ঢাকা ২৮ আষাঢ় ১৪৩২, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
English

বাজেটের কোনো প্রভাব পড়েনি বাজারে

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১১:০১ এএম
বাজেটের কোনো প্রভাব পড়েনি বাজারে
ছবি: খবরের কাগজ

আগামী অর্থবছরের (২০২৫-২৬) জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে প্রায় ৫ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ গত সোমবার বাজেট উপস্থাপনকালে বেশ কিছু পণ্য ও সেবায় মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), আমদানি শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এ কারণে কিছু পণ্যের দাম বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল।

মঙ্গলবার (৩ জুন) তার কোনো প্রভাব পড়েনি বাজারে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, এখনো কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে পণ্য নতুন করে উৎপাদন বা আমদানি করার পর বাজারে এলে তখন দাম বাড়তে পারে। গতকাল মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজার, কৃষিমার্কেট, হাতিরপুলসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্ট ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনই তথ্য জানা গেছে।

বাজেট ঘোষণার পর নতুন শুল্ক ও করহার কার্যকর হলে সিগারেট, রড, প্রসাধনীসামগ্রী, সাবান-শ্যাম্পু, শিশুদের খেলনা, দেশে তৈরি মোবাইল ফোন, গৃহস্থালির প্লাস্টিকসামগ্রী, এলপিজি, দেশে তৈরি এলপিজি সিলিন্ডার, ফ্ল্যাট, বলপয়েন্ট কলম, হেলিকপ্টার সার্ভিস, দেশে তৈরি ওয়াশিং মেশিন, দেশে তৈরি মাইক্রো ওভেন, দেশে তৈরি ইলেকট্রিক ওভেন, দেশে তৈরি ব্লেন্ডার-জুসার-মিক্সার-গ্রাইন্ডার, দেশে তৈরি ইলেকট্রিক কেটলি-ইস্ত্রি, দেশে তৈরি রাইস কুকার-প্রেসার কুকার, ব্লেড, দেশে তৈরি লিফট, দেশে তৈরি ফোর স্ট্রোক থ্রি-হুইলার যান, ওটিটি কনটেন্ট, বাণিজ্যিক ভবন (কমার্শিয়াল স্পেস), সেলফ-কপি পেপার-ডুপ্লেক্স বোর্ড-কোটেড পেপার, সুতা, বিদেশি চকলেট, ম্যানমেড ফাইবার, স্ক্রু-নাট-বোল্ট, সার্জিক্যাল কিটস, শিপ স্ক্র্যাপস গুডস, সিমেন্ট শিট, ক্রেডিট রেটিং সার্ভিস, ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলারের দাম বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এসব পণ্যের দাম আসলে বেড়েছে কি-না তা জানতে গতকাল বিভিন্ন বাজারে গিয়ে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা হয়। টাউন হল বাজারের আলম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. সোহাগ আলী খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা প্লাস্টিকের বালতিসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করি। কিন্তু কোনো পণ্যের দাম বাড়েনি। কোম্পানি থেকে এখনো আসেনি বাড়তি দামের পণ্য। না এলে তো আমরা বিক্রি করতে পারি না। তবে বাড়তে কয়দিন সময় লাগবে।’ 

এদিকে রডের দামও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে মোহাম্মদপুরের বিক্রমপুর স্টিল হাউসের ম্যানেজার মাসুদ বলেন, ‘আগের কেনা দামেই বিভিন্ন কোম্পানির রড বিক্রি করা হচ্ছে। রহিম স্টিল, একেএসসহ সব কোম্পানির রড আগের রেটে বিক্রি করা হচ্ছে।’ অন্য খাতের খুচরা বিক্রেতারাও জানান, কোনো পণ্যের দাম বাড়েনি। 

এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সাবেক সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু খবরের কাগজকে বলেন, ‘সরকার আগের মতোই বাজেট ঘোষণা করেছে। রাজস্ব আদায়ের জন্য অনেক পণ্যের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট বাড়িয়েছে। তবে এর প্রভাব হুট করেই পড়বে না। তিনি বলেন, গ্যাসের অভাবে অনেক শিল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য চাপে পড়বে অনেক কারখানা। তাই কিছু দিনের মধ্যেই অনেক পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে।’ 
এদিকে প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী কিছু পণ্য ও সেবার দাম কমতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

তবে গতকাল বাজারে এসব পণ্যের দাম কমেনি। বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানি থেকে তো দাম কমানো হয়নি। হাতিরপুল বাজারের মাসুম স্টোরের মো. মাসুম মিয়া বলেন, ‘কারখানা থেকে তো আসতে সময় লাগবে। কোম্পানি থেকে না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অর্থ উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ, এলএনজি, মাটির তৈজসপত্র, দেশীয় স্যানিটারি ন্যাপকিন, দেশীয় ডায়াপার, প্যাকেটকৃত তরল দুধ, বলপয়েন্ট, ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত কম্পিউটার, উড়োজাহাজের লিজ রেন্ট, হাসপাতালের বেড, ওষুধের কাঁচামাল, হাসপাতালের যন্ত্রাংশ, ব্যাটারি, কীটনাশক, ফ্রুট ব্যাগ, টায়ার, সার, লরি, অ্যাম্বুলেন্স, ই-বাইক, নিউজপ্রিন্ট, ইন্টারনেট সেবা, বীজ, পেঁয়াজ, চাল, চিনি, আইসক্রিম, ভূমি নিবন্ধন ফি, ক্যানসারের ওষুধ, ইনসুলিনের দাম কমবে।

গণঅভ্যুত্থান স্মরণে জুলাই মাসব্যাপী বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযানে ডিএসসিসি

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৩ এএম
গণঅভ্যুত্থান স্মরণে জুলাই মাসব্যাপী বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযানে ডিএসসিসি
ছবি: খবরের কাগজ

ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে জুলাই মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) শনিবার (১২ জুলাই) বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান চালনা করেছে। 

ডিএসসিসি অঞ্চল-৫ এর অভয় দাস লেন-নারিন্দা-ওয়ারী তৎসংলগ্ন এলাকায় পরিচালিত এ অভিযানে  করপোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার উপস্থিতিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

শনিবার সকাল ৬টায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের ছয় শতাধিক কর্মী  এবং স্থানীয় জনগণ এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। পরিচ্ছন্নতা অভিযানের অংশ হিসেবে ড্রেন, নর্দমা ও ফুটপাতের ময়লা পরিষ্কার ও মশার ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। এ ছাড়া, জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অংশগ্রহণে জনসচেতনতামূলক একটি র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

পরিচ্ছন্নতা প্রোগ্রাম চলাকালীন সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, ‘নগরের পরিচ্ছন্নতার জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন আমাদের সবার একত্রে কাজ করা। শুধু সিটি করপোরেশন বা সরকারের একার পক্ষে কাজ সাসটেইনেবল হয় না।’

বর্ষাকাল সিটি করপোরেশনের জন্য চ্যালেঞ্জিং উল্লেখ করে সচিব বলেন,  ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে এবং ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’ 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান স্মরণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জুলাই মাসব্যাপী ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিশেষ মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাবে।" নগরবাসী-ডিএসসিসি-গণমাধ্যম সবার সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রশাসক বলেন বিগত বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানের ইতিবাচক ফলাফল ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হওয়া শুরু করেছে।’

পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সব বিভাগীয় প্রধান এবং স্থানীয় নেতারা। ছবি: খবরের কাগজ

রাজু/সুমন/

মিটফোর্ডের সামনে ব্যবসায়ী হত্যার বিচার ট্রাইব্যুনালে: আইন উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১১:০৩ এএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৫, ১১:০৪ এএম
মিটফোর্ডের সামনে ব্যবসায়ী হত্যার বিচার ট্রাইব্যুনালে: আইন উপদেষ্টা
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে অধীনে করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

শনিবার (১২ জুলাই) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা জানান।

তিনি তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন,  ‘মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর। এই ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২ এর ধারা ১০ এর অধীনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।’

সুমন/

ঢাকা-ওয়াশিংটনের দ্বিতীয় বৈঠকে কিছু বিষয়ে মতৈক্য

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৫ এএম
ঢাকা-ওয়াশিংটনের দ্বিতীয় বৈঠকে কিছু বিষয়ে মতৈক্য
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত বাড়তি ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক নিয়ে দেশটির সঙ্গে দ্বিতীয় দফার তিন দিনব্যাপী আলোচনা শেষ হয়েছে। 

শিডিউল অনুযায়ী শুক্রবার (১১ জুলাই) ওয়াশিংটন ডিসির স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় শুরু হয়ে দর-কষাকষির মধ্য দিয়ে শেষদিনের এ বৈঠক শেষ হয় দুপুর ১টায় (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা)। 

তবে শুক্রবার রাত ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৈঠকে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এসেছে কি না, তা জানা সম্ভব হয়নি। 

