ঢাকা ৩০ পৌষ ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে দেশ

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭ এএম
ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে দেশ
ছবি : খবরের কাগজ

আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদে সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সরকারের পাশাপাশি এ ঘটনায় ফুঁসে উঠছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, ছাত্রসহ বিভিন্ন সংগঠন। ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন তারা। প্রতিবাদে একাট্টা হচ্ছেন হিন্দু-মুসলিমরাও। এ পরিস্থিতিতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিও গতকাল সীমান্তে ‘সম্পূর্ণ প্রস্তুত ও সতর্ক রয়েছে’ বলে জানিয়েছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে ব্যাখ্যা নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি সন্ধ্যায় ছাত্র নেতাদের সঙ্গেও এ বিষয়ে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজ বুধবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এবং পরের দিন বৃহস্পতিবার ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।

গতকাল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন, মিছিল ও বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। এর মধ্যে পল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিস, এবি পার্টি, জাতীয় নাগরিক কমিটি, গণঅধিকার পরিষদ (একাংশ), একাধিক বামপন্থি রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন গতকাল মিছিল, বিক্ষোভ-বিবৃতিসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে অনেক স্থানে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এমন এক উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ঢাকার কূটনৈতিক জোনে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্যাখ্যা দিতে যাওয়ার সময় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ে কঠোর নিরাপত্তায় চলাচল করতে দেখা যায়। পাশাপাশি গুলশানের কূটনৈতিক জোনেও বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

বিজিবি সম্পূর্ণ প্রস্তুত ও সতর্ক
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘সীমান্তে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি কিংবা অপতৎপরতা রোধে বিজিবি সম্পূর্ণ প্রস্তুত ও সতর্ক রয়েছে।’ 

জাতীয় ঐক্য চান প্রধান উপদেষ্টা
ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে মিথ্যা প্রচার ও মিশনে হামলার পর জাতীয় ঐক্য চান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল, সংগঠন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোকে ঐক্যবদ্ধের আহ্বান
আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে শাহবাগে এক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। এ সময় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার যেসব রাষ্ট্র ভারতের আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে, তাদের আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা ঐক্যবদ্ধ হন। সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে দিল্লির সেই হিন্দুত্ববাদী রাজত্ব ভেঙে চুরমার করে দেব। বিশ্বমঞ্চে শান্তিপ্রিয় মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ একটু সুখে আছে, ভারতের এই বিষয়টি সহ্য হচ্ছে না। বন্ধুত্বের সংজ্ঞা আমাদের কাছে এখনো পরিষ্কার হয়ে ওঠেনি। হাসিনার মন্ত্রী আবুল মোমেন বলেছিল, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বামী-স্ত্রীর মতো সম্পর্ক। এই স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক কর্তৃত্ব ও অধীনতার সম্পর্ক। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কোনোভাবেই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নয়। সম্পর্ক যদি হতে হয়, তাহলে তা হবে ন্যায্যতার সম্পর্ক।’

সমাবেশ শেষে জাতীয় জাদুঘর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য হয়ে শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখার দৃঢ় প্রত্যয়ে এবং ভারতের আগ্রাসনবিরোধী নানা স্লোগান দেওয়া হয়। 

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
গতকাল বিকেলে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ভারত তাদের স্বার্থে আঘাত লাগায় বাংলাদেশের ওপর ক্ষেপে গেছে। বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ভারতের স্বার্থে সব কিছু করে দেশকে গিলে খাওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছিল। দেশ ভারতের রাহুমুক্ত হয়েছে। ভারতের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ে এখন আর কিছু হচ্ছে না। তাই ভারতের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এখন পায়ে পাড়া দিয়ে যুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করছে। ভারতের বিভিন্ন হাইকমিশন, উপ-হাইকমিশনে হামলা ও পতাকা ছিঁড়ে চরম সীমা লঙ্ঘন ও অসভ্যতার পরিচয় দিয়েছে। মুসলমানদের হত্যা করে দেশে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা সৃষ্টি করে দেশে গৃহযুদ্ধ লাগাতে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে ভারত।

সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম প্রমুখ।

খেলাফত মজলিস
গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশের আয়োজন করে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী বলেছেন, আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে উগ্রবাদীদের হামলার সুযোগ করে দিয়ে ভারত ভিয়েনা কনভেনশন চুক্তির লঙ্ঘন করেছে। বাংলাদেশ মিশনে হামলার মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হেনেছে। এ হামলার জন্য ভারতকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের জনগণ এর দাঁতভাঙা জবাব দিবে। ভারতের আগ্রাসন মোকাবিলায় বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজীজুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম মহাসচিব ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল, প্রশিক্ষণ সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, ইসলামী যুব মজলিসের সভাপতি তাওহিদুল ইসলাম তুহিন প্রমুখ।

এবি পার্টির বিক্ষোভ মিছিল
আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে ভারতীয় উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলার প্রতিবাদে গতকাল আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে পার্টির নেতারা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ কখনো কারও দাসত্ব মেনে নেয়নি। জুলাই বিপ্লবের পর বাংলাদেশে যখন ভারতের করদরাজ্য ভেঙে পড়েছে তখন তাদের মাথা নষ্ট হয়েছে। এখন তারা আমাদের হাইকমিশনগুলোতে আক্রমণ করছে। বাংলাদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বি এম নাজমুল হক। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন রানা, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর, কাকরাইল, পল্টনসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

ভারতকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে: গণঅধিকার পরিষদ
আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলার প্রতিবাদে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে গণঅধিকার পরিষদ (একাংশ)। এ সময় গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ফারুক হাসান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলা, যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। এ ঘটনায় ভারতকে নিঃস্বার্থ ক্ষমা চাইতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সদস্যসচিব তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশে থাকা ভারতের আঞ্চলিক দূতাবাসগুলো অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। কারণ এগুলো থেকে স্থানীয় পর্যায়ে ভারত বাংলাদেশে নজরদারি ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সদস্যসচিব ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক, দপ্তর সমন্বয়ক আরিফ বিল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি ইমাম উদ্দিন প্রমুখ।

সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের মানববন্ধন
আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির আইনজীবীরা। গতকাল দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। সমিতির সাবেক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে প্রতিবাদ জানান আইনজীবীরা।

মানববন্ধনে আইনজীবী আবেদ রাজা, তৈমূর আলম খন্দকার, শাহ আহমেদ বাদল, আশরাফুজ্জামান, সাবেক জেলা জজ শহিদুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, রফিকুল হক তালুকদার রাজা, মতিলাল ব্যাপারী ও পারভেজ হোসেনসহ সমিতির নেতারা বক্তব্য রাখেন।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা করে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠনের সমর্থকরা। এ ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কর্তব্যে গাফিলতির জন্য ত্রিপুরা পুলিশের তিন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

তারাও ভালো থাকতে পারবে না: সাখাওয়াত
অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ভারত বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তারাও ভালো থাকতে পারবে না। গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, ভারতের সঙ্গে যে সম্পর্ক রয়েছে সেটা যদি নষ্ট হয় তাহলে তাতে ভারতের ক্ষতি হবে, আমাদের না। এখন তারা যদি আমাদের পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করতে চায়, এটা প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভালো লক্ষণ না। দুই দেশের সম্পর্ক ভালো হওয়া উচিত।’

উসকানিতে পা না দেওয়ার আহ্বান বামপন্থি দলগুলোর
বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা-ভাঙচুর ও জাতীয় পতাকায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির যেকোনো অপতৎপরতা বন্ধের দাবি জানিয়েছে দেশের বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো। তাদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের উসকানিতে পা না দেওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা এসব বিবৃতিতে পৃথক বক্তব্য দেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যেকোনো দেশে বিদেশি দূতাবাসের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব সে দেশের রাষ্ট্র ও সরকারের। অথচ ভারত সরকার বাংলাদেশ দূতাবাসের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। উপরন্তু ভারত সরকারের আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি, শাসক দল বিজেপি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উসকানিমূলক বক্তব্য এ কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করছে, যা কূটনৈতিক শিষ্টাচার-বর্জিত। এসব ঘটনা দুই দেশের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে পুষ্টি জোগাবে।

