ঢাকা ৩ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
English

ভূমধ্যসাগরে নিহত ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ দাফন

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৪ এএম
আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৮ এএম
ভূমধ্যসাগরে নিহত ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ দাফন
লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ খায়রুল বাসার। ছবি: সংগৃহীত

লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌ দুর্ঘটনার শিকার ২৩ অভিবাসন প্রত্যাশীর মরদেহ দাফন করা হয়েছে। তাদের অবয়ব দেখে বাংলাদেশি বলে ধারণা করা হয়েছে।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় এমন তথ্য দিয়েছেন লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ খায়রুল বাসার।

তিনি বলেন, ২৫ জানুয়ারি রাতে লিবিয়া উপকূল থেকে ৫৬ জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা ইতালির উদ্দেশে রওয়ানা দেয়। খুব সম্ভবত এদিন রাতেই নৌকাটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। পরে ২৮, ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি উপকূলে মরদেহ ভেসে আসতে থাকে। ২৮ জানুয়ারি সাতজন, ২৯ জানুয়ারি ১১ জন, ৩০ জানুয়ারি ৩ জন ও ৩১ জানুয়ারি ২ জনসহ মোট ২৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মরদেহগুলো আজদাদিয়া এলাকায় সমাহিত করা হয়েছে। ‘লাশগুলো পচে গিয়েছিল। এগুলো রাখার কোনো উপায় ছিল না।' মরদেহ উদ্ধার ও দাফনের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তারা রেড ক্রিসেন্ট ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের লোকজন। তারা জানিয়েছেন, অববয়ব দেখে তাদের মনে হয়েছে, লাশগুলো বাংলাদেশি নাগরিকদের। লাশগুলোর সঙ্গে কোনো ডকুমেন্ট ছিল না।

তিনি বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এ ছাড়াও মুমুর্ষু অবস্থায় আরও দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদেরকে সম্ভবত সেনাবাহিনী বা পুলিশের একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের খোঁজ পাইনি। বাকি যারা এখনও নিখোঁজ তাদেরও খোঁজ পাওয়া যায়নি। সূত্র: ইউএনবি

মেহেদী/

সেনানিবাসে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ০৫:৫২ পিএম
আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫, ০৬:৫৪ পিএম
সেনানিবাসে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষের (বিএনএসিডব্লিউসি) সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত। ছবি: আইএসপিআর

ঢাকা সেনানিবাসে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষের (বিএনএসিডব্লিউসি) ২৪তম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) মাল্টিপারপাস হলে বিএনএসিডব্লিউসির ওই সভা আয়োজন করা হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনএসিডব্লিউসির চেয়ারম্যান ও এএফডির প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা এবং বাহিনীগুলো থেকে বিএনএসিডব্লিউসির মোট ৪৩ জন উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা ওই সভায় অংশ নেন। এতে বাংলাদেশে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন ও রাসায়নিক অস্ত্র (নিষিদ্ধকরণ) আইন, ২০০৬-এর বিধিবিধান কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২৩তম সাধারণ সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। পাশাপাশি দেশের সার্বিক রাসায়নিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহতকরণ ও রাসায়নিক দুর্ঘটনা মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে, দেশে তফসিলভুক্ত রাসায়নিক দ্রব্য সংক্রান্ত সব ধরনের কার্যক্রম ও তফসিল বর্হিভূত স্বতন্ত্র জৈব রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিএনএসিডব্লিউসির সঙ্গে অনলাইনে নিবন্ধনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। তফসিলভুক্ত রাসায়নিক দ্রব্য আমদানির ক্ষেত্রে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডোর মাধ্যমে জাতীয় কর্তৃপক্ষের অনাপত্তিপত্র গ্রহণের বিষয়ে সভায় আলোচনা করা হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘমেয়াদে মজুদ করা রাসায়নিক দ্রব্যগুলো ধ্বংসকরাসহ অন্য বন্দরগুলোতে রাসায়নিক দ্রব্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহত করাসহ নানা প্রয়োজনীয় বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। 

আলমগীর/সালমান/

ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা করতে হবে: গোলাম মোস্তফা

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম
আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫, ০৪:১৫ পিএম
ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা করতে হবে: গোলাম মোস্তফা
ভিসিসি চেয়ারপারসন মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভয়েস অব কনসাস সিটিজেনের (ভিসিসি) চেয়ারপারসন মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। 

