ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

ওমরাহর ক্ষেত্রে বিমানের টিকিট সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে: ধর্ম উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম
আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম
ওমরাহর ক্ষেত্রে বিমানের টিকিট সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে: ধর্ম উপদেষ্টা
কক্সবাজারে জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্ত্যব্য রাখেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘ওমরাহর ক্ষেত্রে বিমানের টিকিট সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গ্রুপ টিকিট বুকিং দিয়ে অতিরিক্ত দামে বেচার সুযোগ বন্ধ হয়েছে।’

শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুরে কক্সবাজারে জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন সংশ্লিষ্ট যাত্রীর পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে টিকিট বুকিং করতে হবে। তিন দিনের মধ্যে এই টিকিট ইস্যু না করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বুকিং বাতিল হয়ে যাবে। গ্রুপ টিকিট বুকিং করে দ্বিগুণ, তিন গুণ দাম বাড়িয়ে দেবেন, এটা আর হবে না। এ জন্য একটি নীতিমালাও তৈরি করা হয়েছে।’

ড. খালিদ বলেন, ‘কক্সবাজারে সুদূর অতীত হতেই সম্প্রীতির একটা আবহ বিরাজ করে আসছে। এখানে সাম্প্রদায়িক কোনো নৈরাজ্য, কোনো ভুল বোঝাবুঝি নেই।’ এ মসজিদের মাধ্যমে ভ্রাতৃত্বের এই পয়গাম কক্সবাজারের ছড়িয়ে পড়বে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানিয়েছেন, এ মডেল মসজিদে একসঙ্গে ১ হাজার ১০০ জন পুরুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন। এখানে মহিলা ও শারীরিক কিংবা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা অজুখানা ও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া গাড়ি পার্কিং, মৃত ব্যক্তির গোসলের ব্যবস্থা, কনফারেন্স রুম, অডিটোরিয়াম, কোরআন শিক্ষাব্যবস্থা, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিস, পাঠাগার, ইমাম প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন আঙ্গিকে মডেল মসজিদটি সাজানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে মডেল মসজিদ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শহীদুল আলমসহ সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, সারা দেশে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করছে সরকার। ইতোমধ্যে সাড়ে তিন শ মসজিদের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। সূত্র: বাসস।

এনবিআরের ২ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৯ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩০ পিএম
এনবিআরের ২ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর
ছবি: সংগৃহীত

অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শীর্ষ পর্যায়ের দুই কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। ৭২১ কোটি টাকা চীন থেকে দেশে এনে রেমিট্যান্স হিসেবে প্রদর্শনের ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। 

অবসরে পাঠানো ওই দুই কর্মকর্তা হলেন আয়কর বিভাগের (ইনকাম ট্যাক্স উইং) কমিশনার গোলাম কবির ও এনবিআরের সদস্য (চলতি দায়িত্ব) আবু সাইদ মোহাম্মদ মোশতাক। বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলেও তারা বিধি মোতাবেক অবসরজনিত সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন।

তাদের দুজনের বিরুদ্ধেই কর অঞ্চল-৫-এ কর্মরত থাকার সময় বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া আলোচিত ৭২১ কোটি টাকা চীন থেকে দেশে এনে রেমিট্যান্স হিসেবে প্রদর্শনের ঘটনায়ও তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ওই সময়ে তারা কর অঞ্চল-৫-এ দায়িত্বে ছিলেন। দুজন কর্মকর্তারই চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। সরকারি চাকরি আইনে এ ধরনের পরিস্থিতিতে সরকার চাইলে যেকোনো কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাতে পারে। সেই বিধান অনুসারেই তাদের অবসর দেওয়া হয়েছে বলে এনবিআর সূত্র নিশ্চিত করেছে।

 

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২২ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৬ পিএম
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাণিজ্য ও ব্যবসার সম্ভাবনা খুঁজে বের করার লক্ষ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কিছু বাধা রয়েছে। আমাদের সেগুলো অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’ খবর বাসসের।

উল্লেখ্য, গত ১৫ বছর পরে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক সভা হচ্ছে ঢাকায়, যেখানে আমনা বালুচ পাকিস্তান প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অতীতের কথা উল্লেখ করে আমনা বালুচ বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের মধ্যে বিশাল আঞ্চলিক বাজার রয়েছে। আমাদের এটি কাজে লাগানো উচিত’। আমনা বালুচ বলেন, ‘আমরা প্রতিবারই সুযোগ হারাতে পারি না। দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে নিয়মিত ব্যবসা-ব্যবসা (বিটুবি) যোগাযোগ এবং সব পর্যায়ে সফর বিনিময় হওয়ার প্রয়োজন।’

