ঢাকা ১১ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ যাচাই চলছে: ফারুক ই আজম

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৯:১০ পিএম
৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ যাচাই চলছে: ফারুক ই আজম
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক। ছবি: সংগৃহীত

৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ তদন্তের জন্য ডাটা এন্ট্রির কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বাসসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত ৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিযোগ পেয়েছি। এর মধ্যে ৪০ হাজার ডাটা এন্ট্রি হয়ে গেছে। ৫০ হাজার ডাটা এন্ট্রির কাজ চলমান রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় এখন সেগুলো যাছাই-বাছাই করছে।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপট, যুদ্ধে যাবার স্বপ্ন, বিজয় অর্জন নিয়ে। শুনেছেন মেজর জিয়ার কণ্ঠে স্বাধীনতার ঘোষণা। সেই স্বপ্ন এবং বর্তমানের বাস্তবতা দেখলে কষ্ট পাই। বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ফেরিওয়ালাদের রাজনৈতিক বাণিজ্য, মুক্তিযোদ্ধাদের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন, রাজনৈতিক বিবেচনায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সৃষ্টিসহ সামগ্রিকভাবে মুক্তিযুদ্ধকে দলীয় রাজনীতির রঙে রঙিন করা হয়েছে। এখনো বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়। দারিদ্র্য, নারী অধিকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক বিষয় নিয়ে সংগ্রাম করতে হয়।’   

তিনি বলেন, ‘রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছি বিবেকের তাড়নায়। সেদিন ২২ বছরের এই যুবক যুদ্ধে গিয়েছিল পাকিস্তানি শাসকের শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আগুন জ্বালিয়ে। স্বপ্ন ছিল স্বাধিকারের। স্বপ্ন ছিল রাজনৈতিক স্বাধীনতার, অর্থনৈতিক স্বাধীনতার। বাঙালির সামাজিক মর্যাদার। কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী ছিলাম না। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে বেঁচে থাকার সংগ্রামে এসএসসি পাসের পর বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম কাজের সন্ধানে অচিন এলাকা খুলনায়।’ 

মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রেণিবিন্যাস ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। রাজনৈতিক চেতনায় মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় করানো হয়েছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও সেদিনের অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুরাও মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় রাজনৈতিক বিবেচনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনি না হয়েও ভুয়া কাগজ তৈরি করে চাকরি ও শিক্ষাসহ বিভিন্ন সেক্টরে কোটা-সুবিধা নিয়েছে।’

এসব এখন তদন্তের অধীনে আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমাদের একটি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা তৈরি হয়নি। রাজনৈতিক সরকারের আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় বিভিন্ন তদবির ও দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হয়েছে। তারা ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। দেখা যাচ্ছে, আবেদনে যেই মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশগ্রহণের ‘তথ্য প্রমাণ ও ডিক্লারেশন’ দিয়েছেন, ‘আমি অমুক সেক্টরে অমুক জায়গায় যুদ্ধ করেছি’ খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে, সেই সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বা অন্য মুক্তিযোদ্ধারা তাকে চেনেনই না, কখনো দেখেননি। এ রকম শত শত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিযোগ মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে।”

তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত ৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলা থেকে অভিযোগ পেয়েছি। এর মধ্যে ৪০ হাজার ডাটা এন্ট্রি হয়ে গেছে। ৫০ হাজার ডাটা এন্ট্রির কাজ চলমান রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় এখন সেগুলো যাচাই-বাছাই করছে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের স্বেচ্ছায় নাম প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হবে। ইতোমধ্যে কয়েকজন নাম প্রত্যহারের আবেদন করেছেন। যারা নাম প্রত্যাহার করবেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।’

অভিযোগ পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য চিঠি ইস্যু করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে। তাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। শুনানি করে যাদের কাগজপত্র ঠিক আছে, তারা গেজেটভুক্ত থাকবে। আর যারা অভিযোগ প্রমাণ করতে পারবেন না, তাদের গেজেট বাতিল করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ গঠনের পর দ্রুত বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হবে। আশা করছি সময় কিছুটা ক্ষেপণ হলেও প্রকৃত রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রস্তুতে সফলতা আসবে।’

