ঢাকা ১০ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

টার্মিনালে বাড়ছে যাত্রীদের চাপ

প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ০২:২০ এএম
টার্মিনালে বাড়ছে যাত্রীদের চাপ
পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার জন্য সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখী মানুষ। ছবি: খবরের কাগজ

ধীরে ধীরে টার্মিনালগুলোতে বাড়ছে বাড়িফেরার মানুষের চাপ। কর্মব্যস্ত যান্ত্রিকতার রাজধানী ছাড়ছেন ঘরমুখী মানুষ। গতকাল বুধবার রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনাল এবং সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালে মানুষের ভিড় বাড়তে দেখা গেছে। আনুষ্ঠানিক ঈদযাত্রায় বিগত দুই দিনের তুলনায় গতকাল বুধবার (২৬ মার্চ) রাজধানীর অধিকাংশ টার্মিনাল ও বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীদের বেশ উপস্থিতি দেখা যায়। 

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, পর্যায়ক্রমে যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ঘরমুখী মানুষের চাপ আরও অনেক বেড়ে যাবে। অফিস শেষ করেই অনেকেই দৌড়াবেন বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন ও লঞ্চঘাটের দিকে।

কমলাপুরে ভিড় বেড়েছে, নেই শিডিউলজট 

ঈদযাত্রার তৃতীয় দিনে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় কিছুটা বেড়েছে। পূর্বাঞ্চল (চট্টগ্রামকেন্দ্রিক) ও পশ্চিমাঞ্চল (রাজশাহী-রংপুরকেন্দ্রিক) রেলওয়ের বেশ কিছু আন্তনগর ট্রেন গতকাল প্রায় যথাসময়ে কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেছে। উত্তরাঞ্চলের দু-একটি ট্রেন সামান্য কিছু বিলম্বে ছাড়লেও শিডিউলজট বা বিপর্যয়ের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন স্টেশনসংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে চট্টগ্রাম-সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের আন্তনগর ট্রেনগুলো প্রায় সঠিক সময়ে ছেড়ে যায়। 

এদিকে নরসিংদী কমিউটার-১ ও ৪ নামে একজোড়া ট্রেন যুক্ত হওয়ায় গতকাল ঢাকা থেকে ৬৯টি আন্তনগর, মেইল ও কমিউটার ট্রেন ঢাকা ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্টেশন ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ‘ট্রেন ছাড়ার ২ ঘণ্টা আগে স্ট্যান্ডিং টিকিট দেওয়া হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে বিশেষ ট্রেন চলবে। যাত্রীসেবায় প্রতিবারের মতো এবারও আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। স্টেশন থেকে ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছানো পর্যন্ত যাত্রীদের নিরাপত্তাব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে টিকিট চেক করা হচ্ছে।

গাবতলীতে যাত্রীর ভিড়, কাউন্টারে মিলছে না টিকিট 

গতকাল সন্ধ্যার পর গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দেখা গেছে, মূল সড়কের এক পাশ উত্তরবঙ্গমুখী দূরপাল্লার বাসগুলোয় ডেকে ডেকে যাত্রীদের ওঠানো হচ্ছে। ভাড়া নিয়ে যাত্রী এবং বাসের সুপারভাইজার-চালকদের মধ্যে দর-কষাকষি বা কোথাও কোথাও বাগবিতণ্ডাও দেখা গেছে। এ ছাড়া বেশ কিছু মাইক্রোবাসচালকও বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রী ডাকছিলেন। 

এদিকে গতকাল অনেকেই গাবতলীর দূরপাল্লার বাস কাউন্টারে এসে টিকিট চান আজ বৃহস্পতিবারের জন্য। তবে গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই এসি বাস বা দামি ব্র্যান্ডের গাড়িগুলোর টিকিট পাওয়া যাচ্ছিল না। যাত্রীদের অভিযোগ, বাস কর্মকর্তারা আগে থেকেই টিকিট সরিয়ে রেখেছেন। মোটামুটি বাড়তি টাকা দিলে তারা টিকিট দিচ্ছেন। 

গাবতলীর হানিফ কাউন্টারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী আবদুল হেলালের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার রাতের জন্য টিকিট কাটতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু কাউন্টার থেকে তাকে বলা হয়েছে, কোনো টিকিট নেই। এ বিষয়ে আবদুল হেলাল খবরের কাগজকে অভিযোগ করে বলেন, ‘এখানকার কাউন্টারের লোকেরা ছুটির দিনগুলোর টিকিট আগে থেকে সরিয়ে রেখেছেন। হয়তো তারা পরিচিত যাত্রীদের টিকিট দেবেন, তা না হলে বেশি মূল্যে অন্যদের কাছে বিক্রি করবেন।’

হানিফ কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা আল-আমিনের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘আমাদের টিকিট এখন অনলাইনে বেশি বিক্রি হচ্ছে। তাই কাউন্টারে ভিড় কম। কয়েক দিন আগে বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত বাসের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। যাত্রীদের অনেকেই এখন কাউন্টার এসে টিকিট চাইছেন, কিন্তু আমরা তো তা দিতে পারছি না।’ এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি রয়েছে। ফলে যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যেই রাজধানী ছাড়ছেন। সড়ক-মহাসড়কে ছিনতাই-ডাকাতির ভয়ে যাত্রীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভালো সেবাদানকারী বা অভিজাত পরিবহনগুলো যাতায়াতের জন্য বেছে নিচ্ছেন। এ জন্য গাবতলীর পাশাপাশি ভালো মানের পরিবহনগুলোর যাত্রীদের ভিড় বেশি কল্যাণপুরে দেখা যায়। এর মধ্যে আগে থেকে অনলাইনে যারা টিকিট কেটে রেখেছেন তারা অনায়াসে গাড়িতে যেতে পারলেও সরাসরি যারা কাউন্টারে আসছেন তারা কিছুটা দুর্ভোগে পড়ছেন। তৎক্ষণাৎ টিকিট না পেয়ে অনেক যাত্রী লোকাল বাসে ওঠেন। এই সুযোগে লোকাল বাসের কর্মচারীরা ভাড়া বেশি নেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
 
যাত্রীর চাপ বেড়েছে মহাখালী বাস টার্মিনালে 

গতকাল সরেজমিনে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় দুপুরের পর থেকে টার্মিনালে ঈদে বাড়িফেরা মানুষের ভিড় বেড়েছে। গতকাল মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোতে যাত্রীদের চাপ ভালোই ছিল। 

গতকাল এই বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, গাইবান্ধা, ময়মনসিংহ জামালপুর, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ রুটের বাস চলাচল করছে। উত্তরবঙ্গগামী শাহ ফতেহ আলী, এসআর ট্র্যাভেলস, এনা পরিবহন, অভি এন্টারপ্রাইজ, এসআই এন্টারপ্রাইজ, রাজিব এন্টারপ্রাইজ ও একতা পরিবহনের যাত্রীদের চাপ রয়েছে। এ ছাড়া টাঙ্গাইল, জামালপুর, ময়মনসিংহ, শেরপুরগামী লোকাল বাসও চলছে। 

ব্যাংক কর্মকর্তা সবুর আলম পরিবারসহ যাবেন ময়মনসিংহ। তিনি গতকাল বিকেলে খবরের কাগজকে বলেন, ‘পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাচ্ছি। টার্মিনালে যাত্রীর চাপ আছে, বাসও আছে। ভোগান্তি কমাতে হাতে সময় রেখেই যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘এনা পরিবহনের টিকিট কেটেছি। এখন বাসের সিরিয়ালের জন্য অপেক্ষা করছি।’

আলম এশিয়া বাসের সুপারভাইজার আল-আমিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘গতকালের চেয়ে আজ (বুধবার) যাত্রীর চাপ বেশি। সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়বে।’ ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের ভাড়াই আছে। বাড়তি কোনো বকশিশ নেওয়া হচ্ছে না। 

এদিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ও জনপদ মোড়েও গতকাল বিকেল থেকে ঘুরমুখী মানুষের যথেষ্ট ভিড় ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সায়েদাবাদ, জনপদের মোড়, মানিকনগর এলাকার বাসস্ট্যান্ড থেকে মূলত চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা, নোয়াখালী, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সিলেট অঞ্চলের পরিবহনগুলো যাতায়াত করে থাকে। 

ঈদযাত্রায় ভিড় বেড়েছে সদরঘাটে 

ঈদে বাড়ি ফেরায় বাস, ট্রেনের পাশাপাশি ভিড় বেড়েছে ঢাকা নদীবন্দরে (সদরঘাট)। যাত্রীদের লঞ্চে নিতে হাঁকডাক বেড়েছে সদরঘাটে। যাত্রীদের নিজ লঞ্চে তুলতে প্রচেষ্টার শেষ নেই সংশ্লিষ্ট লঞ্চশ্রমিকদের। তবে বাড়তি ভোগান্তি বা বিশৃঙ্খলা এখনো দেখা যায়নি সদরঘাটে। অনেকটা নির্বিঘ্নে লঞ্চে রওনা দিচ্ছেন ঘরমুখী মানুষ। 

গতকাল সদরঘাট টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, টার্মিনালে উপচে পড়া ভিড়। দুই দিন আগেও এতটা ভিড় ছিল না। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে যাত্রীদের চাপ আরও অনেকটা বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন সদরঘাটের টার্মিনালসংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) তথ্যমতে, সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সদরঘাট থেকে ছেড়ে গেছে বরিশাল, চাঁদপুর, ভোলা, দৌলতখাঁ, হাকিমুদ্দিন, হিজলা, ভান্ডারিয়া, চরফ্যাশন, লালমোহন, বরগুনা, পটুয়াখালী বরিশাল, ঝালকাঠির উদ্দেশে ৪৬টি লঞ্চ।

বিআইডব্লিউটিএ জানায়, রাজধানীর সদরঘাট থেকে বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস শুরু হয়েছে গতকাল থেকে। ফিরতি যাত্রীদের জন্য এই সার্ভিস থাকবে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। সদরঘাট থেকে ৫০টি রুটে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাবে ১৭৫টি লঞ্চ। 

কর্ণফুলী-১৩ লঞ্চের টিকিট মাস্টার ফাহিম মিয়া বলেন, আজ (বুধবার) একটু বেশি ভিড়। ছুটির দিন হওয়ায় লোকসমাগম বেশি। পদ্মা সেতু চলার পর ঈদ ছাড়া ভিড় হয় না লঞ্চে।

এমভি তাসরিফ-৩ লঞ্চের শ্রমিক নুরে আলম বলেন, ঈদের জন্য আমরা আশা করছি ভিড় বাড়বে। আজ (বুধবার) থেকেই সেটা শুরু হয়েছে। আমরা চাই, লঞ্চ ব্যবসা তার সোনালি দিন ফিরে পাক।’

বরিশালগামী যাত্রী মুনতাসির রহমান বলেন, ‘আজ (বুধবার) ভিড় বেশি। রিলাক্সে যাওয়ার জন্য লঞ্চে যাওয়া। পরিবার নিয়ে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছি। তাই লঞ্চে যাচ্ছি।’

লঞ্চ মালিকদের সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের সব লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে। সব রুটের জন্য একাধিক লঞ্চ রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার (আজ) বা শুক্রবার থেকে যাত্রীর চাপ বাড়বে।’

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়-জরিমানা

ঈদযাত্রায় বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে বিভিন্ন বাস কোম্পানি থেকে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। গতকাল রাজধানীর সায়েদাবাদ, গাবতলী, ফুলবাড়িয়া ও মহাখালী বাস টার্মিনালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এই জরিমানা আদায় করা হয়।

