ঢাকা ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইসিটি ধর্মীয় ঐক্য, সামাজিক উন্নয়ন ও গবেষণার এক অনন্য যাত্রা

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪২ পিএম
আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৭ পিএম
ধর্মীয় ঐক্য, সামাজিক উন্নয়ন ও গবেষণার এক অনন্য যাত্রা
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের খ্রিস্টান সমাজের অন্যতম উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান ইক্যুমেনিক্যাল খ্রিস্টান ট্রাস্ট (ইসিটি)। ১৯৮৬ সালে ট্রাস্ট আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠন চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ধর্মীয় সহনশীলতা, সমাজসেবা এবং শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সহাবস্থান তৈরি করাই ছিল এই ট্রাস্টের মূল লক্ষ্য, যা সময়ের সঙ্গে বহুমাত্রিক রূপ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি রাজধানী ঢাকার মিরপুর-১০ এ অবস্থিত।

গবেষণা ও জ্ঞানের পরিসর

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ‘ইসিটি’ শুরু করেছে এক যুগান্তকারী গবেষণা প্রকল্প-‘জাতীয় জীবনে খ্রিস্টানমণ্ডলীর অবদান’। পাঁচ বছর মেয়াদি এই গবেষণার বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা, যা সংগঠনের নিজস্ব তহবিল এবং দেশের বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে। এই গবেষণা শুধু খ্রিস্টানদের ঐতিহাসিক অবদান তুলে ধরবে না, বরং জাতীয় পরিচয়ে খ্রিস্টানদের অবিচ্ছেদ্য অংশীদারত্বের দিকগুলোও তুলে ধরবে।

সাংগঠনিক কাঠামো ও নেতৃত্ব

‘ইসিটি’র বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটিতে রয়েছেন শিক্ষাবিদ, ধর্মীয় নেতা এবং সমাজকর্মী। নেতৃত্বে আছেন বোর্ড চেয়ারম্যান রেভারেন্ড ইম্মানুয়েল মল্লিক, সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস, এবং ট্রেজারার জন সুশান্ত বিশ্বাস। কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন বিশপ সাইমন বাড়ৈ, তন্দ্রা রাণী সরকার এবং মোহাম্মদ আফিজুর রহমান। এই বহুমাত্রিক নেতৃত্বই ইসিটিকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, দায়িত্বশীল ও প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে।

সামাজিক কর্মকাণ্ড ও সম্প্রসারণ

‘ইসিটি’ কেবল গবেষণা নয়, সামাজিক উন্নয়নেও সক্রিয়। স্কলারশিপ ফান্ডের মাধ্যমে প্রতি মাসে বিশ (২০) জন দরিদ্র ও প্রান্তিক খ্রিস্টান শিক্ষার্থীকে সহায়তা প্রদান করা হয়, যার মধ্যে নার্সিংয়ে অধ্যয়নরত নারী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের জন্য কাউন্সেলিং সেশন, আদিবাসী শিক্ষার্থীদের নিয়ে গ্রুপ ওয়ার্কিং এবং ধর্মীয় সচেতনতামূলক সেমিনারের আয়োজন নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ।

২০২৩-২৫ সময়কালে সংগঠনের উল্লেখযোগ্য কিছু কার্যক্রম

সেমিনার ও আলোচনা সভা: প্রায় আড়াই বছরে অনুষ্ঠিত হয়েছে দশের অধিক সেমিনার ও আলোচনা সভা। যার মধ্যে ‘শান্তি, সম্প্রীতি ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ’, ‘বিচারহীনতা’ এবং ‘নির্যাতিতদের করণীয়’-এই বিষয়ে আয়োজন বিশেষভাবে গুরুত্ববহ। খ্রিস্টান পালক-পুরোহিতদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যও ‘ইসিটি’ নিয়মিত সেমিনারের আয়োজন করে থাকে। তবে বর্তমান যুবসমাজের উন্নয়নই তাদের মূল লক্ষ্য।

