
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে সমুন্নত রাখতে আগামী ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে যে 'জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র' প্রকাশ করা হবে তার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে এক ব্রিফিংয়ে 'জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র' সম্পর্কে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে তিনি জানান, এই ঘোষণাপত্র একটা ব্যক্তিগত উদ্যোগ। আমরা একে ব্যক্তিগত উদ্যোগ হিসেবেই দেখছি। এতে সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। যারা এর সমর্থন দিচ্ছেন, তারাও ব্যক্তিগত উদ্যোগকেই সমর্থন করছেন।
একই প্রসঙ্গে ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, 'যতক্ষণ পর্যন্ত ঘোষণা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাদেরও স্পষ্ট কিছু বলা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।'
ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর, সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহমেদ এবং সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ৩১ ডিসেম্বর বেলা তিনটায় জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র ঘোষণা করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেই ঘোষণা সামনে রেখে রবিবার দুপুরে বাংলামোটরে নিজেদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রটি ৫ আগস্টেই হওয়া উচিত ছিল উল্লেখ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, 'আমরা প্রত্যাশা রাখছি, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে নাৎসিবাদী আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করা হবে। এটি না হওয়ার কারণে গণমাধ্যম, বুদ্ধিজীবী পাড়াসহ সব জায়গায় ফ্যাসিবাদের পক্ষের শক্তিগুলো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। দুই হাজারের বেশি শহিদ ও ২০ হাজারের বেশি আহতের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।'
এর মধ্যে ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া করা হয়েছে জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও বর্তমানে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, 'জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র আরও আগে ঘোষণা করা প্রয়োজন ছিল। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের এই বিপ্লব যেমন ফ্যাসিস্টবিরোধী সবাইকে ধারণ করতে পেরেছিল, এই ঘোষণাপত্রও সবার আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে পারবে। এই বিপ্লবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-মত, ধর্ম ও বয়সের যে মানুষেরা সরাসরি অংশ নিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের মতামত নেওয়া হচ্ছে। এটি সংশোধন, পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করা হচ্ছে।'
সিফাত/এমএ/