ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

কোনো শয়তানকে মাঠে-ময়দানে দেখতে চাই না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:২৩ পিএম
আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৪২ পিএম
কোনো শয়তানকে মাঠে-ময়দানে দেখতে চাই না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। ছবি: খবরের কাগজ

সারা দেশে চলমান অপারেশন 'ডেভিল হান্টের' কথা উল্লেখ করে, 'আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাত থেকে কোনো শয়তান যেন পালাতে না পারে' বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর রাজারবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে  'দেশের পরবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ'বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠানে তিনি এ নির্দেশ দেন। 

আমরা কোনো অপরাধীকে রাস্তায়, বাজারে, মাঠে, ময়দানে, রাজপথে দেখতে চাই না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'প্রত্যেক অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে চাই। তাদের বিচার নিশ্চিত করতে চাই। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হতে বলব। অপারেশন ডেভিল হান্টের বিষয়ে আমি বলব, কোনো শয়তান যেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাত থেকে পালিয়ে না যেতে পারে।'

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো- জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসর, দুষ্কৃতকারী, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিয়েছে। কিন্তু তাদের দোসররা দেশে-বিদেশে সরকারের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।' 

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদিরা এ দেশের জনগণের সম্পদ অন্যায়ভাবে লুটপাট করে অঢেল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছে। যারাই তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে, তাদেরকে দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়েছে। দলীয় বাহিনীর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের লেলিয়ে দিয়েছে, অন্যায়ভাবে মামলা-হামলা দিয়ে হেনস্থা করেছে, গণমাধ্যমগুলো দখল ও নিয়ন্ত্রণ করেছে, মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে শায়েস্তা করেছে, অনুগত পুঁজিবাদী শ্রেণি তৈরি করে সম্পদ লুণ্ঠন করেছে। সিভিল সার্ভিস ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন করেছে, আদালতের স্বাধীনতা খর্ব করেছে।'

উপদেষ্টা বলেন, 'ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অন্যায়ভাবে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে। বিগত ১৬ বছরে অর্জিত অবৈধ সম্পদ ব্যবহার করে বর্তমানে তারা অপশক্তির সম্পৃক্ততায় নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত সন্ত্রাসী, নর হত্যায় জড়িত বিশেষ হেলমেট বাহিনী, ফৌজদারি অপরাধে সম্পৃক্ত ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসররা, অর্থ পাচারকারী, লুণ্ঠনকারী, ষড়যন্ত্রকারী, দুষ্কৃতকারী, রাষ্ট্রদ্রোহী, দুদকের মামলায় আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।'

তিনি বলেন, সরকারের পুলিশ বাহিনী, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা আইনি প্রক্রিয়ায় এসব অপরাধীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যককে গ্রেপ্তার  করেছে। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। সারা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অপতৎপরতাকারী এবং তাদের সহযোগীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীসমূহের সমন্বয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে 'অপারেশন ডেভিল হান্ট' অভিযান পরিচালনা শুরু হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, 'স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সারা দেশের অভিযানসংশ্লিষ্ট সামগ্রিক কার্যক্রম তদারকি করা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে স্থাপিত 'জয়েন্ট অপারেশন সেন্টারের' মাধ্যমে 'অপারেশন ডেভিল হান্ট'র সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয় করা হবে।' মেট্রোপলিটন এলাকায় মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এবং জেলা পর্যায়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ অভিযান পরিচালনায় সমন্বয় করবেন। সিএমএম আদালত, এমএম আদালত, সিজেএম আদালত, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারকরা, জেলা ম্যাজিস্ট্রটরা, স্পেশাল আদালতের বিচারকরা, আদালতে সরকারপক্ষের আইনজীবীরা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এই অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য নিয়োজিত। এ ছাড়াও সরকার ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ৮ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করেছে অপরাধীদের বিরুদ্ধে সামারি ট্রায়ালের জন্য। আপনারা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত সচেতন নাগরিক। আপনাদের দেশের জনগণ, সরকার এবং নিজ নিজ দায়িত্বের প্রতি জবাবদিহিতা, দায়বদ্ধতা ও কমিটমেন্ট রয়েছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আপনাদের অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় ভূমিকা পালন করা দরকার। 

