ঢাকা ৩ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
English

লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৭:২৬ পিএম
লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে ইফতারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়।

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির সফরের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজার বিমানবন্দরের একটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন এবং খুরুশকূল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অ্যান্তোনিও গুতেরেস উখিয়ায় প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেন।

বিকেলে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে আমি দুটি স্পষ্ট বার্তা পেয়েছি। প্রথমত, আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মায়ানমারে ফিরে যেতে চায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই মায়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের অধিকার নিশ্চিত করে কোনো ধরনের বৈষম্যের শিকার তারা যেন না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গারা আরও ভালো পরিবেশ চায় ক্যাম্পে। দুর্ভাগ্যবশত যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য অনেক দেশ সম্প্রতি নাটকীয়ভাবে মানবিক সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে। এই কারণে আমাদের মানবিক সহায়তার মধ্যে খাবারের রেশন কমাতে হয়েছে। আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। যত দেশ সম্ভব আমি কথা বলবো, যাতে ফান্ড পাওয়া যায় এবং এর থেকে আরও খারাপ পরিস্থিতি না আসে।’

পরিদর্শন ও ইফতার শেষে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব একসঙ্গে সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরবেন।

সুমন/

কথা দিয়েও রাখতে পারল না উত্তর সিটি করপোরেশন

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৩৬ পিএম
কথা দিয়েও রাখতে পারল না উত্তর সিটি করপোরেশন
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যত্রতত্র রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ যেন শেষই হয় না। এক সংস্থা সকালে সড়ক ঠিক করলে বিকেলে অন্য সংস্থা কেটে ফেলে যায়। আর নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শেষ না করায় ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহি নিশ্চিত করে কাজের গতি বাড়াতে উত্তর সিটি করপোরেশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

রাজধানীর আগারগাঁও থেকে মিরপুরে যাওয়ার ‘শর্টকাট’ রাস্তাটি হলো কামাল সরণি। যদিও স্থানীয় লোকে চেনে ‘৬০ ফিট’ রাস্তা নামে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটাল থেকে সড়কটি ব্যবহার করে মিরপুরে দ্রুত সময়ে যাওয়া যায়। মিরপুরের সঙ্গে মহাখালী-তেজগাঁওয়ের সহজ যোগাযোগ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে সড়কটির। এ কারণে সড়কটি বেশ জনপ্রিয় মিরপুর-১, ২, ১০ নম্বর এলাকার বাসিন্দাদের কাছে। গত দুই বছরের বেশি সময় সড়কটির দুরবস্থার কারণে স্থানীয়রা পড়েছেন ভোগান্তিতে। সর্বশেষ ঈদুল ফিতরের আগে সড়কটির বড় অংশ মেরামত হলেও এখনো পুরো কাজ শেষ হয়নি। 

গত ১৫ মার্চ ৬০ ফিট সড়কের চলমান উন্নয়নকাজ পরিদর্শন শেষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, ঈদের আগে রাজধানীর মিরপুরের ৬০ ফিট রাস্তা জনগণের চলাচলের উপযোগী করা হবে। 

ওই দিন তিনি বলেন, ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার একটি মিরপুর ৬০ ফিট রাস্তা এবং আরেকটি মিরপুর ডিওএইচএস থেকে উত্তরা দিয়াবাড়ি রাস্তা। অব্যবস্থাপনার কারণে দীর্ঘদিন এই রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এ রাস্তায় চললে মনে হতো আমরা কোনো যুদ্ধবিধ্বস্ত রাস্তায় চলছি। ইতোমধ্যে মিরপুর ডিওএইচএস থেকে উত্তরা দিয়াবাড়ি রাস্তার কাজ সম্পন্ন করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি। ঈদের আগেই ৬০ ফিট রাস্তার কাজ শেষে জনগণের চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হবে।’