ত্রাণ কার্যক্রম: ২০২৪ সালের আগস্টে নোয়াখালীতে এক হাজার পরিবারকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।

প্রযুক্তি শিক্ষা: কম্পিউটার ও আইটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু রয়েছে গরিব খ্রিস্টান যুবসমাজের জন্য।

সামাজিক সমস্যা মোকাবেলায় ক্যাম্প: যৌতুক ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা কর্মসূচি চলমান।

ভবিষ্যত কর্মসূচি: গরিব ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ‘ইসিটি’ ভবিষ্যতে কৃষিভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে। নিম্নবর্গ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত রয়েছে। এসব সেবামূলক কাজে সমাজের উচ্চবর্গ জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণও প্রত্যাশা করে সংগঠনটি। ‘খ্রিস্টান মণ্ডলীর ইতিহাস’ এবং ‘বাংলাদেশের পালক-পুরোহিতদের জীবনী’ শিরোনামে একাধিক প্রকাশনার পরিকল্পনাও রয়েছে সংগঠনটির।

প্রযুক্তি যুগে সংগঠনটির উপস্থিতিও সুসংহত। ‘ইসিটি’র ওয়েবসাইট (https://ectbd.org) এবং ফেসবুক পেজ নিয়মিত হালনাগাদ করা হয়। ২০২৪ সালে ‘ইসিটি নিউজ’ নামে একটি নিয়মিত প্রকাশনাও চালু করেছে, যা তাদের কার্যক্রম ও দৃষ্টিভঙ্গি দেশের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে দিচ্ছে।

আন্তঃধর্মীয় সংলাপ ও সংস্কৃতি চর্চা

‘ইসিটি’ আন্তঃধর্মীয় সংলাপেও অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। খ্রিস্টানদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সাথে পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধির জন্য সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও সাংস্কৃতিক আয়োজন করে থাকে। খ্রিষ্টীয় ঐতিহ্যকে লালন করে এমন নাটক, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও সাহিত্যসভাও তাদের নিয়মিত কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত।

একটি সর্বজনীন চেতনার প্রতীক

‘ইসিটি’ এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা খ্রিস্টানদের মধ্যে বিভাজনের দেয়াল ভেঙে ঐক্যের ভিত্তি গড়ে তুলছে। তারা বিশ্বাস করে—বৈচিত্র্যের মধ্যেই ঐক্য এবং এই মূল্যবোধই বাংলাদেশি সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি সহনশীল, প্রগতিশীল ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখছে।

আজকের বাংলাদেশে যেখানে ধর্মীয় বিভাজন ও অসহিষ্ণুতার শঙ্কা রয়েছে, সেখানে ‘ইসিটি’ এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এটি কেবল একটি খ্রিস্টান ট্রাস্ট নয়-একটি আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির প্ল্যাটফর্ম, একটি সামাজিক অঙ্গীকারের প্রতীক এবং একটি গবেষণা-নির্ভর উন্নয়ন চিন্তার বাহক। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বলা যায়, ‘ইসিটি’ বাংলাদেশের সমাজ কাঠামোতে ইতিবাচক পরিবর্তনের অন্যতম চালিকাশক্তি হয়ে উঠছে।

শাহাদাত/মাহফুজ/

সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে দরকার জাতীয় ঐক্য: বদিউল আলম মজুমদার

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৯:৫৯ পিএম
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে দরকার জাতীয় ঐক্য: বদিউল আলম মজুমদার
ছবি: খবরের কাগজ

সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য দরকার জাতীয় ঐক্য উল্লেখ করে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে লটারির ভিত্তিতে নারীদের জন্য আসন নির্ধারিত হবে। এতে করে নারীরা যখন নিজেদের আসন পরিচালনা করবে তাদের আক্ষরিক ক্ষমতায়ন হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতেও বাংলাদেশের কাছাকাছি একটা নির্বাচন ব্যবস্থা আছে। কিন্তু ওইখানে প্রধান আলাদা হওয়াতে প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশের মতো হয়ে যেতে পারেননি।’ 

বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ‘সুপারিশ থেকে বাস্তবতা: কমিশন রিপোর্টের পুনঃমূল্যায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। 

ঢাকা ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্স (ডায়রা) এর উদ্যোগে এই বৈঠকে সঞ্চালক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান। পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর দায়রার অবস্থান তুলে ধরেন সংগঠনটির গবেষণা সহকারী ফারিহা আহমেদ। 

ফারিহা আহমেদ বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে প্রবেশ করে। অভ্যুত্থান পরবর্তী প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কাঠামো পুনর্বিবেচনা এবং একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সম্ভাবনা তৈরির এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি হয় জাতির সামনে। এই ধারাবাহিকতায়, ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি জাতীয় সংস্কার কমিশন গঠন করে। এর মধ্যে পাঁচটি-সংবিধান, নির্বাচন, বিচারব্যবস্থা, জনপ্রশাসন এবং পুলিশ সংস্কার কমিশন গত ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশসহ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমরা এমন এক ক্রান্তিলগ্নে অবস্থান করছি, যেখানে গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ এবং জবাবদিহিতার ভিত্তিতে নতুন করে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে। সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশগুলো গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেগুলোর বাস্তবায়ন পদ্ধতি, স্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকার নিশ্চয়তা কতটুকু, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।’

সংবিধানে নাগরিকের অধিকার প্রসঙ্গে ড. মির্জা এম হাসান বলেন, ‘সংবিধানে ‘ইক্যুয়ালিটি অফ অপরচুনিটি’ বিদ্যমান থাকলেও ‘ইক্যুয়ালিটি অফ আউটকাম’-এর অভাব রয়েছে।’ 

তিনি অধিকারের দুটি মাত্রা- ইতিবাচক ও নেতিবাচক অধিকার ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘সমাজে যেখানে কেউ কাউকে ক্ষতি করে, সেখানে নিছক স্বাধীনতাকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘জীবনের অধিকারে কোনো প্রকার সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত নয়। তবে দলীয় শত্রুতা ও বিদ্বেষ ছড়ানো বাক-স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত নয়।’ 

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেন, ‘সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো বাস্তববাদী না হলে ফলপ্রসূ হবে না।’ 

অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, ‘‘সংবিধানের ২৬ থেকে ৪৭ ধারায় মৌলিক অধিকারের কাঠামো নির্ধারিত আছে। কিন্তু বাস্তবতায় এই অধিকারগুলোর প্রয়োগ সীমিত হয়ে পড়ে ‘যুক্তিসংগত সীমাবদ্ধতা’র মাধ্যমে। ‘প্রটেকশন অফ লাইফ’-এ কোনো রকম নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত নয়।‘’ 

বাংলাদেশের সংসদে উচ্চকক্ষের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে বিডিজবস ডট কম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফাহিম মাশরূর বলেন, ‘উচ্চকক্ষ এখনই বাস্তবায়নযোগ্য না হলেও ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতার জন্য তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।’ 

আমার বাংলাদেশ পার্টির যুগ্ম মহাসচিব নাসরিন সুলতানা মিলি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ উচ্চকক্ষ নিয়ে এখনও প্রস্তুত নয়। নিম্নকক্ষে পিআরভিত্তিক ১০০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষণ দরকার।’

সুমন/

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নাহিদসহ ৩ উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৯:৫০ পিএম
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নাহিদসহ ৩ উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে চাইছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলা এমন আলোচনার মধ্যে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় গিয়ে তার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।

সূত্র জানায়, সন্ধ্যা ৭টার দিকে যমুনায় প্রবেশ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বেশ কিছুক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একান্তে আলাপ করেন। ড. ইউনূসের প্রধান উপদেষ্টা পদে থাকার বিষয়টি নিয়েই মূলত তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। জানতে চাইলে নাহিদ ইসলামও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