তিনি বলেন, আইনজীবীদের আমি বলব আপনারা আদালতে দায়ের করা প্রতিটি মামলার ধার্য তারিখে ও সময়ে উপস্থিত থাকুন। প্রসিকিউটিং অ্যাজেন্সির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে পর্যাপ্ত তথ্য দিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ রাখুন। কোনোভাবেই যেন কোনো সন্ত্রাসী জামিন না পায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকুন। প্রয়োজনে আইজিপির টিম মামলাভিত্তিক অগ্রগতি নিয়ে পাবলিক প্রসিকিউটরদের সঙ্গে ১৫ দিন পর পর বসতে পারেন অগ্রগতি, গ্যাপ, ডকুমেন্ট, নথি পর্যালোচনা ও আদালতে উপস্থাপনের জন্য। আমরা দেখেছি রাজনৈতিক বিরোধীদের নিধনের জন্য বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার হাজার হাজার মামলায় নিরীহ, নিষ্পাপ সাধারণ মানুষকে আদালতের প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে বছরের পর বছর জেলে আটকে রেখেছে। নিষ্পাপ মানুষকে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে। এই অন্যায় আচরণের বিচার হয়তো একদিন হবে। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী, মানুষের বুকে গুলি করে ঝাঁজরাকারী, হেলমেট বাহিনী, দুষ্কৃতকারী, উসকানিদাতা, জনগণকে ভয়ভীতি প্রদর্শনকারী ও দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার করে আদালতে যাবে আর তথ্যের সীমাবদ্ধতা কিংবা অ্যাজেন্সিগুলো ব্যর্থতার কারণে জামিন হয়ে পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়বে- এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

জাহাঙ্গীর/মেহেদী/

খবরের কাগজ সম্পাদকের বাবা মোহাম্মদ হোসেন হাওলাদারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৮ পিএম
খবরের কাগজ সম্পাদকের বাবা মোহাম্মদ হোসেন হাওলাদারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
প্রয়াত মোহাম্মদ হোসেন হাওলাদার

দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক ও প্রখ্যাত সাহিত্যিক মোস্তফা কামাল-এর বাবা মোহাম্মদ হোসেন হাওলাদারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (১৭ এপ্রিল)। 

২০২৪ সালের এইদিনে সকাল ৯টায় তিনি রাজধানীর উত্তরায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। 

মোহাম্মদ হোসেন হাওলাদার ১৯৩০ সালে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে আন্ধার মানিক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পেশায় ছিলেন শিক্ষক। গুণী এই শিক্ষক অবসর জীবনে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

মোহাম্মদ হোসেন হাওলাদারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পরিবারের পক্ষ থেকে কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।  

আবদুল্লাহ আল মামুন/

কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করে বরখাস্ত বিজিএফসিএলের ৪ কর্মচারী

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৪ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৪ পিএম
কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করে বরখাস্ত বিজিএফসিএলের ৪ কর্মচারী
বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল)। ছবি: খবরের কাগজ

কাজ না করেও ওভারটাইম দেওয়ার দাবি না মানায় এক কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) চার কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) তাদের বরখাস্ত করা হলেও গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হয়।

বরখাস্তরা হলেন- গাড়িচালক মো. মমিনুল ইসলাম ও মো. মোস্তাক আহাম্মদ এবং প্লান্ট অপারেটর মো. শাহনূর আলম ও মো. জামাল হোসেন।

এ ঘটনায় আহত ভুক্তভোগী কর্মকর্তা মো. মনজিল হাসিন সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

বিজিএফসিএল সূত্রে জানা গেছে, বিজিএফসিএলের বেশিরভাগ কর্মচারী দায়িত্ব পালন না করেও প্রতি মাসে ন্যূনতম ১০৪ ঘণ্টা ওভারটাইম দাবি করছেন। এজন্য কর্মচারীদের সংগঠন সিবিএর নেতা-কর্মীরা সংশ্লিষ্ট তদারক কর্মকর্তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন।

গত ১৩ এপ্রিল বরখাস্ত হওয়া ওই চার কর্মচারীসহ পাঁচজন ওভারটাইম ইস্যুতে কম্প্রেসর মেকানিক্যাল মেইনটেইন্যান্স শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মনজিল হাসানের সঙ্গে অসদাচরণ করে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।

মূলত বরখাস্তরা প্লান্ট ও ওয়ার্কশপে উপস্থিত না থাকলেও দৈনিক চার ঘণ্টা এবং মাসে ন্যূনতম ১০৪ ঘণ্টা ওভারটাইম দাবি করেন। এটি তাদের নিয়ম বলে উল্লেখ করেন তারা নিয়ম না মানলে কর্মকর্তাদের কেউই বিজিএফসিএলে চাকরি করতে পারবেন না বলে হুমকি দেওয়া হয় মনজিলকে।

এ ছাড়া ওভারটাইম রেজিস্ট্রারে বাস্তবিক বহির্গমনের সময়ের সঙ্গে অতিরিক্ত দুই ঘণ্টা যোগ কর রেজিস্ট্রি করার দাবি জানান। তবে এটি অনৈতিক হওয়ায় যতক্ষণ ওভারটাইম করবেন, ততক্ষণই রেজিস্ট্রি করার কথা বললে ক্ষিপ্ত হয়ে মনজিলকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন তারা।

