ঢাকা ৫ বৈশাখ ১৪৩২, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
English
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

আইন লঙ্ঘন করলেই শাস্তি: ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৬ পিএম
আইন লঙ্ঘন করলেই শাস্তি: ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী

উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনের লক্ষ্যে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। 

তিনি বলেন, ‘আইন লঙ্ঘন করলেই শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। পুলিশি নিরাপত্তার পাশাপাশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পর্যায়েও নিজস্ব নিরাপত্তা সচেতনতাবোধ তৈরি করতে হবে।’ 

সোমবার (২৪ মার্চ) ডিএমপি সদর দপ্তরে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীর সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত এক সমন্বয় সভায় এ কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার। 

তিনি বলেন, ‘যেকোনো আইনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, একটা প্রভাব তৈরি করা, যেন মানুষ বুঝতে পারে যে আইন লঙ্ঘন করলেই শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। সড়কে কেউ যদি উল্টোপথে গাড়ি চালায় কিংবা ফুটপাত দিয়ে মোটরসাইকেল চালায়, তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।’

ডিএমপির তৎপরতায় নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে- উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর পুলিশের জোর তৎপরতায় রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। পুলিশি তৎপরতায় ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মতো ঘটনা অনেকাংশে কমে গেছে। সবার সহযোগিতা নিয়ে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’

সমন্বয় সভায় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, পুলিশের বিভিন্ন বিশেষায়িত ইউনিটের প্রতিনিধি, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশন, বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি, বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, লঞ্চ শ্রমিক সমিতি, বিকেএমইএ, বিজিএমইএ, জিএমপি, বিআইডব্লিউটিএ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, বাস মালিক সমিতি, লঞ্চ মালিক সমিতি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল সংস্থা ও সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

হরিজন-দলিতদের জন্য বৈষম্য বিলোপ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৪ পিএম
আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৪ পিএম
হরিজন-দলিতদের জন্য বৈষম্য বিলোপ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি
জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সংস্কার ও রাষ্ট্র ভাবনায় হরিজন-দলিত জনগোষ্ঠী’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: খবরের কাগজ

হরিজন-দলিতদের স্বার্থ রক্ষায় ‘বৈষম্য বিলোপ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল’ গঠনের দাবি জানিয়েছে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠন। 

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সংস্কার ও রাষ্ট্র ভাবনায় হরিজন-দলিত জনগোষ্ঠী’ শীর্ষক সেমিনারে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠনের সভাপতি সুরেশ বাসফোর এ দাবি তোলেন।

তিনি এ সময় আট দফা দাবি উত্থাপন করেন। 

দাবিগুলো হল- 

১. বৈষম্যকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে স্বাধীন কমিশন ও হরিজন-দলিতদের স্বার্থ রক্ষায় ‘বৈষম্য বিলোপ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল’ গঠন করতে হবে।

২. অনগ্রসর পিছিয়ে পড়া হরিজন-দলিত জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে শিক্ষা ও চিকিৎসা দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোটা এবং উচ্চশিক্ষিত ছেলে-মেয়েদের সরকারি সব পেশায় সম-অধিকার নিশ্চিত করতে বিশেষ কোটা ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

৩. সারা দেশের সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা, হাট-বাজার-ক্লিনিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেতন বৃদ্ধি ও চাকরি স্থায়ীকরণ করতে হবে। সবেতন মাতৃত্বকালীন ছুটি, উৎসব বোনাস, অবসর ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা দিতে হবে।

৪. সরকারি খাস জমিতে হরিজন জনগোষ্ঠীকে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য বন্দোবস্ত করতে হবে। ১০০-২০০ বছরের পুরাতন জায়গা বসবাসরত হরিজন-দলিতদের নামে দলিল করে দিতে হবে। পুনর্বাসন করে উচ্ছেদ করা যাবে না।

৫. দেশে বসবাসরত হরিজন জনগোষ্ঠীকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।

৬. মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হরিজন-দলিতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান এবং শহিদ পরিবারের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।

৭. জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে হরিজন-দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

৮. একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগে জাত হরিজনদের জন্য ঘোষিত ৮০ ভাগ কোটা বাস্তবায়ন করতে হবে।

এ সেমিনারে বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, লেখক-গবেষক আলতাফ পারভেজ, হরিজন ঐক্য পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণ লাল। 