প্রসঙ্গত সোমবার (২ ডিসেম্বর) আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা হাইকমিশন প্রাঙ্গণ থেকে পতাকা খুলে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে এ ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক বৃহস্পতিবার: মাহফুজ আলম

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:১০ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:১০ পিএম
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক বৃহস্পতিবার: মাহফুজ আলম
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সর্বদলীয় বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

মাহফুজ আলম বলেন, ‘আলোচনার স্থান এখনো নির্ধারিত হয়নি। খসড়া ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনির্ধারিত আলোচনা হয়েছে। বিএনপি, জামায়াত, গণতন্ত্রমঞ্চসহ রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার সঙ্গে অনির্ধারিত আলোচনা হয়েছে।’

এর আগে গত ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে মাহফুজ আলম বলেন, ‘ঘোষণাপত্র সরকার দেবে না। সরকার ঘোষণাপত্রের প্রক্রিয়াকে সহায়তা করছে। ঘোষণাপত্র আসবে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল। সেজন্য সংগঠন দুটির কর্মীরা সারাদেশ থেকে শহিদ মিনারে জড়ো হয়েছিল। এ ঘোষণাপত্র নিয়ে তখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার সৃষ্টি হয়। পরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং তখন এ উদ্যোগের সঙ্গে সরকার সম্পৃক্ত নয় বলে উল্লেখ করেছিল।

গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।ওই রাতেই বৈঠক করে ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা) কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই কর্মসূচি থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। তাই এ লক্ষ্যে জনমত তৈরিতে সারা দেশে প্রচারপত্র বিতরণ ও জনসংযোগ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।

মাহফুজ/এমএ/

এলপি গ্যাসের দাম বাড়ল

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৬ পিএম
এলপি গ্যাসের দাম বাড়ল
ছবি : সংগৃহীত

তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম ১২ কেজির সিলিন্ডারের ভোক্তাপর্যায়ে ৪ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪৫৯ টাকা।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে নতুন দামের ঘোষণা দেয় বিইআরসি। আজ সন্ধ্যা থেকে নতুন দাম কার্যকর হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪৫৯ টাকা, যা মাসের শুরুতে নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪৫৫ টাকায়। 

এছাড়া বেসরকারি এলপিজির রিটেইলার পয়েন্টে ভোক্তাপর্যায়ে মূসকসহ প্রতি কেজি গ্যাসের দাম ১২১ টাকা ৫৬ পয়সা ও রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে তরল অবস্থায় সরবরাহ করা গ্যাসের দাম ১১৭ টাকা ৮১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়াও গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির (অটো গ্যাস) নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি লিটার ৬৭ টাকা ২৭ পয়সা, যা আগে ছিল ৬৬ টাকা ৭৮ পয়সা।

এমএ/

বিনিয়োগ সংস্থাগুলোকে একত্রিত করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম
বিনিয়োগ সংস্থাগুলোকে একত্রিত করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
যমুনায় ড. ইউনূসের সঙ্গে ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাংয়ের সাক্ষাৎ। ছবি: পিআইডি

দেশে অধিকহারে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিনিয়োগ সংস্থাগুলোকে এক ছাতার নিচে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং এবং কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

সাক্ষাতে কিহাক সাং বেশ কিছু সমস্যা উত্থাপন করে বলেন, এসব সমস্যা বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করছে। তিনি বড় আকারে বিনিয়োগ আকর্ষণে বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নের আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা কিহাক সাং-কে জানান, কোরিয়ান ইপিজেডের ভূমি অধিগ্রহণ সমস্যা শিল্প পার্কে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এর সমাধান করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চাই কোরিয়ান ইপিজেড সবার জন্য একটি মডেল হোক। আমরা আশা করি এটি বড় বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে এবং এতে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’

