ঢাকা ২৫ মাঘ ১৪৩১, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১

‘প্লে উইথ এ পারপাস’ কর্মশালা শিশুর মানসিক বিকাশকে অতি জরুরি সেবা গণ্য করার সুপারিশ

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৬ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১০ পিএম
শিশুর মানসিক বিকাশকে অতি জরুরি সেবা গণ্য করার সুপারিশ
কক্সবাজারে ‘প্লে উইথ এ পারপাস’ শীর্ষক কর্মশালায় অতিথিরা। ছবি: সংগৃহীত

শুধু স্বাভাবিক সময়ে নয়, দুর্যোগ ও মানবিক বিপর্যয় পরিস্থিতিতেও শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করা সমান জরুরি। শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশকে অতি জরুরি সেবা হিসেবে গণ্য করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।

‘প্লে টু লার্ন’ প্রকল্পের সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) কক্সবাজারে ‘প্লে উইথ এ পারপাস’ শীর্ষক কর্মশালায় এ সুপারিশ করা হয়।

কক্সবাজারে অবস্থানরত মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ তথা শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ নিশ্চিত করতে ব্র্যাক, আইআরসি ও নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথভাবে ‘প্লে টু লার্ন’ নামের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিসেমি ওয়ার্কশপ।

সিসেমি ওয়ার্কশপ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিশুতোষ টেলিভিশন সিরিজ সিসিমপুরের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।

দিনব্যাপী সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় দেড় শতাধিক প্রতিনিধি কর্মশালায় অংশ নেন।

কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন- শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। দুপুরের সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন- শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক অতিরিক্ত কমিশনার মো. শামস উদ দ্দোজা। সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিসেমি ওয়ার্কশপ ও নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির নেতৃস্থানীয় কর্মকর্তাসহ দাতা সংস্থা, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক ও দেশি উন্নয়ন সংস্থার উর্ধ্বতন প্রতিনিধিরা।

আলোচনায় যেকোনো দুর্যোগ ও মানবিক বিপর্যয় পরিস্থিতিতে শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশকে অতি জরুরি সেবা হিসেবে গণ্য করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।

কর্মশালার নানা পর্যায়ে ‘প্লে টু লার্ন’ প্রকল্পের সার্বিক চিত্র তুলে ধরে জানানো হয়, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শিশুদের খেলা ও বিনোদনের মাধ্যমে শিক্ষা নিশ্চিত করতে দুটি রোহিঙ্গা শিশু চরিত্র তৈরি করে সিসেমি ওয়ার্কশপ। নূর ও আজিজ নামের এই দুই শিশু চরিত্র রোহিঙ্গা শিশুদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়। নূর ও আজিজকে নিয়ে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য রোহিঙ্গা ভাষায় তৈরি করা হয় প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষামূলক ভিডিও কন্টেন্ট। যা ভিডিও প্রজেক্টরের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত ব্র্যাকের প্লেল্যাব ও ইউএনএইচসিআর এবং সহযোগী সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন, টেরে দেস হোমস (টিডিএইচ), রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল ও কোডেক-এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা শিশুদের দেখানো হয়েছে এবং হচ্ছে। পাশাপাশি এ প্রকল্প থেকে ১২টি গল্পের বই বার্মিজ, ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় উন্নয়ন ও প্রকাশ করা হয়েছে। এসব বই কক্সবাজারের ১৪টি সংস্থার শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে বিতরণ করা হয়েছে এবং প্রায় দুই লাখের মতো শিশুতোষ বইগুলো ব্যবহার করে আসছে। এছাড়া বাড়িতেও শিশু বিকাশের পরিবেশ তৈরিতে বিতরণ করা হয়েছে শিশু বিকাশ হোমকিট। একই সঙ্গে অভিভাবক ও শিশু যত্নকারিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

কর্মশালায় আরও জানানো হয়, গত ছয় বছর ধরে চলমান ‘প্লে টু লার্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা শিশু, অভিভাবক এবং শিশু যত্নকারী সরাসরি উপকৃত হয়েছেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, এই প্রকল্পের আওতাধীন শিশুদের মধ্যে ৭০ শতাংশ শিশুর সার্বিক বিকাশ সাধিত হয়েছে। শতকরা ৯১ ভাগ শিশুর মানসিক বিকাশ হয়েছে এবং ৯৬ ভাগ শিশু যত্নকারী ও অভিভাবকরা শিশুদের প্রতি আরও বেশি যত্নশীল হয়েছেন।

এমএ/

আবহাওয়ার পূর্বাভাস: ৬ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:১৫ পিএম
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:২১ পিএম
আবহাওয়ার পূর্বাভাস: ৬ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
ছবি: খবরের কাগজ

রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, মৌলভীবাজার এবং চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদুশৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এ ছাড়া অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

অন্যদিকে শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার পাশাপাশি দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। 

