ঢাকা ৩ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
English

ধর্ষণবিরোধী গণপদযাত্রায় হামলা-মামলা সরকারের ভূমিকায় ২১০ নাগরিকের বিস্ময় প্রকাশ

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:০৬ পিএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:০৮ পিএম
সরকারের ভূমিকায় ২১০ নাগরিকের বিস্ময় প্রকাশ
ছবি: খবরের কাগজ

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, নারীর ওপর হামলা, হুমকি, মব সহিংসতা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ তুলে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ২১০ নাগরিক।

শনিবার (১৫ মার্চ) সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই বিস্ময় প্রকাশ করেন ২১০ বিশিষ্ট নাগরিক।

এতে বলা হয়, গত ১১ মার্চ দুপুরে ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ব্যানারে ৯ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা ও স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি ছিল। ওই কর্মসূচিতে নারীদের ওপর পুলিশ নগ্নভাবে আক্রমণ করেছে, কোনো নারী পুলিশের উপস্থিতিও আমরা সেখানে দেখতে পাইনি। হামলার পর আবার ১২ মার্চ পুলিশ সেই আহতদের ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে এজাহার দায়ের করেছে। এর মধ্যে একজন আসামি হলেন ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড, যিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিতই ছিলেন না। অথচ গতকাল রাতে ডিবি পুলিশ তার বাসায় গিয়ে এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে। ফেসবুকে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ তাকে কিছু দূর নিয়ে এসেও শেষ পর্যন্ত ছেড়ে দেয়।

সরকারের এই ভূমিকায় বিস্মিত ও ক্ষোভ প্রকাশ করে এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা অবিলম্বে হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচার এবং আন্দোলনকারীদের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবি করছি। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশের হামলা-বাধা-মামলার তৎপরতা বন্ধ করে অগণতান্ত্রিক সন্ত্রাসী-বৈষম্যবাদী বিভিন্ন অপশক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’

ওই বিবৃতিতে সই করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ইউনিভার্সিটি অব লিবারাল আর্টসের অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বডুয়া, অ্যাডভোকেট মানজুর আল মতিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ নিজার, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মির্জা তাসলিমা সুলতানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, হাসনাত কাইয়ুম, তুহিন খানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২১০ জন বিশিষ্ট নাগরিক।

আরিফ জাওয়াদ/মাহফুজ

ডাকসু নির্বাচন: সব পক্ষের ঐকমত্যে আসাই চ্যালেঞ্জ

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৭ এএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৯ এএম
ডাকসু নির্বাচন: সব পক্ষের ঐকমত্যে আসাই চ্যালেঞ্জ
খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফিকস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের টাইমলাইন ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী আগামী মে মাসের মাঝামাঝিতে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হতে পারে। নির্বাচন কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে পরামর্শ করে ঘোষণা করবে নির্বাচনের দিনক্ষণ। তবে সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্র সংগঠন এবং নির্বাচন আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য অংশীজনদের ঐকমত্যে আসাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, বিগত সময়ে অনেক উদ্যোগ নেওয়া হলেও নানা স্বার্থের কারণে সব পক্ষের সহযোগিতার অভাবে আলোর মুখ দেখেনি নির্বাচন। ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না খবরের কাগজকে বলেন, নির্বাচন নিয়ে ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ অন্য ছাত্র সংগঠন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ঐকমত্যে আসতে হবে। অন্যথায় নির্বাচন আয়োজনে চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা খবরের কাগজকে বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে ভিন্নমত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আমরা ডিসেম্বর থেকে নির্বাচন নিয়ে কাজ করে চলেছি। আজকে যে টাইমলাইন দেওয়া হয়েছে, এটির মাধ্যমে আমরা একটি ধারণা দিতে চেয়েছি যে, আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে কী কী কাজ করা হয়েছে এবং কী কী করতে হবে সেটি জানিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে একাধিক সময়ে আমরা আলোচনা করেছি এবং যে মতপার্থক্য পেয়েছি, সেসব আমরা অবশ্যই আমলে নেব। তা ছাড়া অংশীজনরা সবাই সব বিষয়ে একমত হবে বিষয়টি তেমনও না। এটি আমাদের একটি প্রশাসনিক দায়িত্ব, আমরা চেষ্টা করব আমাদের যে অংশীজন রয়েছে তাদের মতামতগুলোকে সমন্বয় করে কাজটি কীভাবে শেষ করা যায়।’

