ঢাকা ৭ চৈত্র ১৪৩১, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
English
শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১

এখনো বিছানায় জুয়েল, দিশেহারা কৃষক বাবা

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:১২ এএম
এখনো বিছানায় জুয়েল, দিশেহারা কৃষক বাবা
জুয়েল রানা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পেটে গুলিবিদ্ধ হন জুয়েল রানা। একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও এখনো তিনি বিছানায়। তার দরকার উন্নত চিকিৎসা। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের পক্ষে তার চিকিৎসা ব্যয় মেটানো আর সম্ভব হচ্ছে না। জুয়েলের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন দিশেহারা তার কৃষক বাবা আব্দুল জব্বার শেখ।

জুয়েল রানা (২৮) সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘গত ১৯ জুলাই ঢাকার বিজয় সরণি এলাকায় মিছিলে ছিলাম। আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। হঠাৎ আমার পেটে গুলি বিদ্ধ হয়। সহযোদ্ধারা আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে আমার শরীরে অস্ত্রোপচার হয়। এরপর একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও সুস্থ হতে পারিনি। আরও উন্নত চিকিৎসা দরকার বলে ডাক্তার জানিয়েছেন।’

চিকিৎসাধীন মো. জুয়েল রানা আরও বলেন, ‘আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশে আর কোনো স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট সরকার দেখতে চাই না। আমরা চাই বৈষম্যবিরোধী, অসাম্প্রদায়িক ও সঠিক একটি সরকারব্যবস্থা।’ 

জুয়েল রানার বাড়ি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে। তিনি সরকারি ভোলা কলেজের দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মেধাবী ছাত্র। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ছাত্রদলের সহসভাপতি ও জেলা ছাত্রদলের সদস্যও তিনি। তার স্ত্রীর নাম মুনিয়া আক্তার (২৪)। বাবা আব্দুল জব্বার শেখ কৃষিকাজ করেন। মা তাছলিমা বেগম গৃহিণী।

মুনিয়া বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়েও অলৌকিকভাবে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি বিছানায়। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন নিয়মিত থেরাপি নিতে জেলা হাসপাতালে যেতে হয়। তার দরকার উন্নত চিকিৎসা। এ জন্য আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।’

মুনিয়া আক্তার জানান, জুয়েলসহ তিনি গ্রামে পরিবারের সঙ্গেই বসবাস করেন। পরিবারে বাবা-মা ছাড়াও এক ভাই ও এক বোন রয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারের অর্থসংকট ঘুচাতে জুয়েল ছোটখাটো ব্যবসা করতেন। 

তিনি আরও জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাড়া দিয়ে তিনি ১৯ জুলাই ঢাকার বিজয় সরণি এলাকায় মিছিলে অংশ নেন। এ সময়ে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় রানাকে একাধিক ছাত্ররা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এখানেই তার শরীরে সফল অস্ত্রোপচার হয়। 

এরপর তার পেটে আবার দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার করা হয় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তার শরীরের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে তাকে শ্রীপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু গত ১১ আগস্ট শরীরের অবস্থার অবনতি হলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে তাকে আবার ভর্তি করা হয়। এখনো তার চিকিৎসা চলছে। 

মুনিয়া বলেন, ‘একদিকে চিকিৎসার খরচ, অন্যদিকে সংসার। রানার যেটুকু আয় রোজগার ছিল তাও বন্ধ। ফলে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে সুচিকিৎসাও হচ্ছে না। পুরো পরিবার এখন দিশেহারা অবস্থায় আছে।’ 

এ বিষয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মো. জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, ‘মো. জুয়েল রানা একজন ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী। আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি সক্রিয় ছিলেন।’ 

তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পেটে গুলিবিদ্ধ জুয়েল রানার প্রয়োজন সুচিকিৎসা।’ 

তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে জুয়েল রানার সুচিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এ প্রসঙ্গে আলাপকালে বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রকাশিত খসড়া তালিকা অনুযায়ী সুচিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য সাহায্য, সহযোগিতা করা হচ্ছে। শহিদ পরিবারগুলোর খোঁজ-খবরও নেওয়া হচ্ছে।’ সূত্র : বাসস

আ.লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা নেই: প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৯ পিএম
আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:৫১ পিএম
আ.লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা নেই: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ড. কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস। ছবি: পিআইডি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই অন্তর্বর্তী সরকারের। তবে দলের যে সব নেতার বিরুদ্ধে হত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধসহ অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাদের বাংলাদেশের আদালতে বিচার করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সম্ভাব্য অপরাধের অভিযোগ থাকায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) মামলা করার বিষয়টি সরকার বাতিল করেনি। এটি এখনো আলোচনার টেবিলে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ড. কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো দাবির কারণে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে না। সরকার নির্বাচনের জন্য দুটি সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করেছে এবং নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করা হবে না।’