জয়ন্ত/পপি/

গুজবে সেনাবাহিনী বিচলিত নয়: সেনা সদর

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৭ পিএম
গুজবে সেনাবাহিনী বিচলিত নয়: সেনা সদর
ছবি: সংগৃহীত

গুজব তো সব সময়ই গুজব। ফলে কোনো রকম গুজবে সেনাবাহিনী বিচলিত নয়। বরং সেনাবাহিনী আরও একতাবদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী সততা, ন্যায়-নীতির সঙ্গে প্রত্যয় ও সহনশীলতার সঙ্গে দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করছে, ভবিষ্যতেও করবে। 

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংকালে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সেনাবাহিনী সদর দপ্তরের মিলিটারি অপারেশনস পরিদপ্তরের কর্নেল স্টাফ মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী সরকারের নির্দেশে এই মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিয়োজিত রয়েছে। সেনাবাহিনী সরকার নির্দেশিত যেকোনো দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে এবং পালন করে যাবে।’

ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত সেনাসদরের প্রেস ব্রিফিংকালে (৫ম) আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর বিগত দুই মাসের কার্যক্রম তুলে ধরেন কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম। 

তিনি এ সময় বলেছেন, বিগত দুই মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অন্যান্য সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ২ হাজার ৪৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া ৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭ হাজার ৮২২ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। যাদের মাঝে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, মাদক ব্যবসায়ী, অপহরণকারী, চোরাচালানকারী, প্রতারক ও দালাল চক্র, চাঁদাবাজ, ডাকাত, ছিনতাইকারী ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এরই ধারাবাহিকতায় গত দুই মাসে সেনাবাহিনী ৩২০টি অবৈধ অস্ত্র ও ৫৬৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করে। এ ছাড়া এই পর্যন্ত সর্বমোট ৯ হাজার ৩৭০টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৫ হাজার ৫২ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে বলেও জানান তিনি।

কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখী মানুষের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে ও সুশৃঙ্খলভাবে যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী ঈদের আগে ও পরে মিলে ২ সপ্তাহের বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে জাতীয় মহাসড়কগুলোতে নির্বিঘ্নে যান চলাচল নিশ্চিত করতে ঢাকাসহ দেশের সব জেলার বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এবং লঞ্চ টার্মিনাল ও মহাসড়কে দিন-রাত টহল পরিচালনা, স্পর্শকাতর স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় যা মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনাসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড গত বছরের তুলনায় বহুলাংশে হ্রাস পায় যা জনসাধারণকে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছানোসহ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘনভাবে ঈদ উদযাপনে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতায় কাজ করার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কাজ করতে গিয়ে কোনো বাধা পাচ্ছি না। আমরা যেকোনো অপরাধীকে গ্রেপ্তারের পর অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে থাকি। পরবর্তী আইনি বিচারকাজটি সেনাবাহিনীর দায়িত্বের বহির্ভূত। ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতায় সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে, যেখানে যতটুকু ব্যবহার করার দরকার, ততটুকুই ব্যবহার করা হচ্ছে।’ 

বৈষয়িক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সুপার পাওয়ারদের কেন্দ্রবিন্দু এমন প্রসঙ্গের জবাবে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে সব সময় সুসম্পর্ক বজায় রয়েছে। সম্প্রতি সেনাপ্রধানের রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া সফর এমনই একটি নিয়মিত কার্যক্রম। এই সফরে সেনাপ্রধান বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি পরিদর্শন করেন। এর ফলে সামরিক সহযোগিতা আরও প্রসার হবে। 

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে ও আগে কয়েকটি জায়গায় নিষিদ্ধ সংগঠনের পতাকা হাতে নিয়ে মিছিল করার প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা প্রশ্ন তুললে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মার্চ ফর গাজার বিক্ষোভে সেনাবাহিনী কালো পতাকাধারীদের রহিত করেছে। কালো পতাকাধারী হলেই যে সে জঙ্গি সংগঠনের এটির কোনো প্রমাণ আমরা এখনো পাইনি।’ তবে এ বিষয়ে সেনাবাহিনী সোচ্চার রয়েছে। গোয়েন্দা বাহিনীও তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। 

খাগড়াছড়িতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণের প্রসঙ্গে জানতে তিনি বলেন, অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর অবস্থান কিছুটা শনাক্ত করা গেছে। এ বিষয়ে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভালো, নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। 