সরকার রণাঙ্গনের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা চিহ্নিত করার কাজ শুরু করে করেছে জানিয়ে ফারুক ই আজম বলেন, “যেসব কৃষক-শ্রমিক, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, নৌ কমান্ডো, আনসার, ইপিআর সদস্য যুদ্ধ করেছেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাদের মর্যাদা কখনো সীমান্ত পাড়ি দেওয়া, কিংবা বিদেশে বসে আরাম-আয়েশে জনমত সৃষ্টির প্রচারণা চালানো, ফুটবল খেলোয়াড়, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গান গাওয়া মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা এক হতে পারে না। তাই মন্ত্রণালয় মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ ছাড়া অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে চিহ্নিত করার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে। এ ব্যাপারে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা প্রজ্ঞাপন জারি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

তিনি বলেন, ‘যারা রণাঙ্গনে ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধ করেছেন, তারা রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা। অপরদিকে যারা বিদেশে জনমত তৈরির প্রচার চালিয়েছেন, স্বাধীন বাংলা ফুটবল টিমের খেলোয়াড়, স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসা সহকারীসহ যারা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রয়েছেন, তাদের সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।’

মুক্তিযুদ্ধের সেদিনের চেতনার সঙ্গে এখনকার চেতনা মেলানো যাবে না মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন সবাই সুবিধাভোগী এবং চেতনাকে নানাভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ইমেজ সংকটে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গেজেট অনুযায়ী শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ৬ হাজার ৭৫৭ জন। এর মধ্যে ভাতা গ্রহণ করছেন ৫ হাজার ৩৫৮ জনের পরিবার। অবশিষ্ট ১ হাজার ৩৯৯ জন ভাতা নেন না। তারা এ পর্যন্ত আবেদনও করেননি। এই শহিদ পরিবারগুলো কোথায়, কেন তারা ভাতা নিচ্ছে না রাষ্ট্র জানে না। রাষ্ট্রকে তাদের কাছে যাওয়া উচিত। তাদের খুঁজে বের করা উচিত। কারা এই শহিদ পরিবার।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছেন, তাদের অধিকাংশই গ্রামের কৃষক, শ্রমিক জনগণ। তারা জানেন না কীভাবে সরকারের কাছে আবেদন করতে হয়। শহিদ পরিবারগুলো খুঁজে বের করার জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে মুক্তিযুদ্ধে শহিদ পরিবারগুলোকে খুঁজে বের করে রাষ্ট্রের প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনা।’

উপদেষ্টা জানান, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় কোনোরূপ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়া নির্মোহভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ ও সম্মানিত করতে পদক্ষেপ নিয়েছে। তা বাস্তবায়ন করা গেলে অর্ধশতাব্দীর বঞ্চনার ইতিহাসের পরিসমাপ্তি হবে।

সালমান/

শিগগিরই সব সরকারি ভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২২ পিএম
আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৪ পিএম
শিগগিরই সব সরকারি ভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
কক্সবাজারের বাকখালী নদীর তীরের ময়লার ভাগাড় পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি : পিআইডি

শিগগিরই সব সরকারি ভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বৃহস্পতিবার (২৪  এপ্রিল) কক্সবাজারের বাকখালী নদীর তীরে পৌরসভার ময়লার ভাগাড় পরিদর্শনের পর, সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সংস্থার জন্য বরাদ্দকৃত কক্সবাজারের প্রায় ১২ হাজার একর বনভূমি বন বিভাগের কাছে ফেরত দেওয়া হচ্ছে।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘কক্সবাজারের নদী, বনভূমি ও সি-বিচ দখল ও দূষণমুক্ত করা হবে। প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় (ইসিএ) অনুমতি ছাড়া কোনো কিছু নির্মাণ করা যাবে না। পরিবেশ অধিদপ্তর, বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি বা বেসরকারি নির্মাণ বিবেচনায় নেওয়া হবে না।’