গত বছরের ৫ আগস্টে দেশের পটপরিবর্তনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদগুলোতেও পরিবর্তন আসে। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা পদ ছাড়েন। কোথাও কোথাও বাধ্য করা হয় পদত্যাগে। তৎকালীন সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নানা অপরাধমূলক কার্যক্রম এবং জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার কারণে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির নিষিদ্ধ করার দাবি ওঠে। তবে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ না হলেও ছাত্রলীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতির পরিবরর্তে কার্যকর ছাত্র সংসদের দাবি জোরালো হয়। বিশেষ করে সাধারণ ছাত্ররা লেজুড়বৃত্তি রাজনীতির পরিবর্তে কার্যকর ছাত্র সংসদ দেখতে চান। তবে এ নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ভিন্নমত দেখা যায়। ফলে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এর মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়েও বেশ কয়েকটি তারিখ সামনে আসে। তবে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার একটি তালিকা দিয়েছে। 

সেই তথ্য অনুযায়ী, অংশীজনদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা, ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির ৬টি সভা, ডাকসু নির্বাচনের আচরণবিধি রিভিউ কমিটির সাতটি সভা এবং পরামর্শ কমিটির ৯টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর মতামতও নেওয়া হয়েছে। প্রভোস্ট, ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটের পরিচালকের লিখিত মতামত চলতি মাসের মধ্যে শেষ করা হবে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন গঠন এবং দ্বিতীয় সপ্তাহে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হবে। আর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ডাকসু নির্বাচন ছিল চরম মাত্রার অধারাবাহিক। কারণ নির্বাচিত সরকারের ছাত্র সংগঠনের পরাজয়ের আশঙ্কায় নির্বাচন বিলম্বিত করত বা আয়োজনে সায় দিত না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মাত্র ৫-৬ বার ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। ডাকসু নির্বাচন সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে। তার আগে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে। নির্বাচনকে ‘ক্যালেন্ডার ইভেন্ট তথা বছরের নির্দিষ্ট দিনে নিয়মিত নির্বাচন’ করার কথা বলা হলেও বাস্তবে সেটি হয়নি। সর্বশেষ নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নুরুল হক নুরের কাছে পরাজিত হন। এই নির্বাচনের পরে আরও ৫ বছর ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকার ডাকসু বা ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কোনো পদক্ষেপে সায় দেয়নি।

ইদানীং দেখা যাচ্ছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভিন্নমত হয় ছাত্র সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনের তফসিল ছাত্রদলের বাধার কারণে ঘোষণা করা যায়নি। ফলে নির্বাচন হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

যা ভাবছে ছাত্র সংগঠনগুলো

ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ডাকসু নির্বাচনের যে টাইমলাইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রকাশ করেছে তা ডাকসু ও হল সংসদগুলোর গঠনতন্ত্র সংশোধন ও নির্বাচন অনুষ্ঠানসংক্রান্ত আলোচনার প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছভাবে সবার সামনে তুলে ধরেছে, যা আপাতদৃষ্টিতে ইতিবাচক মনে হয়েছে। কিন্তু সংস্কার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং নির্বাচনের আচরণবিধি নির্ধারণের নানা বিষয়ে এখনো অস্বচ্ছতা বিদ্যমান রয়েছে। কীসের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে সেটি নিয়েও মতপ্রকাশের বিষয় আছে। না হয় এসব বিষয় নিয়ে পরবর্তী সময়ে জটিলতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সম্ভাবনাও প্রকট হয়ে আছে।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় যেসব পদক্ষেপের কথা টাইমলাইনে লেখা আছে সেসব উল্লিখিত সময়ানুযায়ী বাস্তবায়ন করা ক্যাম্পাস ও জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে কতটুকু বাস্তবিক সেটাও অস্পষ্ট। ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডাকসু নির্বাচনসংক্রান্ত সব বিষয়ে অত্যন্ত আগ্রহী ও উৎসুক নজর রাখছে এবং দায়িত্বশীল উপায়ে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখানোর চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্টের প্রতি আন্তরিক থেকে সব অংশীজনের ভূমিকা রাখা উচিত।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেন, ‘যে টাইমলাইন দেওয়া হয়েছে, এখানে দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে। যেসব এপ্রিলের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব, সেখানে অনেক সময় নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বিভিন্ন অংশীজনের প্রয়োজনীয় মিটিং সম্পন্ন হলেও এখন পর্যন্ত ডাকসু গঠনতন্ত্রের চূড়ান্ত কপি প্রকাশ করা হয়নি। নির্বাচন কমিশন গঠন ও ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণে আন্তরিকতা থাকলে মে মাস পর্যন্ত সময় লাগার কথা নয়। ডাকসু নির্বাচন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অসমাপ্ত প্রতিটি কাজের জন্য সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। আমরা চাই, যে কাজগুলো বাকি রয়েছে সেগুলোর সময়সীমা কমিয়ে এনে ডাকসু নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হোক।’

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের কথা হলে তখন জানানো হয়, ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরে সেটি নিয়ে কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। মার্চের দিকে আমরা সংবাদ সম্মেলন করে দেখা করি, সেই সময়ে মার্চের ২২ তারিখে একটা সম্ভাবনার কথা বললেও সেটির কথাও তারা রাখেনি।’

তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ঢাবি প্রশাসনের উচিত ছিল ডাকসু নিয়ে অনেক সচেতন হওয়া। শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নির্বাচন কমিশন গঠন এটি এক সপ্তাহের কাজ। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে। অবিলম্বে শিক্ষার্থীরা যেন বৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেন, সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্যোগ নেবে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের রোডম্যাপ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের প্রকাশ পাচ্ছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গন নিশ্চিতের জন্য ডাকসু নির্বাচন অত্যাবশ্যক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডাকসু নির্বাচনের টাইমলাইন ঘোষণা করেছে। আমরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আমরা চাই শিক্ষার্থী, ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনসহ অংশীজনদের নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যথাসম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা হোক। আশু এই নির্বাচনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নে সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, ‘আমরা মনে করেছি ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে যাবে। কিন্তু এখানে প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাব আমরা দেখতে পেয়েছি। একই সঙ্গে ছাত্র সংগঠনগুলোর মতামত নেওয়ার বিষয়টি তারা খুব একটা আগের প্রশাসনের মতোই আমলে নেননি। এখন তারা যে টাইমলাইন দিয়েছেন, এটিকে অবশ্যই আমরা সাধুবাদ জানাই।’ কিন্তু এখন পর্যন্ত কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব ছাত্র সংগঠনের গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি এবং কোনো উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো দেখছি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের নাম দিয়ে একটি বিশেষ গোষ্ঠী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো হলগুলোতে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। এখন যদি এই ছাত্র সংগঠনগুলো হলগুলোতে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে, তাহলে ডাকসু আয়োজনের মূল লক্ষ্য সেটি কিন্তু বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে টাইমলাইন দিয়েছে যদি তাদের সে আন্তরিকতাটুকু থাকে তাহলে তারা অবশ্যই সব ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে গণতান্ত্রিক সংস্থা নিশ্চিতে যে প্রক্রিয়া সেটি তারা শুরু করবেন। তবে তারা এখন কতটুকু করবে সেটি নিয়ে আমরা সন্দিহান।’

ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক বলেন, ‘ডাকসুর জন্য আমরা অনেক লড়াই করে এসেছি। তাছাড়া এখনকার পরিস্থিতি আর সেই সময়ের পরিস্থিতি এক না। ডাকসু নির্বাচনের টাইমলাইন নিয়ে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো অফিশিয়াল স্টেটমেন্ট দেইনি, বিষয়টি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সময় আমরা আমাদের মত জানাব।’

দ্রুত ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে।’ কেননা তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন দুই-একদিনের মধ্যে এটি করবেন, সেটি করবেন। কিন্তু সেই কাজটি করতে তারা ২-৩ মাস পর্যন্ত নেন। এখনে অবশ্যই তাদের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়, সেই সঙ্গে পেছন থেকে কেউ কলকাঠি নাড়ছেন কি না, সেটি নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়।

টাইমলাইন নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মে মাসের মাঝামাঝিতে ডাকসু নির্বাচনের জন্য কমিশন গঠন করা হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা মে মাসের মধ্যেই ডাকসু নির্বাচন চান। মে মাসের মাঝামাঝিতে নির্বাচন কমিশন গঠন হলে সেটি সম্ভব হবে না। আমরা প্রশাসনকে আহ্বান জানাব শিক্ষার্থীদের চোখের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন, নির্বাচন কমিশন এপ্রিল মাসের মধ্যে গঠন করে শিক্ষার্থীদের দাবির আলোকে মে মাসের মধ্যেই নির্বাচন করার উদ্যোগ নিক। এখন তারা যে, ডাকসু নিয়ে স্টেপের কথা বলেছেন, সেগুলো যদি তারা পূরণ না করেন অবশ্যই আমরা আমাদের জায়গা থেকে যতটুক পারা যায় প্রতিবাদ জানাব।’

