নতুন করে কোনো ভয়ের রাজত্ব তৈরি করা চলবে না বলে অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য করেছেন বাম জোটের নেতারা।
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের নানা ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটেরা। দেশে কোনো কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী ধারার উত্থান হলে জনগণ তা রুখে দেবেও বিশ্বাস বাম নেতাদের।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে সিপিবি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের শহিদ আবু সাঈদসহ সব শহিদদের স্মরণে স্মরণ সভার আয়োজন করে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। বক্তব্য রাখেন সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ডা. জয়দ্বীপ ভট্টাচার্য, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।
সভার শুরুতে সিপিবি কার্যালয়ে শহিদদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় বাম জোট নেতারা এক মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে নীরবতা পালন করেন।
সভায় সরকারের উদ্দেশে বাম নেতারা বলেন, ‘কোনোভাবেই জনগণের গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকার খর্ব করা চলবে না। নতুনভাবে কোনো ভয়ের রাজত্ব তৈরি করা চলবে না। যেকোনো কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী ধারার উত্থানকে মোকাবিলা করতে জনগণকে সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।’
বাম জোট নেতারা বলেন, ‘আমরা জানি দুর্বৃত্তায়িত অর্থনীতির ধারা পরিবর্তন না করতে পারলে, দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি বন্ধ করা যাবে না। মানুষের মুক্তি আসবে না। এজন্য আমরা ব্যবস্থা বদলে কথা বলেছি। গণতন্ত্র ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়াই ছিল গণঅভ্যুত্থানের সাধারণ আকাঙ্ক্ষা। দলীয় ও ব্যক্তি স্বার্থ প্রাধাণ্য না দিয়ে সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে পথেই আমাদের হাঁটতে হবে। এই কাজ সম্পন্ন করতে বিলম্ব হলে অপশক্তি দেশকে নানা ভাবে অস্থিতিশীল করতে চাইবে। এজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দল নিরপেক্ষভাবে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।’
সভায় গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানানো হয়। বাম নেতারা বলেন, ‘সরকারের এ ধরনের দায়িত্বহীন আচরণ আগামী দিনের গণতন্ত্রের পথ চলাকে ব্যহত করতে পারে।’
দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে তারা বলেন, ‘কোনোভাবেই যেন পতিত স্বৈরাচার, দেশের অভ্যন্তরে থাকা অপশক্তি এবং আধিপত্যবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যেন দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেজন্য গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠনকে সজাগ থাকতে হবে।’
জয়ন্ত সাহা/সুৃমন/