তিনি বলেন, ‘বিধি লঙ্ঘিত হলে তা আইনিভাবে মোকাবিলা করা হবে। সি-বিচ দখল ও দূষণের লাগাম এখনই না টানলে, এটি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তিতে পরিণত হবে। বর্তমান সরকারের সীমিত সময় বিবেচনায় আমরা কয়েকটি কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করছি।’

রিজওয়ানা আরও বলেন, ‘কক্সবাজারের ৭০০ একর বনভূমি ইতোমধ্যেই উদ্ধার করা হয়েছে।  ব্যক্তি মালিকানায় নেওয়া ও ফুটবল একাডেমির জন্য বরাদ্দ  জমি ফেরত আনা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর ৫১ একর জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সোনাদিয়া দ্বীপে বেজার জন্য বরাদ্দকৃত জমিও বন বিভাগের আওতায় ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহণ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাজমুল আহসান ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন প্রমুখ। সূত্র: বাসস

সুমন/

সব সংস্কারের জন্য ইসি ঐকমত্য কমিশনের ওপর নির্ভর করছে না: সিইসি

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১২ পিএম
আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৫ পিএম
সব সংস্কারের জন্য ইসি ঐকমত্য কমিশনের ওপর নির্ভর করছে না: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন ও অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলি। ছবি: খবরের কাগজ

রাজনৈতিক বিষয় ছাড়া বাকি সব সংস্কারের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঐকমত্য কমিশনের ওপর নির্ভর করছে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি জানান, নিজেদের ক্ষমতার মধ্যে আছে এমন কিছু নির্বাচনি সংস্কার নির্বাচনের আগে করার উদ্যোগ নিয়ে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে সংস্থাটি। আর যেগুলো রাজনৈতিক বিষয় আছে সেগুলো ঐকমত্য কমিশন করবে।

অন্যদিকে বৈঠকে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলি বলেন, ‘বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় তার দেশ।’

এ সময় সিইসি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আমরা কী প্রস্তুতি নিয়েছি। আমাদের প্রস্তুতির কথা বিস্তারিতভাবে তাকে জানিয়েছি। সংস্কারের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন মেজর কি কি বিষয়ে আমরা সংস্কার করতে যাচ্ছি। উনারা বলেছেন আমাদের যদি কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হয়, ওনাদের জানাতে বলেছেন। আমি বলেছি ইউএনডিপি আমাদের সহায়তা করছে আপনারা এটা দেখেন। দেখার পরে যদি আপনারা কোনো এরিয়ায় ইনভলব হতে চান, হতে পারেন।’

সংস্কারের বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘আমরা ভোটার রেজিস্ট্রেশনকে মেজর হিসেবে দেখেছি। এটা আমরা অলমোস্ট শেষ পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। কেনাকাটার জন্য টেন্ডারের কাজ চলমান রয়েছে। সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি আইন সংশোধনের জন্য পাঠানো হয়েছে। রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য ২ মাস সময় বাড়িয়েছি। আচরণবিধি সংশোধন করার চেষ্টা করছি। পর্যবেক্ষকদের নীতিমালা নিয়েও কাজ চলছে।’ 

নির্বাচনি সংস্কারের জন্য আপনারা কি ঐকমত্য কমিশনের মতামতের অপেক্ষা করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘যেগুলো আমাদের ক্ষমতার মধ্যে আছে সেগুলো ইলেকশনের আগে করে ফেলব। যেগুলো রাজনৈতিক বিষয় আছে, সেগুলো আমাদের হাতে নাই। সেগুলো ঐকমত্য কমিশন করবে।’

বৈঠক সম্পর্কে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলি বলেন, ‘বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে কথা বলা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন ফ্রি ও ফেয়ার প্রত্যাশা করে। আমাদের খুব ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দিতে চায়।’

