
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘ ১৫ বছর পর আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শুরু হচ্ছে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক (এফওসি)। সর্বশেষ এ বৈঠক হয়েছিল ২০১০ সালে। বৈঠকে অংশ নিতে বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের প্রধান ইশরাত জাহান।
জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন এবং পাকিস্তানের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন আমনা বালুচ। বৈঠকে বাংলাদেশ পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে সব বিষয়ে আলোচনা করবেন তারা।
এফওসি বৈঠক শেষে আগামী ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। পরদিন দুদেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এ বিষয়ে খবরের কাগজকে বলেন, ‘বাংলাদেশ অতীতের টানাপোড়েন পেছনে ফেলে পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চায়, তবে মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্ন বাদ দিয়ে নয়।’ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার দায়ে পাকিস্তানের ক্ষমা প্রার্থনার প্রসঙ্গ, আটকে থাকা সম্পত্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবি এখনো আলোচনায় আছে। এ বিষয়ে তৌহিদ হোসেন সাফ জানিয়ে দেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে একাত্তরকে উপেক্ষা করা হবে না। সৌজন্য সাক্ষাতে কঠিন প্রসঙ্গ না তুললেও আনুষ্ঠানিক আলোচনায় এসব বিষয় তুলে ধরা হবে।’
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বৈঠকে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়েও ঐকমত্য হয়। আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক বাস্তবতায় ইসলামাবাদ ও ঢাকার সম্পর্কে ছিল টানাপোড়েন। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আসা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্ক স্বাভাবিক ও গভীর করার পথে অগ্রসর হন। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।