ঢাকা ২৬ আষাঢ় ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

আপিল বিভাগের রায় প্রকাশ ইশরাকের শপথ ইসির এখতিয়ারাধীন

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫, ১১:৪৯ পিএম
ইশরাকের শপথ ইসির এখতিয়ারাধীন
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্পূর্ণ এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রবিবার (১ জুন) এ-সংক্রান্ত রায় প্রকাশ করেন সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম রবিবার রাতে দৈনিক খবরের কাগজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আজ (রবিবার) বিকাল ৪টার পর এই রায় প্রকাশিত হয়। রায় আগামীকাল ইসিতে যাবে।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চের দেওয়া এই রায়ে বলা হয়, ‘ইশরাকের শপথ ইস্যুটি পুরোটাই ছিল নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারাধীন’।

এর আগে এদিন বিকেলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছিলেন, ইশরাক হোসেনের শপথ ইস্যুতে আদালতের রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ইশরাকের গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করেন আপিল বিভাগ। ওই দিন আদালত থেকে বের হওয়ার পর লিভ টু আপিলকারীর আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘আপিল বিভাগ বলেছেন সাংবিধানিক যে দায়িত্ব আছে, তা নির্বাচন কমিশন পালন করবে। আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের সিদ্ধান্ত একসঙ্গে পড়লে অর্থ দাঁড়ায় যে নির্বাচন কমিশনকে আপিল করার জন্য বলছেন, যা এত দিন তারা করতে ব্যর্থ হয়েছে। পর্যবেক্ষণে ইসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে ইসি আপিল করতে বাধ্য। তা না হলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটের ফলাফলে আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। পরদিন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে ইসি। এর পরিপ্রেক্ষিতে শপথ নিয়ে দায়িত্বপালন করছিলেন তাপস। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফলাফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ এই মামলা করেন ইশরাক।

মামলার শুনানি নিয়ে ট্রাইব্যুনাল গত ২৭ মার্চ তাকে বিজয়ী ঘোষণা করতে ইসিকে নির্দেশ দিলে ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঘোষিত গেজেটেই ইশরাকের নাম প্রতিস্থাপন করে সংশোধনী আনে ইসি।

এদিকে তাপস মেয়র হওয়ার পর প্রথম সভা করেন ২০২০ সালের ২ জুন। আইনানুযায়ী, তখন থেকে পাঁচ বছর হিসাব করলে মেয়াদপূর্ণ করার দিন ২০২৫ সালের ১ জুন (রবিবার)। আর ইশরাকের শপথ ঠেকাতে আদালতে রিটকারীর দাবি ইশরাক শপথ নিলে রবিবারই তার পদের মেয়াদ ফুরিয়ে যেত।

এদিকে রবিবার নগর ভবনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে স্লোগানে স্লোগানে মিছিল নিয়ে নগর ভবনে জড়ো হতে থাকেন ইশরাকের সমর্থকরা। পরে তারা মূল ভবনের নিচে অবস্থান নেন। এতে নগর ভবন অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় ‘ইশরাক তোমার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘ইশরাকের শপথ নিয়ে টালবাহানা মানব না, মানব না’, ‘ইশরাক ভাই এগিয়ে চলো আমরা আছি তোমার সাথে’ ইত্যাদি নানা স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা।

এদিকে প্রধান ফটকে তালা থাকায় নগর ভবনের ভেতরে ঢুকতে পারছেন না সেবাপ্রত্যাশীরা। বন্ধ রয়েছে আসন্ন ঈদুল আজহাকেন্দ্রিক বিভিন্ন সেবা, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন, জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধসহ সব নাগরিকসেবা।

এইচএসসি’র ১০ জুলাইয়ের পরীক্ষা স্থগিত করেছে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম
এইচএসসি’র ১০ জুলাইয়ের পরীক্ষা স্থগিত করেছে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড
ছবি: সংগৃহীত

অতি ভারী বর্ষণ ও বন্যা পরিস্থিতির কারণে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বৃহস্পতিবারের (১০ জুলাই) সব এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শামসুল ইসলামের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক রুনা নাছরিন ।

