ঢাকা ১০ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

দেশি ৯৬ পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত ইসি কমিটির

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৪:২৭ পিএম
আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৪:৪৯ পিএম
দেশি ৯৬ পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত ইসি কমিটির
ইসি আনোয়ারুল ইসলাম। ছবি: খবরের কাগজ

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিবন্ধিত ৯৬টি দেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কমিটি। তবে নিবন্ধন পেতে নতুন করে আবেদন করতে পারবে বাদ পড়া সংস্থাগুলোও।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসি কমিটির বৈঠক শেষে নিজ কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। 

তিনি জানান, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও নজিরবিহীন নির্বাচন করতেই সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। এর আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য পর্যবেক্ষক নীতিমালা ও রাজনৈতিক দল নিবন্ধনসহ পাঁচটি বিষয় নিয়ে ইসি আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠক করেন সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তারা।

ভোটকেন্দ্র স্থাপন প্রসঙ্গে ইসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ভোটকেন্দ্র স্থাপনে ডিসি-এসপিদের নিয়ে করা আগের কমিটি থাকছে না। এ বিষয়ে কমিটির পরিকল্পনা হলো নির্বাচন কর্মকর্তাদের নতুন কমিটি করে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা।’
 
দল নিবন্ধনের বিষয়ে আদালতের রুলের আদেশ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দল নিবন্ধন রুলের আদেশ এখনো আমরা পাইনি। পেলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ঈদের আগেই রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং পর্যবেক্ষক সংস্থা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

এলিস/পপি/

দেশের সীমানা পুরোপুরি রক্ষিত আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০১ পিএম
দেশের সীমানা পুরোপুরি রক্ষিত আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: খবরের কাগজ

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আমাদের দেশের সীমান্ত পুরোপুরি রক্ষিত আছে। আরাকান বর্ডার ডিফিকাল্ট বর্ডার। আমরা মায়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। কিন্তু বর্ডারটি দখল করে আছে আরাকান আর্মি। এখন মায়ানমার থেকে কিছু আমদানি-রপ্তানি করতে হলে মায়ানমার সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয়, আবার আরাকান আর্মিতে যারা আছে তারাও পয়সা নিচ্ছে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বিভাগের সকল জেলা প্রশাসক, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, এখানে একটা সমস্যা আছে আপনাকে বুঝতে হবে। এটা সমাধানের চেষ্টা চলছে। আর আমাদের সীমান্ত পুরোভাবে রক্ষিত আছে।

তিনি বলেন, এখন আমাদের দেখতে হবে আরাকান আর্মি ফাইট করতেছে অনেকদিন ধরে। এদের অনেকে এপারে বিয়ে করে ফেলছে, এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। কিন্তু যে হারে ভিডিওতে আসছে বিষয়টা আসলে তা নয়। টিকটক ভিডিওতো অনেকভাবে করা যায়। সবটা যে সত্য তা না আবার সবটা যে মিথ্যা তা-ও না। এটার ক্ষেত্রে আপনাকে ব্যালেন্স করতে হবে।

এসময় তিনি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় বেড়ে যাওয়া হত্যাকাণ্ড নিয়ে বলেন, ফটিকছড়ি, রাউজান, পটিয়া ও সাতকানিয়া এলাকাগুলো হলো পাহাড় ও সমতলের সংমিশ্রণ। এখানকার সমস্যা অন্যান্য এলাকার চেয়ে ভিন্ন। আমরা এই ব্যাপারে আলাপ করছি, এখানে সন্ত্রাসীরা অপকর্ম করে পাহাড়ের দিকে চলে যায়। প্রকাশ্যে কেউ যদি করে থাকে আমি আপনাদের সামনে বলে গেলাম আইনানুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যৌথবাহিনীর অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যৌথবাহিনীর অভিযান কোনো অবস্থায় কমেনি। বরং আপনাদের সাহায্য সহযোগিতায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে।