গত শুক্রবার ভোররাতে ইরানে ইসরায়েলি হামলা থেকে শুরু করে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে এবং তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার (১৭ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ‘সব ধরনের আন্তর্জাতিক আইন ও নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল ইরানে হামলা চালিয়েছে, যা বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি। ইসরায়েলের সন্ত্রাসী নীতির কারণেই তাদেরকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। অনতিবিলম্বে ইরানে হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধে ইসরায়েলকে বাধ্য করতে মুসলিম বিশ্বকে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মদদেই ইরানে ইসরায়েলের বেপরোয়া সামরিক হামলা। ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ইরানে সামরিক হামলা ও গাজায় ধারাবাহিক গণহত্যা ইসরায়েলের চূড়ান্ত ঔদ্ধত্যমূলক অপরাধের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।’

গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এই হামলার মধ্য দিয়ে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল তার সন্ত্রাসী রূপের আবারও বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। এই হামলা গোটা মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বকে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। ইসরায়েলের এহেন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধে জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়কে সোচ্চার হতে হবে। আগ্রাসী ইসরায়েলের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের তীব্র জবাব দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের এই বেপরোয়া আগ্রাসী তৎপরতার পেছনে রয়েছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ। প্রকৃতপক্ষে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মদদের কারণেই গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল আগ্রাসী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে আরব দুনিয়ার বিভক্তির সুযোগ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে অপ্রতিরোধ্য সামরিক শক্তি হিসেবে নিজেদের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।’

সালমান/

দুদকের দৃষ্টিতে টিউলিপের পরিচয় একজন অভিযুক্ত

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ০১:৫৫ পিএম
আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫, ০২:০৮ পিএম
দুদকের দৃষ্টিতে টিউলিপের পরিচয় একজন অভিযুক্ত
টিউলিপ সিদ্দিক

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তিনটি মামলার বিচার চলছে, আরেকটি তদন্তাধীন। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ২০১৩ সালে দেশের একটি মাছের খামার থেকে তিনি ৯ লাখ টাকা আয় করেন। ইনকাম ট্যাক্সে হঠাৎ করেই ১০ থেকে ৩০ ভরি স্বর্ণ বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন অসংগতি পাওয়া গেছে। তিনি যতই বলুক না কেন তিনি ব্রিটিশ, আমরা উপযুক্ত কাগজপত্র পেয়েছি যে, তিনি বাংলাদেশি। এখন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নিজের সুবিধার জন্য কখনো ব্রিটিশ, কখনো বাংলাদেশি বলে পরিচয় দিচ্ছেন। তবে, দুদকের দৃষ্টিতে তিনি শুধুই একজন অভিযুক্ত। আমরা আমাদের নাগরিকের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ 

সোমবার ( ১৬ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন দুদক চেয়ারম্যান। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘টিউলিপ নিজেকে নির্দোষ দাবি করলে মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন কেন? তার আইনজীবী দুদকে চিঠি লিখলেন কেন? আমরা তার আইনজীবীকে জানিয়েছি, আমাদের আইনের বিধান অনুযায়ী তাকে (টিউলিপ) আমাদের আদালতে মোকাবিলা করতে হবে।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘টিউলিপ যদিও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন, প্রধান উপদেষ্টা তাকে দেননি এবং কেন সেটা হয়নি তার যথাযথ ব্যাখ্যা প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন। আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী, একজন অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে এমন সাক্ষাতের সুযোগ নেই।’

যুক্তরাজ্যে আরও সম্পদ জব্দের চেষ্টা: মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাভেদের ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি এবং এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমামের সম্পত্তি জব্দ করতে বাংলাদেশের আদালতের আদেশসহ প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাপ্ত মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্টের (এমএলএআর) মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য লন্ডনে পাঠানো হয়েছে।’

দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও আমার লন্ডন সফর আগেই নির্ধারিত ছিল। একই সময়ে প্রধান উপদেষ্টার সফরও সেখানে ছিল। কাজেই আমাদের যাওয়াটা একসঙ্গে হয়েছে। কিন্তু প্রোগ্রামটা আলাদা ছিল। আমরা (গভর্নর ও দুদক চেয়ারম্যান) আগেই ঠিক করেছিলাম যে, লন্ডনে জাতীয় অপরাধ সংস্থা (ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি-এনসিএ) এবং আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সংস্থার (ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি-করাপশন কো-অর্ডিনেশন সেন্টার) সঙ্গে আমাদের বৈঠক হবে। আমরা বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ও সম্পদের একটি প্রাথমিক তালিকা এবং আদালতের আদেশ সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি। আমি বলতেই পারি, এনসিএ খুবই কার্যকরভাবে কাজ করেছে। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাভেদের পাচার করা টাকায় কেনা অনেক সম্পদ তারা জব্দ করতে আমাদের সহায়তা করেছে। এনসিএর এই বন্ধুসুলভ সহযোগিতার জন্য আমরা তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি। আমরা লন্ডনে উপস্থিত থাকার সময়ই সম্পদ জব্দের আদেশ জারি হয়। বিভিন্ন দেশে জাভেদের ৫৮০টি বাড়ির খোঁজ আমরা পেয়েছি। এর মধ্যে ৩৪৩টি যুক্তরাজ্যে, ২২৮টি সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং ৯টি যুক্তরাষ্ট্রে। 

