ঢাকা ২ শ্রাবণ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

বাজেট জনবান্ধব-ব্যবসাবান্ধব: অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১০:৪৯ এএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ১০:৫৮ এএম
বাজেট জনবান্ধব-ব্যবসাবান্ধব: অর্থ উপদেষ্টা
ছবি: খবরের কাগজ

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নতুন বাজেটের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন করা। প্রতিকূল অবস্থা থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট জনবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব। এই বাজেট গতানুগতিক হলেও কিছু সাহসী পদক্ষেপ রয়েছে। 

মঙ্গলবার (৪ জুন) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

বাজেট ঘোষণার পর যেসব সমালোচনা এসেছে, সংবাদ সম্মেলনে সেগুলোর জবাব দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। বিশেষ করে কালোটাকা সাদা করা, পাচার করা টাকা ফেরত আনা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈষম্য ইত্যাদি প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহলে যেসব প্রশ্ন উঠেছে, তার জবাব দেন তিনি। বলেন, সমালোচনা করা দোষের কিছু নয়। কিন্তু তা যেন গঠনমূলক হয়। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। তবে বেশির ভাগ প্রশ্নের জবাব দেন অন্য উপদেষ্টারা। 

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘গ্রামের মেঠো রাস্তা কিন্তু আস্তে আস্তে হাইওয়ে হয়। আমরা মেঠো রাস্তা পার হয়ে হাইওয়ের দিকে যাচ্ছি। সরু হাইওয়ে আস্তে আস্তে আরও প্রশস্ত হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাজেট আরও ভালো হতো যদি সম্পদ আমরা আরও বেশি পেতাম। কর যদি আরও বেশি আদায় করতে পারতাম। ভ্যাট যদি সঠিকভাবে দিতাম, কর যদি ফাঁকি দেওয়া না হতো, তখন আমাদের বাজেটের জন্য সহায়তা লাগত না। আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো না। আমাদের নিজেদের টাকা দিয়েই পুরো বাজেট করে ফেলতে পারতাম। বাজেটে তো কিছু সহায়তা লাগবেই। খালি চোখে দেখলে তো মনে হয় কিছুই নাই। আপনাদের একটু সহযোগিতা দরকার। সমালোচনা করুন গঠনমূলক।’ 

এর আগের দিন সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন সালেহউদ্দিন আহমেদ। প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ী পরদিন বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তিনি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। 

এ সময় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীর আলম, জ্বালানি উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির, বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, অর্থসচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বক্তব্য রাখেন। 

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বাজেটে টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। অপ্রদর্শিত আয়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যারা বৈধভাবে আয় করেন কিন্তু কোনো কারণে সেই আয় প্রদর্শন করা হয়নি, তাদের জন্য এই সুযোগ। ফ্ল্যাটে-জমিতে বেশি কর দিয়ে যে কেউ এ সুযোগ নিতে পারেন। এই বিধান আগেই বহাল ছিল। আমরা তা অব্যাহত রেখেছি। এখন বিষয়টি নিয়ে যখন কথা উঠেছে, তা বাতিল করা যায় কি না, আমরা ভেবে দেখব। আগামী বাজেট ছোট করা হয়েছে।’ এই বাজেট বাস্তবায়ন করা কঠিন নয় বলে মনে করেন অর্থ উপদেষ্টা। 

সংবাদ সম্মেলনে টাকা সাদা করা নিয়ে ব্যাখ্যা দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, আগের সরকার ঢালাওভাবে কালোটাকা সাদা করার যে সুযোগ দিয়ে গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর তা বাতিল করেছে। তবে ফ্ল্যাটে নির্ধারিত কর দিয়ে টাকা সাদা করার বিধান আগে থেকে ছিল। নতুন বাজেটে বিদ্যমান বিধান বহাল রাখা হলেও কর দ্বিগুণ করা হয়েছে। যেহেতু এটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তারপরও সরকার চাইলে বাতিল করা যাবে। 

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেট একটি চলমান প্রক্রিয়া। চট করে বিপ্লবী বাজেট দেওয়া যায় না। অনেকেই সমালোচনা করে বলেছেন, বাজেট গতানুগতিক। কিছুটা গতানুগতিক বটে। তবে কিছু সাহসী পদক্ষেপও আছে। 
তিনি আরও বলেন, ‘এতদিন তো আপনারা প্রবৃদ্ধির গল্প শুনেছেন। প্রবৃদ্ধি হয়েছে অনেক বেশি। কিন্তু সেটার সুবিধা সবাই পাননি। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে আমরা মানুষের জীবনমানের যাতে উন্নয়ন হয়, ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে, ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে চালিয়ে যেতে পারেন, সেসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাজেট সাজিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে সংস্কারগুলো আমরা হাতে নিয়েছি সেটা চলমান। আমরা যতটুকু পারি করব। যে পদচিহ্ন রেখে যাব (ফুটপ্রিন্ট) আশা করছি, পরে যারা আসবেন তারা সেটা বাস্তবায়ন করবেন।’