এ সময় তিনি রাজধানীতে বিভিন্ন ধরনের অবরোধ মোকাবিলায় কার্যকরী পদক্ষেপ, মায়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মিদের বাংলাদেশের জেলেদের ও মাছভর্তি ট্রলার ধরে নিয়ে যাওয়া ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, বিগত সময়ে শিল্পাঞ্চলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং ৩১ বার বিভিন্ন মূল সড়ক অবরোধ থেকে অবমুক্ত করাসহ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। এ ছাড়া সম্প্রতি সাতক্ষীরার আশাশুনিতে খোলাপেটুয়া নদীর প্রায় ৩০০ মিটার বাঁধ ভেঙে গেলে আশপাশের প্রায় ৯টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনীর ত্রাণসহ মানবিক সহায়তা এবং মায়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে মানবিক বিপর্যয়ে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের জরুরি উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা উল্লেখ করেন। 

বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচিকে সমর্থন জানাল যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩০ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩০ পিএম
বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচিকে সমর্থন জানাল যুক্তরাষ্ট্র
যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাষ্ট্রের উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল এ চুলিক ও অ্যান্ড্রু হেরাপ। ছবি: পিআইডি

যুক্তরাষ্ট্রের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল এ চুলিক এবং অ্যান্ড্রু হেরাপের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফররত সে দেশের একটি প্রতিনিধিদল অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতকালে এই সমর্থনের কথা জানান। এ সময় তারা আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন প্রতিনিধি দলটি।

বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র মিশনের প্রধান ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার উদারতার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং এ ইস্যুতে অগ্রগতির জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানান।

মিয়ানমার সরকার ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে রাখাইনে প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

যুক্তরাষ্ট্রের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল এ চুলিক বলেন, ‘আপনার দৃষ্টিভঙ্গি প্রশংসনীয় যে আপনি রোহিঙ্গা সংকটকে আলাদাভাবে না দেখে মিয়ানমারকে একটি সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করছেন।’

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আঞ্চলিক সহযোগিতা, সংযুক্ততা ও জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন এবং পুরো দ্বিপাক্ষিক ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য পুনরায় চালু করায় এবং পাল্টা শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে ৯০ দিনের বিরতির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা তার বাণিজ্য কর্মসূচিকে সমর্থন করার কাজ অব্যাহত রেখেছি।’ সূত্র: বাসস

একাত্তরে গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে বলল বাংলাদেশ

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৮ পিএম
একাত্তরে গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে বলল বাংলাদেশ
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক। ছবি: পিআইডি

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী বাঙালিদের ওপর যে গণহত্যা চালায়, তার জন্য দেশটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে বলেছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া দেশভাগের সময় পাকিস্তানের কাছে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশের পাওনা রয়েছে, তাও দিতে হবে। ১৯৭০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হয়। সেই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বৈদেশিক অনুদান হিসেবে আসা ২০০ মিলিয়ন ডলারও ফেরত চেয়েছে বাংলাদেশ, যা সে সময় পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা ছিল।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়গুলো উত্থাপন করা হয়েছে। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিন। 

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘ ১৫ বছর পর বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক (এফওসি) অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব জসিম উদ্দিন এবং পাকিস্তানের পক্ষে নেতৃত্ব দেন সে দেশের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ। বৈঠকে বিরোধপূর্ণ ইস্যুগুলোর দ্রুত সমাধান করে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নেওয়ার লক্ষ্যে সব বিষয়ে আলোচনা হয়। দুই দেশের মধ্যে সর্বশেষ এ বৈঠক হয়েছিল ২০১০ সালে। 

সংবাদ সম্মেলনে জসিম উদ্দিন জানান, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে পাকিস্তানকে জানানো হয়েছে, এসব অমীমাংসিত বিষয় দ্রুত নিষ্পত্তি হলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের ১৪টি জেলায় আটকে পড়া ৩ লাখ ২৪ হাজার পাকিস্তানি নাগরিককে ফেরত নেওয়ার বিষয়টিও তোলা হয় বৈঠকে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানি নাগরিকদের মধ্যে ১ লাখ ২৬ হাজার ইতোমধ্যে দেশটিতে ফেরত গেছে এবং যারা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে থাকতে চায় তাদেরও সেই সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাওয়া, ন্যায্য হিস্যা পরিশোধ এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে আগামীতে আরও আলোচনা চালিয়ে যেতে চায় পাকিস্তান। 