বাংলাদেশের থাকা বাদ দিয়ে শুধু যুক্তরাজ্যের ৩৪৩টি বাড়ির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭৩.১৫ মিলিয়ন পাউন্ড, অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০২৫ কোটি টাকা। এনসিএ ইতোমধ্যে এই সম্পদ ফ্রিজ করেছে। এ ছাড়া তার প্রায় ২৫ লাখ ডলারের সমপরিমাণ ব্যাংক আমানত (প্রায় ৩৫ কোটি টাকা) ফ্রিজ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে ‘মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট’ পাঠানো হয়েছে। আমাদের সৌভাগ্য যে, যুক্তরাজ্য প্রথমে সাড়া দিয়েছে। লন্ডন সফরের সময় ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি-করাপশন কো-অর্ডিনেশন সেন্টার অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে একটি ‘আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কাঠামো’ তৈরি করার চেষ্টা চলছে। এ ধরনের অনুসন্ধান ও আইনি ব্যবস্থায় বাংলাদেশ এখনো অভিজ্ঞ নয়, তাই এনসিএ আমাদের প্রশিক্ষণ দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইতোমধ্যে একজন বিদেশি প্রশিক্ষক আমাদের সঙ্গে কাজ শুরু করছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকও এই উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে। গভর্নর নিজে লন্ডনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে পৃথক সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। এখানে একটা সূক্ষ্ম বিষয় রয়েছে- জব্দকৃত সম্পদ বাংলাদেশে ফেরত আনতে হলে আমাদের দাবি যথাযথভাবে প্রমাণ করতে হবে। আমাদের আদালতের আদেশের পাশাপাশি এনসিএর সহযোগিতায় যুক্তরাজ্যের আদালতেও একইভাবে প্রমাণ করতে হবে। এরপর সেসব অর্থ-সম্পদ আনার প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব।’ 

মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘যারা অর্থ পাচার করেছে, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে অর্থ ফেরত আনার একটি প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় আলোচনা হয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে আমরা শুধু বলতে চাই, দুদকের যেসব মামলা রয়েছে, তার কোনোটিই আপস বা মীমাংসাযোগ্য নয়। যেহেতু দুদকের মামলা ফৌজদারি প্রকৃতির, সেগুলোর নিষ্পত্তি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সম্ভব নয়। তবে গভর্নর যে দেওয়ানি মামলার কথা বলেছেন, তা আমাদের আওতাভুক্ত নয়। আমরা দুদকের বিধিবদ্ধ আইনের আওতায় থেকে যতটুকু করণীয়, তা করে যাচ্ছি।’
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ১৯৭৪ সালের আসামি প্রত্যর্পণ আইন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় ফেরানোর বিষয়ে সরকার চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট করাপশন (ইউএনসিএসি) এবং ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট ট্রান্সন্যাশনাল অর্গানাইজড ক্রাইমের (ইউএনটিওসি) আওতায় আনার প্রচেষ্টা রয়েছে।’

ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের বৈঠক চলছে

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ০১:০৪ পিএম
আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫, ০১:০৮ পিএম
ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের বৈঠক চলছে
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ছবি: খবরের কাগজ

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের মুলতবি বৈঠক করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে শুরু হওয়া এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ। 

দ্বিতীয় ধাপের বৈঠকের দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ছাড়া আমন্ত্রিত সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।

আজকের বৈঠকে সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, নারী প্রতিনিধিত্ব, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ প্রথম ধাপের অসমাপ্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলছে।

