ঢাকা ২৫ মাঘ ১৪৩১, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১

ঢাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কুশপুতুল পুড়িয়ে পদত্যাগ দাবি

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৫ এএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৪১ পিএম
ঢাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কুশপুতুল পুড়িয়ে পদত্যাগ দাবি
গণআন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কুশপুতুল পোড়াচ্ছে ঢাবির একদল শিক্ষার্থী। ছবি: সংগৃহীত

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কুশপুতুল পুড়িয়ে তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেল তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশন নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।

এ সময় গণ-আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের বিচার ও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানান।

এ বিষয়ে অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশনের আহ্বায়ক তাসনিম বিন মাহফুজ বলেন, ‘আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নিঃশর্ত পদত্যাগ চাই। তার কারণ হিসেবে বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অপরাধই যথেষ্ট। পুলিশ এর আগেও প্রথম আলো অফিসের সামনে নিরস্ত্র মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে তারা নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশ জুলাইয়ের ব্যর্থতার ক্ষোভ এখনো মিটাচ্ছে। এসব দায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার। এখনো কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে তিনি সর্বোচ্চ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। তাই ব্যর্থতার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে। পাশাপাশি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

সংগঠনটির জেনারেল সেক্রেটারি এস এম তানিম বলেন, ‘পুলিশ মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। অথচ তাদের কাছেই মানুষ অনিরাপদ। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশি হামলার কোনো বিচার এখনো হয়নি। এর দায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে নিতে হবে।’

এ ছাড়া সংগঠনটির নির্বাহী সদস্য তৌকির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আজও জনগণের কল্যাণে কাজ না করে শক্র হয়ে কাজ করছে।’

কুশপুতুল পোড়ানোর সময় মোয়াজ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আজ থেকে চার মাস আগে পুলিশ সংস্কারের দাবিতে আমরা আন্দোলন করেছি। আজও তা চলমান। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। পুলিশের বিপক্ষে অভিযোগের শেষ নেই। দেশজুড়ে এখনো নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত হচ্ছেন তারা। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে এর দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হব।’ সূত্র: ইউএনবি

আবহাওয়ার পূর্বাভাস: ৬ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:১৫ পিএম
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:২২ পিএম
আবহাওয়ার পূর্বাভাস: ৬ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
ছবি: খবরের কাগজ

রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, মৌলভীবাজার এবং চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এ ছাড়া অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

অন্যদিকে শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার পাশাপাশি দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। 

সুমন/

গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৩ পিএম
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৯ পিএম
গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

গাজীপুর সদর উপজেলার রাজবাড়ি মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

শনিবার (৮ ফেব্রয়ারি) বেলা ১১টার দিকে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

ইতোমধ্যে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসতে শুরু করেছে নেতা-কর্মীরা।

এর আগে আজ ভোর চারটার দিকে তাদের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

ওই পোস্টে বলা হয়, ‘গাজীপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসী মোজাম্মেল-জাহাঙ্গীরের চাপাতিবাহিনীর হামলার প্রতিবাদে আজ শনিবার বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন সারাদেশের আপামর ছাত্রজনতা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা।’

অমিয়/

জুলাই গণঅভ্যুত্থান ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াই: ফারুক ই আজম

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৮ এএম
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৫২ এএম
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াই: ফারুক ই আজম
ছবি : খবরের কাগজ

ত্রান ও দূর্যোগ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল এক ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াই। যেখানে তরুণরা স্বৈরাচারী দমননীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি তোলে। 

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ইউনিটি চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির আর্ট গ্যালারিতে দুই দিনব্যাপী আর্ট এক্সিবিশন 'দ্যা আর্ট অব ডেমোক্রেসি, ইউনিটিতে- জার্নি অব ইউনিটি' শুরু হয়। আর্ট এক্সিবিশন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। 