সুমন/

গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৩ পিএম
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৯ পিএম
গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

গাজীপুর সদর উপজেলার রাজবাড়ি মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

শনিবার (৮ ফেব্রয়ারি) বেলা ১১টার দিকে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

ইতোমধ্যে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসতে শুরু করেছে নেতা-কর্মীরা।

এর আগে আজ ভোর চারটার দিকে তাদের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

ওই পোস্টে বলা হয়, ‘গাজীপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসী মোজাম্মেল-জাহাঙ্গীরের চাপাতিবাহিনীর হামলার প্রতিবাদে আজ শনিবার বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন সারাদেশের আপামর ছাত্রজনতা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা।’

অমিয়/

জুলাই গণঅভ্যুত্থান ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াই: ফারুক ই আজম

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৮ এএম
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৫২ এএম
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াই: ফারুক ই আজম
ছবি : খবরের কাগজ

ত্রান ও দূর্যোগ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল এক ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াই। যেখানে তরুণরা স্বৈরাচারী দমননীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি তোলে। 

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ইউনিটি চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির আর্ট গ্যালারিতে দুই দিনব্যাপী আর্ট এক্সিবিশন 'দ্যা আর্ট অব ডেমোক্রেসি, ইউনিটিতে- জার্নি অব ইউনিটি' শুরু হয়। আর্ট এক্সিবিশন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। 

ফারুক ই আজম বলেন, 'জুলাই বিপ্লবে ইতিহাস ধরে রাখার তরুণদের এমন উদ্দ্যেগ যেন পুর্নতা পায়। ইতোমধ্যে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার। আহতদের সুচিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে অন্তবর্তীকালীন সরকার। অনেককে বিদেশে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারটা যেন তাড়াতাড়ি হয়। আমরা আশাবাদী। আর বৈষম্য করা যাবে না। পুরো রাষ্ট্রকে সুস্থ ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে।'

মঞ্চে উঠে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পক্ষ থেকে ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার চিরকালীন প্রচেষ্টার বিষয়টি।

তিনি বলেন, '৫২ ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ; সব সংগ্রামই বৈষম্যের বিরুদ্ধে। জুলাই বিপ্লব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দ্বারা সৃষ্টি হলেও এটি মুলত ক্ষমতার বিরুদ্ধে মানুষের লড়াই। আর সেই বিপ্লবের ইতিহাস ধারণ করে এখন চলবে বিস্মৃতির বিরুদ্ধে স্মৃতির লড়াই। এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিজয়কে কোনোভাবেই নস্যাৎ করতে দেওয়া যাবে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই আন্দোলন আমাদের ঐক্যবদ্ধ করেছে, এবং আমরা এই ঐক্য ধরে রাখব।' 

‘দ্যা আর্ট অফ ডেমোক্রেসি, ইউনিটিতে- জার্নি অব ইউনিটি’ প্রকল্পের পরিচালক মিনহাজ উদ্দিন বলেন, 'রক্তাক্ত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি ও ইতিহাস ধরে রাখার গুচ্ছ প্রয়াস ‘দ্যা আর্ট অফ ডেমোক্রেসি, ইউনিটিতে জার্নি অব ইউনিটি’। বছর জুড়ে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে চিত্রপ্রদর্শনী, তথ্যচিত্র নির্মাণ, আর্কাইভ বুক, ডাটাবেইজ ওয়েবসাইট থাকছে এ প্রকল্পে। 

প্রকল্পের উপদেষ্টা ওয়াহিদ জামান জানান, জুলাই বিপ্লবের ইতিহাসকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে দিতে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দিতে ডকুমেন্টারি নির্মাণ, আর্কাইভ বুক, ম্যাগাজিন প্রকাশের উদ্দ্যেগ নেওয়া হয়েছে। মুলত আজকে জুলাই বিপ্লবের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের চিত্রপ্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে পুরো প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হয়েছে।

‘ঐক্যের গণজোয়ারে আবারও এক হই' এই স্লোগানে শুরু হওয়া প্রদর্শনী উদ্বোধনের পর আগত অতিথি ও দর্শনার্থীরা শিল্পকলার আর্ট গ্যালারি দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় প্রদর্শনীস্থল ঘুরে দেখেন। ২০১৮ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৬০টি ছবি স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে। 

এর আগে জুলাই বিপ্লবের ইতিহাসভিত্তিক ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রছাত্রীরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রদর্শনীতে গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের ছবি, আন্দোলনকারীদের স্মৃতিচারণ এবং ভবিষ্যৎ আন্দোলনের করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

প্রদর্শনীটি শুক্রবার ও শনিবার দুই দিন চলবে।

জোবাইদা/

সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ আজ

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:২৬ এএম
সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ আজ

অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক রাষ্ট্র সংস্কারে গঠন করা হয় ছয়টি কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে আজ।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা রাজনৈতিক দল ও গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির কাছে পাঠানো হবে। এরপর রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সব শক্তির সঙ্গে আলোচনা এবং সমঝোতাক্রমে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে হবে।‌ এ তারিখ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করা হবে।

একইসঙ্গে কমিশনের প্রধানরা পরবর্তী আশু করণীয়, মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা বা ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার কী করতে পারে- সেটির সর্বসম্মত সুপারিশমালা পেশ করবেন।

গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনুস রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে দেন। এসব কমিশনকে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

গত ১৫ জানুয়ারি সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ সংস্কার ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই চারটি এবং গত বুধবার জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে পেশ করে।

অমিয়/

এখনো বিছানায় জুয়েল, দিশেহারা কৃষক বাবা

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:১২ এএম
এখনো বিছানায় জুয়েল, দিশেহারা কৃষক বাবা
জুয়েল রানা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পেটে গুলিবিদ্ধ হন জুয়েল রানা। একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও এখনো তিনি বিছানায়। তার দরকার উন্নত চিকিৎসা। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের পক্ষে তার চিকিৎসা ব্যয় মেটানো আর সম্ভব হচ্ছে না। জুয়েলের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন দিশেহারা তার কৃষক বাবা আব্দুল জব্বার শেখ।

জুয়েল রানা (২৮) সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘গত ১৯ জুলাই ঢাকার বিজয় সরণি এলাকায় মিছিলে ছিলাম। আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। হঠাৎ আমার পেটে গুলি বিদ্ধ হয়। সহযোদ্ধারা আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে আমার শরীরে অস্ত্রোপচার হয়। এরপর একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও সুস্থ হতে পারিনি। আরও উন্নত চিকিৎসা দরকার বলে ডাক্তার জানিয়েছেন।’

চিকিৎসাধীন মো. জুয়েল রানা আরও বলেন, ‘আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশে আর কোনো স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট সরকার দেখতে চাই না। আমরা চাই বৈষম্যবিরোধী, অসাম্প্রদায়িক ও সঠিক একটি সরকারব্যবস্থা।’ 

জুয়েল রানার বাড়ি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে। তিনি সরকারি ভোলা কলেজের দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মেধাবী ছাত্র। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ছাত্রদলের সহসভাপতি ও জেলা ছাত্রদলের সদস্যও তিনি। তার স্ত্রীর নাম মুনিয়া আক্তার (২৪)। বাবা আব্দুল জব্বার শেখ কৃষিকাজ করেন। মা তাছলিমা বেগম গৃহিণী।

মুনিয়া বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়েও অলৌকিকভাবে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি বিছানায়। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন নিয়মিত থেরাপি নিতে জেলা হাসপাতালে যেতে হয়। তার দরকার উন্নত চিকিৎসা। এ জন্য আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।’

মুনিয়া আক্তার জানান, জুয়েলসহ তিনি গ্রামে পরিবারের সঙ্গেই বসবাস করেন। পরিবারে বাবা-মা ছাড়াও এক ভাই ও এক বোন রয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারের অর্থসংকট ঘুচাতে জুয়েল ছোটখাটো ব্যবসা করতেন। 

তিনি আরও জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাড়া দিয়ে তিনি ১৯ জুলাই ঢাকার বিজয় সরণি এলাকায় মিছিলে অংশ নেন। এ সময়ে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় রানাকে একাধিক ছাত্ররা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এখানেই তার শরীরে সফল অস্ত্রোপচার হয়। 

এরপর তার পেটে আবার দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার করা হয় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তার শরীরের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে তাকে শ্রীপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু গত ১১ আগস্ট শরীরের অবস্থার অবনতি হলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে তাকে আবার ভর্তি করা হয়। এখনো তার চিকিৎসা চলছে। 

মুনিয়া বলেন, ‘একদিকে চিকিৎসার খরচ, অন্যদিকে সংসার। রানার যেটুকু আয় রোজগার ছিল তাও বন্ধ। ফলে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে সুচিকিৎসাও হচ্ছে না। পুরো পরিবার এখন দিশেহারা অবস্থায় আছে।’ 

এ বিষয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মো. জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, ‘মো. জুয়েল রানা একজন ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী। আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি সক্রিয় ছিলেন।’ 

তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পেটে গুলিবিদ্ধ জুয়েল রানার প্রয়োজন সুচিকিৎসা।’ 

তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে জুয়েল রানার সুচিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এ প্রসঙ্গে আলাপকালে বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রকাশিত খসড়া তালিকা অনুযায়ী সুচিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য সাহায্য, সহযোগিতা করা হচ্ছে। শহিদ পরিবারগুলোর খোঁজ-খবরও নেওয়া হচ্ছে।’ সূত্র : বাসস