এদিকে সন্ধ্যায় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন।

ঢাকায় আসছে চীনের ১৫০ সদস্যের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৮:৪৮ পিএম
ঢাকায় আসছে চীনের ১৫০ সদস্যের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল
ছবি: সংগৃহীত

চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাওয়ের নেতৃত্বে ১৫০ ব্যবসায়ীর একটি প্রতিনিধিদল আগামী ৩১ মে ঢাকায় আসছে। এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ ও বাণিজ্য আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। সফরকালে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশনের বৈঠকে নিজ দেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন ওয়াং ওয়েনতাও।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চীনা প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরকালে বিডা আয়োজিত এক সেমিনারেও যোগ দেবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করবেন তারা। চীনা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ঢাকা সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দীন ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এসব বৈঠকে চীনা প্রতিনিধিদল দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে চীনা বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা হবে।

এ বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানান, চীনা প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরকালে উভয়পক্ষ একটি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিনিময় অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজন করবে। সেখানে শত শত চীনা এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তার অংশগ্রহণ এবং আরও সহযোগিতার সুযোগ অন্বেষণ করা হবে।

‘বিভাজনমূলক’ শব্দচয়নের জন্য দুঃখ প্রকাশ তথ্য উপদেষ্টার

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৭:৫৪ পিএম
‘বিভাজনমূলক’ শব্দচয়নের জন্য দুঃখ প্রকাশ তথ্য উপদেষ্টার
অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে আগের ‘বিভাজনমূলক’ বক্তব্য ও শব্দচয়নের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য অনিবার্য। আগের যেকোনও বক্তব্য ও শব্দচয়ন, যা বিভাজনমূলক ছিল—সেগুলোর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

‘ব্যক্তির আদর্শ, সম্মান ও আবেগের চেয়ে দেশ বড়’ শীর্ষক এই লেখাতে মাহফুজ আলম বলেন, ‘সরকারে আর একদিনও থাকলে অভ্যুত্থানের সব শক্তির প্রতি সম্মান ও সংবেদনশীলতা রেখে কাজ করতে চাই। পুরাতন বন্দোবস্তের বিভেদকামী স্লোগান ও তকমাবাজি, যা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে হত্যাযোগ্য করে তোলে, সেগুলো পরিহার করলেই আশা করি ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।’

বাংলাদেশের শত্রুরা ‘ঐক্যবদ্ধ ও আগ্রাসী’ উল্লেখ করে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে। দেশপ্রেমিক জনগণ, যারা জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন, তাদের সামনে দীর্ঘ পরীক্ষা। এ পরীক্ষা ঐক্যের এবং ধৈর্যের। এ পরীক্ষা উতরে যেতেই হবে।’

এমএ/

নটর ডেমের শিক্ষার্থী ধ্রুবর অস্বাভাবিক মৃত্যুর সঠিক তদন্ত চায় পরিবার

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৪:২১ পিএম
আপডেট: ২২ মে ২০২৫, ০৮:০১ পিএম
নটর ডেমের শিক্ষার্থী ধ্রুবর অস্বাভাবিক মৃত্যুর সঠিক তদন্ত চায় পরিবার
ছবি: খবরের কাগজ

রাজধানীর নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী ধ্রুবব্রত দাস ধ্রুবর অস্বাভাবিক মৃত্যুর সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে তার পরিবার।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুরে মতিঝিলে নটর ডেম কলেজ ফটকের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানায় নিহত ধ্রুবর পরিবার ও স্বজনরা।

মানববন্ধনে তারা অভিযোগ করেন, শিক্ষার্থী ধ্রুবব্রত দাস ধ্রুবর অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের যথেষ্ট সহযোগিতা পেলেও কলেজ প্রশাসন অসহযোগিতা করছে। ঘটনাটি কলেজ প্রাঙ্গণে ঘটলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ এখনো কার্যকর কোনো ভূমিকাই নেয়নি।  

নিহত ধ্রুবর বাবা বানিব্রত দাস চঞ্চল মানববন্ধনে বলেন, গত ১২ মে বেলা সোয়া ৩টার দিকে নটর ডেম কলেজের ‘ফাদার টিম’ ভবন থেকে ধ্রুব নিচে পড়ে যায় বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়। কিন্তু কীভাবে সে পড়ে গেছে, এর পেছনের কারণ কী? সে বিষয়ে কোনো তথ্য খোলাসা করছে না কলেজ কর্তৃপক্ষ। 

আমার ছেলের মৃত্যুর ১০ দিন পার হয়ে গেলেও ঘটনার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনো প্রকার সহযোগিতা করছে না। তারা কোনো তদন্ত করছে না।

নটর ডেম কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল ধ্রুবব্রত দাস ধ্রুব। গত ১২ মে পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে বাবা বানিব্রত দাস চঞ্চল এবং মা তমা রানী সিংয়ের সঙ্গে কলেজে গিয়েছিল ধ্রুব। ছেলেকে ভেতরে পাঠিয়ে দিয়ে তারা কলেজ গেটের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু একটু পর কয়েকজন শিক্ষার্থী ধ্রুবকে রক্তাক্ত অবস্থায় ধরাধরি করে বাইরে নিয়ে আসে। প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক ধ্রুবকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়ে নটর ডেম কলেজ কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। কোনো তদন্তও না করায় নিহতের পরিবার এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। 

ধ্রুবর মা তমা রানী সিং বলেন, ‘আমার ছেলের মৃত্যুর সাত দিন পর কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তাদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কীভাবে ধ্রুবর মৃত্যু হয়েছে? সে বিষয়ে তারা কিছুই বলেনি। সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ দেখতে তাদের কাছে দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা বলছে, ওই ভবনে কোনো সিসিটিভির কানেকশন ছিল না।’ 

তিনি ভারাক্রান্ত মনে বলেন, ‘সব জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল, কিন্তু আমার ছেলে যে ভবনে গেল, ওই ভবনেই খালি সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না! এর কারণ কী? তাহলে কীভাবে আমার ছেলের মৃত্যু হলো? আমরা তদন্তের দাবি করেছি, কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা করেনি।’ 

তিনি বলেন, ‘এটা হত্যাকাণ্ড নাকি দুর্ঘটনা, সে বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে তদন্ত করে জানাতে হবে। এ ঘটনাটি কলেজের ভেতরে ঘটেছে, তাই এর দায় তো কলেজ কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। আমি তাদের কাছে আর্জি জানিয়েছি, কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করছে না।’  

মানববন্ধনে উপস্থিত স্বজন তামান্না বলেন, ‘কীভাবে এবং কাদের সঙ্গে টিম ফাদার ভবনে ধ্রুব গিয়েছিল, তা সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা সম্ভব। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, টিম ফাদার বিল্ডিংয়ের সিসিটিভি ক্যামেরা দুটির কানেকশন নেই। যদিও ঘটনার দিন বেলা ৩টা পর্যন্ত ধ্রুব কলেজের গাঙ্গুলি ভবনের সামনে তার অন্য সহপাঠীদের সঙ্গে ছিল। তবে ওই ভবনে ধ্রুবর সঙ্গে তার কোন সহপাঠীরা গিয়েছিল, সেটি ভবনের সিঁড়ি, ক্যানটিনের আশপাশের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখেও শনাক্ত করা সম্ভব। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’ 

মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তারা বলেন, ‘ধ্রুবর অস্বাভাবিক মৃত্যুর সঠিক তদন্ত চাই। আমরা আশা করি, কলেজ কর্তৃপক্ষ সঠিক তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। একই সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ থাকবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ধ্রুবর অস্বাভাবিক মৃত্যুর সঠিক তদন্ত শেষ করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে।’