ঢাকা ২৭ আষাঢ় ১৪৩২, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
English
শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

দায়রার সংলাপে বক্তারা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দরকার ক্ষমতার সুষম বণ্টন

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫, ১১:১৮ পিএম
আপডেট: ০২ জুন ২০২৫, ০৮:৩০ এএম
গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দরকার ক্ষমতার সুষম বণ্টন
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালেটিকস (দায়রা) কর্তৃক ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের যাত্রা ও প্রাতিষ্ঠানিক অবক্ষয়: ভবিষ্যৎ কোন দিকে?’ শীর্ষক এক অংশীজন সংলাপের আয়োজিত হয়। শনিবার (৩১ মে) বিকেল ৪টায় প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) -এর সভা কক্ষে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সঙ্গে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বল কাঠামো ব্যবস্থার সম্পর্ক তুলে ধরা হয়। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা, দমনমূলক শাসন ও প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মের অবক্ষয়ের প্রেক্ষাপটে, আলোচনা সভাটিতে বক্তারা প্রতিষ্ঠানগত দুর্বলতার মূল কারণ ও এর ফলাফল নিয়ে আলোচনা করেছেন। একই সঙ্গে এ সব প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা দ্বারা কীভাবে জবাবদিহিতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেসব বিষয়ও উঠে এসেছে উক্ত আলোচনায়।

আলোচনার শুরুতে ধারণাপত্র পাঠ করেন লন্ডনের SOAS ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক ড. মুশতাক এইচ. খান। তিনি কীভাবে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে বাংলাদেশে স্বৈরাচার, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে পড়েছে, সে বিষয়ে তিনি আলোচনা করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, কেবল আইন বা সংবিধান পরিবর্তন করেই গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়, এর জন্য দরকার ক্ষমতার সুষম বণ্টন।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলন, তরুণ উদ্যোক্তা, ক্ষুদ্র ব্যবসা ও নাগরিক সমাজের মতো নতুন শক্তিকে সংগঠিত করে এমন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক কাঠামো গড়ে তুলতে হবে, যারা নিজেদের স্বার্থে নীতিগত পরিবর্তনের দাবি জানাবে এবং তা বাস্তবায়নেও ভূমিকা রাখবে।

অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কেমন হওয়া উচিত? যেসব প্রতিষ্ঠান অতীতে জনস্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য  নতুন সংগঠনিক শক্তি কীভাবে গড়ে তোলা যায়? সংলাপটিতে এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন বক্তারা।

স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় গণমানুষের সম্পৃক্ততা নিয়ে কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফল হক।

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) -এর মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ মন্তব্য করেন, ‘আমরা যদি আর রক্তপাত না চাই তাহলে আমাদের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতেই হবে, সংস্কার ব্যতীত আমাদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের স্বপ্ন কখনোই বাস্তবায়ন হবে না’।

এ সময়ে বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ও নারী সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরিন হক অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নারী ও তৃণমূল মানুষের অধিকারের ওপর জোর দেয়ার কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা মানবিক রাষ্ট্র চাই। যেই রাষ্ট্র সবার কথা ভাববে’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা জাতি হিসেবে আমাদের ঐতিহাসিক সংগ্রাম এবং অর্জনকে মনে রেখে আমাদের গণতন্ত্রের পথে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান গুলো কিভাবে তৈরি হবে? এ প্রশ্ন তোলেন আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) -এর মহাসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি বলেন,  ‘আমাদের সংস্কারের উদ্যোগগুলো সব জায়গা থেকে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে, যা প্রচণ্ড হতাশার’।

জনমানুষকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে ক্ষমতার বিন্যাসের ভারসাম্য আনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন ব্রাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) -এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রুবাইয়া মোর্শেদ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) -এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জিনা তাসরিন বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠায় সকল প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।

ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক এহতেশাম হক বলেন, ‘পাঁচই আগস্টের পরে বিপ্লব শেষ হয়ে যায়নি। বিপ্লব চলমান প্রক্রিয়া। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যহত রাখতে বিপ্লব জারি রাখতে হবে’।

সংলাপটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন এর অধ্যাপক ড. আসিফ মোহাম্মদ শাহান। দায়রার পক্ষ থেকে সমাপনী বক্তব্য রাখেন পলিসি অ্যানালিস্ট মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই ধরনের সংলাপের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।

অংশীজন সংলাপটিতে উপস্থিত ছিলেন- ব্র‍্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানভীর সোবহান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সাদাব মুবতাসিম প্রান্তিক এবং দুদক সংস্কার কমিশনের ছাত্র প্রতিনিধি মুনিম মুবাসশির প্রমুখ।

সিলেট শিক্ষা বোর্ড গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে বেশি ফেল