এর আগেও ইসির সঙ্গে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা বৈঠক করে সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছে। একইসঙ্গে অনেকে নির্বাচনি সহায়তাও দিতে চেয়েছে। ইতোমধ্যে ইউএনডিপি নির্বাচনি উপকরণ দিয়ে সহায়তা দিচ্ছে।

আগামী ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করার লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছে ইসি।

এলিস/সুমন/

মার্চে ৫৯৩ সড়ক দুর্ঘটনায় ৬১২ নিহত: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫০ পিএম
আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৫ পিএম
মার্চে ৫৯৩ সড়ক দুর্ঘটনায় ৬১২ নিহত: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি

চলতি বছরের মার্চ মাসে দেশের বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬১২ জন নিহত এবং ১ হাজার ২৪৬ জন আহত হয়েছেন। মার্চ মাসে রেলপথে ৪০টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন এবং নৌ-পথে ৮টি দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত হয়েছেন।

এ নিয়ে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৬৪১ টি দুর্ঘটনায় ৬৬৪ জন নিহত এবং ১২৫৩ জন আহত হয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২২৭ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৫১ জন নিহত ও ২০৮ জন আহত হয়েছেন; যা মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ২৭ শতাংশ, নিহতের ৪১ দশমিক ০.১ শতাংশ ও আহতের ১৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মার্চ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে ১৪৮ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫০ জন নিহত ও ৩৬৪ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে। ৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৮৬ জন আহত হয়েছেন।

মার্চে সড়ক দুর্ঘটনায় কবলিত ৯১০টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১১ দশমিল ৮৬ শতাংশ বাস, ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৫ দশমিক ১৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা;  ১০ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

দুর্ঘটনার ধরণ বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৪ দশমিক ২৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৭ দশমিক ২৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। 

রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে প্রাথমিক উৎস থেকে সড়ক দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ডাটা ব্যাংক চালু করা ও স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

জয়ন্ত সাহা/সুমন/

রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলবিরোধী অভিযান, গ্রেপ্তার ১১

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩১ পিএম
রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলবিরোধী অভিযান, গ্রেপ্তার ১১
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ঝটিকা মিছিলে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ১১ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।  

গ্রেপ্তাররা হলেন- বংশাল থানা ৩৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের সহ-সভাপতি আসাদুল্লাহ শিপলু (৪৫), ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাকিল আহমেদ (৫৬), ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য মো. হাবিবুর রহমান হাবিব (৪৫), ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আসলাম চৌধুরী ইমন (২৪), যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগ নেতা ও অর্থ সরবরাহকারী মোবাশ্বের রহমান (৫৫), ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার কুশঙ্গল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমীন (৫৪), সাবেক মেয়র ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. কামাল হোসেন শেখ (৬২), উত্তরা পশ্চিম থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল (৫৫), বাংলাদেশ স্থল বন্দর শ্রমিক লীগের সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলার তাহেরপুর থানার বালিজুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আজাদ হোসেন (৫২), শেরেবাংলা নগর থানার ৯৯ নং ওয়ার্ড যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রেজাউল করিম (রানা) ও মিরপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজালাল (৪৫)। 

পুলিশের উপ-কমিশনার তালেবুর রহমান জানান, বুধবার (২৩ এপ্রিল) থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ঝটিকা মিছিল করে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করা এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

জাহাঙ্গীর/পপি/

কুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১৫ পিএম
আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৬ পিএম
কুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস কে শরীফুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের অনশন ও আন্দোলনের মুখে অবশেষে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস কে শরীফুল আলম পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসন এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ প্রদান করা হবে। অন্তর্বর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে ১৪ এপ্রিল রাতে সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনার জেরে গত রবিবার (২০ এপ্রিল) উপাচার্যের পদত্যাগে শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগ না করায় গত সোমবার থেকে অনশন চালানোর ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীরা প্রায় ৫৮ ঘণ্টা পর তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। 

সুমন/