তবে আশ্বাস দিলেও ডিএনসিসি প্রশাসক তার বাস্তবায়ন করতে পারেননি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আগারগাঁও হয়ে ৬০ ফিট সড়কটি মনিপুর স্কুল পর্যন্ত মেরামত করা হয়েছে। তবে নতুন সড়কেও ইতোমধ্যে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। মনিপুর স্কুল থেকে মিরপুর-২-এর প্রধান সড়ক পর্যন্ত কিছু অংশ এখনো খোঁড়াখুঁড়ি অবস্থায় পড়ে আছে। দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় পার হলেও এই সড়কের মেরামতের কাজ শেষই হচ্ছে না। এখনো বেহাল পড়ে আছে ৬০ ফিট সড়কসংলগ্ন গলির রাস্তাগুলো। সড়কটির দুই পাশে ফুটপাতে দোকানপাট, বালুর স্তূপ, বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, চায়ের দোকান, কাঁচাবাজার, ময়লা-আবর্জনা এখনো রয়ে গেছে। 

মনিপুর স্কুলের পাশে মা ও শিশু হাসপাতাল, হার্ট ফাউন্ডেশনসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতাল রয়েছে। গত দুই বছর এসব হাসপাতালে রোগী আনা নেওয়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। ওই এলাকার একটি ওষুধের দোকানের বিক্রয়কর্মী শাহ আলম বলেন, রাস্তার কাজ মনে হচ্ছে শেষ হবে না। রাস্তার বড় বড় গর্ত আর ধুলাবালিতে জর্জরিত এলাকার মানুষ। এমনও হয়েছে হাসপাতালে রোগী আনতে আনতে পথে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা গেছেন। এখন রাস্তার কাজ হচ্ছে, দেখা যাক কত দ্রুত শেষ হয়।

এদিকে আগারগাঁও হয়ে ৬০ ফিট দিয়ে শ্যামলী যাওয়ার রাস্তাটির বিভিন্ন স্থান খোঁড়াখুঁড়ি অবস্থায় পড়ে আছে। রাস্তার অবস্থা এতই বেহাল যে, সেখান দিয়ে একটি পিকআপ ঢুকলে অন্য কোনো গাড়ি যাতায়াতের সুযোগ থাকে না। আর ৬০ ফিটের প্রধান সড়কের বারেক মোল্লা মোড়, পীরের বাগ থেকে বউবাজার পর্যন্ত প্রতিটি গলির রাস্তাও গর্ত আর খানাখন্দে ভরা। শাইনপুকুর এলাকার সড়কটি এখনো খোঁড়াখুঁড়ি অবস্থায় পড়ে আছে।

ড্রেন সংস্কার ও রাস্তার নির্মাণকাজে ধীরগতির কারণে আশপাশের বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ওপর ধুলাবালির আবরণ পড়ে থাকতে দেখা যায়। 

অন্যদিকে আগারগাঁও থেকে মিরপুরের দিকে ৬০ ফিট সড়কটির বড় অংশ মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। এই সড়কটিতে বড় কোনো বাস না চললেও দৌরাত্ম্য দেখা গেছে অবৈধ লেগুনা ও ব্যাটারিচালিত রিকশার। যানবাহনের দুর্ঘটনা এই এলাকায় প্রতিদিন হরহামেশাই হচ্ছে। 

দৈনিক কয়েক শ অবৈধ লেগুনা চলাচল করে ৬০ ফিটের সড়কটিতে। অন্যদিকে লাগামহীনভাবে চলে ব্যাটারিচালিত রিকশা। আর লেগুনার চালক-হেলপাররা একে অন্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলে এই সড়কে। যখন যেখানে ইচ্ছা, সেখানে থামিয়ে যাত্রী তোলা হচ্ছে। আশপাশের কোনো বাহনকে সাইড না দিয়ে রাস্তার মাঝে হঠাৎ দাঁড়িয়ে যাত্রী নামিয়ে দেন লেগুনার চালকরা। চালকের পাশে দুজন যাত্রী বসান। আর পেছনে পাঁচ সিটে নেওয়া হচ্ছে ছয়জন করে। আবার পেছনে হেলপারের দাঁড়ানোর জায়গায় ঝোলেন তিন-চারজন।

বেশির ভাগ লেগুনার আবার বৈধতা নেই। চালকদের লাইসেন্স নেই। বেশির ভাগ চালকের বয়স ১৮ বছরের নিচে। তারা মূলত হেলপার। তবে প্রধান চালককে নির্দিষ্ট টাকা দিয়ে তারা লেগুনা চালান। এর বাইরে যা আয় হয় তা তারা পায়। সরকারের তৈরি রাস্তা দখল করে আগারগাঁও থেকে মিরপুর-২ নম্বর সড়ক দখল করে লেগুনাস্ট্যান্ড করা হয়েছে। আবার সড়কের পাকা মসজিদ মোড়ে এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা ও লেগুনায় দাঁড়ানোর জায়গা নিয়ে দুই পক্ষে হরহামেশা মারামারি হয়।

৬০ ফিটের এ সড়কে অফিস সময় ও সন্ধ্যার পরে যানজট তৈরি হয়। এর প্রধান কারণ লেগুনা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা। আশপাশের স্থানীয়রা জানান, শিশু চালকরা ট্রাফিক আইন জানেও না, নিয়মও মানে না। নিজের সমবয়সী চালক পেলে একে অন্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চালায় লেগুনা। এর ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। 

৬০ ফিট ভাঙা ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম বলেন, ৬০ ফিট সড়কটি আবার মেরামত হচ্ছে- তাই আবারও ব্যাটারিচালিত রিকশা, লেগুনার চলাচল বেড়েছে। এই ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা গতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন না, এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। লেগুনার অবস্থাও দেখেন! শিশুরা চালাচ্ছে। তারা এসবের কী বুঝে? ঈদের ছুটির কারণে ফাঁকা রাস্তায় এরা লাগামছাড়া গাড়ি চালিয়েছে। ঈদের ছুটি শেষে এখন সবাই ঢাকায় ফিরছে। আবার সেই যানজট শুরু হবে। 

সড়কের বেহাল অবস্থা ও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করার কথা স্বীকার করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল ৪-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ঈদের আগেই সড়কটির কাজ শেষ করার কথা ছিল। আমাদের প্রধান প্রশাসক সেই নির্দেশনাই দিয়েছেন। তবে পারা যায়নি। এখন আমরাও প্রেশারে রেখেছি- যেন সড়কটির কাজ দ্রুত শেষ হয়। আমরা সেইভাবে কাজ চালিয়ে নিচ্ছি।  

মোটিফ বানানো চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের আগুন!

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৬ পিএম
মোটিফ বানানো চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের আগুন!
ছবি: খবরের কাগজ

পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফ নির্মাণের জেরে হুমকির শিকার চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। 

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত আড়াইটার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের চান্দইর ঘোষের বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা গেছে, রাত তিনটার দিকে বাড়ির দক্ষিণ পাশে থাকা টিনশেড ঘরে আগুন জ্বলতে দেখে তারা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিস এসে প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে ঘরের সব কিছু পুড়ে গেছে।

 মানবেন্দ্র ঘোষ জানান, আগুনে তার শিক্ষাজীবন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত নিজের হাতে আঁকা বহু মূল্যবান চিত্রকর্ম পুড়ে গেছে।

তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে আমি বাঘের একটি মোটিফ নির্মাণ করেছিলাম। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয় যে, আমি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাবয়ব তৈরি করেছি। এর পর থেকেই আমি ফেসবুকে হুমকি পেতে থাকি। পরে মঙ্গলবার সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। আর সেই রাতেই আমার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

মানবেন্দ্র ঘোষ ও তার পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আতঙ্কে আছি। সরকারের কাছে অনুরোধ, আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।'

এ ঘটনার পর বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মো. মনোয়ার হোসেন মোল্লা, জেলা পুলিশ ও সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন বলেন, 'এই ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ঢাকা থেকে সিআইডির একটি বিশেষ দল তদন্তে নেমেছে। দোষীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।'

এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য বিরাজ করছে। স্থানীয়রা এ ঘটনাকে স্বাধীন শিল্পচর্চার ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন।

আসাদ/মেহেদী/

তেজগাঁওয়ে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৪ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৮ পিএম
তেজগাঁওয়ে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
ছয় দফা দাবিতে সড়কে অবস্থান করেছেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ছয় দফা দাবিতে সাতরাস্তা এলাকার সড়ক অবরোধ করেছেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টার পর শিক্ষার্থীরা সাতরাস্তা মোড়ে এ অবস্থান নেন। 

সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতাভুক্ত শিক্ষার্থীদের জোট ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ’র ব্যানারে এ কর্মসূচিতে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা আগের ছয় দফা দাবির সঙ্গে আরও একটি নতুন দাবি যুক্ত করে আন্দোলনে নেমেছি। আমাদের সর্বশেষ দাবি হলো-ল্যাব অ্যাসিস্টেন্টদের ১৬তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। আমরা চাই না, কেউ পিয়ন হিসেবে যোগ দিয়ে পরে আমাদের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।’

সড়ক অবরোধের বিষয়ে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার ইবনে মিজান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘সকাল ১০টায় পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্বের ছয় দফা দাবি নিয়ে আবারও রাস্তা অবরোধ করেছে। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে নিচে দেওয়া আছে চেষ্টা চলছে। এদিকে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাড়তি আইনশৃঙ্খা বাহিনী সদস্য মোতায়ন করা হয়েছে। তাদের দাবি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া তারা রাস্তা ছাড়বে না।’

সুমন/

আবহাওয়ার পূর্বাভাস: যেসব অঞ্চলে বৃষ্টি হবে আজ

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৮ এএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৭ এএম
আবহাওয়ার পূর্বাভাস: যেসব অঞ্চলে বৃষ্টি হবে আজ
ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় আজ অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

সুমন/

ডাকসু নির্বাচন: সব পক্ষের ঐকমত্যে আসাই চ্যালেঞ্জ

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৭ এএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৯ এএম
ডাকসু নির্বাচন: সব পক্ষের ঐকমত্যে আসাই চ্যালেঞ্জ
খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফিকস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের টাইমলাইন ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী আগামী মে মাসের মাঝামাঝিতে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হতে পারে। নির্বাচন কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে পরামর্শ করে ঘোষণা করবে নির্বাচনের দিনক্ষণ। তবে সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্র সংগঠন এবং নির্বাচন আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য অংশীজনদের ঐকমত্যে আসাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, বিগত সময়ে অনেক উদ্যোগ নেওয়া হলেও নানা স্বার্থের কারণে সব পক্ষের সহযোগিতার অভাবে আলোর মুখ দেখেনি নির্বাচন। ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না খবরের কাগজকে বলেন, নির্বাচন নিয়ে ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ অন্য ছাত্র সংগঠন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ঐকমত্যে আসতে হবে। অন্যথায় নির্বাচন আয়োজনে চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা খবরের কাগজকে বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে ভিন্নমত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আমরা ডিসেম্বর থেকে নির্বাচন নিয়ে কাজ করে চলেছি। আজকে যে টাইমলাইন দেওয়া হয়েছে, এটির মাধ্যমে আমরা একটি ধারণা দিতে চেয়েছি যে, আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে কী কী কাজ করা হয়েছে এবং কী কী করতে হবে সেটি জানিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে একাধিক সময়ে আমরা আলোচনা করেছি এবং যে মতপার্থক্য পেয়েছি, সেসব আমরা অবশ্যই আমলে নেব। তা ছাড়া অংশীজনরা সবাই সব বিষয়ে একমত হবে বিষয়টি তেমনও না। এটি আমাদের একটি প্রশাসনিক দায়িত্ব, আমরা চেষ্টা করব আমাদের যে অংশীজন রয়েছে তাদের মতামতগুলোকে সমন্বয় করে কাজটি কীভাবে শেষ করা যায়।’

গত বছরের ৫ আগস্টে দেশের পটপরিবর্তনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদগুলোতেও পরিবর্তন আসে। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা পদ ছাড়েন। কোথাও কোথাও বাধ্য করা হয় পদত্যাগে। তৎকালীন সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নানা অপরাধমূলক কার্যক্রম এবং জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার কারণে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির নিষিদ্ধ করার দাবি ওঠে। তবে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ না হলেও ছাত্রলীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতির পরিবরর্তে কার্যকর ছাত্র সংসদের দাবি জোরালো হয়। বিশেষ করে সাধারণ ছাত্ররা লেজুড়বৃত্তি রাজনীতির পরিবর্তে কার্যকর ছাত্র সংসদ দেখতে চান। তবে এ নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ভিন্নমত দেখা যায়। ফলে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এর মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়েও বেশ কয়েকটি তারিখ সামনে আসে। তবে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার একটি তালিকা দিয়েছে। 

সেই তথ্য অনুযায়ী, অংশীজনদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা, ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির ৬টি সভা, ডাকসু নির্বাচনের আচরণবিধি রিভিউ কমিটির সাতটি সভা এবং পরামর্শ কমিটির ৯টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর মতামতও নেওয়া হয়েছে। প্রভোস্ট, ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটের পরিচালকের লিখিত মতামত চলতি মাসের মধ্যে শেষ করা হবে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন গঠন এবং দ্বিতীয় সপ্তাহে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হবে। আর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ডাকসু নির্বাচন ছিল চরম মাত্রার অধারাবাহিক। কারণ নির্বাচিত সরকারের ছাত্র সংগঠনের পরাজয়ের আশঙ্কায় নির্বাচন বিলম্বিত করত বা আয়োজনে সায় দিত না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মাত্র ৫-৬ বার ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। ডাকসু নির্বাচন সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে। তার আগে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে। নির্বাচনকে ‘ক্যালেন্ডার ইভেন্ট তথা বছরের নির্দিষ্ট দিনে নিয়মিত নির্বাচন’ করার কথা বলা হলেও বাস্তবে সেটি হয়নি। সর্বশেষ নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নুরুল হক নুরের কাছে পরাজিত হন। এই নির্বাচনের পরে আরও ৫ বছর ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকার ডাকসু বা ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কোনো পদক্ষেপে সায় দেয়নি।

ইদানীং দেখা যাচ্ছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভিন্নমত হয় ছাত্র সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনের তফসিল ছাত্রদলের বাধার কারণে ঘোষণা করা যায়নি। ফলে নির্বাচন হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

যা ভাবছে ছাত্র সংগঠনগুলো

ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ডাকসু নির্বাচনের যে টাইমলাইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রকাশ করেছে তা ডাকসু ও হল সংসদগুলোর গঠনতন্ত্র সংশোধন ও নির্বাচন অনুষ্ঠানসংক্রান্ত আলোচনার প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছভাবে সবার সামনে তুলে ধরেছে, যা আপাতদৃষ্টিতে ইতিবাচক মনে হয়েছে। কিন্তু সংস্কার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং নির্বাচনের আচরণবিধি নির্ধারণের নানা বিষয়ে এখনো অস্বচ্ছতা বিদ্যমান রয়েছে। কীসের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে সেটি নিয়েও মতপ্রকাশের বিষয় আছে। না হয় এসব বিষয় নিয়ে পরবর্তী সময়ে জটিলতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সম্ভাবনাও প্রকট হয়ে আছে।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় যেসব পদক্ষেপের কথা টাইমলাইনে লেখা আছে সেসব উল্লিখিত সময়ানুযায়ী বাস্তবায়ন করা ক্যাম্পাস ও জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে কতটুকু বাস্তবিক সেটাও অস্পষ্ট। ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডাকসু নির্বাচনসংক্রান্ত সব বিষয়ে অত্যন্ত আগ্রহী ও উৎসুক নজর রাখছে এবং দায়িত্বশীল উপায়ে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখানোর চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্টের প্রতি আন্তরিক থেকে সব অংশীজনের ভূমিকা রাখা উচিত।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেন, ‘যে টাইমলাইন দেওয়া হয়েছে, এখানে দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে। যেসব এপ্রিলের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব, সেখানে অনেক সময় নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বিভিন্ন অংশীজনের প্রয়োজনীয় মিটিং সম্পন্ন হলেও এখন পর্যন্ত ডাকসু গঠনতন্ত্রের চূড়ান্ত কপি প্রকাশ করা হয়নি। নির্বাচন কমিশন গঠন ও ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণে আন্তরিকতা থাকলে মে মাস পর্যন্ত সময় লাগার কথা নয়। ডাকসু নির্বাচন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অসমাপ্ত প্রতিটি কাজের জন্য সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। আমরা চাই, যে কাজগুলো বাকি রয়েছে সেগুলোর সময়সীমা কমিয়ে এনে ডাকসু নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হোক।’

