংলাদেশে যখন ভারতের করদরাজ্য ভেঙে পড়েছে তখন তাদের মাথা নষ্ট হয়েছে। এখন তারা আমাদের হাইকমিশনগুলোতে আক্রমণ করছে। বাংলাদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বি এম নাজমুল হক। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন রানা, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর, কাকরাইল, পল্টনসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
ভারতকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে: গণঅধিকার পরিষদ
আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলার প্রতিবাদে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে গণঅধিকার পরিষদ (একাংশ)। এ সময় গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ফারুক হাসান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলা, যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। এ ঘটনায় ভারতকে নিঃস্বার্থ ক্ষমা চাইতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সদস্যসচিব তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশে থাকা ভারতের আঞ্চলিক দূতাবাসগুলো অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। কারণ এগুলো থেকে স্থানীয় পর্যায়ে ভারত বাংলাদেশে নজরদারি ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সদস্যসচিব ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক, দপ্তর সমন্বয়ক আরিফ বিল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি ইমাম উদ্দিন প্রমুখ।
সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের মানববন্ধন
আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির আইনজীবীরা। গতকাল দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। সমিতির সাবেক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে প্রতিবাদ জানান আইনজীবীরা।
মানববন্ধনে আইনজীবী আবেদ রাজা, তৈমূর আলম খন্দকার, শাহ আহমেদ বাদল, আশরাফুজ্জামান, সাবেক জেলা জজ শহিদুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, রফিকুল হক তালুকদার রাজা, মতিলাল ব্যাপারী ও পারভেজ হোসেনসহ সমিতির নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা করে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠনের সমর্থকরা। এ ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কর্তব্যে গাফিলতির জন্য ত্রিপুরা পুলিশের তিন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
তারাও ভালো থাকতে পারবে না: সাখাওয়াত
অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ভারত বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তারাও ভালো থাকতে পারবে না। গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, ভারতের সঙ্গে যে সম্পর্ক রয়েছে সেটা যদি নষ্ট হয় তাহলে তাতে ভারতের ক্ষতি হবে, আমাদের না। এখন তারা যদি আমাদের পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করতে চায়, এটা প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভালো লক্ষণ না। দুই দেশের সম্পর্ক ভালো হওয়া উচিত।’
উসকানিতে পা না দেওয়ার আহ্বান বামপন্থি দলগুলোর
বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা-ভাঙচুর ও জাতীয় পতাকায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির যেকোনো অপতৎপরতা বন্ধের দাবি জানিয়েছে দেশের বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো। তাদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের উসকানিতে পা না দেওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা এসব বিবৃতিতে পৃথক বক্তব্য দেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যেকোনো দেশে বিদেশি দূতাবাসের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব সে দেশের রাষ্ট্র ও সরকারের। অথচ ভারত সরকার বাংলাদেশ দূতাবাসের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। উপরন্তু ভারত সরকারের আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি, শাসক দল বিজেপি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উসকানিমূলক বক্তব্য এ কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করছে, যা কূটনৈতিক শিষ্টাচার-বর্জিত। এসব ঘটনা দুই দেশের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে পুষ্টি জোগাবে।
প্রসঙ্গত সোমবার (২ ডিসেম্বর) আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা হাইকমিশন প্রাঙ্গণ থেকে পতাকা খুলে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে এ ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।