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যে ঘটনা ঘটে, সত্যি ঘটনা আপনারা অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন। তখন আমাদের কাজ করতে সুবিধা হয়। কিন্তু অনেক সময় ঘটনা সত্যি না হলেও কিন্তু কেউ কেউ প্রকাশ করে দেয়। সেসময় ইনভেস্টিগেশন করে দেখা যায় যে, ঘটনা সত্যি নয় তখন অসুবিধা হয়। পাশ্ববর্তী দেশের সাংবাদিকরা এর সুবিধাটা নেয়। যেহেতু জানেন যে তারা মিথ্যা সংবাদ বেশি পরিবেশন করে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি পাহাড়ে তিনবার চাকরি করেছি। ক্যাম্প কমান্ডার ছিলাম, সিও ছিলাম ও বিগ্রেড কমান্ডার ছিলাম। পাহাড়ে অশান্ত তো আপনারা দেখেনই। এখন ওই তুলনা করতে গেলে পাহাড় এখন পুরোটাই শান্ত। এই ছোটখাটো অপহরণ আমাদের প্লেইন ল্যান্ডেও (সমতল) তো হচ্ছে। খালি পাহাড়ের কেন দোষ দেন। পাহাড় আগের থেকে অনেক ভালো অবস্থায় আছে, অনেক শান্ত আছে। আমি বাঘাইহাটে ছিলাম। সেখানে ল্যান্ডমাইন দিয়ে একসঙ্গে পিকআপ উড়াই দিছে। তিনজন, চারজন করে মারা গেছে। সেসময় এই খবরগুলো আসেও নাই প্লাস ওই এলাকায় এক্সেসেবিলিটিও ছিল না। কিন্তু এখন তো পাহাড়ের অবস্থা এতো ভালো-আল্লাহ দিলে ওই রাস্তা দিয়ে আপনারা সাজেক চলে যাচ্ছেন।

মাহফুজ/

 

 

দেশে জিনোম সিকোয়েন্সিং-ভিত্তিক ক্যান্সার নির্ণয় সেবা চালু

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫৯ পিএম
দেশে জিনোম সিকোয়েন্সিং-ভিত্তিক ক্যান্সার নির্ণয় সেবা চালু
ছবি: সংগৃহীত

দেশে শুরু হচ্ছে অত্যাধুনিক নেক্সট-জেনারেশন সিকোয়েন্সিং (এনজিএস)-ভিত্তিক ক্যান্সার নির্ণয় সেবা। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) থেকে রাজধানীর মহাখালী, মিরপুর, মতিঝিল, ধানমন্ডি, উত্তরা, নিকেতন, গুলশান এবং বারিধারায় অবস্থিত আইসিডিডিআরবি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বুথে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

এ সম্পর্কিত তথ্যের জন্য [email protected] ই-মেইলে, বা (+৮৮০) ১৭১৩২৮৮০৮৬ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে। বুধবার আইসিডিডিআরবি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- দেশে সঠিক ও সহজলভ্য ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে এটি একটি বড় অগ্রগতি। দেশের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের দীর্ঘদিনের চাহিদা ছিল বিদেশে না পাঠিয়ে দেশেই যেন অত্যাধুনিক নির্ভরযোগ্য জিনোম সিকোয়েন্সিং-ভিত্তিক ক্যান্সার পরীক্ষা চালু করা সম্ভব হয়। বর্তমানে অনেক রোগীকে ক্যান্সার পরীক্ষার জন্য বিদেশে নমুনা পাঠাতে হয় ও রিপোর্টের জন্য ৪-৫ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয়, যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল। আবার অনেক ক্ষেত্রে ফলাফলও নির্ভরযোগ্য হয় না। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে- দুই সপ্তাহের মধ্যেই মানসম্পন্ন রিপোর্ট প্রদানের মাধ্যমে ব্যক্তিভিত্তিক চিকিৎসা ব্যাবস্থাপনায় চিকিৎসকদেরকে সহায়তা করবে। রিপোর্টে ক্যান্সার আক্রান্তদের চিকিৎসায় সম্ভাব্য কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতির নির্দেশনাও যুক্ত থাকবে। 

