ঢাকা ৯ মাঘ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

মুহিত যেভাবে জয় করলেন হিমালয়ের থরং শিখর

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৮ পিএম
আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২১ পিএম
মুহিত যেভাবে জয় করলেন হিমালয়ের থরং শিখর
নেপালের অন্নপূর্ণা পর্বতমালার দুর্গম শিখর ‘থরং’ অভিযানে পর্বতারোহী এম এ মুহিত। ছবি: মুহিতের সৌজন্যে

পর্বতারোহী এম এ মুহিতের অভিপ্রায় ছিল তিনি নেপালের অন্নপূর্ণা পর্বতমালার একটি চুলু ওয়েস্ট শিখরে আরোহণ করবেন। অক্টোবরের শেষদিকে নেপাল অভিযানে বেরিয়ে পড়েন তিনি। বিপত্তি বাধল চুলু ওয়েস্টের পথে ‘চামে’ নামের গ্রামে যাওয়ার পরে।

২ হাজার ৬৭০ মিটার উচ্চতার এই গ্রামে যাওয়ার পর জানলেন, চুলু ওয়েস্ট ক্যাম্প ওয়ানের পর নতুন করে বেশ কয়েকটি বিশাল হিমবাহে বড় ফাটল তৈরি হয়েছে। ১৪-১৫টি দল ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে। মুহিত সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি অন্নপূর্ণা পর্বতমালার দুর্গম শিখর ‘থরং’ অভিযানে যাবেন। তার সঙ্গী হলেন মিংমা চিরি শেরপা, আং দর্জি শেরপা।

মাত্র তিনজনের দল এর আগে কখনো থরং পর্বতশৃঙ্গ অভিযানে যায়নি। ৪ হাজার ৯০০ মিটার উচ্চতার বেস ক্যাম্পে যখন পৌঁছালেন তারা, তখন ভিনদেশি অভিযাত্রীদের শোনালেন তাদের অভিপ্রায়ের কথা। সবার চক্ষু চড়কগাছ! আশপাশে তুলনামূলক সহজ পথের পর্বত জয় না করে, কেন যাবেন তারা থরং শিখরে। অনেকেই এই দুঃসাহসী অভিযাত্রা বাতিলের পরামর্শ দেন। কিন্তু নাছোড়বান্দা মুহিত ও তার দুই শেরপা বন্ধু।

অবশেষে যাত্রা হলো শুরু। ৪ নভেম্বর ১৭ হাজার ৭৭০ ফুট উচ্চতায় হাই-ক্যাম্প স্থাপন করেন তারা। ৪ নভেম্বর রাতে হাই-ক্যাম্প থেকে চূড়ান্ত আরোহণ শুরু করেন। পরে ৫ নভেম্বর নেপাল সময় সকাল ৬টা ২০ মিনিটে তারা ‘থরং’ শীর্ষে আরোহণ করেন। ৬ হাজার ১৪৩ মিটার উচ্চতায় হিমালয়ের ওই দুর্গম শিখরে মুহিত উড়ালেন লাল-সবুজ পতাকা।

অন্নপূর্ণা হিমালয় অঞ্চলের ৬ হাজার ১৪৩ মিটার উচ্চতার ‘থরং’ পর্বতশিখর জয় করে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশি পর্বতারোহী এম এ মুহিত।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও পতাকা-প্রত্যর্পণ অনুষ্ঠানে এম এ মুহিত তার দুর্গম অভিযানের এই গল্প শোনান সবাইকে।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশে নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী, শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ইস্পাহানি টি লিমিটেডের ম্যানেজার (সেলস অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন) মো. এমদাদুল ইসলাম এবং চ্যানেল ২৪-এর নির্বাহী পরিচালক তালাত মামুন।

ঘনশ্যাম ভান্ডারী বলেন, ‘মুহিত শুধু ট্র্যাকার বা পর্বতারোহীদের উৎসাহ দিচ্ছেন এমন নয়। তিনি একই সঙ্গে নেপাল ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এক দারুণ যোগসূত্র রচনা করেছেন। মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির যে অবিচ্ছেদ্য সংযোগ, মুহিতের প্রতিটি অভিযান সেই কথা বলে।’

অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষ যখন ক্রমেই প্রকৃতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, মুহিত তখন মানুষকে বলছে প্রকৃতির কাছে যাও। দুর্গম পর্বতশিখরে সে বাংলাদেশের পতাকা উড়াচ্ছে। অভিনন্দন তাকে।’

‘থরং’ পর্বতশিখর অভিযানটি পরিচালনা করেছে বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাব এবং যৌথভাবে স্পনসর করেছে ইস্পাহানি টি লিমিটেড ও চ্যানেল ২৪।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলন চুরি যাওয়া অর্থ ফেরাতে বিশ্বনেতাদের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৪ এএম
চুরি যাওয়া অর্থ ফেরাতে বিশ্বনেতাদের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত

চুরি হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধারে আন্তর্জাতিক মিত্রদেরকে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনের (ডব্লিউইএফ) দ্বিতীয় দিনে দেওয়া বক্তব্যে নেতাদের প্রতি তিনি এই আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা জার্মানির ফেডারেল চ্যান্সেলারির প্রধান ও ফেডারেল মিনিস্টার ফর স্পেশাল টাস্কস ওল্ফগ্যাং স্মিড, বেলজিয়ামের রাজা কিং ফিলিপ, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা, সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল ডিপার্টমেন্ট ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স ফেডারেল কাউন্সিলর ইগনাজিও ক্যাসিস, দুবাই কালচার অ্যান্ড আর্টস অথরিটির চেয়ারপারসন শেখ লতিফা বিনতে মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। খবর ইউএনবির।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সভার ফাঁকে অন্যান্যের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদি, সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেন।

প্রতি বছর জানুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডের পার্বত্য শহর দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। ড. ইউনূস অতীতে বহুবার এখানে এসেছেন। অতীতে তার আলোচনায় বেশির ভাগই ছিল সামাজিক ব্যবসার শক্তি, ক্ষুদ্রঋণ শিল্প এবং এটি কীভাবে বিস্ময়করভাবে কাজ করছে এবং একটি আত্ম-ধ্বংসাত্মক সভ্যতাকে বাঁচানোর জন্য তার দারুণ ‘থ্রি জিরোস’ তত্ত্ব তুলে ধরেছেন। সামাজিক ব্যবসা এখন ১ কোটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করে, যা ২ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির প্রতিনিধিত্ব করে। 

অধ্যাপক ইউনূস এখানে এবার ভিন্ন ভূমিকায় এসেছেন উল্লেখ করে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, তিনি এখন সরকারপ্রধান। তিনি এখনো এখানকার সবচেয়ে জনপ্রিয় বক্তাদের একজন। তবে এবার তিনি খুব কমই তার মূল ভাবনা নিয়ে কথা বলেন, উল্লেখ করে আলম বলেন, ড. ইউনূস একটি নতুন বাস্তব জীবনের গল্প নিয়ে এসেছেন। কীভাবে বাংলাদেশের তরুণরা একটি ‘স্বৈরশাসক’কে হটিয়েছিল, কীভাবে তাদের চিন্তাধারা একটি নতুন বাংলাদেশ তৈরি করছে এবং কীভাবে দেশ পুনর্গঠিত হচ্ছে।

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উপসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, শেখ হাসিনার ১৬ বছরের দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনামলে বাংলাদেশে কীভাবে ‘প্রকাশ্য দিবালোকে ডাকাতি’ সংঘটিত হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে শীর্ষ বিশেষজ্ঞ, থিংক ট্যাংক, সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। আজাদ মজুমদার জানান, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক (সিনিয়র সচিব) লামিয়া মোরশেদ, জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

লুৎফে সিদ্দিকী চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে সরকারের প্রচেষ্টা সম্পর্কে জার্মান মন্ত্রী ভোল্ফগ্যাং স্মিডকে অবহিত করে বলেন, সরকার এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে একটি সম্পদ পুনরুদ্ধার কমিটি এবং একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। তিনি বলেন, চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে সরকার প্রাথমিকভাবে শীর্ষ ২০ অর্থ পাচারকারীকে টার্গেট করেছিল।

দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস জার্মান মন্ত্রীকে বলেন, ‘আমরা যখন নতুন বাংলাদেশের কথা বলি, তখন পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশের কথাও বলি।’ প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে জার্মানির সমর্থন কামনা করে দেশটির মন্ত্রীর সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্র নিয়েও আলোচনা করেন। জার্মান মন্ত্রী বলেন, আগামী এপ্রিলে জার্মানির একটি নতুন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করবে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, নেপালের জলবিদ্যুতের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে ভারত, নেপাল ও ভুটানকে সম্পৃক্ত করে বাংলাদেশ একটি অর্থনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চায়। তিনি বলেন, ‘নেপাল বিদ্যুৎ বিক্রি করতে সত্যিই প্রস্তুত এবং বাংলাদেশ তাদের জন্য একটি ভালো বাজার। এটি প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে পারে।’

প্রধান উপদেষ্টা সুইস ফেডারেল কাউন্সিলর ইগনাজিও ক্যাসিসের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও জলবায়ু অর্থায়নসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনে বাংলাদেশের কার্বন ধরে রাখার প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করতে সুইজারল্যান্ডকে অনুরোধ জানান। ড. ইউনূস সুইজারল্যান্ডকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের তরুণদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগান। কারণ, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকই ২৭ বছরের কম বয়সী তরুণ।

জার্মান মন্ত্রী ও সুইস কাউন্সিলরের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা করেন। বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ এবং কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে অবহিত করা হয়, বেলজিয়ামের একজন যুবরাজের নেতৃত্বে একটি গ্রুপের চালু করা একটি ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি কীভাবে আফ্রিকার দেশটিতে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বন সংরক্ষণের আকার প্রসারিত করতে সহায়তা করেছে।

প্রিন্স ইমানুয়েল ডি মেরোডের প্রতিষ্ঠিত একটি গ্রুপ সংঘাতপ্রবণ কঙ্গোলিজ অঞ্চলে ক্ষুদ্রঋণ চালু করেছিল। তিনি বর্ণনায় বলছিলেন, সংঘাতের পরে কঙ্গোলিজ বন এখন ব্রিটেনের আকারের দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আর ক্ষুদ্রঋণ সেখানে ২১ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। তাদের মধ্যে প্রায় ১১ শতাংশ প্রাক্তন যোদ্ধা। তিনি বলেন, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি এ অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে বড় ভূমিকা পালন করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিনাওয়াত্রার সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট এবং জাহাজ চলাচলসহ অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়েও আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা সংকট দ্রুত সমাধান করতে চাই, কারণ আরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসছে।’ 

বিশ্বের অন্যতম কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী সিনাওয়াত্রা বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লবের পর দুই দেশের মধ্যে তরুণদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, থাই প্রধানমন্ত্রীর বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রা ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক ব্যবসার বড় ভক্ত ছিলেন। দারিদ্র্য, সম্পদের কেন্দ্রীয়করণ, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে একটি আত্ম-বিধ্বংসী সভ্যতাকে বাঁচানোর ‘থ্রি জিরো’ ধারণা সম্পর্কে থাই প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা সিনাওয়াত্রাকে বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ৫৮টি দেশে প্রায় ৫ হাজার থ্রি জিরো ক্লাব রয়েছে। থাই প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছরের এপ্রিলে ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তিনি বিমসটেকের আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছেন। বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের সাতটি দেশ বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মায়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড নিয়ে বিমসটেক গঠিত।
এর আগে গত সোমবা (২০ জানুয়ারি) বিমসটেক সদর দপ্তর তথ্য জানিয়েছে, এটি সাতটি বিস্তৃত খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা অনুসরণ করে। এগুলো হলো 

কৃষি ও খাদ্য সুরক্ষা, কানেক্টিভিটি, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগ, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, নিরাপত্তা এবং বাণিজ্য-বিনিয়োগ ও উন্নয়ন। এই সহযোগিতাটি ৮টি উপ-ক্ষেত্রকেও অন্তর্ভুক্ত করে- ব্লু ইকোনমি, মাউন্টেন ইকোনমি, জ্বালানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, দারিদ্র্যবিমোচন, স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ উন্নয়ন।

প্রধান উপদেষ্টা আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে এবং এর পূর্ণ সদস্য হওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি থাইল্যান্ডের সমর্থন কামনা করেন।

