
সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আশা করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা জরুরি। এটা না হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আশা করা যায় না।’
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে রাজশাহী বিভাগের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা মন্তব্য করেন।
সভায় কামাল আহমেদ বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারবিরোধী যে আন্দোলন হলো, সেটা অনেকেই বিপ্লব বলছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা দেখলাম গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থার ঘাটতি। এ কারণে এক প্রকারের ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখেছি বিভিন্ন জায়গায়। টেলিভিশন কেন্দ্র আক্রান্ত হয়েছে, সাংবাদিকরা আক্রান্ত হয়েছে, বিভিন্ন প্রেসক্লাব আক্রান্ত হয়েছে। এটা শুধুমাত্র ক্ষোভের কারণে।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের আর্থিক নিশ্চয়তা নিশ্চিত না হলে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা আশা করা উচিত না, তাই সাংবাদিকদের আর্থিক নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে সুপারিশ করবে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হলে তা প্রতিষ্ঠানকে মোকাবিলা করাসহ সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় যথাযথ সুরক্ষা সামগ্রীও প্রতিষ্ঠানকেই সরবরাহ করতে হবে।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, ‘অষ্টম ওয়েজ বোর্ডের ফলে গণমাধ্যমের মালিকেরা লাভবান হলেও সংবাদকর্মীদের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। সরকারের পাশাপাশি এই দুর্নীতিতে গণমাধ্যমের মালিক, সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতাদেরও ভূমিকা আছে।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন না হলেও তা বাস্তাবায়ন দেখিয়ে সাংবাদিক নেতারা স্বাক্ষর দিয়েছেন। ফলে সরকার চাইলেও এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি।’
সাংবাদিকদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক বিবেচনায় বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সংখ্যার যে বিস্ফোরণ ঘটেছে, তার চাহিদা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন আগামীতে যে সরকারই আসুক তাদের কাজে আসবে। সেই লক্ষ্যেই সবার মতামত নিয়ে সংস্কার কমিশন সুপারিশমালা তৈরি করছে।’
সভায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরীন, শামসুল হক জাহিদ, আখতার হোসেন খান, বেগম কামরুন্নেসা হাসান, মোস্তফা সবুজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এতে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত সাংবাদিকেরা অংশ নিয়ে তাদের মতামত দেন।
এনায়েত করিম/মাহফুজ