জানা গেছে, টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও পরশুরামের বিভিন্ন এলাকায় পানি বাড়ছে। এসব এলাকায় ১০ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষাকে ঘিরে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হওয়ার প্রেক্ষিতে সন্ধ্যায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। সে সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১০ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তবে এসব পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে- এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

১০ জুলাই কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থ বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের হিসাব বিজ্ঞান প্রথম পত্র এবং মানবিক বিভাগের যুক্তিবিদ্যা প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

মূলত, চলতি সপ্তাহজুড়ে কুমিল্লা অঞ্চলের কিছু এলাকায় নদনদীর পানি বৃদ্ধি ও শহরাঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ার ফলে ১০ জুলাইয়ের পরীক্ষাকে ঘিরে অনেক অভিভাবক ও শিক্ষার্থী দুশ্চিন্তায় ছিলেন।

এর আগে, গত ২৬ জুন সারা দেশে একযোগে শুরু হয়েছে ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। মোট ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে অংশ নিচ্ছেন প্রায় ১২ লাখ ৫১ হাজার পরীক্ষার্থী। বোর্ডের রুটিন অনুযায়ী এইচএসসি ও সমমানের লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ১০ আগস্ট। এরপর ১১ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে ব্যবহারিক পরীক্ষা। ১০ জুলাইয়ের পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার সূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে।

জহির শান্ত/সুমন/

ইসির নীতিগত সিদ্ধান্ত ভোটের প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ থাকবে না

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:১৩ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:২৪ পিএম
ভোটের প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ থাকবে না
ছবি: সংগৃহীত

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে জাতীয় প্রতীক ‘শাপলা’কে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় তফসিলভুক্ত না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বুধবার (৯ জুলাই) রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ।

নির্বাচন কমিশনের এবারের চলমান দল নিবন্ধন কার্যক্রমে নাগরিক ঐক্য দলীয় প্রতীক হিসেবে কেটলির পরিবর্তে শাপলা দাবি করেছে। একই সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিও দলীয় প্রতীক হিসেবে প্রথম পছন্দ হিসেবে শাপলা চেয়ে নিবন্ধনে আবেদন করেছে। তবে শাপলা জাতীয় প্রতীক হওয়ায় কোনো দলের জন্য নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে তা বরাদ্দ নিয়ে বিতর্কের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত নিল এ এম এম নাসির উদ্দিন কমিশন।

এ বিষয়ে ইসি আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি শাপলা প্রতীকের তফসিলে থাকবে না। জাতীয় প্রতীকের কারণেই মূলত এ সিদ্ধান্ত। জাতীয় প্রতীকের চিহ্ন সংবিধানে বলা রয়েছে- জাতীয় প্রতীক থাকবে পানির মধ্যে ভাসমান শাপলা; দুই ধারে ধানের শীষ। শাপলা যেহেতু জাতীয় প্রতীক, এ প্রতীকের ডিগনিটি, সম্মান রক্ষার্থে আইন বিধি রয়েছে। সেটার আলোকে অনেক আগেও সিদ্ধান্ত হয়েছে; আমরাও এটাকে বাদ দিয়েছি (প্রতীক তালিকায়। প্রতীকের বর্ধিত নতুন তালিকা মন্ত্রণালয়ে যাবে।।’

এই কমিশনার আরও জানান, জাতীয় প্রতীক শাপলা ও জাতীয় পতাকার বিষয়ে সুস্পষ্ট আইনি নির্দেশনা রয়েছে। সংবিধানেও জাতীয় প্রতীক ও জাতীয় পতাকার কথা বলা হয়েছে। এ দুটোর মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য আইন করা হয়েছে; একটা বিধিমালা করা হয়েছে। কোনো ব্যাপারে জাতীয় ফুল, জাতীয় পাখির ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নেই।

এর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার বিদ্যমান ৬৯টি প্রতীক থেকে বাড়িয়ে অন্তত ১১৫টি প্রতীক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য বরাদ্দ করার উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। সেই লক্ষ্যে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় প্রতীক তালিকার তফসিল সংশোধন করে ভেটিংয়ের জন্য তা শিগগিরই আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