আইসিডিডিআরবি এর সংক্রামক রোগ বিভাগের সিনিয়র বিজ্ঞানী ও ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র পরিচালক ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা বাংলাদেশে নির্ভুল ও সহজলভ্য ক্যান্সার নির্ণয়ের লক্ষ্যে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের প্রতিশ্রুতি হলো ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ও রোগীদের জন্য সময়োপযোগী ও নির্ভরযোগ্য ফলাফল প্রদান করা, যা ক্যান্সার চিকিৎসায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশাবাদী।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে প্রতি লাখে ১০০ জনেরও বেশি ক্যান্সারে আক্রান্ত। বিলম্বে নির্ণয় রোগীকে ঝুঁকিতে ফেলে। শুরুতে নির্ণয় হলে সুস্থ হওবার সম্ভাবনা বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে।

আরিফ সাওন/মাহফুজ

বিএমইউ’র গবেষণা রিপোর্ট পুরুষদের মধ্যে তামাক ব্যবহার হ্রাসের হার নারীদের তুলনায় বেশি

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫১ পিএম
পুরুষদের মধ্যে তামাক ব্যবহার হ্রাসের হার নারীদের তুলনায় বেশি
ছবি: সংগৃহীত

দেশে ২৫-৬৯ বছর বয়সীদের তামাক ব্যবহার (ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন) ২০০৯ সালে ৫৪ শতাংশ ছিল। সেখান থেকে ১৩ শতাংশ কমে ২০২২ সালে ৪৭ শতাংশে নেমেছে। ধূমপানের হার ২৭ শতাংশ থেকে ২২ শতাংশে নেমেছে (১৯ শতাংশ আপেক্ষিক হ্রাস)। ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার ৩৬ শতাংশ থেকে ৩১ শতাংশ (১৪ শতাংশ আপেক্ষিক হ্রাস)।

‘বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের প্রবণতা ও পূর্বাভাস’ শীর্ষক বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির (বিএমইউ) গবেষণায় এসব তথ্য ওঠে এসছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ ডা. মিল্টন হলে গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে পুরুষদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হ্রাস নারীদের তুলনায় কিছুটা বেশি। গ্রামীণ এলাকায় তামাক ব্যবহার কমলেও শহুরে অঞ্চলে হ্রাসের হার বেশি স্পষ্ট।  

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, তামাক ব্যবহারের হার হ্রাস পেলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এখনও চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। তথ্য বিশ্লেষণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এনসিডি (অসংক্রামক রোগ) প্রতিরোধ রোডম্যাপ অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে তামাক ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বর্তমান নীতিমালার গতি দ্বিগুণ করতে হবে। ২০০৯-২০২২ সালের প্রবণতা বিশ্লেষণে দেখা যায়, বর্তমান হারে তামাক ব্যবহার কমলে ২০৩০ সালে হার দাঁড়াবে প্রায় ৪২ শতাংশ, যা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের চেয়ে বেশি।  

গবেষণা ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএমইউর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএমইউ জার্নালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অধ্যাপক ড এম মোস্তফা জামান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম-সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য) মো. মামুনুর রশিদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএমইউর প্রিভেনটিভ এ্যান্ড স্যোশাল মেডিসিন অনুষদের ডিন ও পাবলিক হেলথ এ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক। 

আরিফ সাওন/মাহফুজ

যারা খাল-বিল দখল করেছে তাদের ঘুমানোর সময় শেষ: ডিএনসিসি প্রশাসক

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩৬ পিএম
যারা খাল-বিল দখল করেছে তাদের ঘুমানোর সময় শেষ: ডিএনসিসি প্রশাসক
মোহাম্মদপুর হাইক্কার খালে অবৈধ ভবন উচ্ছেদ অভিযানকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। ছবি: সংগৃহীত

অবৈধ দখলদারদের হুশিয়ারি দিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, সরকারি খাল-বিল দখল করে যারা ঘুমাচ্ছেন তাদের ঘুমানোর সময় শেষ। বুধবার (২৩ এপ্রিল) মোহাম্মদপুর হাইক্কার খালে (কাটাসুর) অবৈধ ভবন উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।
 
অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ডিএনসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীদুল ইসলাম। 

অভিযানে হাইক্কার খালে (কাটাসুর) অবৈধভাবে গড়ে তোলা একটি দোতলা ভবন সম্পূর্ণ এবং তিনতলা ভবনের আংশিক গুড়িয়ে দিয়েছে ডিএনসিসি। এছাড়াও ৫টি টিনের ঘড় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে অভিযান শুরু হয়ে চলে বিকাল পর্যন্ত চলে।

