
প্রায় ২০ বছর ধরে বাংলাদেশের নির্বাচনসংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে সহায়তা দিয়ে আসছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। এ সময়ে অনুষ্ঠিত চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছে আন্তর্জাতিক এই দাতা সংস্থা। এবারও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহায়তা করার আগ্রহ জানিয়েছে সংস্থাটি। সেই লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসছে ইউএনডিপি।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে দুপুর সাড়ে ১২টায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনসহ চার কমিশনার ও সিনিয়র সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। সংস্থাটির কাছে নির্বাচনে কারিগরিসহ বেশ কিছু সহযোগিতার প্রস্তাব দেবে কমিশন।
ইউএনডিপির পক্ষ থেকে সভায় যোগ দেবেন সংস্থাটির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। দুই পক্ষের আনুষ্ঠানিক এই বৈঠকে আগামী নির্বাচন নিয়ে ইসির কোনো চাহিদা আছে কি না, থাকলে কীভাবে সহায়তা চান তারা, তা নিয়ে আলোচনা হবে।
গত ২১ নভেম্বর নাসির উদ্দিন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদেশিদের সঙ্গে দুটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গত ১০ ডিসেম্বর তুরস্কের তিন সাবেক সংসদ সদস্য এবং এর আগে জাতিসংঘের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইসি। এবার তারা ইউএনডিপির সঙ্গে বসছে।
বাংলাদেশের উন্নয়নে ১৯৮৫ সাল থেকে ঋণ সহায়তা দিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক এই দাতা সংস্থা। ২০০৫ সাল থেকে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত সব নির্বাচনেই কমিশনকে সরাসরি সহযোগিতা করেছে সংস্থাটি। জাতিসংঘ কোনো দেশের নির্বাচনে পরামর্শ, কারিগরি, লজিস্টিক, প্রশিক্ষণ, ভোটার তালিকা প্রণয়ন, জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ নানা ধরনের সহায়তা করে থাকে। জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, নির্বাচনি আইন তৈরি ও পদ্ধতি নির্ধারণ এবং নির্বাচনকালীন মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে। অনেক সময় সংস্থাটি নির্বাচন পর্ববেক্ষকের ভূমিকাও পালন করে। পাশাপাশি বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সমন্বয়ের কাজও করে থাকে। সাধারণত বিদেশি পর্যবেক্ষকরা তাদের দেশের বা প্রতিষ্ঠানের হয়ে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে। এরই মধ্যে তারা বাংলাদেশসহ শতাধিক রাষ্ট্রকে নির্বাচনি সহায়তা দিয়েছে।
গত বছরের ২৮ আগস্ট রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ দেশের বিচার বিভাগ, পুলিশ, নির্বাচন কমিশন, কর প্রশাসন, ভূমি নিবন্ধনসহ সার্বিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করতে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি ইউএনডিপির সমর্থন ও সহায়তা চান।
সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, নির্বাচনের জন্য তার কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভোটার তালিকাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম তারা এগিয়ে রাখছেন। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, সংস্কার কার্যক্রম সীমিত পরিসরে হলে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই অথবা ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী সময়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে।