ঢাকা ৩ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
English

আছিয়ার ধর্ষকের বাড়ি ভেঙে মসজিদ নির্মাণের দাবি

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:০১ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:০৭ পিএম
আছিয়ার ধর্ষকের বাড়ি ভেঙে মসজিদ নির্মাণের দাবি
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শিশু আছিয়ার ভগ্নিপতির বাড়ি দ্বিতীয় দিনের মতো ভাঙচুরের পাশাপাশি বাড়ির গাছে কেটে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয়রা। ধর্ষক হিটু শেখ (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত

বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শিশু আছিয়ার ভগ্নিপতির বাড়িতে শুক্রবার (১৪ মার্চ) দ্বিতীয় দিনের মতো ভাঙচুর চলে।

আগের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর শিশুটির প্রথম জানাজা শেষে অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

শুক্রবার সকালে ওই বাড়ির সব গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছিলেন স্থানীয়রা। বাড়িটি ভেঙে সেখানে মসজিদ বা মাদ্রাসা নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। আর সেই মসজিদ বা মাদ্রাসার নামকরণ চান আছিয়ার নামে। নিষ্পাপ শিশুটির এমন করুণ মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা।

অন্যদিকে শুক্রবার সকালে শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়াদের বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। তিনি পরিবারটিকে অর্থনৈতিক সহায়তার পাশাপাশি ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার আশ্বাস দেন। প্রকশ্যে ফাঁসি দাবি করেন অভিযুক্ত ধর্ষকের। শিশুটি মৃত্যুর ঘটনায় শোক জানিয়ে রাজধানীতে প্রতিবাদ মিছিল করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

এদিকে সরেজমিনে গতকাল সকালে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ধর্ষণে অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় কেউ ঘরের ওপরে উঠে খুলছেন চালের টিন, কেউবা বাড়ির পাশে থাকা গাছগুলো কাটছেন করাত দিয়ে। কয়েকজন সেগুলো ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন অন্য কোথাও। 

স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘মাগুরাকে দেশবাসী তথা বিশ্ববাসী একসময় চিনতেন সাকিব আল হাসানের নামে। আর এখন চিনছেন শিশু আছিয়ার নামে। আমরা চাই এই ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি। তাকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হোক। এ ছাড়া তার বাড়িটি ভেঙে এই জায়গায় একটি মসজিদ অথবা মাদ্রাসা নির্মাণ করা হোক। যেটির নাম দেওয়া হোক আছিয়ার নামে। কেননা, এই জায়গায় যে পাপ কাজ হয়েছে, সেটি মোচন করতে হলে এখানে মসজিদ বা মাদ্রাসা প্রয়োজন।’ 

অপর ব্যক্তি বলেন, ‘এখানে শিশুটির নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হলে সেটি দেশবাসী জানবেন। মনে রাখবেন, এখানে একটি শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছিল, যা দেখে অন্যরা ধর্ষণ করার আগে চিন্তা করবে।’

ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসি দাবি আফরোজা আব্বাসের
এদিকে কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস আছিয়াদের বাড়িতে যান। শিশুটির পরিবারকে অর্থনৈতিক সহায়তার পাশাপাশি ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি। মহিলা দলের নেত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা জেলা মহিলা দলের নেতারা ও জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনোয়ার হোসেন খান।

এ সময় জনসমক্ষে প্রকাশ্যে ধর্ষকের ফাঁসির দাবি করে আফরোজা আব্বাস বলেন, ‘তিন মাস পরে বা ছয় মাস পরে একটা বিচার হলো, ফাঁসি হলো- আমরা সেটি চাই না। আমরা চাই জনসমুক্ষে দৃশ্যমান ফাঁসি হোক। সেটা আপনারা, আমরা, জনগণ সবাই দেখবেন। আমরা সে রকম একটা ফাঁসি চাই। এ রকম একটা ফাঁসি কার্যকর হলে অপরাধীরা ধর্ষণ করার আগে দশবার ভাববে।’
 
ঢাকায় মহিলা পরিষদের প্রতিবাদ মিছিল
আছিয়া ধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনায় শোক জানিয়ে মৌন প্রতিবাদ মিছিল করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। গতকাল মিছিলটি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে ব্যানারের স্লোগান ছিল, ‘আমরা বিক্ষুব্ধ, আমরা শোকাহত, প্রতিবাদ জানাই, প্রতিরোধ চাই।’

মিছিলে অংশ নেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সহসভাপতি মাখদুমা নার্গিস রত্না, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগমসহ কেন্দ্রীয় কমিটি, সম্পাদকমণ্ডলী, ঢাকা মহানগর কমিটি, নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির সদস্য, সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসহ সংগঠনের প্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা।

তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী আছিয়া নিজনান্দুয়ালী গ্রামে তার বোনের বাড়ি বেড়াতে যায়। ৫ মার্চ গভীর রাতে ভগ্নিপতির সহায়তায় তার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ শিশুটিকে ধর্ষণ করে। পরে তাকে হত্যার চেষ্টাও চালানো হয়। পরদিন ৬ মার্চ সকালে পাড়া-প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা নির্যাতিত আছিয়াকে প্রথমে মাগুরা হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। হাসপাতালে শিশুটি অচেতন অবস্থায় থাকে। ১৩ মার্চ দুপুর ১টায় ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।

নির্বাচনের খসড়া কর্মপরিকল্পনা জুলাইয়ে প্রকাশ করা হবে: ইসি আনোয়ারুল

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪১ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৩ পিএম
নির্বাচনের খসড়া কর্মপরিকল্পনা জুলাইয়ে প্রকাশ করা হবে: ইসি আনোয়ারুল
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের খসড়া কর্মপরিকল্পনা আগামী জুলাই মাসে প্রকাশ করা হবে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে যেসব তরুণের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে বিদ্যমান আইন দিয়ে হবে না। এজন্য আইন পর্যালোচনা করে সংশোধন করা হবে। এমন উদ্যোগ প্রথমবারের মতো নেওয়া হচ্ছে।

বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নির্বাচন সম্ভব কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বেশকিছু জেলায় ভিজিট করেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলেছেন, তারা আরও ইম্প্রুভ করবেন। আইনশৃঙ্খলা প্রতিদিন উন্নত হচ্ছে। আপনারা দেখে থাকবেন, আগের তুলনায় বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও পরিশুদ্ধ ভোটার তালিকা অপরিহার্য। নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ ঘরে ঘরে গিয়ে সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেছে, আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের টার্গেট ছিল ৬১ লাখ ৮৮ হাজার নতুন ভোটার নিবন্ধিত হবে। দেখা যাচ্ছে, ৪৩ লাখের ওপরে বাদ পড়া ভোটার নিবন্ধিত হয়েছে, নতুন হয়েছে ১৯ লাখ ৬৬ হাজার। মোট ৬৩ লাখ ভোটার নিবন্ধিত হয়েছে। আমরা আশা করি জুনের মধ্যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকাটি পেয়ে যাব।

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে বিএনপি: আসিফ নজরুল

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫৮ পিএম
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে বিএনপি: আসিফ নজরুল
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে বিফ্রিং দেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে বিএনপি বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে ভালো হয় বলে জানিয়েছে। তারা বলেছেন, আমাদের উপদেষ্টাদের অস্পষ্ট কথা থাকে, আমাদের সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা অন্যরকম কথা বলেন। যে যেটা বলুক না কেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে বারবার যে কথা বলেছেন, সেটাই আমাদের অবস্থান। অন্য কেউ যদি বেফাঁস কথা বলেন তারা যেন বিভ্রান্ত না হন।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে বিফ্রিংয়ে তিনি এ কথা জানান। 

নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে যমুনায় যায় বিএনপির প্রতিনিধি দলটি। বৈঠক শেষে দুপুর ২টার দিকে প্রতিনিধি দল যমুনা থেকে বের হয়ে আসে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন- দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

আলোচনায় কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ডিসেম্বর থেকে জুন মাস, মানে আমরা ইচ্ছা করেই দেরি করব এমনটা নয়। ডিসেম্বর থেকে জুন মানে হচ্ছে ডিসেম্বরের পর থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন করা। আমরা অকারণে এক মাস, দুই মাস বেশি থাকলাম, মোটেও এমনটা নয়। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন হবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আমাদের ঐকমত্য কমিশনের যে প্রস্তাব সেটার ক্ষেত্রে বিএনপি অত্যন্ত পজিটিভ। তারা ২-৩ দিনের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বসবে। জুলাই ঘোষণাপত্র খুব দ্রুত সময় হয়ে যাবে, তারা আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে বিএনপি সংস্কারের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক।

তিনি বলেন, আলোচনা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে হয়েছে। বিএনপি মন খুলে কথা বলেছে। সরকারের কিছু কিছু সিদ্ধান্ত তাদের প্রতিকূলে গেছে বলে তারা বলেছেন। আমরা তাদেরকে উদাহরণ দিয়েছি, অনেকগুলো সিদ্ধান্ত তাদের অনুকূলে গেছে। রাজনৈতিক ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে বিলম্ব হচ্ছে। গত তিন মাসে ৭ হাজারের অধিক মামলা প্রত্যাহার হয়েছে। বিএনপি আরেকটা ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা বলেছে। আমরা বলেছি যে, আমরা এই লক্ষ্যে কাজ করছি।

এমএ/

আবহাওয়ার পূর্বাভাস: যেসব অঞ্চলে বৃষ্টি হবে বৃহস্পতিবার

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪৭ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪৫ পিএম
আবহাওয়ার পূর্বাভাস: যেসব অঞ্চলে বৃষ্টি হবে বৃহস্পতিবার
ছবি: সংগৃহীত

সারা দেশে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। 

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

সুমন/

কথা দিয়েও রাখতে পারল না উত্তর সিটি করপোরেশন

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৩৬ পিএম
কথা দিয়েও রাখতে পারল না উত্তর সিটি করপোরেশন
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যত্রতত্র রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ যেন শেষই হয় না। এক সংস্থা সকালে সড়ক ঠিক করলে বিকেলে অন্য সংস্থা কেটে ফেলে যায়। আর নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শেষ না করায় ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহি নিশ্চিত করে কাজের গতি বাড়াতে উত্তর সিটি করপোরেশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

রাজধানীর আগারগাঁও থেকে মিরপুরে যাওয়ার ‘শর্টকাট’ রাস্তাটি হলো কামাল সরণি। যদিও স্থানীয় লোকে চেনে ‘৬০ ফিট’ রাস্তা নামে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটাল থেকে সড়কটি ব্যবহার করে মিরপুরে দ্রুত সময়ে যাওয়া যায়। মিরপুরের সঙ্গে মহাখালী-তেজগাঁওয়ের সহজ যোগাযোগ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে সড়কটির। এ কারণে সড়কটি বেশ জনপ্রিয় মিরপুর-১, ২, ১০ নম্বর এলাকার বাসিন্দাদের কাছে। গত দুই বছরের বেশি সময় সড়কটির দুরবস্থার কারণে স্থানীয়রা পড়েছেন ভোগান্তিতে। সর্বশেষ ঈদুল ফিতরের আগে সড়কটির বড় অংশ মেরামত হলেও এখনো পুরো কাজ শেষ হয়নি। 

গত ১৫ মার্চ ৬০ ফিট সড়কের চলমান উন্নয়নকাজ পরিদর্শন শেষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, ঈদের আগে রাজধানীর মিরপুরের ৬০ ফিট রাস্তা জনগণের চলাচলের উপযোগী করা হবে। 

ওই দিন তিনি বলেন, ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার একটি মিরপুর ৬০ ফিট রাস্তা এবং আরেকটি মিরপুর ডিওএইচএস থেকে উত্তরা দিয়াবাড়ি রাস্তা। অব্যবস্থাপনার কারণে দীর্ঘদিন এই রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এ রাস্তায় চললে মনে হতো আমরা কোনো যুদ্ধবিধ্বস্ত রাস্তায় চলছি। ইতোমধ্যে মিরপুর ডিওএইচএস থেকে উত্তরা দিয়াবাড়ি রাস্তার কাজ সম্পন্ন করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি। ঈদের আগেই ৬০ ফিট রাস্তার কাজ শেষে জনগণের চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হবে।’

