
‘খেতের ধান ওঠা শেষ, সবার আশা ছিল- এখন কমবে চালের দাম। সেই আশার গুড়ে বালি। বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে চাল। ভাবতে অবাক লাগছে।’ বৃহস্পতিবার এভাবেই কারওয়ান বাজারে চালের বাড়তি দামের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জসিম উদ্দিন নামে এক ক্রেতা। বিক্রেতারা বলেন, ‘রাইস মিল ও পাইকারি পর্যায়ে বাড়ছে চালের দাম। এ জন্য আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারছি না। ডিম ও মুরগির দামও কমেনি। তবে স্থিতিশীল সবজির দাম।’
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুযারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাড়তি দামে চাল বিক্রি
সরকার চালের দাম কমাতে আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। ভ্যাটও প্রত্যাহার করে নিয়েছে। খেত থেকে ধানও তোলা হয়ে গেছে। তার পরও কমছে না চালের দাম। বিভিন্ন বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতারা বলছেন, রাইস মিল থেকে দাম বাড়ার কারণে খুচরা বাজারে কমছে না দাম। মিনিকেট ৭২-৮০ টাকা, আটাশ চাল ৬২-৬৪, মোটা চালের দাম ৫৪-৫৬ ও নাজিরশাইল ৭৬-৮২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা চাটখিল রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী রাসেল আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘কিছুদিন আগে চালের দাম কেজিতে ৩ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর কমছে না। মিল কর্তৃপক্ষ দাম না কমালে ভোক্তারা কম দামে খেতে পারবেন না।’ অন্য বাজারের খুচরা বিক্রেতাদের মন্তব্য প্রায় একই।
স্থিতিশীল সবজির দর
হাতিরপুল বাজারের সবজি বিক্রেতা একরাম হোসেন, টাউন হল বাজারের রহিম উদ্দিনসহ অন্য বিক্রেতারা গতকাল বলেন, ‘আগের সপ্তাহের মতো গতকালও আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তবে আগের মতোই দেশি আদার কেজি ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, আমদানি করা আদা ২৪০ থেকে ২৫০ ও রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকা।’
বিভিন্ন বাজারের সবজি বিক্রেতারা বলেন, আগের মতোই বেগুনের কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। তবে বেগুনি রঙের বড় গোল বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। শিমের কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৫০ থেকে ৭০, মুলা ২০ থেকে ২৫, গাজর ৬০ ও পেঁপে ৪০ থেকে ৫০, ফুলকপির পিস ২০ থেকে ২৫, বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩০, লাউ ও চালকুমড়ার পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লালশাক, পালংশাক, কলমিশাকের আঁটি ১০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় আরও কম দামে বিক্রি হয়েছে।
বিভিন্ন বাজারের খুচরা বিক্রেতারা বলেন, আগের মতোই ছোলা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০, মসুর ডাল ১১০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। দুই কেজি ওজনের প্যাকেট আটা ১০০-১৩০ টাকা, খোলা আটা এক কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৭৫ টাকা, চিনির কেজি ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
কমেনি মুরগির দাম
সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দামও কমেনি। কারওয়ান বাজারের জনপ্রিয় ব্রয়লার হাউসের আমজাদ হোসেনসহ অন্য খুচরা বিক্রেতারা বলেন, ‘আগের মতোই ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৪০ থেকে ৩৫০, দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংসও আগের মতো ৭০০-৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে। ডিম বিক্রেতারা বলেন, আগের মতোই বিভিন্ন বাজারে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা ডজন ডিম বিক্রি করা হচ্ছে।