মুজিবনগর দিবস আগামীকাল: ঐতিহাসিক আম্রকাননে থাকছে বর্ণাঢ্য আয়োজন

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৮ এএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১০ এএম
মুজিবনগর দিবস আগামীকাল: ঐতিহাসিক আম্রকাননে থাকছে বর্ণাঢ্য আয়োজন
মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ। ছবি: সংগৃহীত

আগামীকাল ১৭ এপ্রিল, জাতির ইতিহাসের গৌরবময় দিন মুজিবনগর দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মেহেরপুরের তৎকালীন বৈদ্যনাতলার আম্রকাননে শপথ নেয় যুদ্ধকালীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার। ঐতিহাসিক আম্রকাননে পাঠ করা হয় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং গার্ড অব অনারে অভিষিক্ত হয় এই নবগঠিত সরকার। এই সরকারের নেতৃত্বেই নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ শেষে অর্জিত হয় স্বাধীনতা।

এই দিনটিকে স্মরণে রেখে প্রতিবছরই আম্রকাননে আয়োজিত হয় নানা অনুষ্ঠানমালা। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। দিনটি ঘিরে পুরো মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স এখন সাজসাজ রব।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীর প্রতীক ফারুক ই আজম। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্মৃতিসৌধে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন। এর পর উপদেষ্টাকে দেওয়া হবে গার্ড অব অনার এবং পরিবেশন করা হবে জাতীয় সংগীত।

উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব ও অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ শহিদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এর পর সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে শ্রদ্ধা নিবেদনের সুযোগ।

দিনটির গুরুত্ব বিবেচনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। স্মৃতিসৌধ ও আশপাশের এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি গাছ ও স্থাপনাগুলোকে সাদা রঙে রাঙিয়ে করা হয়েছে সুসজ্জিত। এ ছাড়াও চলছে আলোকসজ্জার কাজ।

গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন বলেন, ‘১৭ এপ্রিলকে ঘিরে আমরা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্সটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুশোভিত করার কাজ প্রায় শেষ করে এনেছি।’

মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ মন্ডল জানান, মাননীয় উপদেষ্টার সফরকে কেন্দ্র করে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তার সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তা।

নিরাপত্তার বিষয়েও নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানম বলেন, ‘আম্রকাননকে ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাবলয়। স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, থাকবে সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য, আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও সাইবার পেট্রোলিংয়ের ব্যবস্থা।’

সব মিলিয়ে জাতির গৌরবময় অধ্যায় মুজিবনগর দিবস উদযাপনে প্রস্তুত ঐতিহাসিক আম্রকানন।

ইয়ামিন/তাওফিক/

দূষিত বাতাসের শহরে ঢাকা আজ ১০ নম্বরে

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৭ এএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৬ এএম
দূষিত বাতাসের শহরে ঢাকা আজ ১০ নম্বরে
ছবি: সুমন বিশ্বাস, খবরের কাগজ

এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (একিউআই) স্কোরে দূষিত বাতাসের শহরে সারা বিশ্বের মধ্যে ঢাকা আজ ১০তম অবস্থানে রয়েছে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যানুযায়ী ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ১৩৩। তাই ঢাকার বাতাস আজ সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর।

ৱএকই সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ৬৮৬ একিউআই স্কোর নিয়ে প্রথম, ভারতের দিল্লি ২১০ একিউআই স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় এবং পাকিস্তানের ১৭১ একিউআই স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থান দখল করেছে।

যখন কণাদূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকে, তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘসময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

একিউআই মান ১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।

সুমন/

টিউলিপের ‘অভিনব জালিয়াতি’ মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২৪ পিএম
টিউলিপের ‘অভিনব জালিয়াতি’ মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক
ব্রিটেনের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় ব্রিটেনের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের অভিনব জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডকে সরকারি জায়গা হস্তান্তর করে বিনিময়ে ফ্ল্যাট উপহার নিয়েছেন তিনি। টিউলিপের প্রভাব খাটিয়ে বিধি-বিধান ভেঙে রাজউকের প্রায় দুই বিঘা জমি দখল ও প্লট-ফ্ল্যাটের অনুমোদন করিয়ে নেয় ইস্টার্ন হাউজিং। 