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের শীর্ষ ব্যবসায়ী চেম্বার এফপিসিসিআইয়ের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করেছে এবং এ সময় এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আশা প্রকাশ করেন, এপ্রিলের শেষের দিকে দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের আসন্ন সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনি বরাবরই পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার পক্ষে ছিলেন, বিশেষ করে সার্ক কাঠামোর আওতায়। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে আরও বেশি যুব বিনিময় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আদান-প্রদান করা উচিত, যাতে জনগণের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার হয়। আমরা অনেকদিন ধরে একে অপরকে মিস করেছি, কারণ আমাদের সম্পর্ক হিমায়িত ছিল। আমাদের সেই বাধা অতিক্রম করতে হবে’।

ড. ইউনূস আরও বলেন, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে নিউইয়র্কে এবং ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ডি-৮ সম্মেলনের ফাঁকে কায়রোতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সঙ্গে তার বৈঠক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অগ্রগতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সার্ক, ওআইসি এবং ডি-৮-এর মতো বহুপাক্ষিক ও আঞ্চলিক ফোরামে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফসহ অন্যান্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

খিলক্ষেত-কুড়িল সড়ক ২৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৩ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম
খিলক্ষেত-কুড়িল সড়ক ২৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে
ছবি: সংগৃহীত

এমআরটি লাইন-১ এর ইউটিলিটি স্থানান্তর কাজের জন্য ২৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে খিলক্ষেত থেকে কুড়িল-বসুন্ধরামুখী সড়ক। এ সময় বিকল্প পথ ব্যবহার করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই অনুরোধ জানান ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (লাইন-১) প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কাসেম ভূঞা।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এমআরটি লাইন-১ এর ইউটিলিটি স্থানান্তর কাজের জন্য ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১৮ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত (মোট ২৯ ঘণ্টা) খিলক্ষেত থেকে কুড়িল ও বসুন্ধরা অভিমুখী যান চলাচল বন্ধ থাকবে। এসময় বিকল্প হিসেবে রেডিসন হোটেলের সম্মুখে ইউটার্ন করে কুড়িল ফ্লাইওভার অথবা অন্য বিকল্প সড়ক ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

জয়ন্ত সাহা/এমএ/

সরকারি প্রাথমিকে শিক্ষকদের বদলির আবেদন শুরু

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫৩ পিএম
সরকারি প্রাথমিকে শিক্ষকদের বদলির আবেদন শুরু

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের এক জেলা থেকে আরেক জেলায় (একই বিভাগের মধ্যে) অনলাইন বদলির আবেদন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল থেকে শিক্ষকরা অনলাইনে বদলির আবেদন করতে পারছেন। আগামী ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত এ আবেদন প্রক্রিয়া চলবে। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুনের সই করা অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। খবর বাসসের।

চিঠিতে জানানো হয়, ২১ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সহকারী উপজেলা বা থানা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার যাচাই সম্পন্ন করতে হবে। আর ২৪ ও ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ২৬ ও ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এবং ২৮ এপ্রিল সিস্টেম থেকে স্বয়ংক্রিয় মনোনয়ন শেষে ২৯ ও ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিভাগীয় উপপরিচালক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। আদেশে আরও বলা হয়, শিক্ষকরা পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বোচ্চ তিনটি বিদ্যালয় পছন্দ করবেন। কোনো শিক্ষকের একাধিক পছন্দ না থাকলে শুধু একটি বিদ্যালয় পছন্দ করতে পারবেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বদলির আদেশ জারি হলে তা বাতিল করার জন্য পরবর্তী সময়ে কোনো আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।

এদিকে যাচাইকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা সর্বশেষ ‘সমন্বিত অনলাইন বদলি নির্দেশিকা, ২০২৩’ অনুযায়ী আবেদনকারীর আবেদন ও অন্য কাগজপত্রাদি যাচাই করে পাঠাবেন। যাচাইকারী কর্মকর্তা সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করবেন। যাচাইপূর্বক প্রেরণ করার পর পরবর্তী সময়ে তা পুনর্বিবেচনার আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।

এর আগে ২১৬টি উপজেলা বা থানায় ১০ শতাংশের বেশি শিক্ষক অন্য উপজেলা থেকে বদলি হয়েছেন। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলো আন্তজেলা বদলির আওতাবহির্ভূত থাকবে এবং অবশিষ্ট ২৭১টি উপজেলা বা থানায় বদলি কার্যক্রম চলমান থাকবে।

 

সাকিবের আ.লীগে যোগদান শুধু ভুল সিদ্ধান্ত নয়, নৈতিক ব্যর্থতাও বটে: প্রেস সচিব

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪৪ পিএম
সাকিবের আ.লীগে যোগদান শুধু ভুল সিদ্ধান্ত নয়, নৈতিক ব্যর্থতাও বটে: প্রেস সচিব
সাকিব আল হাসান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসানের রাজনীতিতে যোগদানের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল পছন্দের সিদ্ধান্ত কেবল ভুল পদক্ষেপ ছিল না, বরং এটি নৈতিক ব্যর্থতাও বটে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বুধবার (১৬ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এমন মন্তব্য করেন।

দীর্ঘ ওই পোস্টে শফিকুল আলম লেখেন, সাকিব আল হাসানের রাজনীতিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল না। একজন নাগরিক হিসেবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বা রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়ার অধিকার তার রয়েছে। সাকিব রাজনীতিতে যোগদান করেছেন, সেটি সমস্যা নয়, বরং বড় প্রশ্ন হলো, রাজনীতিতে যোগ দিতে গিয়ে তিনি কাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।

প্রেস সচিব বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব যখন গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত-যেমন গণহত্যা, গুম, অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, বিরোধীদের নামে মিথ্যা মামলা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, পদ্ধতিগত দুর্নীতি, এমনকি ব্যাংক ডাকাতির মতো অপরাধও অন্তর্ভুক্ত, তখন সেই দলে সাকিবের যোগদানের সিদ্ধান্ত নৈতিকভাবে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। কেবল এটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল না, এটি ছিল আন্তর্জাতিক মহলের কড়া নজরদারির মধ্যে থাকা শাসন ব্যবস্থার প্রতি মৌন সমর্থন।

তিনি আরও লেখেন, একদলীয় কমিউনিস্ট রাষ্ট্র ছাড়া বিশ্বের অন্য কোনো দেশের শীর্ষ ক্রীড়াবিদের কথা মনে পড়ে না, যিনি স্বেচ্ছায় এমন একটি সরকারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, যার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।

শফিকুল আলম উল্লেখ করেন, সাকিব কেবল দেশের মানুষের মনোভাব বুঝতে ভুল করেছেন তা নয়, তিনি নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নৈতিকতা উপেক্ষা করেছেন। এর থেকে দুটি বিষয় বোঝার ইঙ্গিত দেয়, হয় তিনি রাজনৈতিকভাবে ভীষণ অজ্ঞ বা সরল অথবা খারাপ কিছু, যা ব্যক্তিগত লাভের জন্য এক ধরনের সুবিধাবাদী পদক্ষেপ।

প্রেস সচিব আরও বলেন, বড় উদ্বেগের বিষয় সাকিবের কাছ থেকে কার্যকর জনসংযোগ বা কৌশলগত যোগাযোগের কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। সাকিব চাইলে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় স্পোর্টস ও ইমেজ ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির পরামর্শ নিতে পারতেন, যারা বিশ্ববিখ্যাত সেলিব্রিটিদের কৌশলগত দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে। তারা নিশ্চয়ই তাকে এমন একটি সিদ্ধান্ত থেকে বিরত রাখত, যা এখন তার মর্যাদা ও ব্র্যান্ড উভয়কেই কলুষিত করেছে। তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ সময়ে তিনি কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন। তাই প্রফেশনাল পিআর পরামর্শ নেওয়া কখনো তার নাগালের বাইরে ছিল না।

তিনি বলেছেন, তবে যেটি এসব কিছুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দৃষ্টিকটুভাবে চোখে পড়ে, তা হল তার নীরবতা। বিশেষ করে তার সরকার এবং তার নিজের শহর মাগুরায় তার সমর্থকদের দ্বারা সংগঠিত সহিংসতা এবং হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে। মাগুরায় বেশ কয়েকজন বিরোধীকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল, তবুও সাকিব কিছুই বলেননি। কোনো নিন্দা নেই, ন্যায়বিচারের জন্য আহ্বানও অনুপস্থিত। কোনো ক্ষমা প্রার্থনা নেই। তার নীরবতা কেবল হতাশাজনক ছিল না, এটি বধির ছিল।

প্রেস সচিব লেখেন, সাকিব বাংলাদেশের সর্বকালের সবচেয়ে প্রতিভাবান ক্রিকেটার হতে পারেন। কিন্তু প্রতিভা ও জাতীয় দলের হয়ে পারফর্ম করা কিন্তু দায়মুক্তি দেয় না। একটি সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে, যাদের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিজ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে-তিনি দেশের ইতিহাসের কিছু অন্ধকার অধ্যায়কে বৈধতা দিয়েছেন। শফিকুল আলম লেখেন, এ মুহূর্তে, তার কর্মকাণ্ডের সবচেয়ে যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা হলো লোভ। তার রাজনৈতিক পদক্ষেপে বিতর্কিত ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে তার সম্পর্ক সবকিছু একই দিক নির্দেশ করে। সেটি হলো ব্যক্তিগত লাভ, জনসেবা নয়।

প্রেস সচিব পোস্টের ইতি টানেন এটি লিখে, একদিন সাকিবকে ফিরে আসতে হতে পারে। সম্ভবত তখন তিনি অবশেষে সত্যের মুখোমুখি হবেন আর জানবেন আওয়ামী লীগে তার যোগদানের সিদ্ধান্ত কেবল একটি ভুল পদক্ষেপই ছিল না, বরং একটি বিশ্বাসঘাতকতা ছিল।