এদিকে দ্বিতীয় দিনের বৈঠক শেষে গতকাল সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনার দ্বিতীয় দিনে দুই দেশের মধ্যে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের গতিপ্রকৃতি কেমন হবে, সেসব বিষয় উপস্থাপন ও যুক্তিতর্ক হয়েছে। বেশ কিছু বিষয়ে দুই দেশ মোটামুটিভাবে একমত হয়েছে। কিছু বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

এতে জানানো হয়, দ্বিতীয় দিনের আলোচনার একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশিরউদ্দিন একান্তে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ অ্যাম্বাসেডর জেমিসন গ্রিয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। গ্রিয়ার ট্রাম্প প্রশাসনে মন্ত্রী পদমর্যাদার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তার সঙ্গে শুল্কবিষয়ক আলোচনার পাশাপাশি দুই দেশের বাণিজ্য ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় বাণিজ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির পাশাপাশি আমদানির পরিমাণও বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি এর মধ্যে শুরু হয়েছে। শুল্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ন্যায্যতা প্রত্যাশা করে। পরিবেশ যেন বাংলাদেশের জন্য প্রতিযোগিতামূলক থাকে। গ্রিয়ার সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশিরউদ্দিন। ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। সরাসরি আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাওসার চৌধুরী। ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর অন্যতম কারণ এ দেশে তৈরি বেশির ভাগ পণ্যে চীনা কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়। তাই দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র-চীনের শুল্কযুদ্ধের অংশ হিসেবে ইউএসটিআরের কর্মকর্তারা বাংলাদেশকে শিল্পের কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য চীনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমানোর পরামর্শ দিয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ এখনো স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) সদস্য হওয়ায় পাল্টা শুল্ক ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে। 

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে স্থানীয় শিল্প খাতে চীনা মালিকানার বৃদ্ধি, নীতিনির্ধারণ, মেধাস্বত্ব আইন এবং শ্রম অধিকারের দুর্বলতার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত অনুযায়ী দেশটি অন্য কোনো দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা বা বাড়তি শুল্ক আরোপ করলে, বাংলাদেশকেও তা অনুসরণ করতে হবে এমন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলোতেও মতপার্থক্য দেখা দেয়।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা চলমান থাকা অবস্থায় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। পণ্য রপ্তানির বড় এই বাজারের শুল্ক আলোচনায় ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করা হয়নি। ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। তা ছাড়া ১ আগস্ট থেকে এই বাড়তি শুল্ক আরোপ হলে বাজারটিতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, বন্দর ও রাজস্ব আদায় কার্যক্রম অধিকতর গতিশীল রাখার লক্ষ্যে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে এই উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা। ওয়াশিংটনে চলমান আলোচনায় আশাব্যঞ্জক ফলাফল না এলে পরবর্তী দর-কষাকষিতে আরও ১-২ জন অভিজ্ঞ উপদেষ্টাকে অংশ নিতে অনুরোধ করেন তারা। প্রয়োজনে লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শও দেন ব্যবসায়ী নেতারা।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৮৭০ কোটি ডলারের পণ্য। মোট রপ্তানির মধ্যে পোশাক ৮৫ শতাংশ। পোশাকের মোট রপ্তানির ২০ থেকে ২২ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র।

রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় বাইক আরোহী নিহত

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১০:৩১ এএম
রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় বাইক আরোহী নিহত

রাজধানীর ডেমরার মীরপাড়া এলাকায় বাসের ধাক্কায় মোহাম্মদ রোহান (২৮) নামে একজন মোটরবাইক আরোহী নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাত ১০টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ভোররাতে তার মৃত্যু হয়। 

নিহতের ভগ্নিপতি মোহাম্মদ সোহেল জানান, রোহান পেশায় একজন পিকআপ ভ্যানের চালক ছিলেন। মোটরসাইকেল চালিয়ে ডেমরার শুকুরা টেংরা এলাকার নিজ বাসায় যাওয়ার পথে রমজান পরিবহনের দ্রুতগামী একটি বাস তাকে ধাক্কা দেয়। গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলেও পরে মারা যান। নিহত রোহান তিন বোনের একমাত্র ভাই ছিলেন।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, রোহানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশকেও অবগত করা হয়েছে। 

 

ড্রাইডক দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম জালিয়াতি ধরা পড়ল এনসিটিতে

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১০:২০ এএম
ড্রাইডক দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম জালিয়াতি ধরা পড়ল এনসিটিতে
ছবি: খবরের কাগজ

নৌবাহিনী পরিচালিত ড্রাইডক চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো সেখানে জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে। গত বুধবার মধ্যরাতে জাল ডেলিভারি চালান ব্যবহার করে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে একটি কনটেইনার খালাসের চেষ্টাকালে তিনজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে দুজন টার্মিনালটির সদ্য সাবেক অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেকের কর্মচারী। এ ঘটনায় গেট সার্জেন্ট উৎপল ধর বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার বন্দর থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার পরেই ঘটনা জানাজানি হয়।

জানা গেছে, গত বুধবার মধ্যরাতে একটি লরির (চট্ট-মেট্রো-ঢ-৮১-০৫৫০) বন্দরের ১ নম্বর গেটে উপস্থাপিত ডেলিভারি চালান যাচাই করে নিরাপত্তা টিম সেটিকে জাল বলে শনাক্ত করে। যার সঙ্গে রেজিস্টার ও মূল ডকুমেন্টের কোনো মিল পাওয়া যায়নি। পরে ভারপ্রাপ্ত গেট সার্জেন্ট মো. মওদুদ আহমেদ চালানে থাকা স্বাক্ষরটি জাল বলে নিশ্চিত করেন। লরিচালক মো. দুলালকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, ‘ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এম হক এন্টারপ্রাইজ’-এর জেটি সরকার মো. রহিম তাকে জাল ডকুমেন্ট সরবরাহ করেন এবং কনটেইনার খালাসের পুরো প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেন।

লরিচালক মো. দুলাল ছিলেন দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর সল্টগোলা ক্রসিং এলাকার এরশাদের ভাড়া ঘরের বাসিন্দা। তাকে ওই মামলায় ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মো. রহিমকে করা হয়েছে ১ নম্বর আসামি। ৩ নম্বর আসামি মেহেদী হাসান হৃদয় (২৪) ও ৪ নম্বর আসামি সৈয়দ মিজানুর রহমান (৪৮) দুজনেই এনসিটি ইয়ার্ডে সাইফ পাওয়ারটেকের অধীনে বার্থ অপারেটর হিসেবে কর্মরত। তারা রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি (আরটিজি) মেশিনে যাচাই না করেই দুলালের লরিতে কনটেইনারটি লোড করেন। তারা যোগসাজশের মাধ্যমে জাল কাগজপত্র তৈরি করে কনটেইনার খালাসের চেষ্টা করেন। কনটেইনারটির এখনো শুল্কায়ন হয়নি। এর ভেতরের মালামালের প্রকৃতি সম্পর্কে জানা যায়নি। কনটেইনার ও লরিটি বর্তমানে বন্দরের নিরাপত্তা হেফাজতে রয়েছে।
পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করলেও জাল কাগজ তৈরির মূল হোতা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ‘এম হক এন্টারপ্রাইজ’-এর জেটি সরকার মো. রহিম এখনো পলাতক। নগরীর বারিক বিল্ডিং স্ট্যান্ড রোডের সাবের প্লাজায় এম হক এন্টারপ্রাইজের (লাইসেন্স নম্বর ৩৭৯৯/১৩) কার্যালয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোজাম্মেল হক নামে একজন ব্যবসায়ী।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক খবরের কাগজকে বলেন, ‘জালিয়াতির মাধ্যমে একটি কনটেইনার পাচার করতে চেয়েছিল সংঘবদ্ধ চক্র। বন্দরের ১ নম্বর গেটে নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে কাগজপত্র সন্দেহ হওয়ায় কনটেইনারটি জব্দ করা হয়েছে। কনটেইনারটি এখনো পরীক্ষা করেননি কাস্টমস কর্মকর্তারা। এখানে কী আছে তা অ্যাসেসমেন্টের পর জানা যাবে। 

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মুহাম্মদ সুলতান আহসান খবরের কাগজকে বলেন, ‘জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন সাইফ পাওয়ারটেকের কর্মী এবং আরেকজন গাড়িচালক। মো. রহিমকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’ 

সূত্রমতে, সম্প্রতি এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব সাইফ পাওয়ারটেক থেকে নৌবাহিনীর অধীনস্থ ড্রাইডকের হাতে যাওয়ার পরও সাইফের লোকজন এখনো প্রায় সব দায়িত্বে রয়ে গেছেন। তারা জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে মিলেমিশে পণ্য পাচারের চেষ্টা করছেন। গত ৭ জুলাই থেকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে নৌবাহিনী পরিচালিত ড্রাইডক।