ফারুক ই আজম বলেন, 'জুলাই বিপ্লবে ইতিহাস ধরে রাখার তরুণদের এমন উদ্দ্যেগ যেন পুর্নতা পায়। ইতোমধ্যে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার। আহতদের সুচিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে অন্তবর্তীকালীন সরকার। অনেককে বিদেশে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারটা যেন তাড়াতাড়ি হয়। আমরা আশাবাদী। আর বৈষম্য করা যাবে না। পুরো রাষ্ট্রকে সুস্থ ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে।'

মঞ্চে উঠে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পক্ষ থেকে ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার চিরকালীন প্রচেষ্টার বিষয়টি।

তিনি বলেন, '৫২ ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ; সব সংগ্রামই বৈষম্যের বিরুদ্ধে। জুলাই বিপ্লব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দ্বারা সৃষ্টি হলেও এটি মুলত ক্ষমতার বিরুদ্ধে মানুষের লড়াই। আর সেই বিপ্লবের ইতিহাস ধারণ করে এখন চলবে বিস্মৃতির বিরুদ্ধে স্মৃতির লড়াই। এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিজয়কে কোনোভাবেই নস্যাৎ করতে দেওয়া যাবে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই আন্দোলন আমাদের ঐক্যবদ্ধ করেছে, এবং আমরা এই ঐক্য ধরে রাখব।' 

‘দ্যা আর্ট অফ ডেমোক্রেসি, ইউনিটিতে- জার্নি অব ইউনিটি’ প্রকল্পের পরিচালক মিনহাজ উদ্দিন বলেন, 'রক্তাক্ত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি ও ইতিহাস ধরে রাখার গুচ্ছ প্রয়াস ‘দ্যা আর্ট অফ ডেমোক্রেসি, ইউনিটিতে জার্নি অব ইউনিটি’। বছর জুড়ে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে চিত্রপ্রদর্শনী, তথ্যচিত্র নির্মাণ, আর্কাইভ বুক, ডাটাবেইজ ওয়েবসাইট থাকছে এ প্রকল্পে। 

প্রকল্পের উপদেষ্টা ওয়াহিদ জামান জানান, জুলাই বিপ্লবের ইতিহাসকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে দিতে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দিতে ডকুমেন্টারি নির্মাণ, আর্কাইভ বুক, ম্যাগাজিন প্রকাশের উদ্দ্যেগ নেওয়া হয়েছে। মুলত আজকে জুলাই বিপ্লবের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের চিত্রপ্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে পুরো প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হয়েছে।

‘ঐক্যের গণজোয়ারে আবারও এক হই' এই স্লোগানে শুরু হওয়া প্রদর্শনী উদ্বোধনের পর আগত অতিথি ও দর্শনার্থীরা শিল্পকলার আর্ট গ্যালারি দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় প্রদর্শনীস্থল ঘুরে দেখেন। ২০১৮ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৬০টি ছবি স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে। 

এর আগে জুলাই বিপ্লবের ইতিহাসভিত্তিক ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রছাত্রীরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রদর্শনীতে গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের ছবি, আন্দোলনকারীদের স্মৃতিচারণ এবং ভবিষ্যৎ আন্দোলনের করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

প্রদর্শনীটি শুক্রবার ও শনিবার দুই দিন চলবে।

জোবাইদা/

সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ আজ

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:২৬ এএম
সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ আজ

অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক রাষ্ট্র সংস্কারে গঠন করা হয় ছয়টি কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে আজ।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা রাজনৈতিক দল ও গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির কাছে পাঠানো হবে। এরপর রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সব শক্তির সঙ্গে আলোচনা এবং সমঝোতাক্রমে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে হবে।‌ এ তারিখ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করা হবে।

একইসঙ্গে কমিশনের প্রধানরা পরবর্তী আশু করণীয়, মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা বা ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার কী করতে পারে- সেটির সর্বসম্মত সুপারিশমালা পেশ করবেন।

গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনুস রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে দেন। এসব কমিশনকে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

গত ১৫ জানুয়ারি সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ সংস্কার ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই চারটি এবং গত বুধবার জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে পেশ করে।