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও লাভের দিকটি বিবেচনা করেই আগামীতে এগিয়ে যাবে। এ জন্য দুই দেশের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রাখাই আমাদের লক্ষ্য। অতীতের মতো আলোচনার পথ যাতে আর বন্ধ হয়ে না যায়, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, আলোচনায় সামরিক সহযোগিতা নিয়েও কথা হয়েছে। এ ধরনের সহযোগিতা নতুন নয়। বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের সামরিক কর্মকর্তারা পাকিস্তান সফরে যান এবং যৌথ সামরিক মহড়াও হয়। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, বিশেষ করে সরাসরি বিমান চলাচলের বিষয়টিও আলোচনায় ওঠে। শিগগিরই দুই দেশের মধ্যে ‘ফ্লাই জিন্নাহ’ এয়ারলাইনসের পরিচালনা শুরু হবে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের আরেকটি এয়ারলাইনসও বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট অপারেট করতে চায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ইতোমধ্যে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রসচিব আরও বলেন, এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে ব্যবসা ও বাণিজ্যের ওপর। বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া কৃষি, মৎস্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা করা হয়। দুই দেশের মধ্যে লেখক, ক্রীড়াবিদ, শিক্ষাবিদসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদলের যাতায়াত বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আঞ্চলিক সংস্থা সার্ককে উজ্জীবিত করতে এবং ইসলামি দেশগুলোর সংগঠন ওআইসিতে উভয় দেশের সক্রিয় ভূমিকা রাখার বিষয়েও বৈঠকে একমত হয় দুই দেশ। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পাকিস্তানের সহায়তা কামনা করা হয়। তিনি বলেন, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দুই দেশের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়। 

এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রসচিব জানান, বৈঠকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের আসন্ন বাংলাদেশ সফরের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। তিনি আগামী ২৭ ও ২৮ এপ্রিল ঢাকা সফর করবেন। এ সময় দুই দেশের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে বালাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং পা‌কিস্তানের পক্ষ্যে নেতৃত্ব দেবেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।

রবিউল হক/এমএ/

ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানির অস্পস্টতা দূর করতে নতুন প্রজ্ঞাপন

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৪ পিএম
ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানির অস্পস্টতা দূর করতে নতুন প্রজ্ঞাপন

ভারতের সুতা আমদানি বন্ধের প্রজ্ঞাপনের নতুন ব্যাখ্যা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের নতুন ব্যাখ্যা অনুযায়ী গত ১৩ এপ্রিল বা এর আগে ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানির জন্য যারা ঋণপত্র খুলেছেন, তারা আগের মতো স্থলবন্দর দিয়ে ওই সুতার চালান খালাস করতে পারবেন। এমনকি ১৩ এপ্রিল বা এর আগে যারা এ সংক্রান্ত ঋণপত্র সংশোধন করেছেন, তারাও একই সুবিধা পাবেন।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) এনবিআর এই আদেশ জারি করেছে।

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল এক প্রজ্ঞাপনে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুবিধা বাতিল করে এনবিআর। যারা ১৩ এপ্রিল বা এর আগে ঋণপত্র খুলেছিলেন, তারা কী করবেন, এ নিয়ে মাঠপর্যায়ের অস্পষ্টতা দূর করতে নতুন ব্যাখ্যা দিল এনবিআরের শুল্ক বিভাগ।

এনবিআরের নতুন আদেশে বলা হয়েছে, যেসব আমদানিকারক ১৩ এপ্রিল বা তার আগে সুতা আমদানির ঋণপত্র স্থাপন করেছেন বা ওই তারিখের আগে সুতা আমদানির ঋণপত্র সংশোধন করেছেন, সেসব ঋণপত্রের পণ্য চালান উক্ত প্রজ্ঞাপনের (১৩ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপন) আওতায় পড়বে না।

স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করার দাবি দীর্ঘদিন করেছেন দেশীয় স্পিনিং মিলমালিকরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন মাস আগে সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া শুরু করে। পরে ট্যারিফ কমিশন থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে দেশীয় টেক্সটাইলশিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে সব সীমান্তসংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ এবং স্থলবন্দর ও কাস্টমস হাউসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সুতা কাউন্ট নির্ণয়ে যথাযথ অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সমুদ্রবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুপারিশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ করা সংক্রান্ত আদেশ জারি করে।