অভিযানের শুরুতে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ সাংবাদিকদের বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং একসময় বঙ্গবন্ধুর নামে ক্লাব এগুলো করেই কিন্তু ঢাকা শহরের খাল, জলাধার ও পাবলিক প্লেসগুলো দখল করা হয়েছিল।


মোহাম্মদপুরে খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ডিএনসিসি। ছবি: সংগৃহীত 

ঢাকাবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা এখনো সরকারি খাল-বিল দখল করে নাকে তেল দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন, তাদের ঘুমানোর সময় শেষ। যারা সরকারি জমি, খাস জমি দখল করে স্থাপনা বানিয়ে ভোগদখল করছেন, তাদের বলে দিচ্ছি ঘুম থেকে জেগে দখল করা জায়গাটা ছেড়ে দিতে হবে। আজকের উদাহরণ (হাইক্কার খালের উচ্ছেদ) থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনারা নিজ দায়িত্বে এগুলো সরিয়ে নিন। না হলে বিপদ হবে। আমরা আসবো, অবৈধ দখলদারদের কোন নোটিশ দিব না। সরাসরি উচ্ছেদ করা হবে।

ডিএনসিসি প্রশাসক আরও বলেন, অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান আমাদের চলমান প্রক্রিয়া। উচ্ছেদ অভিযান করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় মাঠ দখলমুক্ত করছি, অবৈধ দোকান ও হকার উচ্ছেদ করছি এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করেছি। বাড়ি ৩ তলা হোক আর ১০ তলা হোক, আমরা সব ভেঙে দেব একটা একটা করে। আমাদের লোকবল কম, ধারাবাহিকভাবে উচ্ছেদ করা হবে। আজকে নিরাপত্তা বাহিনী, আর্মি আছে, অন্যান্য ভারী যন্ত্রপাতি রেখেছি। আমরা কোনো ছাড় দিব না।

এসময় তিনি বলেন, এই খালের (হাইক্কার) অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে আমরা খাল খনন করে লাউতলা খালের সঙ্গে সংযোগ করে দিব। ডিএনসিসির কবরাস্থানের দেওয়ালও ভেঙে দিয়ে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। ফলে বৃষ্টির পানি, বন্যার পানি খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তুরাগে যাবে।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে আমি নিজে গিয়েছি। রাস্তায় ট্রাকের পার্কিং বন্ধে স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা কাজ করছি। আশা করছি আগামী কোরবানির ঈদের আগে এটি সমাধান করতে পারব।

অন্য প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিরপুর-১০ এবং ফার্মগেট ইন্দিরা রোড সম্পূর্ণভাবে ফুটপাতের হকার ও টেসলামুক্ত (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা) হবে। আমি অভিযান শুরু করেছি। রাতে ও দিনে অভিযান পরিচালনা করব।

আসন্ন বর্ষায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতির বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমাদের টিম সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে। ডিএনসিসি এলাকার সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তার ও প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সভা করেছি। ডেঙ্গুকে মোকাবেলা করা জন্য আমরা মশা নিধন কার্যক্রম করছি। মশার ওষুধ ঠিকমতো ছিটানোর কাজটি মনিটরিং করার জন্য আমরা সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়ার পরিকল্পনা করছি। তারপরও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গেলে তাৎক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা যেন নিশ্চিত করা হয় সেই প্রস্তুতি নিয়ে হাসপাতালগুলোর সঙ্গে কাজ করছি।

রাজু/মাহফুজ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে ওআইসিকে সক্রিয় করতে কাতারের প্রতি আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১২ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৯ পিএম
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে ওআইসিকে সক্রিয় করতে কাতারের প্রতি আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
কাতারে আর্থনা সম্মেলনের গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন শুরু করার জন্য ওআইসিকে সক্রিয় করতে কাতারকে জোরালো ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন শুরু করতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য কাতার তাদের কূটনৈতিক প্রভাব কাজে লাগাতে পারে। আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে, কাতার জোরালোভাবে তাদের সংহতি প্রকাশ করে এই সংকট সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া ওআইসি দেশগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে তহবিল সংগ্রহ জোরদার ও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পক্ষে মত প্রকাশের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।’