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এ ঘটনায় মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। অনুমোদিত মামলায় টিউলিপ ছাড়াও রাজউকের সাবেক সহকারী আইন কর্মকর্তা শাহ মো. খসরুজ্জামান ও সরদার মোশারফ হোসেনকে আসামির তালিকায় আনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে আগামী সপ্তাহে মামলাটি করা হবে বলে জানিয়েছে দুদক।  

অনুমোদিত মামলায় বলা হয়, রাজধানীর গুলশান-২-এর ৭১ নম্বর রোডের বাসার একটি ফ্ল্যাটের মালিক টিউলিপ সিদ্দিক। গত মার্চে সেই ফ্ল্যাটের খোঁজ পায় দুদক। পরে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেটি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। 

ফ্ল্যাটটির হস্তান্তরসংক্রান্ত ধারাবাহিক আদ্যোপান্ত খুঁজতে গিয়ে পুরো প্রক্রিয়াজুড়েই অভিনব জালিয়াতির নানা ফিরিস্তি পান দুদক কর্মকর্তারা। তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ইমাম হোসেন চৌধুরীকে প্রায় দুই বিঘা জমি ৯৯ বছরের জন্য বরাদ্দ দেয় তৎকালীন ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট। বরাদ্দের দলিলে তাকে হস্তান্তর না করার শর্ত দেওয়া হয়। কিন্তু ১৯৭৪ সালের পর হস্তান্তরের মাধ্যমে দুই হাত ঘুরে সেই সম্পত্তি চলে যায় ইস্টার্ন হাউজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামের কাছে।

২০০০ সালে টিউলিপ সিদ্দিকের আপন খালা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রভাব খাটিয়ে সমস্ত বিধি-বিধান ভেঙে ইস্টার্ন হাউজিংকে লিগ্যাল পার্সন হিসেবে উল্লেখ করে আমমোক্তার অনুমোদন ও ৩৬টি ফ্ল্যাটে বিভাজন করেন রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এর বিনিময়ে ওই প্লট ও বিল্ডিংয়ের ২০১ নম্বর ফ্ল্যাটটি নেন টিউলিপ সিদ্দিক। আর এই অনিয়মের দায় থাকলেও মারা যাওয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি ইমাম হোসেন চৌধুরী, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ও রাজউকের সাবেক কর্মকর্তা ডক্টর মুহাম্মদ সেলিমকে আসামি করার সুযোগ নেই।

এর আগে পূর্বাচলে শেখ পরিবারের ৬০ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় দুদকের আরেক মামলায় টিউলিপ সিদ্দিককে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৪ পিএম
আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৪ পিএম
এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের পূর্ণ উদ্যেমে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এলডিসি উত্তরণবিষয়ক এক সভায় প্রধান উপদেষ্টা এই নির্দেশনা দেন।

পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রধান উপদেষ্টার বরাত দিয়ে জানান, ‘অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন- এলডিসি থেকে উত্তরণের বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে। এখন পূর্ণ উদ্যেমে কাজ এগিয়ে নিতে হবে। সে অনুযায়ী যত ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া দরকার তা নিতে হবে, একইসঙ্গে সতর্ক থাকতে হবে এলডিসি উত্তরণের প্রেক্ষিতে কোন খাত যেন কোন ধরনের ক্ষতির মুখে না পড়ে। পাশাপাশি এলডিসি উত্তরণের প্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ সুবিধা কীভাবে আদায় করা যায়, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি জানান, এলডিসি উত্তরণের বিষয়টি সার্বক্ষণিক মনিটারিং করতে একটি ডেডিকেটেড টিম গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। শফিকুল আলম বলেন, অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কথা বারবার বলে আসছেন। তিনি আজ বলেছেন, এলডিসি উত্তরণের পরে এই কাজে যেন আরও গতি পায়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারি ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী অধ্যাপক ইউনূসের বরাত দিয়ে জানান, পোশাকসহ রপ্তানি খাতের কোথাও যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য প্রধান উপদেষ্টা এই ইস্যুগুলোতে দ্রুতগতিতে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন হলে দেশের শ্রম পরিস্থিতির ক্ষেত্রে বিদেশি ক্রেতাদের শর্ত পূরণের অনেক জায়গায় দ্রুত উন্নতি ঘটবে।

উল্লেখ্য, আগামী ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটবে। সূত্র: বাসস