ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

বেইজিং ঘোষণা বাস্তবায়নে সহযোগিতার আহ্বান মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টার

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৪:৪৮ পিএম
বেইজিং ঘোষণা বাস্তবায়নে সহযোগিতার আহ্বান মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টার
নিউইয়র্কে কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অব উইমেনের ঊনবিংশতম অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। ছবি: পিআইডি

মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বেইজিং ঘোষণা এবং কর্মের জন্য প্ল্যাটফর্মের বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করতে বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আরও শক্তিশালী অংশীদারত্ব, বর্ধিত বিনিয়োগ এবং কোনো মহিলা বা মেয়েরা যাতে পিছিয়ে না থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য নতুন প্রতিশ্রুতির আহ্বান জানান।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) নিউইয়র্কে কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অব উইমেন (সিএসডাব্লিউ৬৯) এর ঊনবিংশতম অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান।

শারমীন এস মুরশিদ নারীদের ভূমিকার ওপর জোর দেন, যারা ঐতিহাসিকভাবে আত্মমুক্তি, গণতন্ত্র এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য প্রতিটি জাতীয় সংগ্রামের অগ্রভাগে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেছেন, ‘নারীরা, ২০২৪ সালের জুলাই বিদ্রোহের অগ্রভাগে-ফ্যাসিবাদ এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে তরুণ বিপ্লবীদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ ছিল’।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার জাতিকে গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব নেয় এবং বাংলাদেশের জেন্ডার ল্যান্ডস্কেপ চিরতরে পরিবর্তিত হয়।

উপদেষ্টা বলেছেন, বেইজিং ঘোষণা এবং কর্মের জন্য প্ল্যাটফর্মের প্রতি আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্তর্বর্তী সরকার বৈষম্য দূর করার জন্য একটি রূপান্তরমূলক সংস্কার এজেন্ডা শুরু করেছে। প্রথমবারের মতো, লিঙ্গ বৈষম্যের প্রতিবন্ধকতাগুলো মোকাবেলা করার জন্য একটি ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’ গঠন করা হয়েছে। নারীর প্রতি সহিংসতা দূরীকরণকে একটি মৌলিক নারীর ক্ষমতায়ন হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এটা করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে সহিংসতার শিকারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য কুইক রেসপন্স টিম চালু করেছে।

তার বিবৃতিতে, উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সিডও অনুচ্ছেদ ১৩ (ধ), ১৬.১ (ভ) এবং ১৬.১ (প) এর সংরক্ষণগুলো অপসারণের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।

সিএসডব্লিও ৬৯ অধিবেশনের অংশ হিসেবে, উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ ‘জেন্ডার সমতা এবং নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়নের জন্য জাতীয় প্রক্রিয়া: এসডিজি অর্জনে অবদান রাখার জন্য বেইজিং প্ল্যাটফর্মের পুনর্নির্মাণ, রিসোর্সিং এবং ত্বরান্বিত বাস্তবায়ন’ বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন।

তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বেইজিং প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশন বাস্তবায়নে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা এবং সর্বোত্তম অনুশীলনের কথা শেয়ার করেন।

সিএসডব্লিও ৬৯-এর পাশে, উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ চীন, সুইডেন, মেক্সিকো এবং ফিনল্যান্ডের তার সমকক্ষদের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন এবং নারীর উন্নয়ন, লিঙ্গ সমতা, নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা মোকাবেলার প্রচেষ্টা এবং বাংলাদেশে সামাজিক ব্যবসা হিসেবে কেয়ার অর্থনীতির উন্নয়নে সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেন।

শারমীন এস মুরশিদ বাংলাদেশ, নেপাল এবং ফিনল্যান্ডের যৌথভাবে আয়োজিত ‘অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং লিঙ্গ সমতার জন্য কেয়ার-এ পাথওয়েতে বিনিয়োগ’ শীর্ষক উচ্চ-পর্যায়ের সাইড ইভেন্টে বক্তৃতা দেবেন, যেখানে নেপালের মন্ত্রীরা, বাংলাদেশ, নেপাল ও ফিনল্যান্ডের উচ্চ-পর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধিরা, সেইসাথে ইউএন উইমেন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা, সিভিল সোসাইটি, আইএলও-এর প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।

তিনি তুর্কি এবং তিউনিসিয়ার সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করবেন।

উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ ১০ থেকে ২১ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত কমিশনের স্ট্যাটাস অফ উইমেনের ৬৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে এবং লিঙ্গ সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক সুরক্ষায় বিনিয়োগ, সামাজিক সুরক্ষা এবং বহু অংশীদারত্ব জোরদার করার বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে জড়িত হওয়ার জন্য নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি সরকারি সফরে রয়েছেন।

 

ঢাকা-ইসলামাবাদ সচিব পর্যায়ের বৈঠক বৃহস্পতিবার

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০০ এএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৮ পিএম
ঢাকা-ইসলামাবাদ সচিব পর্যায়ের বৈঠক বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘ ১৫ বছর পর আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শুরু হচ্ছে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক (এফওসি)। সর্বশেষ এ বৈঠক হয়েছিল ২০১০ সালে। বৈঠকে অংশ নিতে বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের প্রধান ইশরাত জাহান।

জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন এবং পাকিস্তানের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন আমনা বালুচ। বৈঠকে বাংলাদেশ পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে সব বিষয়ে আলোচনা করবেন তারা।

এফওসি বৈঠক শেষে আগামী ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। পরদিন দুদেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এ বিষয়ে খবরের কাগজকে বলেন, ‘বাংলাদেশ অতীতের টানাপোড়েন পেছনে ফেলে পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চায়, তবে মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্ন বাদ দিয়ে নয়।’ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার দায়ে পাকিস্তানের ক্ষমা প্রার্থনার প্রসঙ্গ, আটকে থাকা সম্পত্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবি এখনো আলোচনায় আছে। এ বিষয়ে তৌহিদ হোসেন সাফ জানিয়ে দেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে একাত্তরকে উপেক্ষা করা হবে না। সৌজন্য সাক্ষাতে কঠিন প্রসঙ্গ না তুললেও আনুষ্ঠানিক আলোচনায় এসব বিষয় তুলে ধরা হবে।’

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বৈঠকে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়েও ঐকমত্য হয়। আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক বাস্তবতায় ইসলামাবাদ ও ঢাকার সম্পর্কে ছিল টানাপোড়েন। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আসা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্ক স্বাভাবিক ও গভীর করার পথে অগ্রসর হন। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

পল্লবীতে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে শিশু হত্যা, গ্রেপ্তার ১

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪০ পিএম
পল্লবীতে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে শিশু হত্যা, গ্রেপ্তার ১
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর পল্লবীতে একটি মোটর সার্ভিসিংয়ের দোকানে গাড়িতে হাওয়া দেওয়া মেশিনের (কমপ্রেশার) সাহায্যে পেটে বাতাস গ্যাস ঢুকিয়ে চার বছরের শিশুকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত শিশুর নাম আবু বকর সিদ্দিক। এ ঘটনায় আকাশ নামে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) খবরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম। এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরের বাউনিয়াবাদ এলাকার একটি মোটর সার্ভিসিংয়ের গ্যারেজে এ ঘটনা ঘটে। 

পায়ুপথে বাতাস প্রবেশ করানোর কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ওসি নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ ঘটনায় একজন অজ্ঞাতনামাসহ চারজনের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় হত্যা মামলা করেছেন শিশুটির মা আয়শা। আসামিদের একজন কিশোর হওয়ায় শিশু আইন ২০১৩ অনুসারে তার নাম উল্লেখ করা হলো না। বাকি দুই আসামি রাজু (২০) ও মো. সুজন খান (৩৬)।

তিনি বলেন, আকাশ নামে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খেলার ছলে ঘটনাটি ঘটেছে দাবি করেছে ওই কিশোর। তবে চরম অমানবিক হত্যাকাণ্ড। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

স্থানীয়রা জানায়, গত মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় স্কুলে ক্লাস শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আবু বক্কর বাসায় ফিরে যায়। তার মা একজন গার্মেন্টস কর্মী। আবু বক্করের বড় ভাই জিহাদ (১১ বছর) স্থানীয় একটি মোটর গ্যারেজে কাজ করে। এরপর বেলা ৩টার দিকে আবু বক্কর গ্যারেজে বড়ভাই জিহাদের কাছে গেলে ওই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। উপস্থিত কয়েকজন কিশোর বক্করের বড়ভাই জিহাদকে কলা-রুটি কিনে আনতে পাঠায়। এ সময় অন্য কিশোররা আবু বক্করের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করে। গাড়ির হাওয়া দেওয়ার পাইপ শিশুটির পায়ুপথে ঢুকিয়ে হাওয়া দেয়। এ সময় অতিরিক্ত চাপে শিশুটির পেট ফুলে যায়। আবু বক্কর বমি করে। তার মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে।

এ সময় স্থানীয়রা দ্রুত শিশুটিকে প্রথমে রাবেয়া ক্লিনিকে নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে শহিদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর আবু বক্করের পরিবার পল্লবী থানায় মামলা করেছেন।

 

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতেই হবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৫ পিএম
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতেই হবে: প্রধান উপদেষ্টা
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তদন্ত কমিশনের সদস্যরা। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কার্যক্রম পুরোদমে এগিয়ে চলছে জানিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন আগামী জুনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে এই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিশন। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তদন্ত কমিশনের সদস্যরা তাকে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন। খবর বাসসের।

কমিশনপ্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আলম ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। যেহেতু ১৬ বছর আগের ঘটনা, তাই অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। অভিযুক্ত অনেকেই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কারাগারে থাকা কয়েকজনের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তদন্তের জন্য যোগাযোগ করা প্রয়োজন এমন ২৩ জন বিদেশে অবস্থান করছেন। তার মধ্যে ৮ জন সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করেছেন।’