অধ্যাপক ড. ইউনূস এভাবে ব্যাখ্যা দেন যে, যদি রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে সীমিতসংখ্যক সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের কোনো কারণ নেই। পাশাপাশি, তিনি জোর দিয়ে বলেন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গতকাল বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে। সরকারের নীতিনির্ধারণে দিকনির্দেশনা দিতে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করা ও স্বাক্ষরের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে তিনি জানান।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের কর্মকর্তারা এই সপ্তাহে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী নেতা আতাউল্লাহর গ্রেপ্তারকে সরকারের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতির ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবে প্রশংসা করেন।

কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণকারী আরাকান আর্মির সঙ্গে সরকারের আরও কার্যকর যোগাযোগের প্রয়োজন।’ অধ্যাপক ইউনূস জানান, ঢাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ সহায়তা ত্বরান্বিত করতে কাজ করছে এবং আসন্ন জাতিসংঘের বিশেষ সম্মেলনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাসংকটের প্রতি বৈশ্বিক মনোযোগ আকর্ষণ করার আশা করছে।’

ড. কমফোর্ট ইরো ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অপতথ্য ছড়ানোর মোকাবিলায় সহায়তার আশ্বাস দেন।

অধ্যাপক ইউনূস ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষার কথা জানান। তবে, তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশবিরোধী অপতথ্য প্রচারের একটি বড় অংশ ভারতীয় গণমাধ্যম থেকেই আসছে।’ সূত্র : বাসস।

এমএ/

এখন কেউ কেউ নৈতিক খবরদারির দায়িত্ব নিয়েছেন: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৭ পিএম
এখন কেউ কেউ নৈতিক খবরদারির দায়িত্ব নিয়েছেন: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত

সিটিজেনস প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘আমরা সম্প্রতি দেখেছি, সরকার যে কথা বলে বাস্তবতার মধ্যে তার পার্থক্য রয়ে গেছে। আগে দেখা না গেলেও এখন কেউ কেউ নৈতিক খবরদারি করার দায়িত্ব নিয়েছেন। তারা সংখ্যায় বেশি না। কিন্তু তাদের কণ্ঠস্বর উচ্চ। তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’ 

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ‘জাতীয় এসডিজি রিপোর্ট (ভিএনআর) ২০২৫: পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশার অন্তর্ভুক্তি’ শিরোনামে এক সংলাপে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। 

ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কারের বিষয়ে কয়েকটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। পরিতাপের ব্যাপার হলো, যতগুলো কমিশন গঠন হয়েছে সেখানে পার্বত্য বা সমতলের কোনো প্রতিনিধি ছিল? স্বৈরতন্ত্রের বা একনায়কতন্ত্রের কারণে আমাদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর টুঁটি চেপে ধরা হয়েছে। অর্থের সমস্যা হয়েছে। কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে অনেককে হেনস্তার শিকার করা হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘সরকার বদল হলেও মানুষ কাঠামোগত বৈষম্য থেকে মুক্তি পায় না। এ সময়কালে আমরা সবচেয়ে বড় আন্দোলন করলাম দেশ বৈষম্যবিরোধী হবে। কিন্তু আমরা কি সব বৈষম্যের কথা বলি? আমরা তো সব বৈষম্যের কথা বলি না। নারীর সব সুরক্ষার কথা কি আমরা বলি? তার আইনি সুরক্ষা বা আইনি উত্তরাধিকার বিষয়ে কি আমরা সমানভাবে উচ্চারণ করতে পারি? কারণ হলো, যে জিনিসটা আগে সে রকমভাবে ছিল না, এখন এসেছে। এক ধরনের নৈতিক খবরদারি করার দায়িত্ব কেউ কেউ নিয়েছেন। ঘরে নিরাপদে বসে থেকে অন্য কেউ পরিবর্তন নিয়ে আসবে, এমন ভাবনা বোকামির নামান্তর।’ 

জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি হুমা খান বলেন, ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সমস্যা সমাধানে আরও কৌশলী হতে হবে। আমাদের চিহ্নিত করতে হবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আসলে কারা। কোনো মানুষকে লিঙ্গ, ধর্ম, আয়ের দিক, ধর্মীয় দিক থেকে পরিচয় দিয়ে বলি, এরা হলো পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী। বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে হবে।’ 

সংলাপে আরও অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টার এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলি, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর সদস্য ড. মোস্তাফিজুর রহমান। 

মাহফুজ/
  

বাংলাদেশ থেকে আম, পেয়ারা ও কাঁঠাল আমদানি করবে চীন: প্রেস সচিব

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪৩ পিএম
বাংলাদেশ থেকে আম, পেয়ারা ও কাঁঠাল আমদানি করবে চীন: প্রেস সচিব
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ থেকে আম, পেয়ারা ও কাঁঠাল আমদানি করবে চীন। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সম্প্রতি ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে তার সরকারের এই আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাজধানীর ফরেন সার্ভিসে অ্যাকাডেমিতে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান। 

শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ থেকে আম, পেয়ারা ও কাঁঠাল আমদানি করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা আগেই চীন সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন। এখন চীন সরকার এই তিন ধরনের ফল আমদানি করতে খুবই আগ্রহী। এর মধ্য দিয়ে চীনে আমাদের রপ্তানির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