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ১০:০০ এএম
সিলেট শিক্ষা বোর্ড গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে বেশি ফেল
ফাইল ছবি।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুটিই কমেছে। গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে বেশি শিক্ষার্থী ফেল করেছে এবং মানবিক বিভাগে সবচেয়ে খারাপ ফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা বোর্ডসংশ্লিষ্টরা।

এবার সিলেট শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ কম। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৬১৪ জন, যা আগের বছরের তুলনায় ১ হাজার ৮৫৭ জন কম। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বেলা ২টায় সিলেট শিক্ষা বোর্ড মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফল ঘোষণা করা হয়। গত বছর সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫ হাজার ৪৭১ জন শিক্ষার্থী।

শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ১৩১ জন। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ১ লাখ ২ হাজার ২১৯ জন। পাস করেছে ৭০ হাজার ৯১ জন। সিলেটে এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৬১৪ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থী ১ হাজার ৭৯১ জন আর মেয়ে ১ হাজার ৮২৩ জন। এই বোর্ডে এবার বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। মানবিক বিভাগে ৬৪ দশমিক ৭১ শতাংশ ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে এ হার ৭৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

এবার সিলেটের সাতটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। কোনো প্রতিষ্ঠানে শতভাগ ফেল নেই। গত বছর শতভাগ পাস প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৩১টি। এর আগের বছর ২০২৩ সালে ছিল ২৩টি।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘এবার সিলেট শিক্ষা বোর্ডে শতভাগ পাসের সাফল্য দেখিয়েছে সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তিন বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ফল হয়েছে বিজ্ঞান বিভাগে। মানবিক বিভাগে সবচেয়ে খারাপ ফল হয়েছে। গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হতে না পারায় পাসের হার কমেছে। বিশেষ করে মানবিক বিভাগে ফেল করা শিক্ষার্থীর হার বেশি।’ 

তিনি বলেন, ‘দুর্গম হাওরাঞ্চল ও গ্রামের অনেক প্রতিষ্ঠানে মানসম্পন্ন গণিত ও ইংরেজি শিক্ষকের অভাব রয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বিদেশমুখী প্রবণতা, অমনোযোগিতা এবং শিক্ষকদের সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবও খারাপ ফলাফলের অন্যতম কারণ। সব দিক বিবেচনায় সার্বিক ফলাফলে আমরা মোটামুটি সন্তুষ্ট। যেসব বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে ভবিষ্যতে উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

মাদ্রাসা বোর্ডে দেশ সেরা এন এস কামিল মাদ্রাসা

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩৬ এএম
মাদ্রাসা বোর্ডে দেশ সেরা এন এস কামিল মাদ্রাসা
মাদ্রাসা বোর্ডে দেশ সেরা এন এস কামিল মাদ্রাসা।

দাখিল পরীক্ষায় বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ঝালকাঠির এন এস কামিল মাদ্রাসা দেশ সেরা হয়েছে। এ মাদ্রাসা থেকে ৪২৭ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২২৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এ ছাড়াও শতভাগ পাসের গৌরব অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা গাজী শহিদুল ইসলাম জানান, ইসলামী চিন্তাবিদ হজরত আযীযুর রহমান কায়েদের প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা থেকে এ বছর দাখিল পরীক্ষায় ৪২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই পাস করে। জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে মাদ্রাসাটি শতকরা ৫৪ ভাগে এবং পাসের হার ৯৯ দশমিক ৭৭ ভাগ। দারুন্নাজাত আলিয়া মাদ্রাসা থেকে পাসের হার ৯৬ ভাগ এবং তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা থেকে ৯৭ ভাগ উত্তীর্ণ হয়েছে। গড় হিসেবে ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার ফলাফলে শীর্ষ অবস্থানে থেকে দেশ সেরা গৌরব অর্জন করেছে।

এদিকে এসএসসি পরীক্ষায় ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২২২ থেকে অংশ নিয়ে ২১২ জন কৃতকার্য হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৪ জন জিপিএ-৫ এবং সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২১৫ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২১২ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৮ জন। এ ছাড়াও শহরের ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় দাখিল পরীক্ষার্থী ৩৮ জনে উত্তীর্ণ হয়েছে ৩২ জন এবং জিপিও-৫ পেয়েছে ২ জন। কুতুবনগর আলিম মাদ্রাসা থেকে ৩৮ জন অংশ নিয়ে ৩৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন। উদ্বোধন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১২৪ জন অংশ নিয়ে ৮১ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। কেউ জিপিএ-৫ অর্জন করতে পারেনি।

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি চীন-কানাডার

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:৫১ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:৫১ পিএম
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি চীন-কানাডার
ছবি: সংগৃহীত

চীন ও কানাডা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহযোগিতা জোরদার করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। একইসঙ্গে, তারা দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত ৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামে (এআরএফ) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে চীন ও কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পৃথক বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সঙ্গে বৈঠকে উভয়পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে এবং অগ্রাধিকার খাতগুলোতে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করে।