তবে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে রামগতি, লক্ষ্মীপুরগামী নীলাচল পরিবহনে ১০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া কামারপাড়ায় গাইবান্ধাগামী নিউসাফা পরিবহনে দুজন ব্যক্তির কাছ থেকে ১০০ টাকা করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়ার অপরাধে নিউসাফা পরিবহনকে চার হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং মিরপুর ডি-লিংক, নীলাচল পরিবহনে ভাড়ার চার্ট বা তালিকা না থাকায় চার হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনালে অভিযান পরিচালনা করে দোলা পরিবহন, গোল্ডেন লাইন ও এমাদ পরিবহনে ভাড়ার তালিকা না থাকায় ছয় হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ঈদযাত্রায় চার কোটি মানুষের জন্য নেই মানসম্মত গণপরিবহন

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রোড সেফটি ফাউন্ডেশন গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, ঈদযাত্রায় মাত্র ৩-৪ দিনে ঢাকা থেকে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ মানুষ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রা করবেন। এ ছাড়া দেশের অভ্যন্তরে আন্তজেলায় প্রায় চার কোটি মানুষ যাতায়াত করবেন। এত অল্প সময়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ পরিবহন করার মতো মানসম্মত গণপরিবহন দেশে নেই। 

সড়কের চাঁদাবাজি, বাড়তি ভাড়া আদায় এবং অনিরাপদ যানবাহন চলাচল বন্ধে সরকারের উদ্যোগ দৃশ্যমান না হওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করে এই গবেষণা প্রতিষ্ঠান। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঈদযাত্রা নিরাপদ করার জন্য সরকারি উদ্যোগ ঈদ-পূর্ব ঘরমুখী যাত্রায় যতটা সক্রিয় থাকে, ঈদের ফিরতি যাত্রায় ততটা সক্রিয় থাকে না। ফলে ফিরতি যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। 

নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে কমপক্ষে তিন বছরের একটি মধ্যমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে অনুরোধ জানান রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সদস্যরা। 

৮৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় চলছে 

ঈদযাত্রায় ঢাকার বিভিন্ন গণপরিবহনে ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় চলছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। গতকাল সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ঈদযাত্রায় ২০ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ঢাকা থেকে সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশপথে ২২ কোটি ৭৪ লাখ ৯০ হাজার ট্রিপে মানুষের যাতায়াত হতে পারে। এবারের ঈদে ঢাকা থেকে ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ গ্রামের বাড়ি যাবেন। এসব যাত্রীর কাছ থেকে ঈদ বকশিশ বা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নামে ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। 

(এ প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক রিনা আক্তার তুলি, জয়ন্ত সাহা, জিয়াউদ্দিন রাজু ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মুজাহিদ বিল্লাহ)

 

 

আবহাওয়ার পূর্বাভাস: দেশের ২ অঞ্চলে বয়ে যেতে পারে ঝোড়ো হাওয়া

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৮ এএম
আবহাওয়ার পূর্বাভাস: দেশের ২ অঞ্চলে বয়ে যেতে পারে ঝোড়ো হাওয়া
ছবি: সংগৃহীত

দেশের দুটি অঞ্চলের উপর দিয়ে দুপুরের মধ্যে ৬০ কি.মি. বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

পূর্বাভাসে বলা হয়, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কি.মি. বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

চলতি সপ্তাহজুড়ে সারা দেশে তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় গরম বাড়বে। তবে বিচ্ছিন্নভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে।

সুমন/

২০২৫ সালে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ: আইএমএফ

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৮ এএম
২০২৫ সালে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ: আইএমএফ

চলতি বছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে প্রবৃদ্ধি বেড়ে সাড়ে ৬ শতাংশ হওয়ার কথাও বলা হয়েছে সংস্থাটির পূর্বাভাসে। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে প্রকাশিত আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের সর্বশেষ সংস্করণে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন যৌথ সভার দ্বিতীয় দিনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। আইএমএফ সাধারণত পঞ্জিকাবর্ষ ধরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দিয়ে থাকে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের প্রাপ্ত উপাত্ত ধরে দেশভিত্তিক তথ্যও হালনাগাদ করেছে আইএমএফ। সেখানে বাংলাদেশের জন্য ২০২৫ সালের জিডিপির নতুন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আগামী বছর প্রবৃদ্ধি বেড়ে সাড়ে ৬ শতাংশ হওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

তবে বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয় কিছুদিন আগে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য সংশোধন করে ৫ দশমিক ২ শতাংশ নির্ধারণ করেছে।

কয়েক দিন আগে আরেক দাতা সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছিল, বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে। আইএমএফ জিডিপির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস আরও কমিয়ে দিল। 

এদিকে আইএমএফ আরও বলছে, চলতি বছরে বাংলাদেশে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ হবে। গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, গত মার্চে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এক বছর ধরে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ২৬ শতাংশ।

আইএমএফের নতুন পূর্বাভাস অনুসারে বৈশ্বিক গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৮ শতাংশ। আর এশিয়ার গড় জিডিপি হতে পারে সাড়ে ৪ শতাংশ।

ইসিটি ধর্মীয় ঐক্য, সামাজিক উন্নয়ন ও গবেষণার এক অনন্য যাত্রা

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪২ পিএম
আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৭ পিএম
ধর্মীয় ঐক্য, সামাজিক উন্নয়ন ও গবেষণার এক অনন্য যাত্রা
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের খ্রিস্টান সমাজের অন্যতম উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান ইক্যুমেনিক্যাল খ্রিস্টান ট্রাস্ট (ইসিটি)। ১৯৮৬ সালে ট্রাস্ট আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠন চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ধর্মীয় সহনশীলতা, সমাজসেবা এবং শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সহাবস্থান তৈরি করাই ছিল এই ট্রাস্টের মূল লক্ষ্য, যা সময়ের সঙ্গে বহুমাত্রিক রূপ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি রাজধানী ঢাকার মিরপুর-১০ এ অবস্থিত।

গবেষণা ও জ্ঞানের পরিসর

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ‘ইসিটি’ শুরু করেছে এক যুগান্তকারী গবেষণা প্রকল্প-‘জাতীয় জীবনে খ্রিস্টানমণ্ডলীর অবদান’। পাঁচ বছর মেয়াদি এই গবেষণার বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা, যা সংগঠনের নিজস্ব তহবিল এবং দেশের বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে। এই গবেষণা শুধু খ্রিস্টানদের ঐতিহাসিক অবদান তুলে ধরবে না, বরং জাতীয় পরিচয়ে খ্রিস্টানদের অবিচ্ছেদ্য অংশীদারত্বের দিকগুলোও তুলে ধরবে।

সাংগঠনিক কাঠামো ও নেতৃত্ব

‘ইসিটি’র বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটিতে রয়েছেন শিক্ষাবিদ, ধর্মীয় নেতা এবং সমাজকর্মী। নেতৃত্বে আছেন বোর্ড চেয়ারম্যান রেভারেন্ড ইম্মানুয়েল মল্লিক, সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস, এবং ট্রেজারার জন সুশান্ত বিশ্বাস। কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন বিশপ সাইমন বাড়ৈ, তন্দ্রা রাণী সরকার এবং মোহাম্মদ আফিজুর রহমান। এই বহুমাত্রিক নেতৃত্বই ইসিটিকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, দায়িত্বশীল ও প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে।

সামাজিক কর্মকাণ্ড ও সম্প্রসারণ

‘ইসিটি’ কেবল গবেষণা নয়, সামাজিক উন্নয়নেও সক্রিয়। স্কলারশিপ ফান্ডের মাধ্যমে প্রতি মাসে বিশ (২০) জন দরিদ্র ও প্রান্তিক খ্রিস্টান শিক্ষার্থীকে সহায়তা প্রদান করা হয়, যার মধ্যে নার্সিংয়ে অধ্যয়নরত নারী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের জন্য কাউন্সেলিং সেশন, আদিবাসী শিক্ষার্থীদের নিয়ে গ্রুপ ওয়ার্কিং এবং ধর্মীয় সচেতনতামূলক সেমিনারের আয়োজন নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ।

২০২৩-২৫ সময়কালে সংগঠনের উল্লেখযোগ্য কিছু কার্যক্রম

সেমিনার ও আলোচনা সভা: প্রায় আড়াই বছরে অনুষ্ঠিত হয়েছে দশের অধিক সেমিনার ও আলোচনা সভা। যার মধ্যে ‘শান্তি, সম্প্রীতি ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ’, ‘বিচারহীনতা’ এবং ‘নির্যাতিতদের করণীয়’-এই বিষয়ে আয়োজন বিশেষভাবে গুরুত্ববহ। খ্রিস্টান পালক-পুরোহিতদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যও ‘ইসিটি’ নিয়মিত সেমিনারের আয়োজন করে থাকে। তবে বর্তমান যুবসমাজের উন্নয়নই তাদের মূল লক্ষ্য।

ত্রাণ কার্যক্রম: ২০২৪ সালের আগস্টে নোয়াখালীতে এক হাজার পরিবারকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।

প্রযুক্তি শিক্ষা: কম্পিউটার ও আইটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু রয়েছে গরিব খ্রিস্টান যুবসমাজের জন্য।

সামাজিক সমস্যা মোকাবেলায় ক্যাম্প: যৌতুক ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা কর্মসূচি চলমান।

ভবিষ্যত কর্মসূচি: গরিব ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ‘ইসিটি’ ভবিষ্যতে কৃষিভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে। নিম্নবর্গ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত রয়েছে। এসব সেবামূলক কাজে সমাজের উচ্চবর্গ জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণও প্রত্যাশা করে সংগঠনটি। ‘খ্রিস্টান মণ্ডলীর ইতিহাস’ এবং ‘বাংলাদেশের পালক-পুরোহিতদের জীবনী’ শিরোনামে একাধিক প্রকাশনার পরিকল্পনাও রয়েছে সংগঠনটির।

প্রযুক্তি যুগে সংগঠনটির উপস্থিতিও সুসংহত। ‘ইসিটি’র ওয়েবসাইট (https://ectbd.org) এবং ফেসবুক পেজ নিয়মিত হালনাগাদ করা হয়। ২০২৪ সালে ‘ইসিটি নিউজ’ নামে একটি নিয়মিত প্রকাশনাও চালু করেছে, যা তাদের কার্যক্রম ও দৃষ্টিভঙ্গি দেশের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে দিচ্ছে।

আন্তঃধর্মীয় সংলাপ ও সংস্কৃতি চর্চা

‘ইসিটি’ আন্তঃধর্মীয় সংলাপেও অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। খ্রিস্টানদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সাথে পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধির জন্য সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও সাংস্কৃতিক আয়োজন করে থাকে। খ্রিষ্টীয় ঐতিহ্যকে লালন করে এমন নাটক, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও সাহিত্যসভাও তাদের নিয়মিত কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত।

একটি সর্বজনীন চেতনার প্রতীক

‘ইসিটি’ এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা খ্রিস্টানদের মধ্যে বিভাজনের দেয়াল ভেঙে ঐক্যের ভিত্তি গড়ে তুলছে। তারা বিশ্বাস করে—বৈচিত্র্যের মধ্যেই ঐক্য এবং এই মূল্যবোধই বাংলাদেশি সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি সহনশীল, প্রগতিশীল ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখছে।

আজকের বাংলাদেশে যেখানে ধর্মীয় বিভাজন ও অসহিষ্ণুতার শঙ্কা রয়েছে, সেখানে ‘ইসিটি’ এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এটি কেবল একটি খ্রিস্টান ট্রাস্ট নয়-একটি আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির প্ল্যাটফর্ম, একটি সামাজিক অঙ্গীকারের প্রতীক এবং একটি গবেষণা-নির্ভর উন্নয়ন চিন্তার বাহক। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বলা যায়, ‘ইসিটি’ বাংলাদেশের সমাজ কাঠামোতে ইতিবাচক পরিবর্তনের অন্যতম চালিকাশক্তি হয়ে উঠছে।