এ ঘটনায় বিজিএফসিএলের মহাব্যবস্থাপকের (প্রশাসন) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন মনজিল। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এ বিষয়ে বিজিএফসিএলের মহাব্যবস্থাপক (কম্প্রেসর ও জেনারেটর) মো. আবুল কাসেম খান জানান, কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ওই চার কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সুমন/

আবহাওয়ার পূর্বাভাস: ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে আজ যেসব অঞ্চলে

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩০ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম
আবহাওয়ার পূর্বাভাস: ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে আজ যেসব অঞ্চলে
ছবি: খবরের কাগজ

সারা দেশের কিছু কিছু জায়গায় আজ অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, এ ছাড়া সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

সুমন/

আগারগাঁও-উত্তরায় ৪০০ অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করল ডিএনসিসি

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৫ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৫ পিএম
আগারগাঁও-উত্তরায় ৪০০ অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করল ডিএনসিসি
আগারগাঁও-উত্তরায় ফুটপাত ও রাস্তা দখলমুক্ত করতে দুটি পৃথক অভিযানে প্রায় ৪০০ অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর আগারগাঁও-উত্তরায় ফুটপাত ও রাস্তা দখলমুক্ত করতে দুটি পৃথক অভিযানে প্রায় ৪০০ অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়। 

আগারগাঁও শেরেবাংলা নগর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীদুল ইসলাম।

অভিযানে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের ১ নম্বর গেটসংলগ্ন রাস্তার পশ্চিম দিকে মিরপুর সড়কের উভয় পাশের প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়। এর ফলে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত হয়েছে। অভিযানে উচ্ছেদ করা দোকানের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন খাবারের হোটেল, টং দোকান, হকারদের বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান।

এ ছাড়া রাজধানীর উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসির অঞ্চল-১-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছাদেকুর রহমান এবং ডিএনসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম।

অভিযানে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর সুইস গেট থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত রানাভোলা সড়কে অবৈধভাবে গড়ে তোলা দুই শতাধিক দোকান উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদের ফলে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত হয়েছে। উচ্ছেদ করা দোকানের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন খাবারের হোটেল, টং দোকান, বাঁশের আড়ত, নার্সারি, হকারদের বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মুখপাত্র মকবুল হোসাইন বলেন, ‘ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নগরবাসীর সঙ্গে গণশুনানিতে অংশ নিয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন, পহেলা বৈশাখের পর ফুটপাত ও রাস্তা দখলমুক্ত করতে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু হয়েছে। রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে এই অভিযান চলমান থাকবে।

বৃষ্টিতে স্বস্তি, যানজটে নাকাল রাজধানী

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৭ এএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৪ এএম
বৃষ্টিতে স্বস্তি, যানজটে নাকাল রাজধানী
বৃষ্টিতে রাজধানীতে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ছবি: খবরের কাগজ

ভ্যাপসা গরমের মধ্যে অবশেষে নেমেছে স্বস্তির বৃষ্টি। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতে শুরু করে। এরপর ঝোড়ো হাওয়া উড়িয়ে নামে তুমুল বৃষ্টি। তীব্র গরমের পর বৈশাখের প্রথম বৃষ্টিতে নগরজীবনে এসেছে প্রশান্তি। তবে নগরবাসী পুরোপুরি উপভোগ করতে পারেননি এ বৃষ্টি। যারা কর্মব্যস্ততার কারণে ঘরের বাইরে বেরিয়েছিলেন, তাদের যানজটের যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা এলাকায় ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ কর্মসূচির কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। 

আকাশ ভেঙে বৃষ্টি এল 

তখন ঘড়ির কাঁটায় বেলা আড়াইটা। রাজধানীর হাতিরঝিলসংলগ্ন কুনিপাড়া এলাকায় তখন তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) প্রাঙ্গণে শ্রমিকদের দল বেঁধে ভিজতে দেখা গেল এ সময়। একটু দূরেই ভারী শিল্প এলাকায় শ্রমিকরাও সড়কে নেমে আসেন। এদের একজন বলেন, ‘অনেক গরম গেল কয়টা দিন। এ বৃষ্টিটার জন্য ওয়েট করতে ছিলাম। কী যে শান্তি লাগতেসে।’

