ঢাকা ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মাগুরা মেডিকেল কলেজ বন্ধ হচ্ছে না: প্রেস সচিব

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৫ পিএম
মাগুরা মেডিকেল কলেজ বন্ধ হচ্ছে না: প্রেস সচিব
ছবি: সংগৃহীত

মাগুরা মেডিকেল কলেজ বন্ধের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে কলেজটি পরিদর্শনকালে তিনি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, মেডিকেল কলেজ বন্ধ, স্থানান্তর বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অধিভুক্ত করার কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই। কলেজের ভবিষ্যৎ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শফিকুল আলম বলেন, কলেজের অ্যাকাডেমিক অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি সম্যক অবহিত, যা সন্তোষজনক বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী হতে, দায়িত্বশীল নাগরিক হয়ে উঠতে এবং দেশের জন্য ইতিবাচক অবদান রাখতে উৎসাহিত করেন। এ সময় মাগুরা জেলা প্রশাসক মো. ওহিদুল ইসলাম, কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

চা শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতি করবেন না

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১০:৪০ পিএম
চা শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতি করবেন না
‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স, অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ’ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন। ছবি: খবরের কাগজ

নিজেদের পাওনা বা অধিকার বিষয়ে অজ্ঞতার কারণেই চা শ্রমিকরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স, অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক মত বিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘গুটি কয়েক চা শ্রমিক নিজেদের সুবিধা নিতে সব চা শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতি করছেন।’ এ সময় এমন রাজনীতি থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘চা বাগানের অনিয়মই চা শ্রমিকদের প্রধান অন্তরায়। কাজেই চা শ্রমিকদের উন্নয়ন করতে চাইলে, চা বাগানের অনিয়মকে আগে ভাঙতে হবে এবং বাগানের প্রতিটি শিশু ও কিশোর-কিশোরীকে শিক্ষিত করার চেষ্টা করতে হবে।’

ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স সম্প্রতি ‘নারী চা শ্রমিকদের অধিকার, সেবা প্রাপ্তিতে প্রবেশগম্যতা: বাস্তবতা ও আইনগত প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। এই গবেষণা ফলাফল এবং ‘আমরা পারব’ নেটওয়ার্কের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা বিষয়ে আলোচনা হয় এ অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে চা বাগান থেকে আগত নারী চা শ্রমিক ও ‘আমরা পারব’ নেটওয়ার্ক এর সদস্যরা অতিথিদের কাছে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

তারা বলেন, ‘চা শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা এ মুহূর্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন মজুরি নির্ধারণ করতে হবে যা দিয়ে তারা পরিবারসহ মর্যাদাপূর্ণ ও স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারেন। তাদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে পরবর্তী প্রজন্ম দারিদ্র্যের আবদ্ধতা থেকে মুক্ত হতে পারে। এ ছাড়া শ্রম আইনের কঠোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে, যেন মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে না পারে।’

সভার প্রধান অতিথি মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান বলেন, ‘সরকারের প্রতিটা সেক্টরেই বিধি অনুযায়ী সার্ভিস ব্যবস্থা চালু রয়েছে, কিন্তু যথাযথ মনিটরিং ম্যাকানিজম না থাকায় উল্লিখিত সার্ভিসসমূহ নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত সামাজিক সুরক্ষা প্রোগ্রামসমূহে চা শিল্পের শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্তিকরণে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’  

শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দেশের অন্যতম একটি শিল্প হলো চা শিল্প, যেখানে একটা বড় জনগোষ্ঠী শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত। কিন্তু অন্যান্য সেক্টরের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন হলেও এই চা শিল্পের শ্রমিকদের তেমন কোনো উন্নয়ন খুঁজে পাওয়া যায় না, এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাসমূহ কমিশন অবশ্যই খতিয়ে দেখবে।’

ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের নির্বাহী কমিটি সদস্য ইকবাল জিল্লুল মজিদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাহমুদা সুলতানা।

তিথি/সুমন

এনবিআর এখনই বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই: অর্থ মন্ত্রণালয়

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম
এনবিআর এখনই বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই: অর্থ মন্ত্রণালয়
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