কোরিয়ান ইপিজেডের দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা সমাধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করায় প্রশংসা করেন কিহাক সাং। তিনি বলেন, ‘আরও কোরিয়ান বিনিয়োগকারী এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবেন।’

কিহাক সাং বলেন, ‘এটি অন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য দরজা খুলে দেবে। কোরিয়ান ইপিজেড অবশ্যই বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি মডেল হবে।’

ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান সরকারকে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য শিপমেন্ট প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশের বৃহত্তম বন্দরে ধীর কার্যক্রমের কারণে শীর্ষস্থানীয় গ্লোবাল ব্র্যান্ডগুলো উচ্চমানের ও ফ্যাশন পোশাকের অর্ডার দিতে আগ্রহী নয়।

তিনি বলেন, ফ্যাশন পোশাকের দ্রুত রপ্তানি কার্যক্রম সম্পন্ন করা প্রয়োজন, সেটি ১০-১৫ দিনের মধ্যে হতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে কখনও কখনও শিপমেন্ট সম্পন্ন করতে কয়েক মাস সময় লাগে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কিহাক সাং ভিয়েতনামের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, সেখানে তিনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বড় বিনিয়োগ করেছেন। দেশটি রপ্তানি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বন্দরের কার্যক্রমে দক্ষতা বাড়াতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, তার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী চট্টগ্রাম বন্দরকে এই অঞ্চলের শীর্ষ বন্দর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন।

কিহাক সাং ও ব্রিটিশ বিনিয়োগকারী মোহাম্মদ এ মতিন সকল বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থাকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তারা বলেন, এটি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একক সেবা প্রদান নিশ্চিত করবে।

কিহাক সাং বলেন, ইয়াংওয়ান বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে নির্মাণ করেছে, যেখান থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার বাংলাদেশি তরুণ প্রশিক্ষণ নেবে। তিনি জানান, আগামী তিন মাসের মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হচ্ছে।

কিহাক সাং অধ্যাপক ইউনূসকে ইনস্টিটিউটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। সূত্র: বাসস

‘প্লে উইথ এ পারপাস’ কর্মশালা শিশুর মানসিক বিকাশকে অতি জরুরি সেবা গণ্য করার সুপারিশ

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৬ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১০ পিএম
শিশুর মানসিক বিকাশকে অতি জরুরি সেবা গণ্য করার সুপারিশ
কক্সবাজারে ‘প্লে উইথ এ পারপাস’ শীর্ষক কর্মশালায় অতিথিরা। ছবি: সংগৃহীত

শুধু স্বাভাবিক সময়ে নয়, দুর্যোগ ও মানবিক বিপর্যয় পরিস্থিতিতেও শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করা সমান জরুরি। শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশকে অতি জরুরি সেবা হিসেবে গণ্য করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।

‘প্লে টু লার্ন’ প্রকল্পের সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) কক্সবাজারে ‘প্লে উইথ এ পারপাস’ শীর্ষক কর্মশালায় এ সুপারিশ করা হয়।

কক্সবাজারে অবস্থানরত মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ তথা শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ নিশ্চিত করতে ব্র্যাক, আইআরসি ও নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথভাবে ‘প্লে টু লার্ন’ নামের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিসেমি ওয়ার্কশপ।

সিসেমি ওয়ার্কশপ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিশুতোষ টেলিভিশন সিরিজ সিসিমপুরের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।

দিনব্যাপী সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় দেড় শতাধিক প্রতিনিধি কর্মশালায় অংশ নেন।

কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন- শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। দুপুরের সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন- শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক অতিরিক্ত কমিশনার মো. শামস উদ দ্দোজা। সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিসেমি ওয়ার্কশপ ও নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির নেতৃস্থানীয় কর্মকর্তাসহ দাতা সংস্থা, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক ও দেশি উন্নয়ন সংস্থার উর্ধ্বতন প্রতিনিধিরা।