ওয়াং ই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কার উদ্যোগে বেইজিংয়ের পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং মেডিকেল ট্যুরিজম ও পানি ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

তিনি জানান, ‘সাম্প্রতিক চীন বিনিয়োগ সম্মেলনের ধারাবাহিকতায় বেইজিং বাংলাদেশের পরিকল্পনা, বস্ত্র, জ্বালানি ও হালকা প্রকৌশল খাতে আরও বেশি বিনিয়োগে আগ্রহী।’

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা চীনের রাজনৈতিক ও উন্নয়ন সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান এখন অত্যন্ত জরুরি।’

তিনি এ সংকটে চীনের সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। এ ছাড়া জাতিসংঘসহ আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশের পাশে থাকার আহ্বান জানান।

পরে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনিতা আনন্দের সঙ্গে বৈঠকে বাণিজ্য বৈচিত্র্যকরণ ও বাংলাদেশ-কানাডা অংশীদারিত্বকে আরও টেকসই করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

আনন্দ বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আশ্রয়ে মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং এ সংকটে অটোয়ার দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. ফরহাদুল ইসলাম, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসানসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন শুক্রবার (১১ জুলাই) অনুষ্ঠেয় ৩২তম এআরএফ মন্ত্রী পর্যায়ের সভায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। সেখানে তিনি আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র:বাসস

সুমন/

নিষিদ্ধ পলিথিন বন্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযান শিগগিরই: সৈয়দা রিজওয়ানা

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:০৪ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:০৬ পিএম
নিষিদ্ধ পলিথিন বন্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযান শিগগিরই: সৈয়দা রিজওয়ানা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: সংগৃহীত

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘বারবার সতর্ক করার পরও যারা নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের এখন থেকে আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। নিষিদ্ধ পলিথিন বন্ধে যৌথ বাহিনীকে নিয়ে অচিরেই কঠোর অভিযান শুরু হবে।’

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর (অব.) সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন রিজওয়ানা হাসান। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় নিষিদ্ধঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগের উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, মজুত, বিতরণ ও বাণিজ্যিক পরিবহনের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

পরিবেশ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘পরিবেশ সংরক্ষণের স্বার্থে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় সরকার এবং সাধারণ জনগণের সমন্বয়ে একটি নিরবচ্ছিন্ন কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।’

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ দেশে ৬ মাসে সংখ্যালঘুদের ওপর ২৫৮ সহিংসতার ঘটনা

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৮:১০ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৪ পিএম
দেশে ৬ মাসে সংখ্যালঘুদের ওপর ২৫৮ সহিংসতার ঘটনা
ছবি: খবরের কাগজ

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সারা দেশে ২৫৮টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। 

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ এ তথ্য উপস্থাপন করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সংখ্যালঘু নাগরিক হত্যার ঘটনা ঘটেছে ২৭টি। নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২০টি। উপাসনালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৫৯টি; কথিত ধর্মঅবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের ঘটনা ২১টি; বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ২৭টি; বাড়িঘর, জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের ঘটনা ১২টি, শারীরিক নির্যাতন ও জোরপূর্বক পদত্যাগের ৪টি ঘটনা এ সময়ে ঘটেছে। এ সময় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ওপর হামলা ও নির্যাতনের ১২টি ঘটনা, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে বাধা, অপহরণের ১৬টি ঘটনা ঘটেছে। 

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও। উপস্থিত ছিলেন অন্যতম সভাপতি প্রফেসর ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ, জে এল ভৌমিক, রঞ্জন কর্মকার, সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চাভুক্ত বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, ঋষি পঞ্চায়েত ফোরামের সভাপতি রামানন্দ দাস। 

তারা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সম্পর্কিত ঘটনাগুলো কোনো গুরুত্ব না দিয়ে ঐক্য পরিষদের উত্থাপিত রিপোর্ট মিথ্যা, অতিরঞ্জিত ও বানোয়াট বলে অস্বীকার করার কৌশল নেওয়া হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনা শুধু ফৌজদারী অপরাধই নয়, এটি মানবতার বিরুদ্ধেও অপরাধ এবং তা এখনো চলমান।’ 

ক্ষোভ প্রকাশ করে নেতারা বলেন, ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে যথাযথ বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার উদ্যোগ একেবারেই লক্ষণীয় নয়। এ পরিস্থিতি একদিকে সন্ত্রাসীদের এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ করতে উৎসাহিত করছে, অপরদিকে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের মানবাধিকার পাওয়া এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিরাট অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

রাষ্ট্র সংস্কারের কার্যক্রমে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব ও অংশীদারত্বের বিষয়টি গুরুত্ব না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংখ্যালঘু সংগঠনের প্রতিনিধিরা। 

তারা বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান বৈষম্য ও নিপীড়নকে চ্যালেঞ্জ না করে তা টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে।’ 

জয়ন্ত/রিফাত/