রাজস্ব নীতি সংস্কারসংক্রান্ত পরামর্শক কমিটিসহ সব অংশীজনের সঙ্গে বিশদ আলোচনা করে জারি করা ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার পর অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা হবে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, দুটি নতুন বিভাগের জন্য অ্যালোকেশন অব বিজনেস (কার্যপরিধি নির্ধারণ) এবং আয়কর আইন, কাস্টমস আইন, মূল্য সংযোজন আইন এবং এসব আইনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিধি ও প্রবিধানেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন হবে। এ কাজগুলোও সময়সাপেক্ষ। এ কাজগুলো সম্পাদন না করে কোনোভাবে অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এখনই বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ১২ মে জারি করা রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ২০ মে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ, সড়ক বিভাগ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, রাজস্ব নীতি সংস্কারসংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির ৫ জন সদস্য এবং এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ জন প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সভায় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দুজন প্রতিনিধি, রাজস্ব নীতি সংস্কারসংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির সদস্যরা বিস্তারিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। উপদেষ্টারা সবার বক্তব্য ধৈর্যসহকারে শোনেন এবং তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।

আলোচনায় উত্থাপিত সব বিষয় অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে সভা শেষে অর্থ উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত দেন যে, ‘রাজস্ব নীতি সংস্কারসংক্রান্ত পরামর্শক কমিটিসহ সব অংশীজনের সঙ্গে বিশদ আলোচনা করে জারি করা অধ্যাদেশটি প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার পর বাস্তবায়ন করা হবে।’

এমন ফলপ্রসূ আলোচনার পর বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। কিন্তু তা মেনে না নিয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ পুনরায় অসহযোগ আন্দোলনের যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, অধ্যাদেশটি জারি করার পর তা বাস্তবায়নের জন্য অনেকগুলো কাজ যেমন, দুইটি বিভাগের নতুন করে সাংগঠনিক কাঠামো প্রণয়ন, পদ সৃজনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ, বাস্তবায়ন অনুবিভাগ, সচিব কমিটি কর্তৃক চূড়ান্ত অনুমোদন ইত্যাদি সম্পাদন করতে হবে- যা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ বিষয়।

তাছাড়া, দুটি নতুন বিভাগের জন্য অ্যালোকেশন অব বিজনেস এবং আয়কর আইন, কাস্টমস আইন, মূল্য সংযোজন আইন এবং এসব আইনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিধি ও প্রবিধানেও পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হবে। এ কাজগুলোও সময়সাপেক্ষ। যেহেতু এই কাজগুলো সম্পাদন না করে কোনোভাবে অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় সেহেতু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এখনই বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আজ রাজস্ব বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত দুজন সদস্যের মধ্যস্ততায় দিনব্যাপী দফায় দফায় আলোচনার একপর্যায়ে তাদের পাঠানো সমঝোতা প্রস্তাব সম্পূর্ণ মেনে নেওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেহেতু অধ্যাদেশটি প্রয়োজনীয় সংশোধন করে বাস্তবায়ন করার কাজটি অনেক সময়সাপেক্ষ, সেহেতু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সব কার্যক্রম আগের মতো অব্যাহত থাকবে এবং কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিদ্যমান ব্যবস্থায় সব কার্যক্রম সম্পাদন করবেন।

বিসিএস (কর) ও বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে পৃথকীকরণের প্রশাসনিক কাঠামো কীভাবে প্রণীত হবে তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও গুরুত্বপূর্ণ সব অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এনবিআরের সব কার্যক্রম আগের ন্যায় অব্যাহত থাকবে।

কাস্টমস ও কর ক্যাডারের সদস্যদের কোনো পদ-পদবি কমানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই, বরং সংস্কারকাজ সম্পাদন হলে তাদের পদসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং সচিব পদে নিয়োগসহ পদোন্নতির সুযোগ আরও অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।

রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে অর্থবছরের শেষ সময়ে জাতীয় বাজেট কার্যক্রম এবং রাজস্ব আহরণে নিয়োজিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস সময়ে দপ্তরে উপস্থিত থেকে তাদের স্ব-স্ব দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় কার্যক্রম চালু রেখে এবং করদাতাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেগবান করার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ মিলেছে: দুদক চেয়ারম্যান