কমিশনপ্রধান আরও বলেন, ‘আমরা হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের প্যাটার্নটা নিয়ে তদন্ত করছি। ডিজিকে হত্যার পর বাকিদের হত্যা করা হয়েছিল। এটি ছিল একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। পরিকল্পনা ছাড়া এমন হত্যাকাণ্ড হতে পারে না।’ তিনি বলেন, ‘এটা যেন একটা পলাশীর পুনরাবৃত্তি। এটার শিকড় আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’

কমিশনের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন, ‘এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একজন কর্মকর্তা/কর্মচারীকেও সরানো হয়নি। কাউকে দায়ী করা হয়নি। এটি গোয়েন্দা সংস্থা, সামরিক বাহিনী এবং রাজনৈতিক ব্যর্থতা।’

তদন্ত কমিশনকে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নৃশংসভাবে নিজেদের অফিসারদেরই তারা মেরেছিল। মসৃণভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।’

পুরো জাতি তদন্ত কমিশনের দিকে তাকিয়ে আছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সবাই উত্তর খুঁজছি। কমিশনকে এ ঘটনা তদন্তে সফল হতেই হবে। এ রহস্য উদঘাটন করতেই হবে।’

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিশনের সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান, মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, ড. এম আকবর আলী, মো. শরীফুল ইসলাম, শাহনেওয়াজ খান চন্দন, এ টি কে এম ইকবাল।

 

অচিরেই বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় হবে: প্রধান বিচারপতি

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৬ পিএম
অচিরেই বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় হবে: প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

শক্তিশালী বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় শিগগিরই বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় বাস্তবায়ন হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামের (এসআরএফ) কার্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

বুধবার প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের চলমান উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করেন। একপর্যায়ে  তিনি সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে আসেন।
 
এসআরএফের সভাপতি মাসউদুর রহমান, সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম মল্লিক ও যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান ডালিম এ সময় প্রধান বিচারপতিকে স্বাগত জানান।

প্রধান বিচারপতি তার ঘোষিত রোডম্যাপ বাস্তবায়নে সাংবাদিকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘শক্তিশালী বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় অচিরেই বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় বাস্তবায়ন হবে। আইনজীবীদের বিশেষ করে নারী আইনজীবীদের যে অবকাঠামোগত অসুবিধা রয়েছে, তা অচিরেই দূর করা হবে। স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা করতে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের সহায়তা কামনা করেন প্রধান বিচারপতি।

এসআরএফের কার্যালয় পরিদর্শনের আগে প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবন এবং এনেক্স ভবনে নতুনভাবে সংস্কার করা স্বাস্থ্যসম্মত এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিবান্ধব টয়লেট প্রকল্প পরিদর্শন করেন। সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদনক্রমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক। 

ব্র্যাকের প্রধান নির্বাহী আসিফ সালেহ, সুপ্রিম কোটের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভূঞা, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মুহা. হাসানুজ্জামান, প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব শরিফুল আলম ভূঞা ও স্পেশাল অফিসার মোয়াজ্জেম হোছাইন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

 

 

কবি রফিক আজাদের বাড়ি দখলের ষড়যন্ত্র!

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১১ পিএম
কবি রফিক আজাদের বাড়ি দখলের ষড়যন্ত্র!
কবি রফিক আজাদের ভেঙে ফেলা বাড়ি। ছবি: খবরের কাগজ

রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার ১ নম্বর সড়কে প্রয়াত কবি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক আজাদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তার স্ত্রী কবি-শিক্ষাবিদ দিলারা হাফিজ। তার ভাষ্য, বাড়িটি দখল করে হাউজিং কমপ্লেক্স তৈরির ষড়যন্ত্র হচ্ছে। 

আশির দশকে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে ধানমন্ডির ১ নম্বর সড়কের ১৩৯/৪-এ বাড়িটি চারটি পরিবারকে সরকার থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধে শহিদ পরিবারও আছে। ওই বাড়িটির পশ্চিমাংশে কমবেশি ৫ কাঠা বরাদ্দ পান দিলারা হাফিজ। ওই বাড়িতে এখনো থাকেন তিনি। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে রফিক আজাদের বাড়ির পাশের একটি অংশ ভেঙে ফেলা হয়। তাতে রফিক আজাদের বাড়ির একটি অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে নাগরিক মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। দিলারা হাফিজ বলেন, ‘বাড়িটি কিছু লোক দখল করার জন্য অনেক বছর থেকেই লেগে আছে। এ নিয়ে আদালতেও আমরা দৌড়ঝাঁপ করছি। কিন্তু কয়েক মাস ধরে বাড়িটি ছাড়তে আমাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি জানান, গত ১১ এপ্রিল বাড়িটি রফিক আজাদের নামে স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তার অভিযোগ, একটি পক্ষ তাদের এই বাড়ি ভাঙতে নানাভাবে চাপ দিচ্ছে।

রফিক আজাদ ২০১৬ সালে মারা যান। এই বাড়িতে বসে তিনি তার আত্মজীবনী ‘কোনো খেদ নেই’ রচনা করেছিলেন। ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপটে রফিক আজাদ লিখেছেন তার কালজয়ী কবিতা ‘ভাত দে হারামজাদা’।