তবে আশ্বাস দিলেও ডিএনসিসি প্রশাসক তার বাস্তবায়ন করতে পারেননি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আগারগাঁও হয়ে ৬০ ফিট সড়কটি মনিপুর স্কুল পর্যন্ত মেরামত করা হয়েছে। তবে নতুন সড়কেও ইতোমধ্যে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। মনিপুর স্কুল থেকে মিরপুর-২-এর প্রধান সড়ক পর্যন্ত কিছু অংশ এখনো খোঁড়াখুঁড়ি অবস্থায় পড়ে আছে। দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় পার হলেও এই সড়কের মেরামতের কাজ শেষই হচ্ছে না। এখনো বেহাল পড়ে আছে ৬০ ফিট সড়কসংলগ্ন গলির রাস্তাগুলো। সড়কটির দুই পাশে ফুটপাতে দোকানপাট, বালুর স্তূপ, বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, চায়ের দোকান, কাঁচাবাজার, ময়লা-আবর্জনা এখনো রয়ে গেছে। 

মনিপুর স্কুলের পাশে মা ও শিশু হাসপাতাল, হার্ট ফাউন্ডেশনসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতাল রয়েছে। গত দুই বছর এসব হাসপাতালে রোগী আনা নেওয়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। ওই এলাকার একটি ওষুধের দোকানের বিক্রয়কর্মী শাহ আলম বলেন, রাস্তার কাজ মনে হচ্ছে শেষ হবে না। রাস্তার বড় বড় গর্ত আর ধুলাবালিতে জর্জরিত এলাকার মানুষ। এমনও হয়েছে হাসপাতালে রোগী আনতে আনতে পথে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা গেছেন। এখন রাস্তার কাজ হচ্ছে, দেখা যাক কত দ্রুত শেষ হয়।

এদিকে আগারগাঁও হয়ে ৬০ ফিট দিয়ে শ্যামলী যাওয়ার রাস্তাটির বিভিন্ন স্থান খোঁড়াখুঁড়ি অবস্থায় পড়ে আছে। রাস্তার অবস্থা এতই বেহাল যে, সেখান দিয়ে একটি পিকআপ ঢুকলে অন্য কোনো গাড়ি যাতায়াতের সুযোগ থাকে না। আর ৬০ ফিটের প্রধান সড়কের বারেক মোল্লা মোড়, পীরের বাগ থেকে বউবাজার পর্যন্ত প্রতিটি গলির রাস্তাও গর্ত আর খানাখন্দে ভরা। শাইনপুকুর এলাকার সড়কটি এখনো খোঁড়াখুঁড়ি অবস্থায় পড়ে আছে।

ড্রেন সংস্কার ও রাস্তার নির্মাণকাজে ধীরগতির কারণে আশপাশের বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ওপর ধুলাবালির আবরণ পড়ে থাকতে দেখা যায়। 

অন্যদিকে আগারগাঁও থেকে মিরপুরের দিকে ৬০ ফিট সড়কটির বড় অংশ মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। এই সড়কটিতে বড় কোনো বাস না চললেও দৌরাত্ম্য দেখা গেছে অবৈধ লেগুনা ও ব্যাটারিচালিত রিকশার। যানবাহনের দুর্ঘটনা এই এলাকায় প্রতিদিন হরহামেশাই হচ্ছে। 

দৈনিক কয়েক শ অবৈধ লেগুনা চলাচল করে ৬০ ফিটের সড়কটিতে। অন্যদিকে লাগামহীনভাবে চলে ব্যাটারিচালিত রিকশা। আর লেগুনার চালক-হেলপাররা একে অন্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলে এই সড়কে। যখন যেখানে ইচ্ছা, সেখানে থামিয়ে যাত্রী তোলা হচ্ছে। আশপাশের কোনো বাহনকে সাইড না দিয়ে রাস্তার মাঝে হঠাৎ দাঁড়িয়ে যাত্রী নামিয়ে দেন লেগুনার চালকরা। চালকের পাশে দুজন যাত্রী বসান। আর পেছনে পাঁচ সিটে নেওয়া হচ্ছে ছয়জন করে। আবার পেছনে হেলপারের দাঁড়ানোর জায়গায় ঝোলেন তিন-চারজন।

