
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বক্তব্যে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে সেজন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে সবাইকে মধ্যবর্তী অবস্থান ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া এক পোস্টে এমন আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ‘জনগণ ও মধ্যবর্তী অবস্থানের সপক্ষে’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে গণ-অভ্যুত্থান ও ‘মাস্টারমাইন্ড নিয়েও কথা বলেছেন তিনি।
মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘এ অভ্যুত্থান সকলের। সেজন্যই মাস্টারমাইন্ড নামক মিডিয়ার তৈরি হাইপকে আমি শুরুতেই প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা সিদ্ধান্ত যারা নিতাম, তারা প্রায় সকল সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে অনেক স্টেকহোল্ডারদের সাথে কথা বলেছি। একটা সিদ্ধান্ত ফাইনালাইজ করতে অন্তত ৫/৬টা গ্রুপের মতামত শুনে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হইসে। ফলে, এটা আসলে আমাদের সিদ্ধান্ত নেয়া বডির সামষ্টিক কৌশলগত সক্ষমতা যেমন, তেমনি অনেকগুলো গ্রুপ অব পিপলের অংশগ্রহণ ও পরামর্শের ও ফসল। কেউই অনুল্লেখযোগ্য নন। আর জনগণ তো ১৯-৩৩ জুলাই কারো সিদ্ধান্তের জন্য বসে থাকেনি। তবে, তারা অবশ্যই পাবলিক-প্রাইভেট থেকে শুরু করে মাদরাসা-স্কুল-কলেজের ছাত্রদেরকেই লেজিটিমেট (বৈধ) নেতৃত্ব হিসাবে মানতেন।’
ফেসবুকে দেওয়া ওই পোস্টে সবাইকে মধ্যবর্তী অবস্থান ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যবর্তী অবস্থান ধরে রাখতে হবে। সবাইকে নিয়ে এগুতে হবে কিন্তু, Saboteur (নাশকতাকারী) দের বাদ দিয়ে। Sabotage বা পেছন থেকে ছুরি মারা, অনার কোড না মানার অভ্যাস- এসব যেকোন বন্দোবস্তের জন্য হুমকিস্বরূপ। রাজনীতি মানে Gentlemen's Agreement ও থাকবে না এটা যারা ভাবেন, তারা নিজেদের শুধরে নিন।’
‘তৌহিদী জনতা’ আখ্যায়িত করা নিয়ে পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমার কোন কোন বক্তব্য হয়ত কারো কারো মনে কষ্ট দিয়েছে, বিশেষ করে তৌহিদী জনতা বলাটা। আপনারা যারা আমার বক্তব্যের কারণে নারাজ-নাখোশ হয়েছেন, আমি আপনাদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। এছাড়া গত কয়েক মাসে অন্যকোন বক্তব্যে কেউ আঘাত পেলে বা সেটাকে বিভাজনমূলক ভাবলে, সেক্ষেত্রেও আমি আমার বক্তব্য পুনর্বিবেচনার পক্ষে। ভারসাম্যপূর্ণ, বিভাজন ও ট্যাগিংবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করাটা জনগণের মধ্যকার ঐক্যের জন্য জন্য জরুরি। আমরা জালিম বা মজলুম কোনটাই হতে চাই না।’
গণঅভ্যুত্থানের সব শক্তির গন্তব্য নিয়ে মাহফুজ আলম আরও লিখেছেন, ‘আমাদের শত্রু অগণিত এবং তারা সবাই শক্তিধর। মিত্র খুবই কম। একটু ছাড় দিয়ে যদি আমরা মিত্রতা বাড়াতে পারি এবং শত্রুদের পরাস্ত করতে পারি, তা আখেরে এদেশের জনগণকেই উপকৃত করবে। গণ-অভ্যুত্থানের সকল শক্তির ঐক্যই আমাদের গন্তব্য। একটা হিস্টরিক ব্লক তৈরির সম্ভাবনা আমাদের সামনে ছিল। এখনো আছে বটে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ও বাংলাদেশপন্থি জনগোষ্ঠীকে নিজেদের মধ্যেই রাজনৈতিকভাবে ইতিবাচক প্রতিযোগিতা করতে হবে। কোনোভাবেই ফ্যাসিবাদী শক্তিকে রাজনীতিতে স্পেইস দেয়া যাবে না।’