ঢাকা ১১ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

লোকশিল্পী সুষমা দাশ আর নেই

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৩ এএম
লোকশিল্পী সুষমা দাশ আর নেই
৯৫ বছর বয়সে লোকশিল্পী সুষমা দাশ পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। ছবি: খবরের কাগজ

একুশে পদকপ্রাপ্ত লোকশিল্পী সুষমা দাশ আর নেই।

বুধবার (২৬ মার্চ) বিকেলে সিলেট নগরীর হাওলাদার পাড়ার নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ৯৫ বছর বয়সে এই শিল্পী চার ছেলে ও দুই মেয়েসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন।

তার পরিবারসূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন যাবত বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন তিনি। গত ১৩ মার্চ গুরুতর অসুস্থ হয়ে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। পরে অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় তাকে ঘরেই রাখা হয়েছিল।

বর্ণাঢ্য শিল্পজীবনে সুষমা দাশ বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম, বাউল দুর্বিন শাহ, বাউল আলী হোসেন সরকার, বাউল কামাল পাশাসহ বাংলাদেশের প্রবীণ শিল্পীদের সঙ্গে গান করেছেন।

লোকসংগীতে অবদানের জন্য ২০১৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি। এ ছাড়া রবীন্দ্রপদক ২০১৯, কলকাতা বাউল ফকির উৎসব সম্মাননা-১৪১৭ বঙ্গাব্দ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সম্মাননা, লালন শাহ ফাউন্ডেশন সম্মাননা, জেলা শিল্পকলা একাডেমি গুণীজন সম্মাননা-২০১৫ ও বাংলাদেশ বেতার গুণীজন সম্মাননা পান তিনি।


তিনি ১৯২৯ সালে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার শাল্লা থানার পুটকা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সুষমা দাশের বাবা ছিলেন প্রখ্যাত লোককবি রশিকলাল দাশ ও মা লোককবি দিব্যময়ী দাশ।

ছয়-ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন। তার ছোটভাই একুশে পদকপ্রাপ্ত পণ্ডিত রামকানাই দাশ ছিলেন শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী। এ ছাড়া তার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য সংগীতের সঙ্গে জড়িত।

১৯৪৫ সালে সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা থানার চাকুয়া গ্রামের প্রাণনাথ দাশের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সুষমা দাশ। 

প্রখ্যাত এই লোকসংগীতশিল্পীর মৃত্যুতে সিলেটের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। খবর পেয়ে বিকেলে ও সন্ধ্যায় নগরীর হাওলাদারপাড়ার বাসায় ভিড় করেন অনুরাগীরা। রাতে তার মরদেহ সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। এরপর গ্রামের বাড়িতে তার দাহ সম্পন্ন হবে।

নাইমুর/

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৬ পিএম
আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৯ পিএম
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে নির্ধারিত সফর স্থগিত করেছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। আগামী রবিবার (২৭ এপ্রিল) তার ঢাকা আসার কথা ছিল। সম্প্রতি কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করায় এ সফর স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বার্তায় বলা হয়েছে, অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির কারণে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২৭-২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সফর করতে পারছেন না। দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে সফরের নতুন তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।

এর আগে ঢাকা সফর করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ। তার সফরকালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রায় ১৫ বছর হওয়া পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়। ইসহাক দারের সফরকে ঘিরে ঢাকা-ইসলামাবাদ শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ইতোমধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং সংস্কৃতি খাতে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই করার প্রস্তুতিও চলছিল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য বলছে, আগামী ২৮ এপ্রিল পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ইসাক দারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের কথা ছিল। ওইদিন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সৌজন্য সাক্ষাতের কথা ছিল।

এমএ/

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির এক যুগ, শ্রদ্ধায় স্মরণ

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৬ পিএম
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির এক যুগ, শ্রদ্ধায় স্মরণ
ছবি: খবরের কাগজ

রানা প্লাজা ধসের ভয়াবহ ঘটনার এক যুগ উপলক্ষে প্রতিবারের মতো দিনটি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছে নিহত শ্রমিকদের স্বজন, আহত শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিও এদিন রানা প্লাজা জোনে কর্মসূচি পালন করেছে। 

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে শহিদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়। এ সময় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

এসব কর্মসূচি থেকে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসনের পাশাপাশি দোষী রানা প্লাজার ভবন মালিক সোহেল রানার ফাঁসির দাবি জানান বক্তারা। 