ডব্লিউইএফ সম্মেলনে যোগ দিতে চার দিনের সরকারি সফরে গত সোমবার দাভোসে যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ২৫ জানুয়ারি তার দেশে ফেরার কথা।

পান্থপথের বহুতল ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:১১ এএম
আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৪ এএম
পান্থপথের বহুতল ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
পান্থপথের পপুলার ফার্মাসিউটিকেলস ভবন। ছবি: খবরের কাগজ

রাজধানীর পান্থপথে পপুলার ফার্মাসিউটিকেলস ভবনের আগুন ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে। 

ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. ফখরুদ্দিন  খবরের কাগজকে জানান, ভবনটির টিএনটি সার্ভার থেকে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দ্রুত আগুন নির্বাপণ করতে সক্ষম হয়।

আলমগীর হোসেন/সুমন 

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৪ এএম
আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৫ এএম
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
ছবি: খবরের কাগজ

দেশের অন্যতম নৌরুট রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ঘন কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রী, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাত ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। 

জানা গেছে , ঘন কুয়াশার কারণে বুধবার সন্ধ‌্যা থে‌কেই এ রু‌টে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল। পরে রাত ৩টা ৪০ মিনিটের পর থে‌কে কুয়াশার মাত্রা তীব্র আকার ধারণ করলে ফেরি চলাচলের বিকন বাতি ও মার্কিং পয়েন্টের কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। এ সময় দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য এই নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো.সালাউদ্দিন বলেন, এ রুটে বর্তমা‌নে ১২‌টি ফে‌রি চলাচল ক‌রে। দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। কুয়াশার মাত্রা কেটে গেলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক করা হবে। 

মেহেদী/

চুরি যাওয়া অর্থ ফেরাতে বিশ্বনেতাদের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৭ পিএম
আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:১২ পিএম
চুরি যাওয়া অর্থ ফেরাতে বিশ্বনেতাদের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
ডব্লিউইএফ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

চুরি হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধারে আন্তর্জাতিক মিত্রদেরকে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (২২ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনের (ডব্লিউইএফ) দ্বিতীয় দিনে দেওয়া বক্তব্যে নেতাদের প্রতি তিনি এই আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা জার্মানির ফেডারেল চ্যান্সেলারির প্রধান ও ফেডারেল মিনিস্টার ফর স্পেশাল টাস্কস ওল্ফগ্যাং স্মিড, বেলজিয়ামের রাজা কিং ফিলিপ, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা, সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল ডিপার্টমেন্ট ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স ফেডারেল কাউন্সিলর ইগনাজিও ক্যাসিস, দুবাই কালচার অ্যান্ড আর্টস অথরিটির চেয়ারপারসন শেখ লতিফা বিনতে মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। খবর ইউএনবির।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সভার ফাঁকে অন্যান্যের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদি, সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেন।

প্রতি বছর জানুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডের পার্বত্য শহর দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। ড. ইউনূস অতীতে বহুবার এখানে এসেছেন। অতীতে তার আলোচনায় বেশির ভাগই ছিল সামাজিক ব্যবসার শক্তি, ক্ষুদ্রঋণ শিল্প এবং এটি কীভাবে বিস্ময়করভাবে কাজ করছে এবং একটি আত্ম-ধ্বংসাত্মক সভ্যতাকে বাঁচানোর জন্য তার দারুণ ‘থ্রি জিরোস’ তত্ত্ব তুলে ধরেছেন। সামাজিক ব্যবসা এখন ১ কোটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করে, যা ২ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির প্রতিনিধিত্ব করে।

অধ্যাপক ইউনূস এখানে এবার ভিন্ন ভূমিকায় এসেছেন উল্লেখ করে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, তিনি এখন সরকারপ্রধান। তিনি এখনো এখানকার সবচেয়ে জনপ্রিয় বক্তাদের একজন। তবে এবার তিনি খুব কমই তার মূল ভাবনা নিয়ে কথা বলেন, উল্লেখ করে আলম বলেন, ড. ইউনূস একটি নতুন বাস্তব জীবনের গল্প নিয়ে এসেছেন। কীভাবে বাংলাদেশের তরুণরা একটি ‘স্বৈরশাসক’কে হটিয়েছিল, কীভাবে তাদের চিন্তাধারা একটি নতুন বাংলাদেশ তৈরি করছে এবং কীভাবে দেশ পুনর্গঠিত হচ্ছে।

