ঢাকা ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
English

নদী দখলদার ও দূষণকারীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার দাবি এইচআরপিবি’র

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৫, ০৬:০৫ পিএম
নদী দখলদার ও দূষণকারীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার দাবি এইচআরপিবি’র
ছবি: খবরের কাগজ

পরিবেশ দূষণকারী ও নদী দখলকারীদের নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করতে নির্বাচনি আইনে (আরপিও) সংশোধনী আনার দাবি জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।

বুধবার (৫ মার্চ) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন পুরো কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে লিখিত আকারে এই দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।

এইচআরপিবি প্রেসিডেন্ট সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে।

বৈঠক শেষে এইচআরপিবি প্রেসিডেন্ট মনজিল মোরসেদ জানান, দেশে যত নদ-নদীর রয়েছে, আমরা পরিবেশ রক্ষায় আইনী লড়াই করছি। একটি আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমে আপিল বিভাগের নির্দেশনা রয়েছে নদী দখলকারী ও দূষণকারী যারা হবে তারা নির্বাচনে অযোগ্য হবে এমন মতামত দিয়েছে।

প্রতিনিধি দলে ছিলেন আইনজীবী মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, এখলাস উদ্দিন ভুঁইয়া, এএইচ এম ইমরুল কাওসার প্রমুখ।

এলিস/মাহফুজ

শেখ মুজিবসহ ৪ শতাধিক রাজনীতিবিদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিল, অধ্যাদেশ জারি

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১০:১৩ এএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ১০:১৩ এএম
শেখ মুজিবসহ ৪ শতাধিক রাজনীতিবিদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিল, অধ্যাদেশ জারি
ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও তাজউদ্দীন আহমদসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী চার শতাধিক রাজনীতিবিদের (এমএনএ/এমপিএ) মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিল করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৩ মে) রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগ থেকে এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) অধ্যাদেশে এসব নেতাদের পরিচয় ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। 

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, শুধু মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারই নন, আরও চার শ্রেণির স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ চার শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা হলেন-

১. যেসব বাংলাদেশি পেশাজীবী বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশেষ অবদান রেখেছেন এবং বিশ্ব জনমত গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।

২. যারা মুক্তিযুদ্ধকালীন গঠিত বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর) অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারী বা দূতসহ অন্যান্য সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

৩. স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সব শিল্পী ও কলাকুশলী এবং দেশ ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে দায়িত্ব পালনকারী সব বাংলাদেশি সাংবাদিক। 

৪. স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল।

বাতিল হওয়া জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন ২০২২ অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুসহ প্রবাসী সরকারের এমএনএ বা এমপিএ এবং উল্লেখিত চার শ্রেণির সবাই বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত ছিলেন। নতুন অধ্যাদেশে তাদের মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী করার ফলে তাদের বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিচিতি বাতিল হয়ে গেল।

তবে মুক্তিযুদ্ধকালীন রাজনীতিবিদদের বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিল নিয়ে তীব্র সমালোচনা দেখা দেয়। এ পর্যায়ে গত ১৫ মে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে আইন মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনার শর্তে খসড়াটি অনুমোদন করা হয়। এর পর আইন মন্ত্রণালয় সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার বিষয়টি অনুমোদন দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে আজ অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।

অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের প্রণীত খসড়া থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা ও মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী ধারায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। 

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের আলোকে খসড়াটি অনুমোদনের পরও দ্বিতীয় দফায় তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। অধ্যাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞাও পরিবর্তন করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত অধ্যাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা অর্থ যারা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে গ্রামে-গঞ্জে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এ ছাড়া যেসব ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে করে হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাদের এ দেশে সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামস, তৎকালীন মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম এবং দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন, এই রূপ সবাই বেসামরিক নাগরিক ওই সময়ে যাদের বয়স সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সর্বনিম্ন বয়সের মধ্যে ছিল এবং সশস্ত্র বাহিনী, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর), পুলিশ বাহিনী, মুক্তিবাহিনী, প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার (মুজিবনগর সরকার) ও ওই সরকার কর্তৃক স্বীকৃত অন্যান্য বাহিনী, নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স, আনসার সদস্য এবং বাংলাদেশের নিম্নবর্ণিত নাগরিকরাও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন, যথা (ক) হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগী কর্তৃক নির্যাতিত সব নারী (বীরাঙ্গনা) এবং (খ) মুক্তিযুদ্ধকালে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী ফিল্ড হাসপাতালের সব ডাক্তার, নার্স ও চিকিৎসা সহকারী।’