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা কিছুই করিনি- এ অভিযোগ ঠিক নয়। ভালো-মন্দ দুই দিকই রয়েছে। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। সবার সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে বাজেট দিয়েছি, যা বিশ্বের অন্য দেশের কাছে যেন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘অনেকে বলেছেন আমরা আগের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছি। বাজেট একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। তবে একেবারেই যে নতুন কিছু (ইনোভেশন) নেই, তা ঠিক নয়। কিছু পদক্ষেপও আছে।’

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কথার ফুলঝুরি ছড়িয়ে বাজেট করিনি। আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেমন: মূল্যস্ফীতি, ব্যাংক খাত, জ্বালানি খাত, রাজস্ব আদায়। এসব কিছুর মধ্যেই বাজেট করতে হয়েছে। তারপরও প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার বাড়েনি।’

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজেটে কোনো পদক্ষেপে নেওয়া হয়নি কেন- এ প্রশ্নের জবাবে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা। সেটা করে ফেলেছি। বর্তমানে বিনিময় হার স্থিতিশীল রয়েছে। এটা আমাদের জন্য স্বস্তির বিষয়। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। আমি মনে করি, এটি বড় অর্জন। তবে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি একটু বেশি আছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমেছে। এর ইতিবাচক প্রভাব দেশের বাজার পড়েছে। আশা করছি, আগস্ট-সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি আরও সহনীয় পর্যায় নেমে আসবে।’ 

মধ্যবিত্তের জন্য এই বাজেটে কিছু নেই কেন- এ প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে কর কমানোসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর সুফল সবাই পেয়েছেন। যখন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়, লক্ষ্য থাকে সবাই যেন উপকৃত হন। আলুর দাম কমলে মধ্যবিত্তরাও এর সুফল পান। কাজেই মধ্যবিত্তরা কিছুই পাননি- এ কথা ঠিক নয়।’ 

পাচার করা টাকা দেশে ফেরত আনতে বাজেটে কোনো দিকনির্দেশনা নেই কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পাচারের টাকা ফেরত আনা সহজ নয়। কোন দেশে কত টাকা পাচার হয়েছে, তা খুঁজে বের করে প্রমাণ করা কঠিন। আমরা চেষ্টা করছি। সময় লাগবে।’ 

আপনার মতে বাজেটের খারাপ দিক কোনটি- একজন সাংবাদিক অর্থ উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘খারাপ দিক বলব না। তবে আরেকটু ভালো হতো যদি বেশি অর্থ (সম্পদ) পেতাম। পাচারের টাকা হাতে পেলে বাজেটে সাপোর্ট হিসেবে কাজে লাগানো যেত।’ অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সম্ভাবনা অনেক বেশি। সেই অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে।’ 

পরিকল্পনা উপদেষ্টা যা বললেন: প্রস্তাবিত বাজেটকে বাস্তবমুখী ও মিতব্যয়িতার বাজেট বলে অভিহিত করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘এই বাজেট বাস্তবসম্মত। আশা করছি, এটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যাবে।’ তিনি বলেন, ‘ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধের দুষ্টচক্র থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, নতুন বাজেট গতানুগতিক। এতে কোনো চমক নেই।’ সমালোচকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা 
উপদেষ্টা বলেন, ‘বুঝতে হবে বাজেট একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি শূন্য থেকে শুরু হয় না। একটা জায়গায় থাকে। তা থেকে পরিবর্তন করতে হয়।’ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারা বড় এডিপি করেছে। তাতে বেশির ভাগ প্রকল্প রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অনেক প্রকল্প নেওয়া হলেও সেগুলোতে অর্থায়ন নিশ্চিত করা হয়নি। তারা জঞ্জাল রেখে গেছে। আমরা তা পরিষ্কার করছি।’ 

তিনি বলেন, ‘২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে খুবই কম। মাত্র ২০ থেকে ৩০টি। বাকি সব চলমান প্রকল্প। দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা শুধু আগের সরকারের নেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।’ তিনি বলেন, চলমান অনেক বড় প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু মাঝপথে এসে ওই সব প্রকল্প বন্ধ করা যায় না। কারণ এরই মধ্যে ওই সব প্রকল্পে অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে তা চলমান রাখতে হয়েছে। তিনি বলেন, কিছু মেগা প্রকল্পে বাস্তবায়ন প্রায় শেষ পর্যায়ে। ওই সব প্রকল্প অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। 

প্রস্তাবিত বাজেটকে জনবান্ধব বাজেট বলে মনে করেন জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির। তিনি বলেন, এই বাজেটে অপচয় ও অসংগতি কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। 

নতুন বাজেট জাতীয় সক্ষমতা বাড়াবে বলে মত দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন। এই বাজেটে গুণগত পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানান তিনি। 

নতুন বাজেটে কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে মত দেন অর্থসচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদার। 

উদীচী সভাপতি বদিউর রহমান আর নেই

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪০ এএম
উদীচী সভাপতি বদিউর রহমান আর নেই
অধ্যাপক বদিউর রহমান

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর  সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান মারা গেছেন।

বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে জানান, বুধবার রাত ২টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে বদিউর রহমানকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷ সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

অমিত জানান, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অধ্যাপক বদিউর রহমানের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। সেখানে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাখা হবে নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলির জন্য। পরে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে বরিশালে। সেখানে নিজ বাড়িতে দাফন করা হবে বদিউর রহমানকে।

জয়ন্ত সাহা/অমিয়/

গোপালগঞ্জে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি পুলিশ: আইজিপি

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৫ এএম
গোপালগঞ্জে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি পুলিশ: আইজিপি
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম

গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে খবরের কাগজকে তিনি এ তথ্য জানান। 

আইজিপি বলেন, ‘পুলিশ ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেছে। লেথাল (প্রাণঘাতী অস্ত্র) কোনো কিছু ব্যবহার করেনি। তাই আমাদের একটু সময় লেগেছে।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা টিভি লাইভগুলোতে দেখেছেন পুলিশ চেষ্টা করেছে। প্রাণহানী ঠেকাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। উচ্ছৃঙ্খলতা যা হয়েছে, সেটা যতটুকু সম্ভব আমরা ধৈর্যের সঙ্গে প্রশমন করার চেষ্টা করছি। এখন আরও পুলিশ সদস্য পাঠানো হচ্ছে পুরো জিনিসটা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে গতকাল বুধবার দুপুর থেকে গোপালগঞ্জে উত্তেজনা শুরু হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে যদিও সেনা-পুলিশ পাহারায় এনসিপির নেতা-কর্মীদের গোপালগঞ্জ শহর থেকে বের করে আনা হয়।

জীবন-মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি না হলে ঘর থেকে বের হবেন না: আসিফ মাহমুদ

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৬ পিএম
জীবন-মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি না হলে ঘর থেকে বের হবেন না: আসিফ মাহমুদ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ছবি: সংগৃহীত

গোপালগঞ্জবাসীর উদ্দেশে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়েছে। ‘জীবন-মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি না হলে সাধারণ জনগণ কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। 

বুধবার (১৬ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এসব কথা লিখেছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সবকিছু মনিটরিং এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টাসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানগণ।’

এর আগে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে গোপালগঞ্জে বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে পর দিন বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকাল ৬টা পর্যন্ত ২২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয়।

সুমন/

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রেপ্তারের প্রেক্ষিতে দেশটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

বুধবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ায় চলমান তদন্তে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা পূর্ণ সহযোগিতা করতে চাই। তারাও আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। আমি তাদের প্রতি আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতার নিশ্চয়তা দিয়েছি।’

তিনি আরও জানান, সম্প্রতি একই অভিযোগে আরও দুই বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং এ বিষয়ে আরও অগ্রগতি হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ইঙ্গিত পেয়েছি, আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন গ্রেপ্তারদের পরিচয় ও অভিযোগের বিস্তারিত জানতে মালয়েশিয়া সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছে।

উপদেষ্টা হোসেন বলেন, ‘যদি কেউ জড়িত থাকে, তবে তাকে মালয়েশিয়ার আইনের আওতায় শাস্তি পেতে হবে। এক্ষেত্রে ২ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে। যদি নির্দোষ প্রমাণিত হয়, তাহলে খালাস পাওয়াটাই হবে স্বাভাবিক।’

তিনি আরও জানান, গত সপ্তাহে মালয়েশিয়ার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের (এআরএফ) মন্ত্রিপর্যায়ের বৈঠকের ফাঁকে তিনি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো সেরি মোহামাদ হাসানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।

ওই বৈঠকে দুপক্ষই তথ্য আদান-প্রদান এবং গ্রেপ্তারদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হন।

এ পর্যন্ত মালয়েশিয়া সরকার পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। সূত্র: বাসস

সুমন/

গোপালগঞ্জ জেলায় আগামীকালের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৮ পিএম
গোপালগঞ্জ জেলায় আগামীকালের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
ছবি-খবরের কাগজ

গোপালগঞ্জ জেলায় কারফিউ জারি করায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকালে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে এবং তা কেবল ওই জেলার জন্য স্থগিত করা হয়েছে। দেশের অন্যান্য জায়গায় পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী আগামীকালের পরীক্ষা যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে। 

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গোপালগঞ্জ এ শিক্ষা বোর্ডের অধীন।

বৃহস্পতিবার সকালে এইচএসসিতে ভূগোল (তত্বীয়) দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা আছে। সময়সূচি অনুযায়ী আগামীকাল বিকেলেও একাধিক বিষয়ের পরীক্ষা থাকলেও গোপালগঞ্জ জেলায় সেসব বিষয়ের পরীক্ষা নেই।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপালগঞ্জ জেলায় স্থগিত ভূগোল (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষার পরিবর্ততি সময়সূচি পরে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে হামলা, সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনার পর জেলাটিতে আজ বুধবার রাত ৮টা থেকে কারফিউ জারি করা হয়েছে। আগামীকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে।