
পেঁয়াজের ঝাঁঝ কমছেই না। বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে তিন দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বাড়িয়েছেন। ঠেকেছে ৭০ টাকায়। সবজিতেও সুখবর নেই। বাজারে সেঞ্চুরির ওপরে শজনে ডাঁটা, কাঁকরোল, বেগুন বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজির কেজিও ৮০ টাকার কমে মেলে না। ধান উঠতে শুরু করলেও কমেনি চালের দাম। আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম না কমলেও সোনালি মুরগির দাম কিছুটা কমে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজার, কারওয়ান বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে বাজারভেদে সবজির কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকার তারতম্য দেখা গেছে।
কমেনি ডিম-মুরগির দাম
গত সপ্তাহে ডিমের দাম বেড়ে ডজন ১৩০ টাকা হয়েছে। এর পর আর কমেনি। ভোক্তাদের বেশি দামেই ডিম কিনতে হচ্ছে। গতকালও বিভিন্ন বাজারে খুচরা বিক্রেতারা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা ডজন ডিম বিক্রি করেন। গরমে কোনো উৎসব না থাকলেও মুরগির দাম কমেনি। গত সপ্তাহের মতোই ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে সোনালি মুরগির দাম কিছুটা কমে কেজিপ্রতি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হয়।
এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের চায়না-বাংলা চিকেন হাউসের ফয়েজ আহমেদ ও টাউন হল বাজারের ব্রয়লার হাউসের মো. বিল্লাল হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘আসলে দাম বাড়া-কমা খামারের ওপর নির্ভর করে। তারা কমালে আমরা কম দামে বিক্রি করি। তাই আগের মতোই ব্রয়লার ১৭০-১৮০ টাকা এবং সোনালি মুরগির দাম কমে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’ হাতিরপুল বাজার, নিউ মার্কেটসহ অন্য বাজারেও এই দরে মুরগি বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। তবে আগের মতোই দেশি মুরগি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০, খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে। মাছের দাম আগের মতোই আছে বলে জানান খুচরা বিক্রেতারা। আকারভেদে রুই, কাতল মাছের কেজি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার, তেলাপিয়া ও পাঙাশ ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাড়তি দামেই সবজি বিক্রি
আগের সপ্তাহে অধিকাংশ সবজির কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল বাড়তি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। ৭০ থেকে ৯০ টাকার বেগুন ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। শজনে ডাঁটা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, কাঁকরোলও ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, গ্রীষ্মের সবজি ঝিঙে ৯০ থেকে ১০০ টাকা, ধুন্দলও ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ৮০ টাকা আর বাঁধাকপির পিস ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শসা ৬০ থেকে ৮০, কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ১০০, করলা ৭০ থেকে ৮০, পটোল ও ঢ্যাঁড়শ ৬০ থেকে ৮০, কাঁচা পেঁপে ৬০ থেকে ৭০, টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেশি দামেই চাল বিক্রি
হাওরে বোরো ধান উঠলেও বাজারে এখনো এর প্রভাব পড়েনি। আগের মতোই বেশি দামে মোজাম্মেল কোম্পানির চাল ৯৬ টাকা কেজি; রশিদ, সাগরসহ অন্য মিনিকেট চাল ৭৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি; আটাশ ৬০ থেকে ৬৫ এবং মোটা চাল ৫২ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দাম বাড়ার পর সয়াবিন তেলের বাজার স্বাভাবিক হয়ে গেছে। বিভিন্ন বাজারের খুচরা বিক্রেতারা জানান, দাম বাড়ানোর পরই মিলমালিকরা সরবরাহ বাড়িয়েছেন। ১ লিটার ১৮৯ টাকা এবং ৫ লিটার ৯২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ২ কেজির প্যাকেট আটা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, চিনি ১২০, মসুর ডাল ১২০ থেকে ১৩৫ টাকােয় বিক্রি হচ্ছে।
বাড়ছেই পেঁয়াজের ঝাঁঝ
গ্রীষ্মকাল শুরু হলেই পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। আগের সপ্তাহে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও সোমবার তা ৭০ টাকায় উঠেছে। টাউন হল বাজারের রমজান আলী খবরের কাগজকে বলেন, পাবনা ও রাজশাহীর পেঁয়াজের দাম বেশি। সেই পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ফরিদপুরের পেঁয়াজের দাম একটু কম- ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
তবে আগের মতোই আলুর কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা, দেশি আদা ১২০ থেকে ১৩০, আমদানি করা আদা ১৮০ থেকে ২২০, দেশি রসুন ১২০, আমদানি করা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।