রানা প্লাজায় আহত শ্রমিক নিলুফা বেগম বলেন, দীর্ঘ এক যুগ হয়ে গেলেও তদন্তসাপেক্ষে এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করা হয়নি। নিহত শ্রমিকদের স্বজন এবং আহত যে শ্রমিকরা আছেন, তাদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এটা রাষ্ট্রের জন্য দুঃখজনক! অবিলম্বে রানা প্লাজায় আহত শ্রমিকদের সারা জীবনের সুচিকিৎসা নিশ্চিতের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। এ ছাড়া দোষীদের বিচার করে কঠোর শাস্তি প্রদানের দাবিও জানান তিনি। 

টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি আবুল হোসাইন বলেন, ‘রানা প্লাজার ঘটনার পর দেশি-বিদেশি কয়েক হাজার কোটি টাকার সাহায্য এসেছে। আমরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে যতটুকু জেনেছি, শ্রমিকরা সেই পরিমাণ টাকা পায়নি। কিছু টাকা পেয়েছে। আমরা আজ বর্তমান অন্তর্বর্তী অরাজনৈতিক সরকারের কাছে দাবি করছি। এই ঘটনায় কোনো দুর্নীতি আছে কি না, তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক।’

গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোসরেফা মিশু বলেন, ‘এতদিন পর ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা আসলে কি পেল, এটাই সবার প্রশ্ন। আগের সরকারের কাছে বারবার দাবি জানিয়েও তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। সেই সরকারের পতনের আন্দোলনে ছাত্রদের পাশাপাশি গার্মেন্টস শ্রমিকসহ শ্রমজীবী মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন, জীবন দিয়েছেন। এ জন্য আমরা মনে করি, এই সরকারের শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া উচিত। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর ৯ মাস হয়ে গেলেও তারা কেন রানা প্লাজার শ্রমিকদের দাবির প্রতি কর্ণপাত করল না, বাস্তবায়ন করল না? এতে আমরা আহত হয়েছি, ক্ষুব্ধ হয়েছি। কারণ ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও শ্রমিকদের পুনর্বাসনসহ দোষীদের বিচারের দাবি পূরণ করা সরকারের পক্ষে কঠিন কিছু বলে আমরা মনে করি না। আমরা শ্রমিকদের কান্না আর দেখতে চাই না। আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন চাই। সরকার অবিলম্বে যেন তাদের দাবি মেনে নেয়।’

এদিকে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১২ বছরে শ্রমিকদের কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ‘১৩ থেকে ২৪: স্মরণ ও সংস্কারে শ্রমিকের বন্দোবস্ত’ ব্যানারে রানা প্লাজা জোনে সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি।

সমাবেশে দলটির মুখ্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় বিদেশি সংস্থাগুলো উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে চেয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা তাদের বাধা প্রদান করেছে। অনুমতি পর্যন্ত দেয়নি। তার পরের ঘটনা আরও বীভৎস। সেই মানুষগুলোকে উদ্ধারের নাম করে তাদের লাশগুলোকে গুম করার মেকানিজম করেছিল এই অঞ্চলের কুখ্যাত সন্ত্রাসী এনাম। সেই এনামরা, সেই সোহেল রানারা, রানা প্লাজার মতো ঘটনা ঘটিয়ে বাংলাদেশে শ্রমিক হত্যার মহোৎসব করেছিল।

জুরাইনে শ্রমিকদের কবরে শ্রম সচিবের শ্রদ্ধা
রানা প্লাজা দুর্ঘটনার ১২ বছর উপলক্ষে গতকাল সকাল ৮টায় রাজধানীর জুরাইনে অবস্থিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের কবরস্থানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান।

শ্রদ্ধা নিবেদন করে নিহত শ্রমিকদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত শেষে শ্রম সচিব সাংবাদিকদের বলেন, জুরাইন কবরস্থানে ওই দুর্ঘটনায় নিহতদের এক অংশ, অর্থাৎ ২৯১ জনকে সমাহিত করা হয়েছিল, যাদের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। যারা আহত তাদের সুস্থতা কামনা করছি। 

এ সময় শ্রম সংস্কার কমিশন প্রধান, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তিথি/সিফাত/

আফতাবনগরে পশুর হাট বসানোর বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে রিট

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৩ পিএম
আফতাবনগরে পশুর হাট বসানোর বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে রিট

আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রাজধানীর আফতাবনগর আবাসিক এলাকায় কোরবানির পশুর হাট বসানোর জন্য দেওয়া ইজারা বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনূছ আলী আকন্দ এই রিট করেন।

রিট দায়েরের পর ইউনূছ আলী বলেন, আফতাবনগর এলাকায় কোরবানির পশুর হাট বসানোর জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। গত ২১ এপ্রিল এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। যদিও এই বিষয়ে হাইকোর্টে রুল বিচারাধীন। গত বছরের ৩ জুন হাইকোর্ট আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন, যা পরবর্তী সময় আপিল বিভাগে বহাল থাকে। পরে হাটের ইজারাদার নুরুল ইসলাম ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন।