প্রেস সচিব বলেন, আমরা দেশটিতে কাঁঠাল বৃহৎ পরিসরে রপ্তানি করতে পারব। আর চীনারা বাংলাদেশের আম পছন্দ করছেন। এর ফলে দেশটিতে বৃহৎ আকারে আম রপ্তানিরও সুযোগ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, আম রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছু স্ট্যান্ডার্ড পরিপালন করতে হয়, সেক্ষেত্রে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফও) আমাদেরকে চার মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।

শফিকুল আলম বলেন, আশা করছি প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক অনেক গভীর হবে।

উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা আগামী ২৬ মার্চ চার দিনের জন্য চীন সফরে যাচ্ছেন। গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রেস সচিব জানান, সভায় ১ লাখ ৭২ হাজার সরকারি পদ শূন্য রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এসব শূন্য পদে নিয়োগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ভারতের খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ভিসার জটিলতা থাকলেও গত সাত মাসে ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য বেড়েছে। ভারতের সঙ্গে আমরা খুবই ভালো সম্পর্ক চাই, তবে সেটা অবশ্যই ন্যায্যতা, মর্যাদা এবং সমতাপূর্ণ হতে হবে।’

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘কুনমিংয়ের চারটি হাসপাতাল বাংলাদেশের জন্য ডেডিকেটেড করা হয়েছে এবং সেখানে বাংলাদেশের রোগীরা চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন, এটি ভালো খবর। তবে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা চাচ্ছেন- চীনের হাসপাতাল চেইন বাংলাদেশে আসুক। সেটি হলে আমরা চীনের উন্নতমানের চিকিৎসা আমাদের দোরগোড়ায় পাব।’

প্রেস সচিব জানান, অধ্যাপক ইউনূস চীনের বড় বড় হেলথকেয়ার কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন এবং তার এবারের সফরে প্রধান ফোকাস থাকবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে যেন চীনা বিনিয়োগ আনা যায়।

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।

গণমাধ্যমের নিরপেক্ষ ভূমিকা প্রত্যাশা করে সরকার: তথ্য উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৯:১২ পিএম
গণমাধ্যমের নিরপেক্ষ ভূমিকা প্রত্যাশা করে সরকার: তথ্য উপদেষ্টা
ছবি: পিআইডি

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, সরকার গণমাধ্যমের নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করে। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রাজধানীর তথ্য ভবনে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিল ও মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

গুজব ও অপপ্রচারের ব্যাপকতা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, সত্য প্রচারের পাশাপাশি গণমাধ্যমকে গুজব ও অপপ্রচার মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। গণমাধ্যমের সমালোচনাকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের গঠনমূলক সমালোচনা সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে। গঠনমূলক সমালোচনার পাশাপাশি গণমাধ্যমে সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপসমূহও প্রচার হওয়া উচিত। গত ১৬ বছরে গণমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় সরকার গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে। কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সরকার গণমাধ্যম সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। তিনি গণমাধ্যম সংস্কারের ক্ষেত্রে গণমাধ্যম মালিক, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

ইফতার মাহফিল ও মতবিনিময় সভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের মালিক, সম্পাদক এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা অবরুদ্ধ, পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৫ পিএম
আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৮:০১ পিএম
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা অবরুদ্ধ, পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার
বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উপ-আঞ্চলিক পরিচালক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফ মাহমুদ অপু। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উপ-আঞ্চলিক পরিচালক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফ মাহমুদ অপু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের কাছে দীর্ঘ সময় অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিকেলে নগরের ডবলমুরিং থানাধীন আগ্রাবাদ শেখ মুজিব সড়কের বনানী কমপ্লেক্স সংলগ্ন বাংলাদেশ বেতার ভবনে নিজ কার্যালয়ে এই ঘটনার শিকার হন তিনি।

অবরুদ্ধ থাকার এক পর্যায়ে বিকাল ৩টার দিকে ডবলমুরিং থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে থানায় নিয়ে আসেন।

এদিকে শিক্ষার্থীরা গত বছর ৪ আগস্ট কারফিউ জারির চিঠিতে স্বাক্ষরকারী এই কর্মকর্তাকে আটকের দাবি জানান।

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উপ-আঞ্চলিক পরিচালককে স্থানীয় পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীরা আটকে রেখেছিল। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে এরপর কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।’

সন্ধ্যায় ওসি আরও বলেন, ‘তিনি এখনও থানায় অবস্থান করছেন। তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে নাকি আটক দেখানো হবে, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।’

চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি অপুর বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে, শরীফ মাহমুদ অপু ৫৮ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।’

এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অপু বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন লোক অফিসে এসে আমাকে ফ্যাসিবাদের দোসর বলছেন। আমি তো সরকারি চাকরি করি, সিদ্ধান্ত সরকারই দেবে।’ 

এসময় জুলাই আন্দোলনে কারফিউর চিঠিতে স্বাক্ষরের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, ‘আমি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আমি না থাকলে আরেকজন থাকতো।’

নাইমুর/