বেশির ভাগ লেগুনার আবার বৈধতা নেই। চালকদের লাইসেন্স নেই। বেশির ভাগ চালকের বয়স ১৮ বছরের নিচে। তারা মূলত হেলপার। তবে প্রধান চালককে নির্দিষ্ট টাকা দিয়ে তারা লেগুনা চালান। এর বাইরে যা আয় হয় তা তারা পায়। সরকারের তৈরি রাস্তা দখল করে আগারগাঁও থেকে মিরপুর-২ নম্বর সড়ক দখল করে লেগুনাস্ট্যান্ড করা হয়েছে। আবার সড়কের পাকা মসজিদ মোড়ে এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা ও লেগুনায় দাঁড়ানোর জায়গা নিয়ে দুই পক্ষে হরহামেশা মারামারি হয়।

৬০ ফিটের এ সড়কে অফিস সময় ও সন্ধ্যার পরে যানজট তৈরি হয়। এর প্রধান কারণ লেগুনা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা। আশপাশের স্থানীয়রা জানান, শিশু চালকরা ট্রাফিক আইন জানেও না, নিয়মও মানে না। নিজের সমবয়সী চালক পেলে একে অন্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চালায় লেগুনা। এর ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। 

৬০ ফিট ভাঙা ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম বলেন, ৬০ ফিট সড়কটি আবার মেরামত হচ্ছে- তাই আবারও ব্যাটারিচালিত রিকশা, লেগুনার চলাচল বেড়েছে। এই ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা গতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন না, এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। লেগুনার অবস্থাও দেখেন! শিশুরা চালাচ্ছে। তারা এসবের কী বুঝে? ঈদের ছুটির কারণে ফাঁকা রাস্তায় এরা লাগামছাড়া গাড়ি চালিয়েছে। ঈদের ছুটি শেষে এখন সবাই ঢাকায় ফিরছে। আবার সেই যানজট শুরু হবে। 

সড়কের বেহাল অবস্থা ও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করার কথা স্বীকার করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল ৪-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ঈদের আগেই সড়কটির কাজ শেষ করার কথা ছিল। আমাদের প্রধান প্রশাসক সেই নির্দেশনাই দিয়েছেন। তবে পারা যায়নি। এখন আমরাও প্রেশারে রেখেছি- যেন সড়কটির কাজ দ্রুত শেষ হয়। আমরা সেইভাবে কাজ চালিয়ে নিচ্ছি।  

মোটিফ বানানো চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের আগুন!

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৬ পিএম
মোটিফ বানানো চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের আগুন!
ছবি: খবরের কাগজ

পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফ নির্মাণের জেরে হুমকির শিকার চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। 

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত আড়াইটার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের চান্দইর ঘোষের বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা গেছে, রাত তিনটার দিকে বাড়ির দক্ষিণ পাশে থাকা টিনশেড ঘরে আগুন জ্বলতে দেখে তারা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিস এসে প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে ঘরের সব কিছু পুড়ে গেছে।

 মানবেন্দ্র ঘোষ জানান, আগুনে তার শিক্ষাজীবন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত নিজের হাতে আঁকা বহু মূল্যবান চিত্রকর্ম পুড়ে গেছে।

তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে আমি বাঘের একটি মোটিফ নির্মাণ করেছিলাম। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয় যে, আমি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাবয়ব তৈরি করেছি। এর পর থেকেই আমি ফেসবুকে হুমকি পেতে থাকি। পরে মঙ্গলবার সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। আর সেই রাতেই আমার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

মানবেন্দ্র ঘোষ ও তার পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আতঙ্কে আছি। সরকারের কাছে অনুরোধ, আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।'

এ ঘটনার পর বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মো. মনোয়ার হোসেন মোল্লা, জেলা পুলিশ ও সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন বলেন, 'এই ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ঢাকা থেকে সিআইডির একটি বিশেষ দল তদন্তে নেমেছে। দোষীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।'

এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য বিরাজ করছে। স্থানীয়রা এ ঘটনাকে স্বাধীন শিল্পচর্চার ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন।

আসাদ/মেহেদী/