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উপসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, শেখ হাসিনার ১৬ বছরের দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনামলে বাংলাদেশে কীভাবে ‘প্রকাশ্য দিবালোকে ডাকাতি’ সংঘটিত হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে শীর্ষ বিশেষজ্ঞ, থিংক ট্যাংক, সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। আজাদ মজুমদার জানান, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক (সিনিয়র সচিব) লামিয়া মোরশেদ, জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

লুৎফে সিদ্দিকী চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে সরকারের প্রচেষ্টা সম্পর্কে জার্মান মন্ত্রী ভোল্ফগ্যাং স্মিডকে অবহিত করে বলেন, সরকার এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে একটি সম্পদ পুনরুদ্ধার কমিটি এবং একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। তিনি বলেন, চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে সরকার প্রাথমিকভাবে শীর্ষ ২০ অর্থ পাচারকারীকে টার্গেট করেছিল।

দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস জার্মান মন্ত্রীকে বলেন, ‘আমরা যখন নতুন বাংলাদেশের কথা বলি, তখন পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশের কথাও বলি।’ প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে জার্মানির সমর্থন কামনা করে দেশটির মন্ত্রীর সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্র নিয়েও আলোচনা করেন। জার্মান মন্ত্রী বলেন, আগামী এপ্রিলে জার্মানির একটি নতুন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করবে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, নেপালের জলবিদ্যুতের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে ভারত, নেপাল ও ভুটানকে সম্পৃক্ত করে বাংলাদেশ একটি অর্থনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চায়। তিনি বলেন, ‘নেপাল বিদ্যুৎ বিক্রি করতে সত্যিই প্রস্তুত এবং বাংলাদেশ তাদের জন্য একটি ভালো বাজার। এটি প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে পারে।’

প্রধান উপদেষ্টা সুইস ফেডারেল কাউন্সিলর ইগনাজিও ক্যাসিসের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও জলবায়ু অর্থায়নসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনে বাংলাদেশের কার্বন ধরে রাখার প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করতে সুইজারল্যান্ডকে অনুরোধ জানান। ড. ইউনূস সুইজারল্যান্ডকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের তরুণদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগান। কারণ, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকই ২৭ বছরের কম বয়সী তরুণ।

জার্মান মন্ত্রী ও সুইস কাউন্সিলরের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা করেন। বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ এবং কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে অবহিত করা হয়, বেলজিয়ামের একজন যুবরাজের নেতৃত্বে একটি গ্রুপের চালু করা একটি ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি কীভাবে আফ্রিকার দেশটিতে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বন সংরক্ষণের আকার প্রসারিত করতে সহায়তা করেছে। প্রিন্স ইমানুয়েল ডি মেরোডের প্রতিষ্ঠিত একটি গ্রুপ সংঘাতপ্রবণ কঙ্গোলিজ অঞ্চলে ক্ষুদ্রঋণ চালু করেছিল। তিনি বর্ণনায় বলছিলেন, সংঘাতের পরে কঙ্গোলিজ বন এখন ব্রিটেনের আকারের দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আর ক্ষুদ্রঋণ সেখানে ২১ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। তাদের মধ্যে প্রায় ১১ শতাংশ প্রাক্তন যোদ্ধা। তিনি বলেন, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি এ অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে বড় ভূমিকা পালন করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিনাওয়াত্রার সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট এবং জাহাজ চলাচলসহ অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়েও আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা সংকট দ্রুত সমাধান করতে চাই, কারণ আরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসছে।’ বিশ্বের অন্যতম কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী সিনাওয়াত্রা বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লবের পর দুই দেশের মধ্যে তরুণদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, থাই প্রধানমন্ত্রীর বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রা ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক ব্যবসার বড় ভক্ত ছিলেন। দারিদ্র্য, সম্পদের কেন্দ্রীয়করণ, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে একটি আত্ম-বিধ্বংসী সভ্যতাকে বাঁচানোর ‘থ্রি জিরো’ ধারণা সম্পর্কে থাই প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা সিনাওয়াত্রাকে বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ৫৮টি দেশে প্রায় ৫ হাজার থ্রি জিরো ক্লাব রয়েছে। থাই প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছরের এপ্রিলে ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তিনি বিমসটেকের আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছেন। বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের সাতটি দেশ বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মায়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড নিয়ে বিমসটেক গঠিত।
এর আগে গত সোমবার বিমসটেক সদর দপ্তর তথ্য জানিয়েছে, এটি সাতটি বিস্তৃত খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা অনুসরণ করে। এগুলো হলো কৃষি ও খাদ্য সুরক্ষা, কানেক্টিভিটি, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগ, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, নিরাপত্তা এবং বাণিজ্য-বিনিয়োগ ও উন্নয়ন। এই সহযোগিতাটি ৮টি উপ-ক্ষেত্রকেও অন্তর্ভুক্ত করে- ব্লু ইকোনমি, মাউন্টেন ইকোনমি, জ্বালানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, দারিদ্র্যবিমোচন, স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ উন্নয়ন।