শাহাদাত/মাহফুজ/

এনআইডি সংশোধন অধিকতর জটিল আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষমতা পাচ্ছেন জেলা কর্মকর্তারা

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৩ পিএম
আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৩ পিএম
অধিকতর জটিল আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষমতা পাচ্ছেন জেলা কর্মকর্তারা
ছবি: সংগৃহীত

আগামী জুনকে সামনে রেখে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তির ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ হাতে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য অধিকতর জটিল আবেদন (গ ক্যাটাগরি- নাম ও জন্মতারিখ) সংশোধন নিষ্পত্তি করার ক্ষমতা সিনিয়র জেলা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের হাতে দিয়েছে কমিশন। কারণ সম্প্রতি ইসির এক সমন্বয় সভার তথ্য অনুযায়ী, এনআইডি সংশোধনের জন্য ৪ লাখের মতো আবেদন ইসিতে জমা রয়েছে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) ইসি থেকে মাঠপর্যায়ে পাঠানো এ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, এনআইডি সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তির বিশেষ কার্যক্রম (ক্রাশ প্রোগ্রাম) পরিচালনার লক্ষ্যে ‘গ’ ক্যাটাগরির আবেদন নিষ্পন্নের জন্য ৬৪ জেলার সব সিনিয়র জেলা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের আবেদন সংখ্যা বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট সিনিয়র জেলা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তাদেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে সংশোধনের আবেদনগুলো ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। তাই অধিকতর জটিল আবেদন (গ ক্যাটাগরি) মাঠপর্যায়ে নিষ্পত্তির জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইসির ‘গ’ ক্যাটাগরির সংশোধনের মধ্যে রয়েছে-পাবলিক পরীক্ষার শিক্ষা সনদের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন, জন্মতারিখ সংশোধন (৫ বছরের বেশি- তবে চাকরির বয়সসীমা, মুক্তিযোদ্ধা, ভোটার যোগ্যতা, নির্বাচনে প্রার্থীর সীমা, বয়স্কভাতা অর্জনের বয়সসীমা ব্যতীত) প্রভৃতি।

এলিস/মাহফুজ

বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণ সবার দায়িত্ব: সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০১ পিএম
বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণ সবার দায়িত্ব: সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা
১৮তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। ছবি: সংগৃহীত

সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, অটিস্টিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু, কিশোর, যুব এবং প্রাপ্তবয়স্করা আমাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের প্রতিভা, সৃজনশীলতা ও সক্ষমতা বিকশিত করার জন্য প্রয়োজন সঠিক সহায়তা, উপযুক্ত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, এবং সম্মানজনক পরিবেশ। আমাদের দায়িত্ব এমন একটি সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে কেউ পেছনে পড়ে থাকবে না, কেউই অবহেলিত হবে না।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় অধীন নিউরো ডেভলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট (এনডিডি) আয়োজিত ১৮তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।

উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, অটিস্টিক ব্যক্তি কোনো সমাজের বোঝা নয়, তারা মানুষের জীবনের ভিন্ন বাস্তবতা। তাদের প্রতিভা, সৃজনশীলতা ও সক্ষমতা বিকশিত করার জন্য প্রয়োজন সঠিক সহায়তা, উপযুক্ত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ।

অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে আমন্ত্রিত অতিথির মধ্যে বক্তৃতা করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এনডিসি, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ দেবনাথ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান, অটিস্টিক ব্যক্তি ধ্রুপদ এবং অভিভাবক নকিব খান প্রমুখ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (যুগ্ম সচিব) শামীমা ফেরদৌস।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিগণ, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, অটিস্টিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তি, তাদের পরিবারবর্গ এবং সমাজের সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

তিথি/মাহফুজ