এলিস/সুমন

ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে অতীতের মতো রেজাল্ট দেওয়া হবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:০১ পিএম
ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে অতীতের মতো রেজাল্ট দেওয়া হবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার জানিয়েছেন, আগামীকাল (১০ জুলাই) এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এই ফলাফলে অতীত ঐতিহ্যের আলোকে শিক্ষার্থীদের মেধার প্রকৃত মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এবারের এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্টে শিক্ষার্থীদের মেধার প্রকৃত মূল্যায়ন করা হচ্ছে। অর্থাৎ তারা যেভাবে পরীক্ষা দিয়েছে, প্রকৃত মূল্যায়নে সেই ফলাফল তাদের হাতে পৌঁছানো হবে। ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে অতীতের মতো রেজাল্ট আর দেওয়া হবে না।’

বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) বাংলাদেশ সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসস’কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘অতীতে আমরা দেখেছি শিক্ষার্থীরা যেভাবে পরীক্ষা দিত, প্রকৃত মূল্যায়নে তাদের রেজাল্ট প্রকাশ করা হতো। কিন্তু গত ১৬ বছরে যে সরকার ছিল, তাদের আমলে সরকারের সাফল্য দেখানোর জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের নম্বর বাড়িয়ে দিয়ে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বাড়িয়ে ফুলিয়া ফাঁপিয়ে ফলাফল প্রকাশ করা হতো। এমনকি সেই ফলাফল প্রকাশ নিয়ে এক ধরনের ফটোসেশনের আয়োজন ছিল রাষ্ট্র প্রধানের। শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা পরীক্ষার ফলাফলের বই নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতেন এবং প্রধানমন্ত্রী তখন তাদেরকে নিয়ে ফটোসেশন করে রেজাল্ট প্রকাশ করতেন। আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার এটাকে বাহুল্য মনে করছে এবং এটা থেকে সরে এসে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতার প্রকৃত মূল্যায়নে শিক্ষা বোর্ডগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে।’

অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, ‘এবার ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না। অর্থাৎ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা নিজেরাই তাদের কার্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবেন। শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই তাদের রেজাল্ট পাবেন।’

তিনি জানান, অতীতে (গত ১৬ বছরের আগে) যেভাবে শিক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রকৃত মূল্যায়নের পরিমাপ  ছিল, আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের প্রকৃত মেধা প্রকাশ করতে পারে, সেজন্য এবার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছাড়াও শিক্ষক, অভিভাবক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে এবার যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। এজন্য তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’

তিনি বলেন, ‘এবারের এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের নকলে উৎসাহিত ছিল না। আগামীকাল রেজাল্ট প্রকাশের ক্ষেত্রে তারা তাদের সেই মেধার যথাযথ মূল্যায়ন দেখতে পাবে। আগের মতো ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে রেজাল্ট দেওয়ার সেই পূর্ব অবস্থা থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে রেজাল্ট প্রকাশের কারণে অতীতে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রকৃত মূল্যায়ন না হওয়ায় তাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। পরীক্ষায় পাশের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি জিপিএ-৫ এর সংখ্যাও বেশি পরিমাণে দেখানো হয়েছে। আমরা এবার জিপিএ-৫ নয়,  প্রকৃত মেধার মূল্যায়ন দেখতে যাচ্ছি।’

শিক্ষার্থীরা যাতে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তাদের মেধার প্রকৃত মূল্যায়ন দেখতে পায়, বর্তমান সরকারের সেই আন্তরিক ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন শিক্ষা উপদেষ্টা।  

