
বিভিন্ন ইস্যুতে মানুষ যেন লক্ষ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ভুল তথ্য ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে না পড়ে সেজন্য মানুষদের অপ্রচার থেকে দূরে রাখতে গণমাধ্যমের কাজ হবে মানুষের ফোকাসটুকু ঠিক করা। এর পাশাপাশি জনগণ যেন অপপ্রচারকারীদের প্রত্যাখান করে সেই আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রবিবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘মিডিয়া ইন দ্য এজ অব মিসইনফরমেশন অ্যান্ড ডিসইনফরমেশন : চ্যালেঞ্জেস, রেসপনসিবিলিটিজ অ্যান্ড দ্য পাথ ফরোয়ার্ড ফর ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক সভায় এ আহ্বান জানান।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে আমরা যেসব তথ্য জেনে এসেছি, তা এখন জানছি সেসব ভুল। এখন তাহলে এখন কেন এতো তথ্যের অপ্রচার কেন হচ্ছে, এর পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণ। যখন রাজনৈতিক একটা ডামাডোল হতো, মানুষ যখন রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে কথা বলতে চাইতো রাসেল ভাইপার বা অন্যকিছু ইস্যু চলে আসে। আবার পটপরিবর্তনের পর ৮ আগস্টের পর ডাকাতের একটি এপিসোড চলে আসল যে, সব বাড়িতে-বাড়িতে ডাকাতি চলছে আবার সেন্ট মার্টিনের ইস্যু চলে আসল।’
মানুষের ফোকাসটুকু ঠিক করে আনা গণমাধ্যমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘গণমাধ্যমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মানুষের ফোকাসটুকু ঠিক করে আনা। মানুষ যেন রাসেল ভাইপার বা ডাকাতের শুনে অস্থির হয়ে পড়ে ভালো কাজ কোন গুলো হচ্ছে বা কোন জায়গাগুলোতে এনার্জি দেওয়া প্রয়োজন সেটি না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাসেল ভাইপার নিয়ে পোস্ট করতে না থাকে। যখন আমরা নতুন দেশ গড়ছি, সকল বাহিনী ও সংস্থা যে ধরনের সমর্থন দেওয়ার কথা ছিল তেমনটা দিচ্ছে না, কারণ পুরো সিস্টেমটাই ধসে পড়েছে। এখন নাগরিক হিসেবে কাজ হবে তার জায়গা থেকে কিছুটা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং করা। একইভাবে গণমাধ্যমের উচিত হবে সেভাবেই সংবাদ পরিবেশন করা যেন মানুষের ফোকাসটুকু ঠিক থাকে। স্বৈরশাসক মানুষ মনোজগতটিকে এমনভাবে রেখে গিয়েছে যেন সুস্থভাবে চিন্তা না করতে না পারা। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে সঠিক তথ্য জানতে হবে এবং সেই মোতাবেক কাজ করতে হবে।’
অপপ্রচারকারীদের প্রত্যাখানের আহ্বান জানিয়ে সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে কেন এই অপপ্রচারগুলো চলছে, যদি আমরা সেটি বুঝতে পারি তাহলে আমরা সে অপপ্রচারের ফাঁদে পা দেব না। সেই সঙ্গে অপপ্রচারকারীদের যখন দর্শক, শ্রোতা থাকবে না, জনগণ প্রত্যাখান করবে তখন কিন্তু সেটিও একটি মাধ্যম হয়ে যাবে। শুধু সরকার আইন করে দিলেই ভুল তথ্য পরিবেশন বন্ধ হয়ে যাবে সেটি কিন্তু সঠিক না। ফলে জনগণ কেউ তাদের সেই জায়গাটি ভাবতে হবে এবং মিডিয়াকেও মানুষের ফোকাস ঠিক রাখতে হবে সেইম জায়গাটিতে ইফোর্ট দিতে হবে।’
এতে পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে পিআইবির চেয়ারম্যান ড. ফিরদৌস আজীম, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, ইউল্যাবের অধ্যাপক ড দ্বীন মুহাম্মদ সুমন রহমান এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অশীষ দামলে প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আরিফ জাওয়াদ/জোবাইদা/