মগবাজারের আমবাগান এলাকার একটি গলিতে শিশু-কিশোরদের দল বৃষ্টির মধ্যে মেতে ওঠে খেলায়। মধুবাগ মাঠে ফুটবল নিয়ে নেমে পড়ে দস্যি ছেলের দল। হাতিরঝিলের পার্কে বসে থাকা ভবঘুরের দলও ভিজেছিল আনমনে। মগবাজার মোড় থেকে মৌচাক যাচ্ছিলেন শ্রাবণী হালদার। তুমুল বৃষ্টিতে রিকশা পাচ্ছিলেন না, মিনিট ১৫ অপেক্ষা করার পর একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা পেয়ে যান তিনি। তারপর রিকশার হুড খুলে  রওনা হন গন্তব্যে। 

তীব্র যানজটে নাকাল

তবে এই বৃষ্টিবিলাস সব নগরবাসীর ভাগ্যে সয়নি। বুধবার বেলা ১১টা থেকে সাতরাস্তায় শিক্ষার্থীদের অবরোধ কর্মসূচি চলে রাত পর্যন্ত। পুরো সময় রাজধানীর মহাখালী থেকে মগবাজার পর্যন্ত শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ সড়ক ছিল স্থবির। এ সড়কটির আশপাশে তেজগাঁওয়ের লাভ রোড, নাবিস্কো, দক্ষিণ বেগুনবাড়িসহ পুরো হাতিরঝিলে যানজট পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে। শুধু তা-ই নয়, এ এলাকার যানজটের প্রভাব পড়ে ধানমন্ডির মিরপুর রোড, শাহবাগ, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, রামপুরা-বাড্ডার প্রগতি সরণিতে। যানজট ছড়িয়ে পড়ে গুলিস্তান, মতিঝিল এলাকাতেও। 

বুধবার বেলা ৩টার দিকে রাজধানীর রামপুরা থেকে ধানমন্ডি যাচ্ছিলেন মোস্তাকিম ভূঁইয়া। পেশায় ব্যবসায়ী এই মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি এক ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে ছিলেন হাতিরঝিলেই। তিনি বলেন, ‘চক্রাকার বাসে কোনোভাবে মহানগর আবাসিক এলাকা পার হতেই জ্যাম শুরু হলো। মধুবাগ ব্রিজ থেকে এফডিসি মোড় আসতে সোয়া এক ঘণ্টা সময় লেগেছে। বাস থেকে নেমে যাব সে উপায়ও নেই।’

বুধবার সকালে অবরোধের পর মগবাজার-সাতরাস্তা ফ্লাইওভারেও অনেক যানবাহন আটকে থাকে। সাতরাস্তা মোড়ে বলাকা পরিবহনের চালক টিটু মিয়া বলেন, ‘সকালে সাতরাস্তা মোড়ে আইস্যাই দেখি অবরোধ শুরু হইসে। আর আগাইতে পারি নাই। আমার হেল্পার আর আমি বাস নিয়া বইস্যা আছি। সারা দিনে অন্তত তিনটা ট্রিপ মারতে পারতাম। আজ এক ট্রিপও হইল না। মহাজনরে জমাটা দিমু কী আর নিজে খামু কী?’

সংগীতশিল্পী নির্ঝর চৌধুরী বলেন, ‘বুধবার বেলা ৩টায় বনশ্রীর একটি রেকর্ডিং স্টুডিওতে আমার গান রেকর্ড করার কথা। কিন্তু যেতেই পারলাম না। আটকে রইলাম ধানমন্ডি।’ শফিকুল ইসলাম গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে দৈনিক বাংলা মোড় থেকে কারওয়ান বাজার যাচ্ছিলেন। বৃষ্টিতে ভিজে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাসের অপেক্ষায়। কোনো বাসে উঠতে না পেরে সিএনজিচালিত অটোরিকশার খোঁজ করেন। উপায়ান্তর না পেয়ে পরে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই তিনি রওনা হন। কিন্তু পরীবাগ মোড়ে এসে তিনি আটকে যান যানজটে। আধা ঘণ্টারও বেশি সময় যানজট বসে থেকে আবারও হাঁটতে শুরু করেন শফিকুল। ঢাকার আকাশ তখন প্রবল বৃষ্টি ঝরাচ্ছে। 

বুধবার বেলা ৩টায় রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যায়। যানজটে এমনিতেই গতিসীমা ছিল কম, জলাবদ্ধতায় সড়কে নেমে আসে স্থবিরতা। মিরপুরের বিভিন্ন সড়ক, মোহাম্মদপুরের বছিলা চৌরাস্তা, মালিবাগ রেলগেট এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। পুরান ঢাকার অলিগলিতে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে । 

একটি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান তুর্য বলেন, ‘মালিবাগের চৌধুরীপাড়া থেকে দুই ঘণ্টায়ও আমি লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাসায় ফিরতে পারিনি।’