বৈঠক শুরুর আগে আলোচনার সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ জানান, জুলাইয়ের মধ্যে ‘জাতীয় সনদ’ তৈরিতে তারা আশাবাদী। তিনি আশা করেন, জাতীয় স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যের প্রশ্নে ছাড় দেবে। জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে তারা জাতীয় সনদ তৈরিতে সক্ষম হবেন। আগামী ১৮, ১৯ এই দুদিনও ঐকমত্যে প্রয়োজনে সংস্কারের অসমাপ্ত আলোচনা এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে সহায়তা করবে। 

তিনি জানান, রাজনৈতিক দলগুলো চাইলে আগামী শনিবারও (২১ জুন) আলোচনা অব্যাহত রাখতে চায় কমিশন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের তিন দিনব্যাপী এই বৈঠক চলবে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। এ ধাপেও বিএনপিসহ ৩০টি দলের সঙ্গে এ সংলাপ চলার কথা রয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে সংলাপ করে। সেখানে অনেক বিষয়ে ঐকমত্য হলেও কমিশনের মৌলিক প্রস্তাবে দ্বিমত ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর। সেসব প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যে পৌঁছাতে ২ জুন থেকে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

পরদিন ৩ জুন বিষয়ভিত্তিক আলোচনার মধ্য দিয়ে ঈদের আগে সংলাপের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তিনটি বিষয়ে আলোচনার পরে ওই দিন বৈঠকটি মুলতবি করা হয়। 

এলিস/সালমান/

জাতিসংঘের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রথমবার ঢাকা সফরে

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ১২:০২ পিএম
জাতিসংঘের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রথমবার ঢাকা সফরে

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের গুমবিষয়ক কার্যনির্বাহী দল ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সের (ডব্লিউজিইআইডি) দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল চার দিনের সফরে গত রবিবার ঢাকায় এসেছে। প্রায় এক দশকের চেষ্টার পর এবারই প্রথমবারের মতো তারা ঢাকায় আসার সুযোগ পেলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের সম্মতি পাওয়ার পর এই সফরটি বাস্তবায়ন সম্ভব হলো।

বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ঘটে যাওয়া গুমের ঘটনাগুলো তদন্তের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে সফরের অনুমতি চেয়ে আসছিল জাতিসংঘের এ ওয়ার্কিং গ্রুপ। তারা প্রথম ২০১৩ সালের ১২ মার্চ তৎকালীন সরকারকে চিঠি দিয়ে সফরের আগ্রহ জানায়। এরপর একাধিকবার অনুরোধ জানানো হলেও সাড়া মেলেনি। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৪ এপ্রিল অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এবার অন্তর্বর্তী সরকারের অনুরোধে সাড়া দেয়।

সফরকালে প্রতিনিধিদলটি আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী, গুমসংক্রান্ত কমিশনের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গুমের শিকার পরিবারগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে। পাশাপাশি নীতিগত আলোচনায়ও অংশ নিয়েছে।
ডব্লিউজিইআইডির ভাইস চেয়ারম্যান গ্রাজিনা বারানোস্কা গতকাল সোমবার পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে বলেন, ‘বাংলাদেশ গুমবিষয়ক সনদে স্বাক্ষর করলেও এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এ সংকট কাটানোর সবচেয়ে সহজ ও দ্রুত উপায় হলো গুমের শিকার পরিবারগুলোর কথা শোনা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ভুক্তভোগীদের সহযোগিতার জন্য এসেছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমে পর্যবেক্ষণ বাড়াতে হবে।’

ওয়ার্কিং গ্রুপের অপর সদস্য আনা লোরেনা ডেলগাদিলো পেরেজ বলেন, ‘আমরা সরকার, সুশীল সমাজ ও গুমের শিকার পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা এবং বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।’

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এই সফরের মূল উদ্দেশ্য তদন্ত নয়, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং সে অনুযায়ী সুপারিশ করা। গত জুলাইয়ে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেন। আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসের এক দিন আগে বাংলাদেশ এ চুক্তিতে সই করে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ৭৬তম দেশ হিসেবে সনদে যুক্ত হয়। 

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে এ সনদ গ্রহণ করে।

সূত্রগুলো জানায়, দীর্ঘদিন ধরে এ সনদে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘের চাপ থাকলেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার বরাবরই অনাগ্রহী ছিল। দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ সনদে অনুস্বাক্ষর করেছে। ভারত শুধু সই করলেও এখনো অনুস্বাক্ষর করেনি।

ডব্লিউজিইআইডির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৭০টি গুমের ঘটনা এখনো নিষ্পত্তিহীন রয়েছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ৮৮ জনের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে ৫ জন আটক, ১০ জন মুক্ত অবস্থায় রয়েছেন। বাকিদের খোঁজ মেলেনি।