অধ্যাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পরিবর্তিত সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘মুক্তিযুদ্ধ’ অর্থ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষায় হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামস, তৎকালীন মুসলিম লীগ, জামায়াতে রাইফেলস, নেজামে ইসলাম এবং দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ।’

স্থিতিশীল বাজারে স্বস্তিতে ক্রেতারা: আসিফ মাহমুদ

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৯:৫৯ এএম
স্থিতিশীল বাজারে স্বস্তিতে ক্রেতারা: আসিফ মাহমুদ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘এবার স্থিতিশীল বাজারে স্বস্তিতে কেনাকাটা করতে পারছেন ক্রেতারা।’

মঙ্গলবার (৩ জুন) উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার ভেরিফায়েড ফেসবুকের এক পোস্টে এ কথা বলেন। 

পোস্টে তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবছর কোরবানির এক থেকে দুই সপ্তাহ আগে কারসাজি করে প্রায় সব ধরনের মসলার দাম কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিতেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। তবে এবার তা হয়নি। গত বছরের কোরবানির তুলনায় কমেছে অধিকাংশ মসলার দাম।’

উপদেষ্টা নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু মসলার বাজারমূল্য তুলে ধরেন। যেমন- গত বছর কোরবানি ঈদের সময় পেঁয়াজের কেজিপ্রতি মূল্য ছিল ৭০-৮০ টাকা। এখন ৪৫-৫০ টাকা। দেশি রসুনের কেজিপ্রতি মূল্য ছিল ১৯০-২০০ টাকা। এখন ১১০-১২০ টাকা। আদার কেজিপ্রতি মূল্য ছিল ২২০-২৬০ টাকা। এখন ১১০-১২০ টাকা। এরকম অধিকাংশ মসলার মূল্য গত বছরের চেয়ে কম।

পশুর হাটে চাঁদাবাজি করলে কঠোর ব্যবস্থা

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৯:৩৯ এএম
পশুর হাটে চাঁদাবাজি করলে কঠোর ব্যবস্থা
প্রতীকী ছবি

পশুর হাটে চাঁদাবাজি ও এক হাটের পশু অন্য হাটে নিয়ে গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গাবতলীতে পশুর হাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থাসংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম।

তিনি বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের সর্ববৃহৎ পশুর হাট গাবতলীসহ অন্য হাটের নিরাপত্তা জোরদার ও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। র‌্যাব-৪ তার দায়িত্বে থাকা হাটে ওয়াচ টাওয়ার ও অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনসহ মিরপুর বেনারসি পল্লি এলাকা এবং পাটুরিয়া ফেরিঘাট গরুর হাটে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করেছে। এ ছাড়া হাটে আভিযানিক দল নিয়োগ, গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, যাতে জনসাধারণ নির্বিঘ্নে কোরবানির পশু কিনতে পারেন।

তিনি বলেন, পশু পরিবহনে যেকোনো ধরনের চাঁদাবাজি বা এক হাটের পশু অন্য হাটে জোর করে নেওয়া বা মহাসড়কে পশুর হাট বসানোসহ যেকোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হলে বা এ ধরনের কোনো অভিযোগ পেলে দ্রুত সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে র‌্যাবের নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি বলেন, ঘরমুখী মানুষ যেন ছিনতাইকারী, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়াসহ কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে না পড়েন, সে জন্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বিশেষ করে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড, নবীনগর, বাইপাইল এলাকা এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, পাটুরিয়া ও আরিচা ফেরিঘাট এলাকায় নিয়মিত টহল মোতায়েন রয়েছে। বাসের টিকিট সিন্ডিকেট, কালোবাজারি কিংবা বিআরটিএ কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের মতো অপরাধ প্রতিরোধে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। গত সোমবারও গাবতলী বাস কাউন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে।

বিপণিবিতানে নিরাপত্তা নিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা মহানগরীসহ দায়িত্বে থাকা এলাকায় অবস্থিত শপিং কমপ্লেক্সগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে সাদাপোশাকে র‌্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় এবং যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে এ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বে থাকা এলাকার বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত চেকপোস্ট পরিচালনা ও সার্বক্ষণিক টহল দেওয়া হচ্ছে।

লে. কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, পশু বেচাকেনায় জাল টাকা ব্যবহার বন্ধে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধিসহ জাল টাকা শনাক্তকারী মেশিন স্থাপন করা হয়েছে, যাতে কোনো অসাধু চক্র অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটাতে না পারে। অজ্ঞান পার্টি এবং মলম পার্টি ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধী চক্রকে প্রতিহত করতে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। গত ১ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ১৭ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক আস্থা ভোটের পক্ষে বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধ

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১১:০০ পিএম
আস্থা ভোটের পক্ষে বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধ
রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের বৈঠক। ছবি: পিআইডি

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্যদের আস্থা ভোটের পক্ষে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বেশির ভাগ দলই ঐকমত্য পোষণ করেছে। এ ছাড়া সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চায় বেশির ভাগ দল। তবে দলগুলোর মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন কার অধীনে হবে তা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় নির্বাচন চায় না বিএনপি। ঠিক বিপরীত অবস্থানে নিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই স্থানীয় নির্বাচন চায় জামায়াত ও এনসিপি।

মঙ্গলবার (৩ জুন) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় এ প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। দুপুরে পৌনে ১২টার দিকে আলোচনা শুরু হয়ে শেষ হয় ৬টার দিকে। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ ২৮টি রাজনৈতিক দল ও দুটি জোট অংশ নেয়। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, নিম্নকক্ষে নারী আসন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ও কার্যপরিধি নিয়ে আলোচনার কথা থাকলেও সময় স্বল্পতার কারণে আর হয়নি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক পরিস্থিতি ও সংস্কৃতি বিশ্লেষণ করে এবং উপমহাদেশের চর্চা বিবেচনা করে তার দলের পক্ষ থেকে উপযুক্ত মত হচ্ছে, ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আস্থা ভোট না থাকলে সরকার পরিচালনায় স্থায়িত্ব থাকবে না। প্রতিনিয়ত সরকার পরিবর্তিত হতে থাকবে, যা শোভনীয় হবে না। আস্থা ভোট, অর্থবিল এবং সংবিধান সংশোধন এই তিনটি ছাড়া সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে মতামত প্রদান করবেন, এতে বিএনপি একমত। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে এই আস্থা ভোটের বিষয়টি ৭০ অনুচ্ছেদে যুক্ত করতে বিএনপি প্রস্তাব করেছে। যদি কোনো সময় যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়, তাহলে যাতে পার্লামেন্ট মেম্বাররা তার জন্য ভোট দিতে পারেন, সেটা ৭০ অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।’

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে অর্থবিল, আস্থা ভোট ও সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত বিষয় ছাড়া সব বিষয়ে সংসদ সদস্যদের দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দেওয়ার পক্ষে আমরা মতামত দিয়েছি।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সংস্কার সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘অর্থ বিলের পাশাপাশি আস্থা ভোট থাকতে হবে। কারণ সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা যেমন দরকার, তেমনি সরকারের স্থিতিশীলতা দরকার।’

আস্থা ভোট রেখে দিলে প্রধানমন্ত্রী আনচ্যালেঞ্জড থেকে যাবেন, উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘এ প্রসঙ্গে কোনো উপায় বের করতে হবে। এক দিনে শেষ না করে আরেকটি আলোচনায় বসে কোথায় ঐকমত্য হলেও তা চূড়ান্ত করতে হবে।’

স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধ

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার পক্ষে মতামত দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি। তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় না বিএনপি।

জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান, আমাদের প্রস্তাব তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন হতে হবে।

অপরদিকে, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হোক সবাই চায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনও দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হলে ভালো হবে। কারিগরি দিক নিয়ে আমাদের আরও আলোচনা করতে হবে।’

সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি নির্ধারণ

বৈঠক সূত্র জানায়, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে ৫০ শতাংশ বিরোধী দল থেকে করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এতে বিএনপিসহ সব দলই একমত পোষণ করে। তবে বিএনপি চারটি কমিটির সভাপতি পদে বিশেষ করে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি, পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটি, প্রিভিলেজ ও এস্টিমেট কমিটির ছাড়া বাকিগুলোর ব্যাপারে একমত বিএনপি।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কয়েকটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিরোধীদলীয় সদস্যদের দেওয়ার ব্যাপারে তখনই প্রায় সব দল একমত হয়েছিল। বিএনপির পক্ষ থেকে আরও কয়েকটি এ জাতীয় সংসদীয় কমিটি দেওয়ার পক্ষে প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে সংসদে জবাবদিহি এবং ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা হয়।’

তিনি বলেন, ‘কয়টি সংখ্যা ও কী কী মন্ত্রণালয় সেটি এখনই নির্ধারণ হবে না। সেটি জাতীয় সংসদে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে এবং সাইজ অব দ্য অপজিশন পার্টি, সেটিও ম্যাটার করে। সেই সংখ্যা তখন নির্ধারণ করা যাবে। কারণ, বিরোধী দলের সদস্য সংখ্যা কম হলে এখনই পার্সেন্টেজ নির্ধারণ করা হলে সেটি প্রশ্নের সম্মুখীন হবে।

জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. তাহের বলেন, ‘স্থায়ী কমিটির বিষয়ে আমরা নীতিগতভাবে একমত হয়েছি মৌলিক চারটি কমিটি- পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি, পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটি, প্রিভিলেজ ও এস্টিমেট কমিটিতে বিরোধী দলের নির্বাচিত এমপিদের পক্ষ থেকে প্রদান করা হবে। আর বাকি যে কমিটিগুলো সেখানে সংখ্যানুপাতিক হারে বিরোধী দল থেকে করা হবে।’

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম জানান, ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় প্রস্তাবিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বাইরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোর সভাপতি পদ বিরোধী দল থেকে চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি। কারণ সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে সরকার দলের সদস্য সংখ্যাই বেশি থাকে। 

নারীদের আসন ১০০ করার ব্যাপারে একমত সব দল, পদ্ধতি নিয়ে দ্বিমত

বৈঠক সূত্র জানায়, সংসদের আসন ৩৫০ থেকে ৪০০ আসনে করার ব্যাপারে সবাই একমত পোষণ করেছে। সে ক্ষেত্রে নারীদের আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ আসন করার ব্যাপারে সব দলই নীতিগতভাবে একমত পোষণ করছে। তবে নারীরা কীভাবে নির্বাচিত হবেন, ভোট না বর্তমান পদ্ধতি থাকবে, তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে দলগুলোর মধ্যে। কোনো কোনো দল সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নারী আসন চায়, আবার কোনো কোনো দল চলমান পদ্ধতি চায়। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সংরক্ষিত আসন বাড়ানো হলেও এটিতে আপাতত মনোনয়নের পক্ষে বিএনপি। আমরা মনে করি, নারীর সংরক্ষিত আসনে এখনই নির্বাচনের সময় হয়নি। তবে এর নির্বাচন পদ্ধতি কী হবে, এ বিষয়ে কোনো ঐক্য এখনো হয়নি। আরও আলোচনা হবে। দেশের নারী সমাজকে আরও বেশি এগিয়ে নেওয়ার জন্য বর্তমান বিধান রাখা উচিত।’

নারী আসন প্রসঙ্গে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসলিম জারা বলেন, ‘আমরা চাই জাতীয় সংসদের ন্যূনতম ২৫ শতাংশ নারী জনপ্রতিনিধি সরাসরি নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচিত হোক। ৩০০ আসন বাড়িয়ে ৪০০ করা হলে ১০০ আসনে নারীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এবং সেখান থেকেই তৃণমূল নেতৃত্ব উঠে আসবে। তিনি বলেন, নারীরা নিজস্ব আসন থেকে নির্বাচিত হলে তারা নির্বাচনী মাঠ, প্রচারণা, জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি এবং কাজের মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব বিকাশের সুযোগ পান।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ৯০ দিন চায় বিএনপি, বিপক্ষে এনসিপি

চার মাস নয়, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ৯০ দিন রাখা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে শুধু জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মতামত দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ তিন মাসের বেশি হওয়া উচিত নয়। যদিও কমিশন প্রস্তাব করেছে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ চার মাস হওয়া উচিত।’

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ চার মাসের প্রস্তাবে এনসিপি একমত বলে জানিয়ে সরোয়ার তুষার বলেন, ‘কয়েকটি দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ছয় মাস রাখার পক্ষে। বিষয়টি নিয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। মেয়াদ তিন মাস বা চার মাসের বিষয়ে আমরা নমনীয় থাকব। স্থানীয় সরকার নির্বাচন অন্তর্ভুক্ত হলে চার মাস প্রয়োজন হতে পারে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নিয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, খেলাফত মজলিস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ জাসদ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, গণসংহতি আন্দোলন, জেএসডি, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২-দলীয় জোট, ইসলামী আন্দোলন, গণফোরাম, সিপিবি, বাসদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, জাকের পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্ট, আমজনতার দল, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও ইসলামী ঐক্যজোট।

জাতীয় ঈদগাহে প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টায়

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:৪৬ পিএম
জাতীয় ঈদগাহে প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টায়
পুরোনো ছবি

আগামী শনিবার (৭ জুন) উদযাপিত হতে যাওয়া পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে প্রধান জামাত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার (৩ জুন) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রতিবছরের মতো এবারও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পাঁচটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বায়তুল মোকাররমে প্রথম জামাত সকাল ৭টায়, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম ও শেষ জামাত পর্যায়ক্রমে সকাল ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে।

তা ছাড়া, ঢাকা শহরের প্রসিদ্ধ মসজিদগুলোর ঈদ জামাত ও বৃহত্তর জেলাগুলোর প্রধান জামাতের সময়সূচি ঈদের আগের দিন শুক্রবার বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে জানানো হবে।