বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) দেশের সবচেয়ে অস্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান বলে মন্তব্য করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম তামিম।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর এফডিসিতে বিগত সরকারের আমলে জ্বালানি ও বিদ্যুতখাতের দুর্নীতি নিয়ে আয়োজিত এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ম তামিম বলেন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) দেশের সবচেয়ে অস্বচ্ছ একটি প্রতিষ্ঠান। এই অস্বচ্ছতার পেছনে বিগত সরকারের স্বার্থ জড়িত ছিল। লস দেখিয়ে দেখিয়ে উচ্চমূল্য নির্ধারণের জন্যই প্রতিষ্ঠানটিকে অস্বচ্ছ রাখা হতো। বর্তমান সরকার এসেও এখন পর্যন্ত প্রক্রিয়াটিকে স্বচ্ছ করতে পারেনি।
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ী; এই তিন পক্ষের যোগসাজশেই জ্বালানি ও বিদ্যুৎখাতে দুর্নীতি হয়েছে। আওয়ামী লীগের শাসনামলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিনিময় ছাড়া কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়নি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও তার কার্যালয়ের একক ক্ষমতার কারণেই এসব দুর্নীতির বিস্তার হয়েছে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা হলে দুর্নীতি কমানো সম্ভব হবে।
তিন দিনের মধ্যে কোন আলাপ আলোচনা ছাড়াই তড়িঘড়ি করে আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎচুক্তি করা হয় জানিয়ে ড. ম তামিম বলেন, আদানির সঙ্গে চুক্তিটি অসম। এক্ষেত্রে শতভাগ ক্যাপাসিটি চার্জ পেমেন্টের পরেও ৪০ ভাগ আরও অতিরিক্ত বিদ্যুতের মূল্য দিতে হয়। এই চুক্তিটি পুনর্বিবেচনা করা দরকার।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে মাফিয়াদের আইনের আওতায় না আনলে মাফিয়াতন্ত্র দমন হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, নিজস্ব গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন না করে কমিশনের লোভেই এলএনজির দিকে ঝুঁকে পড়া ছিল ভুল উদ্যোগ। জবাবদিহিতাকে এড়ানোর জন্য বিগত সরকার গণশুনানির পরিবর্তে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম নির্ধারণ করত, যা ছিলো অস্বচ্ছ।
ছায়া সংসদটির আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতির জন্য বিগত সরকারের রাজনীতিবিদ অপেক্ষা আমলারাই বেশি দায়ী’ শীর্ষক ছায়া সংসদে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সাংবাদিক শাহনাজ বেগম, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক রফিকুল বাসার, সাংবাদিক রিশান নসরুল্লাহ।
প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়।
অমিয়/