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের কথা হলে তখন জানানো হয়, ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরে সেটি নিয়ে কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। মার্চের দিকে আমরা সংবাদ সম্মেলন করে দেখা করি, সেই সময়ে মার্চের ২২ তারিখে একটা সম্ভাবনার কথা বললেও সেটির কথাও তারা রাখেনি।’

তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ঢাবি প্রশাসনের উচিত ছিল ডাকসু নিয়ে অনেক সচেতন হওয়া। শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নির্বাচন কমিশন গঠন এটি এক সপ্তাহের কাজ। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে। অবিলম্বে শিক্ষার্থীরা যেন বৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেন, সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্যোগ নেবে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের রোডম্যাপ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের প্রকাশ পাচ্ছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গন নিশ্চিতের জন্য ডাকসু নির্বাচন অত্যাবশ্যক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডাকসু নির্বাচনের টাইমলাইন ঘোষণা করেছে। আমরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আমরা চাই শিক্ষার্থী, ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনসহ অংশীজনদের নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যথাসম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা হোক। আশু এই নির্বাচনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নে সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, ‘আমরা মনে করেছি ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে যাবে। কিন্তু এখানে প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাব আমরা দেখতে পেয়েছি। একই সঙ্গে ছাত্র সংগঠনগুলোর মতামত নেওয়ার বিষয়টি তারা খুব একটা আগের প্রশাসনের মতোই আমলে নেননি। এখন তারা যে টাইমলাইন দিয়েছেন, এটিকে অবশ্যই আমরা সাধুবাদ জানাই।’ কিন্তু এখন পর্যন্ত কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব ছাত্র সংগঠনের গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি এবং কোনো উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো দেখছি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের নাম দিয়ে একটি বিশেষ গোষ্ঠী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো হলগুলোতে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। এখন যদি এই ছাত্র সংগঠনগুলো হলগুলোতে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে, তাহলে ডাকসু আয়োজনের মূল লক্ষ্য সেটি কিন্তু বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে টাইমলাইন দিয়েছে যদি তাদের সে আন্তরিকতাটুকু থাকে তাহলে তারা অবশ্যই সব ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে গণতান্ত্রিক সংস্থা নিশ্চিতে যে প্রক্রিয়া সেটি তারা শুরু করবেন। তবে তারা এখন কতটুকু করবে সেটি নিয়ে আমরা সন্দিহান।’

ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক বলেন, ‘ডাকসুর জন্য আমরা অনেক লড়াই করে এসেছি। তাছাড়া এখনকার পরিস্থিতি আর সেই সময়ের পরিস্থিতি এক না। ডাকসু নির্বাচনের টাইমলাইন নিয়ে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো অফিশিয়াল স্টেটমেন্ট দেইনি, বিষয়টি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সময় আমরা আমাদের মত জানাব।’

দ্রুত ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে।’ কেননা তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন দুই-একদিনের মধ্যে এটি করবেন, সেটি করবেন। কিন্তু সেই কাজটি করতে তারা ২-৩ মাস পর্যন্ত নেন। এখনে অবশ্যই তাদের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়, সেই সঙ্গে পেছন থেকে কেউ কলকাঠি নাড়ছেন কি না, সেটি নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়।

টাইমলাইন নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মে মাসের মাঝামাঝিতে ডাকসু নির্বাচনের জন্য কমিশন গঠন করা হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা মে মাসের মধ্যেই ডাকসু নির্বাচন চান। মে মাসের মাঝামাঝিতে নির্বাচন কমিশন গঠন হলে সেটি সম্ভব হবে না। আমরা প্রশাসনকে আহ্বান জানাব শিক্ষার্থীদের চোখের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন, নির্বাচন কমিশন এপ্রিল মাসের মধ্যে গঠন করে শিক্ষার্থীদের দাবির আলোকে মে মাসের মধ্যেই নির্বাচন করার উদ্যোগ নিক। এখন তারা যে, ডাকসু নিয়ে স্টেপের কথা বলেছেন, সেগুলো যদি তারা পূরণ না করেন অবশ্যই আমরা আমাদের জায়গা থেকে যতটুক পারা যায় প্রতিবাদ জানাব।’