অমিয়/

এখনো বিছানায় জুয়েল, দিশেহারা কৃষক বাবা

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:১২ এএম
এখনো বিছানায় জুয়েল, দিশেহারা কৃষক বাবা
জুয়েল রানা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পেটে গুলিবিদ্ধ হন জুয়েল রানা। একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও এখনো তিনি বিছানায়। তার দরকার উন্নত চিকিৎসা। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের পক্ষে তার চিকিৎসা ব্যয় মেটানো আর সম্ভব হচ্ছে না। জুয়েলের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন দিশেহারা তার কৃষক বাবা আব্দুল জব্বার শেখ।

জুয়েল রানা (২৮) সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘গত ১৯ জুলাই ঢাকার বিজয় সরণি এলাকায় মিছিলে ছিলাম। আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। হঠাৎ আমার পেটে গুলি বিদ্ধ হয়। সহযোদ্ধারা আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে আমার শরীরে অস্ত্রোপচার হয়। এরপর একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও সুস্থ হতে পারিনি। আরও উন্নত চিকিৎসা দরকার বলে ডাক্তার জানিয়েছেন।’

চিকিৎসাধীন মো. জুয়েল রানা আরও বলেন, ‘আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশে আর কোনো স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট সরকার দেখতে চাই না। আমরা চাই বৈষম্যবিরোধী, অসাম্প্রদায়িক ও সঠিক একটি সরকারব্যবস্থা।’ 

জুয়েল রানার বাড়ি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে। তিনি সরকারি ভোলা কলেজের দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মেধাবী ছাত্র। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ছাত্রদলের সহসভাপতি ও জেলা ছাত্রদলের সদস্যও তিনি। তার স্ত্রীর নাম মুনিয়া আক্তার (২৪)। বাবা আব্দুল জব্বার শেখ কৃষিকাজ করেন। মা তাছলিমা বেগম গৃহিণী।

মুনিয়া বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়েও অলৌকিকভাবে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি বিছানায়। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন নিয়মিত থেরাপি নিতে জেলা হাসপাতালে যেতে হয়। তার দরকার উন্নত চিকিৎসা। এ জন্য আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।’

মুনিয়া আক্তার জানান, জুয়েলসহ তিনি গ্রামে পরিবারের সঙ্গেই বসবাস করেন। পরিবারে বাবা-মা ছাড়াও এক ভাই ও এক বোন রয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারের অর্থসংকট ঘুচাতে জুয়েল ছোটখাটো ব্যবসা করতেন। 

তিনি আরও জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাড়া দিয়ে তিনি ১৯ জুলাই ঢাকার বিজয় সরণি এলাকায় মিছিলে অংশ নেন। এ সময়ে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় রানাকে একাধিক ছাত্ররা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এখানেই তার শরীরে সফল অস্ত্রোপচার হয়। 

এরপর তার পেটে আবার দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার করা হয় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তার শরীরের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে তাকে শ্রীপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু গত ১১ আগস্ট শরীরের অবস্থার অবনতি হলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে তাকে আবার ভর্তি করা হয়। এখনো তার চিকিৎসা চলছে। 

মুনিয়া বলেন, ‘একদিকে চিকিৎসার খরচ, অন্যদিকে সংসার। রানার যেটুকু আয় রোজগার ছিল তাও বন্ধ। ফলে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে সুচিকিৎসাও হচ্ছে না। পুরো পরিবার এখন দিশেহারা অবস্থায় আছে।’ 

এ বিষয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মো. জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, ‘মো. জুয়েল রানা একজন ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী। আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি সক্রিয় ছিলেন।’ 

তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পেটে গুলিবিদ্ধ জুয়েল রানার প্রয়োজন সুচিকিৎসা।’ 

তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে জুয়েল রানার সুচিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এ প্রসঙ্গে আলাপকালে বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রকাশিত খসড়া তালিকা অনুযায়ী সুচিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য সাহায্য, সহযোগিতা করা হচ্ছে। শহিদ পরিবারগুলোর খোঁজ-খবরও নেওয়া হচ্ছে।’ সূত্র : বাসস