এবার দুই মাসেরও কম সময়ে এসএসসির ফলাফল প্রকাশ করা হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘আগে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল তিন মাস বা সাড়ে তিন মাস পর প্রকাশ করা হতো। শিক্ষার্থীদের সময়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে এবার দুই মাসের কম সময়ে রেজাল্ট প্রকাশ করা হচ্ছে। এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর দুই মাস হতে আরও পাঁচ দিন বাকি আছে। তাই বলা যায়, আমরা দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই রেজাল্ট প্রকাশ করতে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘দুই মাসের মধ্যে রেজাল্ট প্রকাশ করায় শিক্ষার্থীরা পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে দুই মাস বেশি ক্লাস করার সুযোগ পাবে। তাদের শিক্ষা জীবন সমৃদ্ধ হবে।’ সূত্র: বাসস

সুমন/

মব নিরসন ও প্রতিরোধে ঢাবির ৭১ শিক্ষকের বিবৃতি

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:১২ পিএম
মব নিরসন ও প্রতিরোধে ঢাবির ৭১ শিক্ষকের বিবৃতি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মব সন্ত্রাস নিরসন ও প্রতিরোধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিভিন্ন বিভাগের ৭১ জন শিক্ষক বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে ওই শিক্ষকরা রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলের কাছে সার্বিকভাবে আইনের সঠিক প্রয়োগ, সামাজিক ন্যায়বিচার ও নাগরিক সমাজের জন্য যথাযথ নিরাপত্তা ও সুশাসন নিশ্চিত এবং গণমানুষের সামগ্রিক স্বার্থে অবিলম্বে এই ‘মব সন্ত্রাস’ নিরসনে কার্যকর ও দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

বুধবার (৯ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওই আহ্বান জানানো হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত মবের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, বিগত কয়েক মাস থেকে বর্তমান অবধি দেশের বিভিন্ন স্থানে মব সন্ত্রাস থাবা বিস্তার করেছে এবং ক্রমশ তা উদ্বেগজনক হারে বেড়েই চলেছে। এতে দেশের মানুষের জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিসরে দেশের মর্যাদা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। মবাক্রান্ত মানুষেরা শুধু যে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও অপদস্থ হচ্ছেন তাই নয়, বরং গণপিটুনির শিকার হয়ে অনেকেই ইতোমধ্যে মারা গেছেন, নারীরা তাদের সম্ভ্রম হারিয়েছেন; এমনকি মবের শিকার হয়ে অনেক অবুঝ শিশুর ভবিষ্যৎ জীবনও বিপর্যস্ত হয়েছে।’

মব নিয়ন্ত্রণে নিরসনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বললেও বাস্তবে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আইন-আদালত, গণমাধ্যম, ব্যবসা-কেন্দ্র, আবাসিক ভবন, ঐতিহাসিক স্থাপনা, ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন থেকে শুরু করে সামাজিক অনুষ্ঠানাদি পর্যন্ত মব সন্ত্রাসের কালো থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। দেশি-বিদেশি সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ বিষয়ে বিস্তারিত খবর ও প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মব নিরসনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বললেও বাস্তবে কোন কার্যকর ব্যবস্থা দৃশ্যমান হচ্ছে না এবং আগ্রাসী মবকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।’

এতে আরও বলা হয়, ‘কোনো কোনো দায়িত্বশীল মহল মবকে প্রেসার গ্রুপ বলে সংজ্ঞায়িত করায় পর্যায়ক্রমে মব সন্ত্রাস অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে মব সংস্কৃতির রূপ পরিগ্রহ করছে এবং মব সন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া ও বেসামাল হচ্ছে। দেশের মুক্তবুদ্ধি চর্চার সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমরা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় খুবই উদ্বিগ্ন, ক্ষুব্ধ ও বেদনাহত।’

‘কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা দেশের প্রচলিত আইনে বিচার হওয়া কাম্য কিন্তু কোনোভাবেই আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে দেশটাকে মবের মুল্লুকে পরিণত করা কোনো স্থিতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হতে পারে না’, বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। 