প্রধান উপদেষ্টা আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে এবং এর পূর্ণ সদস্য হওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি থাইল্যান্ডের সমর্থন কামনা করেন।

ডব্লিউইএফ সম্মেলনে যোগ দিতে চার দিনের সরকারি সফরে গত সোমবার দাভোসে যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ২৫ জানুয়ারি তার দেশে ফেরার কথা।

বৈষম্যবিরোধীদের দুই গ্রুপের মারামারি, আইনি প্রক্রিয়ায় যাবেন আহতরা

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম
বৈষম্যবিরোধীদের দুই গ্রুপের মারামারি, আইনি প্রক্রিয়ায় যাবেন আহতরা
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন জুলাই আন্দোলনে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) সহ-সমন্বয়ক তানযীদ মোহাম্মদ সোহরাব রেজা। ছবি: খবরের কাগজ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ের সামনে দুই গ্রুপের মারামারিতে নারী শিক্ষার্থীসহ আহত হন সাতজন। হামলার নিন্দা জানিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এই আন্দোলনের সম্মিলিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান জুলাই আন্দোলনে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) সহ-সমন্বয়ক তানযীদ মোহাম্মদ সোহরাব রেজা।

তিনি বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার সমন্বয়কদের উপস্থিতিতে দ্বিতীয়বারের মতো আমাদের ওপর হামলা হলো। তাদের মধ্যে ছাত্রলীগের প্রেতাত্মা ভর করেছে। তারা তাদের বাইরে ভিন্ন মত নিতে পারছেন না। আওয়ামী লীগের জায়গায় তারা তাদের রিপ্লেস করতে চায় কি না, সেটা তাদের পরিষ্কার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্ম কারও বাপের না। যদি তাই মনে করা হয়, বুঝতে হবে তারাও টিকতে পারবে না।’

সোহরাব রেজা বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। আমাদের ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদের ট্যাগ লাগানো হচ্ছে। আমরা নাকি সেখানে (কেন্দ্রীয় কার্যালয়) হামলা করতে গিয়েছি। আমরা হাসপাতালে প্রেস ব্রিফিং করার পর আমাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনেকে যোগাযোগ করেন। আমাদের বলা হয়, যাতে মামলা না করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকের জন্য বসতে বলা হয়। আমরা বোরহানউদ্দিন কলেজে বসতে চেয়েছি। পরে তারা রাত ১১টায় বোরহানউদ্দিন কলেজে আসবেন বলে জানান। তারা আসেন রাত ১২টার দিকে। ওই বৈঠকে আসার কথা কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের। আসেন আন্দোলনের সেল সম্পাদক জাহিদ, স্বাস্থ্য কমিটির তরিকুল, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী কমিটির মুন্না। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে না চাওয়ায় সেই বৈঠক হয়নি। আমরা এখন আইনিভাবে লড়াই করে যাব।’

ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি অর্নব হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এর বিচার চাইব না। আমরা থানায় মামলা করব। যদি থানা মামলা না নেয় তাহলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।’ 

আহত আন্তা মীম, হাসিব মল্লিক, আল-আমীন তালুকদার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।