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
শেখ হাসিনার হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ মিলেছে: দুদক চেয়ারম্যান
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচনি হলফনামায় দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করেছেন শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামায় আয়-ব্যয় ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিবরণীতে প্রকৃত অর্থ-সম্পদের চেয়ে অনেক কম হিসাব দিয়েছেন। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে তার প্রমাণ মিলেছে। এ বিষয়ে শিগগিরই পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেবে কমিশন। একই সঙ্গে হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়ার অভিযোগে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) চিঠি পাঠিয়েছে দুদক।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। এ সময় দুদকের মুখপাত্র ও মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন এবং উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখানে দুটি বিষয়। একটি অংশ নির্বাচন কমিশনের কাছে চলে গেছে, নির্বাচন কমিশন চাইলে তাদের আইনে ব্যবস্থা নিতে পারবে। আরেকটা অংশ হচ্ছে হলফনামায় দাখিল করা সম্পদ বিবরণী ও তার আয়কর বিবরণী থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে পৃথকভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া। দুদকের পর্যালোচনায় দেখা যায়, শেখ হাসিনা নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দাখিল করা হলফনামায় অর্জিত সম্পদ ও দায়দেনার বিবরণীতে তার নিজ নামে অর্জিত কৃষিজমির পরিমাণ ৬ দশমিক ৫০ একর উল্লেখ করেন। যার আর্থিক মূল্য দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। কিন্তু সমসাময়িক সময়ে (কিছুদিন আগে) দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করা তার সম্পদ বিবরণীতে ২৮ দশমিক ৪১১ একর জমির মালিকানার তথ্য পাওয়া যায়। যার ক্রয়মূল্য (সেই সময়ের দলিল অনুযায়ী) ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার ১০ টাকা। ফলে তিনি হলফনামায় ২১ দশমিক ৯১ একর জমির তথ্য গোপন করেছেন এবং জমির মূল্য ৩১ লাখ ৯১ হাজার ১০ টাকা কম দেখিয়ে অসত্য তথ্য দিয়েছেন বা তথ্য গোপন করেছেন।

এ ছাড়া শেখ হাসিনা মাগুরা-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সিরাজুল আকবরের সংসদ সদস্য পদের শুল্কমুক্ত কোটা ব্যবহার করে বেনামে ২ লাখ ৩০ হাজার ইউরো মূল্যের (গাড়ি আমদানির এলসির বিপরীতে ব্যাংক থেকে পরিশোধিত মোট ১ কোটি ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকা) একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি আমদানি করে নিজ আবাসিক ঠিকানা (সুধা সদন, বাড়ি নং-৫৪, রোড নং-৫, ধানমন্ডি, আবাসিক এলাকা, ঢাকা) ব্যবহার করে গাড়ি রেজিস্ট্রেশন (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-৬৩৬৪) করেন এবং নিজে তা ব্যবহার করেছেন। সিরাজুল আকবরের আয়কর নথিতে কিংবা নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দাখিল করা তার হলফনামায় ওই গাড়িটির বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ করেননি। এ অবস্থায় সামগ্রিক তথ্য বিশ্লেষণ করে দুদক মনে করে, নির্বাচন কমিশন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারে। এ জন্য নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’

গত ১৮ মে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নতুন করে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। উপপরিচালক মাসুদুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত টিম অনুসন্ধান পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে। একইভাবে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪-এর নির্বাচনি হলফনামা যাচাই করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়াসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সম্প্রতি তিনটি মামলা করেছে দুদক। ইতোমধ্যে একটির চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়েছে। চার্জশিট গ্রহণ করে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করতে পরোয়ানাও জারি করেছেন আদালত। এ ছাড়া বিদেশে অর্থ পাচার ও প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎসহ দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগে আরও কয়েকটি অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।

সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে দরকার জাতীয় ঐক্য: বদিউল আলম মজুমদার

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৯:৫৯ পিএম
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে দরকার জাতীয় ঐক্য: বদিউল আলম মজুমদার
ছবি: খবরের কাগজ

সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য দরকার জাতীয় ঐক্য উল্লেখ করে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে লটারির ভিত্তিতে নারীদের জন্য আসন নির্ধারিত হবে। এতে করে নারীরা যখন নিজেদের আসন পরিচালনা করবে তাদের আক্ষরিক ক্ষমতায়ন হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতেও বাংলাদেশের কাছাকাছি একটা নির্বাচন ব্যবস্থা আছে। কিন্তু ওইখানে প্রধান আলাদা হওয়াতে প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশের মতো হয়ে যেতে পারেননি।’ 

বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ‘সুপারিশ থেকে বাস্তবতা: কমিশন রিপোর্টের পুনঃমূল্যায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। 

ঢাকা ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্স (ডায়রা) এর উদ্যোগে এই বৈঠকে সঞ্চালক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান। পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর দায়রার অবস্থান তুলে ধরেন সংগঠনটির গবেষণা সহকারী ফারিহা আহমেদ। 

ফারিহা আহমেদ বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে প্রবেশ করে। অভ্যুত্থান পরবর্তী প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কাঠামো পুনর্বিবেচনা এবং একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সম্ভাবনা তৈরির এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি হয় জাতির সামনে। এই ধারাবাহিকতায়, ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি জাতীয় সংস্কার কমিশন গঠন করে। এর মধ্যে পাঁচটি-সংবিধান, নির্বাচন, বিচারব্যবস্থা, জনপ্রশাসন এবং পুলিশ সংস্কার কমিশন গত ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশসহ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমরা এমন এক ক্রান্তিলগ্নে অবস্থান করছি, যেখানে গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ এবং জবাবদিহিতার ভিত্তিতে নতুন করে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে। সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশগুলো গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেগুলোর বাস্তবায়ন পদ্ধতি, স্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকার নিশ্চয়তা কতটুকু, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।’

সংবিধানে নাগরিকের অধিকার প্রসঙ্গে ড. মির্জা এম হাসান বলেন, ‘সংবিধানে ‘ইক্যুয়ালিটি অফ অপরচুনিটি’ বিদ্যমান থাকলেও ‘ইক্যুয়ালিটি অফ আউটকাম’-এর অভাব রয়েছে।’ 

তিনি অধিকারের দুটি মাত্রা- ইতিবাচক ও নেতিবাচক অধিকার ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘সমাজে যেখানে কেউ কাউকে ক্ষতি করে, সেখানে নিছক স্বাধীনতাকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘জীবনের অধিকারে কোনো প্রকার সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত নয়। তবে দলীয় শত্রুতা ও বিদ্বেষ ছড়ানো বাক-স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত নয়।’ 

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেন, ‘সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো বাস্তববাদী না হলে ফলপ্রসূ হবে না।’ 

অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, ‘‘সংবিধানের ২৬ থেকে ৪৭ ধারায় মৌলিক অধিকারের কাঠামো নির্ধারিত আছে। কিন্তু বাস্তবতায় এই অধিকারগুলোর প্রয়োগ সীমিত হয়ে পড়ে ‘যুক্তিসংগত সীমাবদ্ধতা’র মাধ্যমে। ‘প্রটেকশন অফ লাইফ’-এ কোনো রকম নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত নয়।‘’ 

বাংলাদেশের সংসদে উচ্চকক্ষের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে বিডিজবস ডট কম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফাহিম মাশরূর বলেন, ‘উচ্চকক্ষ এখনই বাস্তবায়নযোগ্য না হলেও ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতার জন্য তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।’ 

আমার বাংলাদেশ পার্টির যুগ্ম মহাসচিব নাসরিন সুলতানা মিলি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ উচ্চকক্ষ নিয়ে এখনও প্রস্তুত নয়। নিম্নকক্ষে পিআরভিত্তিক ১০০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষণ দরকার।’

সুমন/

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নাহিদসহ ৩ উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৯:৫০ পিএম
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নাহিদসহ ৩ উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে চাইছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলা এমন আলোচনার মধ্যে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় গিয়ে তার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।

সূত্র জানায়, সন্ধ্যা ৭টার দিকে যমুনায় প্রবেশ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বেশ কিছুক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একান্তে আলাপ করেন। ড. ইউনূসের প্রধান উপদেষ্টা পদে থাকার বিষয়টি নিয়েই মূলত তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। জানতে চাইলে নাহিদ ইসলামও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

এদিকে সন্ধ্যায় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন।