সারা দেশে আজ ক্লাস বর্জনের ডাক শিক্ষার্থীদের। ছবি: সংগৃহীত
উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বুধবার (২৩ এপ্রিল) সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস বর্জনের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এ ছাড়া ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও বিকেলে কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ পালনের কথা রয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাত সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ ব্লকেড কর্মসূচি থেকে ওই কর্মসূচি ঘোষণা দেন ঢাবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক ইবনে মোহাম্মদ।
তিনি বলেন, ‘কুয়েটের অনশনরত শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর মুখে রেখে আমরা ক্লাস-পরীক্ষায় বসতে চাই না। বুধবার (আজ) সব ক্যাম্পাসে কুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল এবং সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুধু ক্লাস বর্জনের কর্মসূচি পালন করা হবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে রাজু ভাস্কর্যে বিকেল ৩টায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।’
রাত ১২টা ৩ মিনিটে কুয়েটে অনশনরত শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল সৈকত ভার্চুয়ালি শাহবাগ ব্লকেড কর্মসূচিতে যুক্ত হন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের এক দফা দাবি কুয়েট ভিসি মাসুদের পদত্যাগ। ইতোমধ্যে এ দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সারা দেশে অনেক শিক্ষার্থী অনশনে বসেছেন। এ ছাড়া শাহবাগে যারা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছেন তারাসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা নেই। এটা ভবিষ্যতে স্বৈরাচারদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমরা যাতে জুলাইয়ের স্পিরিট ধারণ করে থাকতে পারি। কুয়েট একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকুক।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবদুন নূর তুষার, চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) শিক্ষার্থী আহনাফ তাহমিদ ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সালাউদ্দিন জাবেদ বক্তব্য রাখেন। তাদের বক্তব্য রাখার পর রাত সোয়া ১২টার দিকে শাহবাগের অবরোধ তুলে নিলে যানচলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এর আগে রাত ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রাত সাড়ে ১০টায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন তারা। এতে ঢাবি, বুয়েটসহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এদিকে একই দাবিতে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আমরণ অনশনে বসেছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ১০-১২ জন নেতা-কর্মী। এ ব্যাপারে খবরের কাগজের সঙ্গে কথা হয় অনশনে বসা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখ্য সংগঠক ও ঢাবি শিক্ষার্থী তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কুয়েটের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিকেল ৫টা থেকে আমাদের প্রতীকী অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি কুয়েটের অনশনরত শিক্ষার্থীদের অবস্থা বেশ খারাপের দিকে। ইতোমধ্যে ৪ জন হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছেন। দুজনের অবস্থা বেশ গুরুতর। তাই আমরা প্রতীকী অনশনে না থেকে আমরণ অনশনে বসেছি। যতক্ষণ না পর্যন্ত কুয়েট শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে, আমরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাব।’