রিটে বলা হয়, আফতাবনগর একটি আবাসিক এলাকা এবং সেখানে পশুর হাট বসানো জনস্বার্থের পরিপন্থি। রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডিএসসিসি, দক্ষিণ সিটির প্রধান ভূমি কর্মকর্তা ছাড়াও মোট নয়জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ফুটপাতের হকারদের নিয়ে যা বললেন ডিএনসিসি প্রশাসক

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৯ পিএম
ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ফুটপাতের হকারদের নিয়ে যা বললেন ডিএনসিসি প্রশাসক
ছবি: খবরের কাগজ

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় না চড়তে এবং ফুটপাতের অবৈধ হকারদের থেকে কোনো কেনাকাটা না করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর উত্তরায় আয়োজিত ডিএনসিসির অঞ্চল-৭ এর সব ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সাথে গণশুনানিতে প্রশাসক এ আহবান জানিয়েছেন।

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, গণশুনানিতে দুটি কমন অভিযোগের মধ্যে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করুন, আরেকটি ফুটপাত ও রাস্তার অবৈধ হকার উচ্ছেদ করুন। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দেশের সব জায়গায় অবৈধ। সবাই বলছেন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বন্ধ করুন, কিন্তু মানুষ আবার অবৈধ এই যানবাহনে চড়ছেন। মানুষ না চড়লে চালকরা নিরুৎসাহিত হবে।

এসময় তিনি বলেন, ডিএনসিসি থেকে হাই লেভেল কমিটির মাধ্যমে আমরা ইনিশিয়েটিভ নিয়েছি, বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) একটি অটোরিকশার ডিজাইন করছে। এটি সফলভাবে সম্পন্ন হলে আমরা লাইসেন্স দিব। তখন শুধু সেই লাইসেন্স প্রাপ্তরা ঢাকার নির্দিষ্ট রোডে চলতে পারবে। প্রধান সড়কে কোনভাবেই অটোরিকশা চলাচল করতে পারবে না। ট্রাফিক বিভাগ ইতোমধ্যে ট্র‍্যাপার বসানো শুরু করেছে।

ফুটপাতের অবৈধ হকারদের কাছ থেকে কেনাকাটা না করার আহবান জানিয়ে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ঢাকার প্রতিটি এলাকায় বাজার আছে, মার্কেট আছে। আপনার দয়া করে ফুটপাতের ও রাস্তার অবৈধ হকারদের কাছ থেকে কেনাকাটা না করে বাজার থেকে ও মার্কেট থেকে কেনাকাটা করুন। আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। জনগণের সহযোগিতা পেলে সমস্যা এই সমস্যা সমাধান করা সহজ হবে।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নগরবাসীর উদ্দেশ্যে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, সিটি কর্পোরেশনের কর্মীদের পাশাপাশি প্রত্যেকে নিজ নিজ বাসাবাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে। কর্মীদের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ করি সবাই। কিন্তু আমাদের কর্মীরা কিন্তু সবার বাড়ির ভিতরে গিয়ে ওষুধ দিতে পারে না এটাও সত্যি। খেয়াল করলেই দেখবেন বেশিরভাগ বাড়ির ভিতরে ও বাউন্ডারিতে মশার প্রজনন ক্ষেত্র রয়েছে, ময়লা আবর্জনা রয়েছে। অতএব দয়া করে নিজেদের ঘরবাড়ি নিজেরা পরিষ্কার করুন।

আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে কর মেলার (হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদানের জন্য) আয়োজন হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই মেলায় ওয়ান স্টপ সেল থাকবে। সেখানে একদিনেই তাৎক্ষনিক হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করা যাবে। মেলাতেই কর ছাড়ের আবেদনের ব্যবস্থা করব। মেলায় ভোগান্তি ছাড়া স্বল্প সময়ে আপনারা হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করতে পারবেন।

গণশুনানিতে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অঞ্চল-৭ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খয়বর রহমান এবং অঞ্চল-৮ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জুলকার নায়ন।

উল্লেখ্য, ডিএনসিসির প্রতিটি অঞ্চলে গণশুনানিতে অংশ নিচ্ছেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। ইতোমধ্যে ৭টি অঞ্চলে গণশুনানি সম্পন্ন হয়েছে। গণশুনানিতে অংশ নিয়ে নাগরিকরা সরাসরি ডিএনসিসি প্রশাসকের সঙ্গে তাদের অভিযোগ, পরামর্শ ও সেবা সম্পর্কিত বিষয়ে কথা বলেন এবং প্রশ্ন করেন। ডিএনসিসি প্রশাসক সকলের প্রশ্ন শুনেন ও জবাব দেন। এছাড়াও ডিএনসিসির পক্ষ থেকে উপস্থিত সবাইকে একটি ফরম দেওয়া হয়, সবাই যার যার মতামত ও অভিযোগ লিখে জমা দেন।