বিবৃতির শেষাংশে রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলের কাছে সার্বিকভাবে আইনের সঠিক প্রয়োগ, সামাজিক ন্যায়বিচার ও নাগরিক সমাজের জন্য যথাযথ নিরাপত্তা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে এবং দেশের গণমানুষের সামগ্রিক স্বার্থে অবিলম্বে এই মব সন্ত্রাস নিরসনে কার্যকর ও দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী শিক্ষকরা হলেন- অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম (রফিক শাহরিয়ার), অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ, অধ্যাপক ড. জামিলা এ চৌধুরী, শবনম আযীম, অধ্যাপক ড. আবু সারা শামসুর রউফ, অধ্যাপক ড. সমীর কুমার শীল, অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ, অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মুহিত, অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, অধ্যাপক ড. ময়না তালুকদার, অধ্যাপক ড. আকসাদুল আলম, অধ্যাপক ড. সঞ্চিতা গুহ, অধ্যাপক ড. সুরাইয়া আক্তার, অধ্যাপক ড. জাভীদ ইকবাল বাঙালী, অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড. জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ, অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, অধ্যাপক ড. বিল্লাল হোসেন, অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজমল হোসেন ভূঁইয়া, অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির, অধ্যাপক ড. মামুন আল মোস্তফা, অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ড. সুব্রত সাহা, ড. নীলিমা আকতার, অধ্যাপক ড. লিটন কুমার সাহা, অধ্যাপক আবু হোসেন মুহাম্মদ আহসান, অধ্যাপক ড. জি এম গোলজার হোসেন, অধ্যাপক ড. মো: আব্দুর রহিম, অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক ড. রাফিউল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো: আকরাম হোসেন, অধ্যাপক ড. এ. টি. এম. সামছুজ্জোহা, অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, অধ্যাপক ড. মো: আসাদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দীন, অধ্যাপক ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী, অধ্যাপক ড. এ.কে.এম খাদেমুল হক, ড. কায়সার আহমেদ রকী, ড. নাইমা নিগার, সামশাদ নওরীন, ড. এম এল পলাশ, ড. মুহাম্মদ মাইনউদ্দিন মোল্লা, মো: রাকিবুল হাসান, ড. ইসরাত জাহান, ড. মো. হাসান ফারুক, ড. মো. নাসির উদ্দিন, ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান, ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন, মো. কামরুল হাসান, ড. সিদ্ধার্থ দে, মাহমুদুর রহমান, ড. মো. মাহফুজুর রহমান খান, ড. মো. রায়হান সরকার, তৌহিদ হোসেন, ড. মোহাম্মদ ইউসুফ, ড. আবদুল্লাহ আল মারুফ, ড. মো. জহিরুল ইসলাম, মো. ইব্রাহীম মিয়া, ড. আরশাদুল হাসান, ড. মো. বেলাল হোসেন, ড. আব্দুল কাদের মহিউদ্দিন, ড. মির শরিফুল ইসলাম, আহমাদ হাসান চৌধুরী, ড. মোহাইমিনুল আদীব, মো. ইমরান হোসেন, মোহাম্মদ সোহেল রানা, মো. নাইমুল ইসলাম, ড. মো. মতিয়ার রহমান, মাহমুদুল হাসান ও অধ্যাপক ড. এ কে এম মাহবুব হাসান খান।

আরিফ জাওয়াদ/সুমন/

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৬ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫০ পিএম
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য ডিসেম্বরের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (৯ জুলাই) রাত ৮টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ৮ লাখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব সদস্যদের আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে হবে। 

তিনি আরও জানান, নির্বাচনে ১৮-৩২ বছর বয়সী ভোটারদের জন্য আলাদা বুথ রাখা যায় কি না, সে বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ সময় নির্বাচন সংক্রান্ত আরও কিছু প্রস্তুতির কথা জানান উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে হওয়া কিছু অগ্রগতি নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর থেকেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতদ্রুত সম্ভব আয়োজনের তাগিদ দিয়ে আসছে বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দল।

এমন দাবির প্রেক্ষিতে ড. ইউনূস বরাবরই বলে এসেছেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এরইমধ্যে গত ১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের পর ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে, এমন বক্তব্য আসে। তারপর থেকেই দেশের রাজনীতির মাঠে কিছুটা নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে।