
ঈদের ছুটি শেষ হয়নি এখনো। এরই মধ্যে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন অনেকে।
মঙ্গলবার (১০ মে) সকালে রাজধানীর কমলাপুরে ঢাকা রেলস্টেশন, মহাখালী ও ফুলবাড়িয়া আন্তজেলা বাস টার্মিনালে ঢাকায় ফিরে আসা নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন খবরের কাগজের প্রতিবেদকরা। রেলস্টেশনে কিছুটা চাপ থাকলেও বাস টার্মিনালে সেই চাপ ছিল না। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও মঙ্গলবার সকালে ঘরে ফেরা মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
ঈদের ছুটি চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত। আগামী রবিবার থেকে পুরোদমে চলবে সরকারি অফিস। কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান এখনো বন্ধ। তাই রাজধানীর অফিসপাড়া মতিঝিল, আগারগাঁও, কারওয়ান বাজার ও গুলশান এলাকার রাস্তাঘাট বেশ ফাঁকা দেখা গেছে।
পরিবহন খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী শনিবার বিকেল থেকে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করবেন কর্মজীবী মানুষ। রবিবার সকালেই চিরচেনা রূপে ফিরবে ঢাকা। গতকাল সকালে ঢাকা রেলস্টেশনে ফিরে আসা কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা হয়।
মঙ্গলবার সকালে পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা একতা এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, পরে এগারসিন্দুর প্রভাতী ও তিতাস কমিউটারের যাত্রীদের সঙ্গে কথা হয়।
গাইবান্ধার বামনডাঙ্গা থেকে আসা লালমনি এক্সপ্রেসের যাত্রী সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘ঈদযাত্রার সময় কতই না দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ঈদযাত্রায় আসনসহ টিকিট পাইনি, বাধ্য হয়ে দাঁড়িয়ে যেতে হয়েছিল। তাতে দুর্ভোগের শেষ ছিল না। তবে ফিরতি যাত্রায় আমি ২টি আসনের টিকিট পেয়েছিলাম। ঝামেলা এড়াতে একটু আগেভাগেই ফিরলাম।’
একই ট্রেনের যাত্রী ফাতেমা তুজ জোহরা এসেছেন নাটোর থেকে। নড়াইলে একটি বেসরকারি হাসপাতালের এই চিকিৎসক বলেন, ‘নাটোর থেকে আমি রূপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেসের টিকিট পাইনি। পরে আমি দেখলাম রূপসী বাংলার টিকিট মিলেছে। তাই ঢাকা ঘুরে নড়াইল যাচ্ছি। এতে অর্থ একটু বেশি লাগলেও সমস্যা নেই। রেলপথে যাত্রা আরামদায়ক।’
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর থেকে আসা যাত্রী নওরিন আক্তার বলেন, ‘এবার ঈদের ছুটিতে গিয়েছিলাম হাওরে। গিয়েছিলাম বাসে, আসলাম ট্রেনে। এগারসিন্দুর প্রভাতী তেমন আরামদায়ক না হলেও দ্রুততম সময়ে ঢাকায় আসার জন্য এর চেয়ে ভালো আর কী বা হতে পারে?’
মেইল বা কমিউটারের যাত্রী সংখ্যা একটু বেশিই ছিল মঙ্গলবার। জামালপুর কমিউটার, তিতাস কমিউটার যখন কমলাপুর আসে, তখন প্রতিটি কামরায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। তিতাস কমিউটারের যাত্রী আজিজ হাসান বলেন, ‘মেইল, কমিউটার ট্রেনে স্বল্প দূরত্বের যাত্রীই সাধারণত বেশি হয়। তবে আজকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকেই প্রতিটি বগিতে যাত্রী ছিল বেশি। বেসরকারি অনেক কারখানা খুলছে। অনেক পোশাক কারখানাও খুলছে। আবার অনেকে ঢাকা থেকে অন্য জেলায় যাবেন। ঈদযাত্রার আগে পরে তেমন তফাত দেখি নাই এই কমিউটারে।’
ঢাকা রেলস্টেশনের ম্যানেজার সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) সকালে উত্তরাঞ্চলের কিছু ট্রেন একটু বিলম্বে ঢাকা স্টেশনে এসেছে। এর কারণ, ফিরতি যাত্রায় প্রতিটি স্টপেজে দুই তিন মিনিট বেশি থামতে হয়েছে। যারা ঝক্কি এড়াতে চান, তারা দ্রুত ফিরে আসছেন ঢাকায়। নেহায়েত কম যাত্রী ছিল না আজকে।’
রাজধানীর সায়েদাবাস আন্তজেলা বাস টার্মিনালে ঢাকা-নোয়াখালী রুটের লাল-সবুজ পরিবহনের চালক আলী আজম বলেন, ‘ঈদ শেষে অনেকে ঢাকা ফিরছেন। নোয়াখালী থেকে আসা বাসগুলোর ২-৩ সিট ফাঁকা ছিল।’
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল পরিচালনা কমিটির সদস্য ও এম আর ট্রান্সপোর্টের মালিক মো. শাহ আলম বলেন, ‘মঙ্গলবার যাত্রী কম ছিল। আশা করছি, আগামী শুক্রবার থেকে পুরোদমে ব্যবসা করব আমরা।’