রাজু/সিফাত/

‘তিন-শূন্য মানুষ’ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে, কাতারে শিক্ষার্থীদের ড. ইউনূস

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৩ পিএম
‘তিন-শূন্য মানুষ’ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে, কাতারে শিক্ষার্থীদের ড. ইউনূস
কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘তিন-শূন্যের পৃথিবী’ শিরোনামে এক অনুপ্রেরণামূলক বক্তৃতা দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

তরুণ প্রজন্মকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম অভিহিত করে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শিক্ষার্থীদের ‘তিন-শূন্য মানুষ’ হিসেবে গড়ে তুলতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু তোমাকে অবশ্যই স্বপ্ন দেখতে হবে, কল্পনা করতে হবে। যদি তুমি কল্পনা কর, সেটা তোমাকে সাহায্য করবে। কল্পনাকে অবহেলা করা যাবে না।’

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কাতারের রাজধানী দোহায় কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘তিন-শূন্যের পৃথিবী’ শিরোনামে এক অনুপ্রেরণামূলক বক্তৃতা দেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি যখন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাই, তখন খুবই স্বস্তি বোধ করি। আমি নিজেকে তরতাজা অনুভব করি। তোমরা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম। আমি আন্তরিকভাবে তা বিশ্বাস করি, তোমরাই সুপারম্যান আর সুপারওম্যান।’

অধ্যাপক ইউনূস শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘এমন কিছু করো না, যা ধনসম্পদের কেন্দ্রীকরণে অবদান রাখে। বরং কল্পনা করো এবং স্বপ্ন দেখ এমন একটি নতুন পৃথিবী গড়ার, যেখানে আত্মবিধ্বংসী পদ্ধতির কোনো স্থান নেই।’

অনুষ্ঠানের শুরুতে অধ্যাপক ইউনূসকে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে অসামান্য অবদানের জন্য সম্মানসূচক অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। নোবেল বিজয়ী ও ‘ব্যাংকার টু দ্য পুওর’ বইয়ের লেখক অধ্যাপক ইউনূস তার বক্তব্যে একটি উদীয়মান নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার রূপরেখা তুলে ধরেন, যা মানবজাতি এবং পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারে।

অধ্যাপক ইউনূস তার ‘তিন-শূন্য’ ভাবনার কথা তুলে ধরেন- শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ। তিনি ব্যাখ্যা করেন, কীভাবে এই প্রজন্ম আত্মবিধ্বংসী সভ্যতা থেকে বেরিয়ে এসে পরিবেশের রক্ষক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয় লামিয়া মোরশেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

কাতারের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কাতারের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, আপনারা এ সুযোগ নিতে পারেন।’

গত বুধবার রাতে কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন আবার ব্যবসায় ফিরেছে, এবং তা বড় পরিসরে। আমরা আপনাদের অংশীদারত্ব চাই।’ প্রধান উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছে এবং একটি দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

নরওয়েজিয়ান টেলিকম অপারেটর টেলেনরকে বাংলাদেশে কীভাবে একটি টেলিফোন কোম্পানি গঠন করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল সে প্রেরণাদায়ক গল্পটি তুলে ধরেন, যা পরে টেলেনরের সবচেয়ে লাভজনক উদ্যোগে পরিণত হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফোরাম, কাতারের সভাপতি আজাদ আশরাফ স্বাগত বক্তব্য দেন।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী সম্ভাব্য কাতারের বিনিয়োগকারী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের সামনে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়ে একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন।

কয়েক শীর্ষ বিনিয়োগকারীর সঙ্গে বৈঠক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার রাতে বিদেশি কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগকারীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে মালদ্বীপের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী, মালয়েশিয়ার রাজপরিবারের একজন সদস্য, মালয়েশিয়ার সাবেক একজন মন্ত্রী, কাতারের রাজ পরিবারের একজন সদস্য, শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকার এবং কয়েকজন ধনী প্রবাসী বাংলাদেশি উপস্থিত ছিলেন।

কাতারের রাজধানী দোহায় বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশকে একটি উৎপাদন ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রে রূপান্তর করতে চায় এবং সব ধরনের বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানায়।

বিনিয়োগকারীরা উৎপাদন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি, ব্যাংকিং এবং পর্যটন- বিশেষ করে কক্সবাজারের রিসোর্ট জোনে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যাচাইয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের কাতার সফরের শেষ দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দোহায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।