আলোচনায় যেকোনো দুর্যোগ ও মানবিক বিপর্যয় পরিস্থিতিতে শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশকে অতি জরুরি সেবা হিসেবে গণ্য করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।

কর্মশালার নানা পর্যায়ে ‘প্লে টু লার্ন’ প্রকল্পের সার্বিক চিত্র তুলে ধরে জানানো হয়, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শিশুদের খেলা ও বিনোদনের মাধ্যমে শিক্ষা নিশ্চিত করতে দুটি রোহিঙ্গা শিশু চরিত্র তৈরি করে সিসেমি ওয়ার্কশপ। নূর ও আজিজ নামের এই দুই শিশু চরিত্র রোহিঙ্গা শিশুদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়। নূর ও আজিজকে নিয়ে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য রোহিঙ্গা ভাষায় তৈরি করা হয় প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষামূলক ভিডিও কন্টেন্ট। যা ভিডিও প্রজেক্টরের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত ব্র্যাকের প্লেল্যাব ও ইউএনএইচসিআর এবং সহযোগী সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন, টেরে দেস হোমস (টিডিএইচ), রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল ও কোডেক-এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা শিশুদের দেখানো হয়েছে এবং হচ্ছে। পাশাপাশি এ প্রকল্প থেকে ১২টি গল্পের বই বার্মিজ, ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় উন্নয়ন ও প্রকাশ করা হয়েছে। এসব বই কক্সবাজারের ১৪টি সংস্থার শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে বিতরণ করা হয়েছে এবং প্রায় দুই লাখের মতো শিশুতোষ বইগুলো ব্যবহার করে আসছে। এছাড়া বাড়িতেও শিশু বিকাশের পরিবেশ তৈরিতে বিতরণ করা হয়েছে শিশু বিকাশ হোমকিট। একই সঙ্গে অভিভাবক ও শিশু যত্নকারিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

কর্মশালায় আরও জানানো হয়, গত ছয় বছর ধরে চলমান ‘প্লে টু লার্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা শিশু, অভিভাবক এবং শিশু যত্নকারী সরাসরি উপকৃত হয়েছেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, এই প্রকল্পের আওতাধীন শিশুদের মধ্যে ৭০ শতাংশ শিশুর সার্বিক বিকাশ সাধিত হয়েছে। শতকরা ৯১ ভাগ শিশুর মানসিক বিকাশ হয়েছে এবং ৯৬ ভাগ শিশু যত্নকারী ও অভিভাবকরা শিশুদের প্রতি আরও বেশি যত্নশীল হয়েছেন।

এমএ/

নির্বাচনের সময়সীমার সিদ্ধান্ত সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর: গোয়েন লুইস

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:২২ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:২৪ পিএম
নির্বাচনের সময়সীমার সিদ্ধান্ত সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর: গোয়েন লুইস
ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেছেন, কোন সময়ে নির্বাচন হবে এটা সরকার ও এদেশের রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবে। নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করতে চাই না। আমরা নির্বাচনে শুধু কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দিতে চাই। জাতিসংঘ কারিগরিসহ সব ধরনের সহযোগিতা দিতে আগ্রহী।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

গোয়েন লুইস এদিন বাংলাদেশ সফরে আসা জাতিসংঘের একটি বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদলকে নিয়ে পররাষ্ট্রসচিব এম জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ, কীভাবে সহায়তা করা যায় তা খতিয়ে দেখতে ঢাকায় জাতিসংঘের অ‍্যাসেসমেন্ট টিম, নির্বাচন কমিশন ছাড়াও বৈঠক করবেন সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে।

তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কারিগরি সহযোগিতা দিতে আগ্রহী জাতিসংঘ। আজ আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী আমরা সহযোগিতা দেব।

গো‌য়েন লুইস বলেন, নির্বাচনে সহায়তার জন্য প্রতিনিধিদল আগামীকাল বুধবার চট্টগ্রাম যাবে। সেখানে নির্বাচনি বিভিন্ন অংশীজন যেমন- রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করবে। প্রতিনিধি দল ফিরে এসে প্রতিবেদন দেবে।

এমএ/