কাতারের দোহায় আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বুধবার (২৩ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টা এক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।

‘বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তুচ্যুত জনগণের সামাজিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ-রোহিঙ্গা ইস্যু’ শীর্ষক এই গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।

মানবতা, স্থিতিশীলতা ও ন্যায়বিচারের জন্য কাজ করতে বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আসুন আমরা নিশ্চিত করি, আজকের আলোচনা শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না রেখে একটি অর্থবহ অংশীদারত্বের সূচনা করে যা রোহিঙ্গা সংকটকে আমাদের যৌথ মানবিক অগ্রাধিকারগুলোর শীর্ষে রাখে এবং একটি স্থায়ী সমাধানের দিকে একযোগে কাজ করে।’

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান বাংলাদেশের জন্য ব্যাপক চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে এবং রোহিঙ্গাদের হতাশ করে তুলছে। ক্যাম্পগুলোতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বৃদ্ধি এবং অবৈধ অভিবাসনের চেষ্টা তাদের হতাশার স্পষ্ট চিহ্ন। এই সমস্যা যদি আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে এটি পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং উন্নয়নমূলক উদ্যোগগুলোও হুমকির মুখে পড়তে পারে।

অধ্যাপক ইউনূস দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে উদ্ভূত নানা সংঘাতের কারণে আন্তর্জাতিক মনোযোগ ধীরে ধীরে রোহিঙ্গা সংকট থেকে সরে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ২০২৫ সালের ১৯ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের দাখিলকৃত ৮ লাখ ২৯ হজার ৩৬ জনের তালিকার মধ্যে মিয়ানমার সরকার ২ লাখ ৩৯ হাজার ৫৬ জনকে যাচাই করেছে এবং এর মধ্যে ১ লাখ ৭৬ হাজার ১৯৮ জনকে ‘মিয়ানমারে বসবাসকারী ব্যক্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন ড. ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন’ আয়োজন করবে।

এই সম্মেলনে কাতারের উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ।

তিনি কাতার ফাউন্ডেশনকে এই বৈঠকের আয়োজন এবং নীতিগত বিবৃতির বাইরে গিয়ে বাস্তবসম্মত সমাধান, জবাবদিহিতা ও সংহতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১৩ লাখ বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক (রোহিঙ্গা) আশ্রয় নিয়েছে, যেখানে প্রতি বছর প্রায় ৩২ হাজার নবজাতক যুক্ত হচ্ছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ কেবল মানবিক বিবেচনায় এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন,‘বাংলাদেশ মনে করে, টেকসই প্রত্যাবাসনই হলো বর্তমান সংকটের একমাত্র সমাধান।’

ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে), আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এবং মিয়ানমারের জন্য গঠিত স্বাধীন তদন্ত সংস্থার (আইআইএমএম) চলমান উদ্যোগগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ এবং রোম সংবিধির সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের মতো অপরাধের কোনোভাবেই শাস্তি এড়ানো উচিত নয়।

রোহিঙ্গাদের আস্থা ফেরাতে এবং রাখাইন রাজ্যে তাদের প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরি করতে মিয়ানমার ও এর কর্মকর্তাদের অপরাধের জন্য দায়ী করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আইসিজেতে দায়ের করা মামলাটি চলতি বছরের প্রথমার্ধে মেরিট পর্বে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আইনি ফার্ম ফোলি হোয়াগ জানিয়েছে, প্রাথমিক, আপত্তি ও মূলপর্ব শেষ হওয়ার পর তারা আইসিজে-তে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে গণহত্যার শিকারদের ক্ষতিপূরণের আবেদন করবে।

গাম্বিয়া সরকার ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এখন পর্যন্ত ওআইসি ২৭ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে, যেখানে বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে, যার পরিমাণ সাত লাখ ডলার।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ বর্তমান সংকটের একমাত্র সমাধান হিসেবে টেকসই প্রত্যাবাসনকেই বিবেচনা করে। সূত্র: বাসস