রাজধানীতে ভাঙারি ব্যবসায়ী লালচাদ সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার (১২ জুলাই) সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন বিক্ষোভে উত্তাল ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ (জবি) দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। বিক্ষোভ সমাবেশে দেশব্যাপী বিএনপির অব্যাহত চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। বক্তারা বলেন, বিপ্লব পরবর্তী সময়ে সবাই মিলেমিশে কাজ করার যেই মানসিকতা তৈরি হয়েছিল, সেটা কিছু রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীর কর্মকাণ্ডে নষ্ট হয়ে গেছে। রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
তারা বলেন, সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি বিশ্বব্যাপী ক্ষুণ্ন হয়েছে। এদিকে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও সহিংস ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিবৃতি দিয়েছে। দলগুলো এসব ঘটনায় শঙ্কা প্রকাশ করে সরকারের ভূমিকারও সমালোচনা করেছে। কোনো কোনো দল আইনশৃঙ্খলা অবনতির জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছে। অন্যদিকে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে গতকাল সকালে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। সমাবেশে বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘বিএনপি ১০ মাসে ১০০-এর অধিক খুনের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। ক্ষমতায় আসার আগে এত খুন, ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে ক্ষমতায় আসার পর তাদের অবস্থা কী হবে!’ এ সময় গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে একটি স্কোরবোর্ডে প্রদর্শন করা হবে বলে ঘোষণা দেন বিন ইয়ামিন মোল্লা।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে ইনকিলাব মঞ্চ। সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ, ফ্যাসিবাদী বাকশালি সংবিধানের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নতুন সংবিধান প্রণয়নে জুলাইয়ের রাজনীতি করুন। ফ্যাসিবাদবিরোধী রাষ্ট্র কাঠামো ভেঙে নতুন কাঠামো তৈরি না করলে আপনাদের (বিএনপি) দশা হবে আওয়ামী লীগ ও মুসলিম লীগের মতো।’
বিকেল ৫টার দিকে ঢাবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। সন্ধ্যা ৭টার দিকে মশাল মিছিল বের করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিলটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রায়সাহেব বাজার মোড় ঘুরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে জবি ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। অপরাধীরা রাজনৈতিক আশ্রয়ে থেকে সাহস পাচ্ছে এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করতে।’
গতকাল দুপুর ১টার দিকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ‘ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থী সমাজ’- এর ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশে করেছেন। দুপুর ১২টার দিকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ করেছেন। ইডেন কলেজ, ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন এদিন।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ এনে বলেন, ‘মিটফোর্ডের সামনে একজন মানুষকে পাথর দিয়ে থেঁতলে নৃশংসভাবে মেরে ফেলেছেন যুবদল, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। অথচ দল দায় না নিয়ে তাদের শুধুই বহিষ্কার করেছে। আমরা বলতে চাই, এখানে অবশ্যই দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’ একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে সবাই মিলেমিশে কাজ করার যেই মানসিকতা তৈরি হয়েছিল, সেটা নষ্ট হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সহিংসতা বেড়ে গেছে।’
রাজনৈতিক অঙ্গনে ক্ষোভ-নিন্দা
ঢাকা, খুলনা ও চাঁদপুরে ঘটে যাওয়া একাধিক নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও সহিংস ঘটনার নিন্দা জানিয়ে গতকাল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিবৃতি দিয়েছে। শীর্ষ নেতাদের অনেকে গতকাল নানা সভা-সেমিনারে এসব ঘটনায় শঙ্কা প্রকাশ করে সরকারের ভূমিকারও সমালোচনা করেছেন।
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পরিষদ, সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনের কড়া হুঁশিয়ারিতেও কমছে না ভয়ার্ত ও ঘৃণ্য মব ভায়োলেন্স। সারা দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এখন মানুষে-মানুষে ঘৃণা বিদ্বেষ, প্রতিহিংসা ও হিংস্রতা সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতিতে সারা দেশ ‘আজ আতঙ্কের কবলে’ পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। বাম জোটের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পুরান ঢাকা, খুলনা এবং চাঁদপুর শুধু নয়, সারা দেশের মানুষ আজ আতঙ্কে রয়েছেন। সরকার কঠোর হাতে সন্ত্রাস দমন করার কথা বলছে। তবে উপদেষ্টাদের অনেকে, প্রেস সচিবরা এসব ঘটনাকে হালকা করে দেখছেন। তারা কখনো এসব আড়াল করতে চান, কখনো দায় চাপানোর কৌশল নিচ্ছেন। এতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। এতে সন্ত্রাসের ভয়াবহতা বাড়ছে।’
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তিনটি ঘটনাই দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকটের চিত্র তুলে ধরেছে। এতে বোঝা যায় সহিংসতা, বিচারহীনতা ও উগ্রতা আমাদের সমাজকে কতটা গ্রাস করেছে।’
দেশে বিদ্বেষ-সহিংসতার বিস্তার, মব সন্ত্রাস, ধর্ষণ-খুনের ধারাবাহিকতায় সহিংসতার একটি নতুন অবয়ব স্পষ্ট হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্যরা। গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির পক্ষে অধ্যাপক সামিনা লুৎফার স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতি গণমাধ্যমে আসে গতকাল দুপুরে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সংঘবদ্ধ বিদ্বেষ একসময় ধর্ম অবমাননার গুজবের ওপর ভর করে মানুষের জীবন কেড়ে নিত। এখন সেই একই কৌশলে সংঘটিত মব ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কিংবা ভিন্নমতের মানুষকে দমন করতে।’ অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সরকার এগুলো দমনে যথেষ্ট সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে না। বরং সরকার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রভাবশালীর ব্যক্তির কথায় এগুলো প্রশ্রয় পাচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কথায় ও কাজে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।’
আইনশৃঙ্খলার অবনতির সব দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার দাবিও জানিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। এ ছাড়া নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি। এক বিবৃতিতে দলটির আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আমীন ও সদস্যসচিব ফাতিমা তাসনিম দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
ছাত্রদল থেকে অনেক নেতা-কর্মীর পদত্যাগ
প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনার পরপরই ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার রাত থেকে গতকাল শনিবার বিকেল পর্যন্ত ভিন্ন-ভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তারা ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। তাদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হল শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কর্মী মোহাম্মদ আবু সায়ীদ। একই দিনে আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক লিসানুল আলম লিসান, মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রদলের সদস্য মুহাম্মাদ রাব্বি মিয়া, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পারভেজ রানা প্রান্ত, গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. জাহিমুর রহমান জিসান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইশতিয়াক রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল কর্মী নুর ইসলামসহ আরও বেশ কয়েকটি ইউনিটের নেতা-কর্মীদের পদত্যাগের খবর পাওয়া গেছে।
আমাদের ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর
বরগুনা: ব্যবসায়ী সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে বরগুনায় মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল দুপুরে বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, সাংবাদিক সমাজ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
বক্তারা বলেন, সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি বিশ্বব্যাপী ক্ষুণ্ন করেছে। তারা বলেন, সন্ত্রাসীদের কোনো দল নেই। তারা সব সময়ই ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় থেকে নানা অপকর্ম চালায়। ভাইরাল হওয়ার পর দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা এলেও কিছুদিন পরই তারা নতুন পৃষ্ঠপোষকের সহায়তায় আবার ফিরে আসে। দেশে সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নজির এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি, এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
চট্টগ্রাম: সোহাগকে হত্যার ঘটনায় গতকাল বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ও জামায়াত-শিবির আলাদা আলাদা মিছিল করেছে। বিকেলে জামায়াত-শিবিরের মিছিলটি চট্টগ্রামের মুরাদপুর থেকে শুরু হয়ে জিইসি মোড় এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। অপরদিকে বিপ্লব উদ্যানে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে আর কেউ দখলদার হতে পারবে না। নতুন বাংলাদেশে আর কেউ চাঁদাবাজ হতে পারবে না। নতুন বাংলাদেশে আর কেউ সন্ত্রাস হতে পারবে না। যদি কেউ সন্ত্রাসবাদ কায়েম করার চেষ্টা করে, ফ্যাসিবাদ কায়েম করার চেষ্টা করে তাহলে তাদের সামনে বাধা হয়ে আমরা দাঁড়াব।’
রাজশাহী: রাজশাহীতে বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল দিনভর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরের বিভিন্ন স্থানে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১১টায় রাজশাহী নগরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন একদল শিক্ষার্থী।
দুপুর ১টায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
এর আগে, গত শুক্রবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্যারিস রোড থেকে মিছিল বের করেন। পরে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব ও ফাহিম রেজা। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করে রাবি গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট। বক্তারা সোহাগ হত্যার বিচার চান এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন।
কুষ্টিয়া: পাথর মেরে বর্বরোচিত হত্যাসহ দেশব্যাপী চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুষ্টিয়া শহর শাখা।
গতকাল বিকেলে কুষ্টিয়া শহরের বড় জামে মসজিদ থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে এসে শেষ হয়। পরে সেখানেই শুরু হয় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ। এ সময় দেশব্যাপী বিএনপির অব্যাহত চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
যশোর: যশোরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে সাধারণ ছাত্র-জনতার ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা পাথর দিয়ে মানুষ হত্যার মতো বর্বরোচিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তারা বলেন, দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান চাঁদাবাজি, সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র (মব)-এর দৌরাত্ম্য, ক্ষমতার প্রতি সীমাহীন লোভ এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতিই এ ধরনের নৃশংসতার মূল কারণ। বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘যদি দ্রুত এসব ঘটনার বিচার নিশ্চিত না হয়, তবে সাধারণ ছাত্র-জনতা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।’
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: বিক্ষোভ মিছিল করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় দেশব্যাপী বিএনপির চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান তারা। গত শুক্রবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে শুরু হয়ে কটকা-হাদি চত্বর ঘুরে শহিদ মুগ্ধ তোরণ হয়ে ক্যাম্পাসের মেইন গেটে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে এই মিছিল শেষ হয়।
এ ছাড়া পাথর মেরে ব্যবসায়ীকে বর্বরোচিত হত্যাসহ দেশব্যাপী চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার ধামরাই, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গাজীপুর, নরসিংদী, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, নীলফামারীর সৈয়দপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, নড়াইল, মাগুরা, মেহেরপুর, কুমিল্লার দাউদকান্দি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আমাদের প্রতিনিধিরা।