
হিউম্যান মেটানিউমো (এইচএমপি) ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মহামারি হওয়ার শঙ্কা নেই। এজন্য সীমান্তে সতর্কতার কিছু নেই। তবে সরকারের প্রস্তুতি আছে।’
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাস নিয়ে অ্যালার্ট দেয়নি। এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এইচএমপিভি কোভিডের মতো ভয়ংকর না। শুধু শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণের ক্ষেত্রে মিল আছে। করোনার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে না। তবে সতর্কতা হিসেবে শিশু ও বয়স্কদের মাস্ক পরা প্রয়োজন বলে মনে করি। এটার চিকিৎসা সাধারণ ফ্লুর মতো।’
সরকারের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে আলাদা চিকিৎসা গাইডলাইন করা হবে। তবে এখন যে গাইডলাইন আছে, এর সঙ্গে বেশি পার্থক্য থাকবে না।’
সম্প্রতি চীন ও জাপানে অনেকেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ভারতেও দুইজনের শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১২ জানুয়ারি দেশেও এক নারীর শরীরে এই ভাইরাস শনাক্তের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে ওই নারীর পরিবারের কারও বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস নেই। দেশ থেকেই তিনি আক্রান্ত হয়েছেন।
২০১৭ সাল থেকেই দেশে এই ভাইরাস শনাক্তে পরীক্ষা করে আসছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডসিআর)। তখন থেকেই রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এর আগে ২০১৫ সালে এক গবেষণা চালাতে গিয়ে তখনও ২৬ শিশুর শরীর এই ভাইরাস পাওয়া যায়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সতর্কতামূলক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিশেষ করে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। সেই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন- হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনাবি ডিজিজ, গর্ভবর্তী মহিলা এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।
এই ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ৭টি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সেগুলো হলো- মাস্ক ব্যবহার করা; হাঁচি-কাশির সময় বাহু বা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা; ব্যবহৃত টিস্যু অবিলম্বে ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার বুড়িতে ফেলা এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা; আক্রান্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা এবং কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা; ঘনঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া (অন্তত ২০ সেকেন্ড); অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ স্পর্শ না করা; জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকা, প্রয়োজন হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যাওয়া।
আরিফ/সালমান/