
এবারের ঈদে মিলেছে দীর্ঘ ছুটি। আর এ কারণে ঈদযাত্রা গত সোমবার থেকে শুরু হলেও এখন পর্যন্ত বাস-ট্রেনে যাত্রীদের তেমন চাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনেও ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়নি।
একই চিত্র রাজধানীর আন্তজেলা বাস টার্মিনালগুলোতেও। তবে পরিবহন-সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস ছুটি হওয়ার পরে ঈদযাত্রার ভিড় দেখা যাবে।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কমলাপুরে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, যাত্রীদের তেমন ভিড় নেই।
মঙ্গলবার সবগুলো আন্তনগর, মেইল ও কমিউটার ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। সিলেটগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের যাত্রী আবু হানিফ খবরের কাগজকে বলেন, ‘কমলাপুরে এমন চিত্র আগের ঈদগুলোতে দেখা যায়নি। গত ঈদুল আজহাতেও অনেক ধাক্কাধাক্কি করে ট্রেনে উঠতে হয়েছে। এবার তো লম্বা ছুটি পাওয়া গেছে। তাই হয়ত ভিড় নেই যাত্রীদের।’
স্টেশনের প্রবেশপথে দেখা গেছে, ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনারদের (টিটিই) পাশাপাশি স্কাউট সদস্যরা যাত্রীদের টিকিট আছে কি না, তা দেখে নিচ্ছিলেন। প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের আগে যাত্রীদের তিন দফা চেকিং ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে বিফ্রিংয়ে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের (কমলাপুর) স্টেশন ব্যবস্থাপক শাহাদাত হোসেন জানান, ঈদের পর ফিরতি যাত্রার ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের চাহিদা ঢাকা থেকে কম। তিনি জানান, ঢাকা থেকে ফিরতি যাত্রার টিকিটের চাহিদা কম থাকায় টিকিটগুলো ধীরে ধীরে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল সকাল পর্যন্ত ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয়েছে। এদিন সকাল থেকে ৪ এপ্রিলের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি। ৩৮ হাজার ৮১৭টি টিকিটের বিপরীতে ১৪ হাজার ২৭৭টি টিকিট বিক্রি হয়েছে।
এদিকে রাজধানীর আবদুল্লাহপুর, শ্যামলী ও কল্যাণপুরে বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, গতকালও বাসে তেমন চাপ ছিল না। আবদুল্লাহপুরে হানিফ এন্টারপ্রাইজ বাস কাউন্টারম্যান মো. জাহিদুর রহমান বলেন, ‘এ বছর ঈদযাত্রীর চাপ খুবই কম। আমাদের প্রতিটি গাড়ির পেছনের বেশ কয়েকটি সিট খালি যাচ্ছে। যাত্রী কম থাকার এই পরিস্থিতি আগে কখনো দেখা যায়নি। গত বছরের তুলনায় এবার যাত্রী অনেক কম।’ যাত্রী কম থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে আতঙ্ক। অনেকেই এবার ঈদে বাড়ি যাচ্ছে না। আমরা টিকিটের দাম নির্ধারিত মূল্যের মধ্যেই রেখেছি, এর থেকে কিছু কমেও দিচ্ছি। তারপরও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না।’
মহাখালী বাস টার্মিনালে কাজী পরিবহনের টিকিট কাউন্টারের কর্মী রিপন হাওলাদার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রীর চাপ বাড়বে। এখন যাচ্ছে পরিবারের নারী-শিশু এবং শিক্ষার্থীরা। চলতি সপ্তাহে বন্ধের দিনে চাকরিজীবীরা যাত্রা শুরু করবেন।’
গাবতলীতে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টার ব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এখনো চাপ নেই। তবে বৃহস্পতিবার থেকে চাপ বাড়বে বলে ধারণা করছি। তখন মহাসড়কের যানজট পরিস্থিতির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে।’