ইতিহাসের অনেক ঘটনা আমাদের বইপুস্তক পড়ে জানতে হয়। গত ৫ আগস্ট (২০২৪) বাংলাদেশে যা ঘটল তা এই ১৫ বছরের দুঃশাসনের এক অনিবার্য পরিণতি। ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে জনগণের এক মহাকাব্যিক বিজয়। একটি স্বৈর-সরকারের এ জাতীয় চরম পরিণতি জীবদ্দশায় দেখে যাব, সেটি ভাবিনি। ভাবতাম, হবে হয়তো একদিন। মহান ভাগ্যনিয়ন্তা ‘ছাড় দেন, ছেড়ে দেন না।’ কিন্তু ইতিহাসের অনিবার্য পরিণতি ‘আল্লাহর মার’ এভাবে চোখের সামনে দেখতে পাব তা ভাবিনি।
এ প্রজন্ম স্বাধীনতাযুদ্ধ, সেই যুদ্ধের নানা বীভৎসতা ও বিজয় স্বচক্ষে দেখেননি। কিন্তু নিজেদের একটি অভূতপূর্ব ত্যাগ ও সংকল্পের দৃঢ়তায় যে গণ-আন্দোলন বা গণ-অভ্যুত্থান তারা নিজেরা ঘটালেন এবং তার সফলতাও তারা নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করলেন। সে সৌভাগ্য সাধারণত আন্দোলন-সংগ্রামে যারা নিঃস্বার্থভাবে ত্যাগ স্বীকার করেন, তাদের অনেকের হয় না। যে শত শত মানুষ জীবন দিলেন এবং হাজার হাজার আদম সন্তান আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করলেন, তাদের কথা এই মুহূর্তে ভাবলে দিশেহারা হয়ে পড়ি।
আমরা এদের এই মহান ত্যাগ থেকে যেন কখনো বিস্মৃত না হই। এটি ছিল বিশ্ব ইতিহাসের এক অনন্য বিস্ময়। নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা একটি ন্যায়যুদ্ধে সশস্ত্র দাম্ভিক, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের চরম বিরোধী শক্তি এক স্বৈরাচারী শাসকের সর্বাত্মক পরাজয় ঘটিয়ে দিলেন। এত প্রচণ্ড প্রতাপশালী এক প্রধানমন্ত্রী, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এক রাজনৈতিক দলের নেতা এবং দেশের এক ঐতিহ্যবাহী ইতিহাসখ্যাত রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান চোরের মতো গোপনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেন। তিনি অনেকবার বুকের তাজা রক্ত দেওয়ার কথা বলে গরম বক্তৃতা করেছেন। কোথায় সেই রক্ত আর জীবন! ইতোপূর্বে তার ক্ষমতার দোসর অনেক দুর্নীতিবাজ ও তস্কর ব্যক্তি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
কিছু ব্যক্তি শেখ হাসিনার সঙ্গে এবং তার আগে-পরে পালাচ্ছেন। এটি একটি লজ্জা ও অপমানজনক বিষয়। নৈতিকতাসম্পন্ন একজন সৎ, দেশপ্রেমিক ও সাহসী জননেতা দেশ ছেড়ে পালাবেন কেন? ব্যক্তি ও সমষ্টিগতভাবে একজন নেতা বা একটি দল ভুল করতে পারেন। তারা জনগণের কাছে ক্ষমা চাইবেন। জনগণ মাফও করে দিতে পারেন। মনে হয়, ব্যক্তি শেখ হাসিনার সেই রাজনৈতিক মন ও মনন ছিল না। তিনি একজন পাষাণ হৃদয়, ক্ষমতান্ধ ও অপ্রকৃতিস্থ মানুষ।
নিজের গদি রক্ষার জন্য শত শত নিরপরাধ শিশু-কিশোর-যুবক হত্যায় তার কোনো অনুশোচনা নেই। নেই কোনো পিছুটান বা নিরাপত্তা চিন্তা তার দলের অরক্ষিত লাখো নেতা-কর্মীর জন্য, যাদের তিনি প্রতিনিয়ত ক্ষমতার ঢাল হিসেবে জনমানুষের মুখোমুখি করিয়েছেন। পালানোর আগের দিন পর্যন্ত নির্বিচারে গণহত্যা চালাতে একটুও তার দ্বিধা হয়নি। কিছু নেতা-মন্ত্রী তোতা-ময়নার মতো সাফাই গেয়ে যাচ্ছিলেন, আর কিছু দলীয় পান্ডা অস্ত্র হাতে রাস্তায় প্রকাশ্যে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার বুকে গুলি করছিল। তারা কি দেশের মানুষের মনমানসিকতা, দুঃখ, ক্ষোভ, ঘৃণা, রাগ একটুও বুঝতে পারেনি? তারা কিসের জননেতা।
দ্রুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ শুরু হোক
অন্দোলন-সংগ্রামের প্রথম এবং বৃহত্তর ধাপের বিজয় অবিসংবাদিত। স্বৈরাচারের সর্বাত্মক ও শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে। এখন এ অর্জনকে সুসংহত করার সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার সময়। এখানে সব সংকীর্ণতা এবং ক্ষুদ্র ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থ পরিহার করে সঠিক, সক্ষম ও ক্রেডিবল একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে।
একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়ায় এ সরকারের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত, অতীতে জনস্বার্থ রক্ষায় প্রতিশ্রুত, ত্যাগ ও সাহসের পরিচয় দিয়েছেন- এমন উচ্চ মেধা, সচ্চরিত্র, নির্ভীক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন কয়েকজন ব্যক্তি বাছাই করতে হবে। তবে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা রাজি করাতে পেরেছেন। এটি তাদের আন্দোলনের আর একটি প্রধান সাফল্য। তিনি ছাড়া বাংলাদেশে দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তির পক্ষে এ গুরুদায়িত্ব সামাল দেওয়া এক রকম অসম্ভব। এ সরকারের জন্য সব সাংবিধানিক ও যথাযথ আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।
এখানে কোনো বিভক্তি চলবে না। এ ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বড় ভূমিকা পালনের বৈধ কর্তৃত্বের অধিকারী। সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে তাদের যোগ্য ভূমিকা পালন করে দেশবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থন ও ভালোবাসা অর্জন করেছে। দেশের সব রাজনৈতিক দল বিশেষত বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি, গণতন্ত্র মঞ্চ, হেফাজত, ইসলামী আন্দোলনসহ অনেকে এ আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে।
এ প্রক্রিয়ায় এদের সবার অন্তর্ভুক্তি অর্থাৎ সমর্থন প্রয়োজন। আমরা আশা করি, সবার ঐকমত্যে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শিগগিরই কাজ শুরু করতে পারবে। তবে সরকারের ওপর বিশ্বাস স্থাপনের জন্য সবার আগে যে কাজটি করতে হবে তা হলো, হাজার হাজার নিরপরাধ সাধারণ বন্দিকে মুক্ত করতে হবে।
এ সরকারের আকার হবে ছোট। ১০ থেকে ১৫ জনের বেশি কোনোক্রমেই নয়। মেয়াদের বিষয়টিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কোনো কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে হঠকারিতার আশ্রয় নেন। তারা বলেন, এক ঘণ্টার জন্যও অনির্বাচিত কোনো সরকার নয়। নির্বাচিত ও অনির্বাচিত দুটি ভিন্ন উপাদানের দুই ধরনের জনমণ্ডলী ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে সাধারণত সরকার গঠিত হয়। যেমন নির্বাহী বিভাগের বিপুল অংশ এবং বিচার বিভাগ নির্বাচিত নয়।
এখন এ সংকটকালীন মুহূর্তের সরকারে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত উপাদানের একমাত্র প্রতীক বহন করছেন এবং জন-ঐকমত্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনির্বাচিত, কিন্তু বিপুল ‘পপুলার ম্যান্ডেট’-এর অধিকারী। তাই দেশে একটি বিপ্লবী জন-ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত অনির্বাচিত সরকার একটি সংকটকাল কাটানোর জন্য অপরিহার্য। তারা দেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করবেন।
মেয়াদের কথায় ফিরে এলে বলতে হয়, এ মেয়াদ এক বছরের কম হলে প্রত্যাশিত কাজগুলো সমাপন করা দুঃসাধ্য হবে। এখানে দ্রুত নির্বাচন চেয়ে যদি রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে নামে বা চাপ প্রয়োগ করে তা হঠকারিতা হবে। সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। যে সরকার ক্ষমতায় ছিল তারা তো আরও সাড়ে চার বছর মেয়াদে নির্বিঘ্নে দুঃশাসন চালিয়ে যেত। সে জন্য এ সরকারকে অন্তত এক বছর প্রয়োজনে আরও কিছু বেশি সময় দেওয়া যেতে পারে। এক বছরের একটি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এ সরকারকে নামতে হবে। এর বেশি হলে নানামুখী অসন্তোষ শুরু হতে পারে।
এ সরকার কী কী কাজ অগ্রাধিকারভিত্তিক করতে পারে
সাধারণত আমাদের পূর্বধারণামতো এ সরকারের প্রধান কাজ নির্বাচন অনুষ্ঠান। কিন্তু বিগত ১৫ বছর এবং তারও আগে নানা রাজনৈতিক টানাপোড়েনের ইতিহাসের আলোকে শুধু নির্বাচন নয়, পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য অনেক কাজ করে যেতে হবে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় কাজ হবে সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। অন্যান্য জাতীয় সমস্যা আছে, যেখানে সতর্ক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হবে। সেগুলো হচ্ছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সংস্কার, আইনের শাসন তথা সরকারি কর্মচারী ও বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিতের ক্ষেত্র রচনা, শিক্ষাঙ্গনের জন্য শান্তি ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কাঠামো তৈরি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দলবাজমুক্তকরণ।
রুটিন কাজের বাইরে বড় কাজের মধ্যে এ সরকার থেকে একটি প্রত্যাশা থাকবে ভবিষ্যতে একটি আধুনিক সংবিধানের রূপরেখা সৃষ্টির জন্য একটি শক্তিশালী ‘সংবিধান কমিশন’। প্রশাসনে দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার হয়নি। তাই মাঠ প্রশাসন ও সচিবালয়কেন্দ্রিক প্রশাসনের খোলনলচে বদলের যে প্রয়োজন তার নিরিখে বিকেন্দ্রীকরণ, দুর্নীতি রোধ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন দ্রুতায়ন, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতার সমস্যাগুলোর পর্যালোচনাপূর্বক প্রশাসনকে গতিশীল করার লক্ষ্যে কার্যকর একটি দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।
স্থানীয় সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনব্যবস্থার জটিলতার অবসানে করণীয় নির্ধারণে নানা দেশের অভিজ্ঞতার আলোকে একটি দিকনির্দেশনামূলক স্টাডি প্রয়োজন। তাই মনে করি, প্রথমে নির্বাচন কমিশনসহ সব কার্যশীল কমিশন যেমন- সরকারি কর্ম কমিশন, তথ্য কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, আইন কমিশন, টেলিকমিউনিকেশন কমিশন পুনর্গঠন প্রয়োজন। তার সঙ্গে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সংবিধান কী রকম হওয়া উচিত, সে বিষয়ের ওপর বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন প্রয়োজন।
তা ছাড়া প্রশাসনিক সংস্কার, বিচার বিভাগ ও আইনের সংস্কার, ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সংস্কার, স্থানীয় সরকার ও মাঠ প্রশাসন সংস্কার। এ পাঁচটি বিষয়ে সংস্কারের লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তিন থেকে পাঁচ মাস সময়ের মধ্যে পাঁচটি কমিশন গঠন করে প্রতিবেদন গ্রহণ প্রয়োজন। এ প্রতিবেদনগুলো ব্যাপক আলাপ-আলোচনার পর নির্বাচনে অংশগ্রহণেচ্ছু সব দলকে এসব কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করতে হবে।
ওপরের কাজগুলো দীর্ঘ মেয়াদের এবং সুচিন্তিত পদক্ষেপ। কাজ শুরুর প্রথম মুহূর্তের কাজ হবে বিশৃঙ্খল, ছন্নছাড়া ও পলায়নপর প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠন। বিশেষত, সংগঠন হিসেবে পুলিশ সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। এটির পুনরেকত্রীকরণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এটি করতে হবে। দ্বিতীয় পর্যায় সচিবালয়। এখানে সরকারের পা-চাটারা ভীতসন্ত্রস্ত। ভয়, দ্বিধা ও অনিচ্ছার সঙ্গে কাজ করবেন।
এখানে শুদ্ধি অভিযান দরকার হবে। তৃতীয় পর্যায় মাঠ প্রশাসন। এখানে বিভাগীয় কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার, নির্বাহী বিভাগের ম্যাজিস্ট্রেট থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং এসি ল্যান্ড পর্যন্ত বাছাই করা নতুন দক্ষ ও নিরপেক্ষ পেশাদার লোক দিয়ে রাজনৈতিক স্লোগান দেওয়া কর্মকর্তাদের স্থান পূরণ করতে হবে। দলান্ধ লোকগুলোর বিভাগীয় তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তির বিধান করতে হবে।
এই সরকারের প্রথম মাসে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনার জন্য ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি গাইডলাইন তৈরি করা যেতে পারে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সব প্রতিষ্ঠানে দলীয় রাজনীতি আগামী এক বছরের জন্য বন্ধ করে পুরোদমে একাডেমিক, শিক্ষাসহায়ক সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কার্যক্রম জোরালো করতে হবে। আগামী ৩ থেকে ৫ মাসের মধ্যে সব সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচিত ছাত্র সংসদ গঠিত হতে হবে।
শিক্ষকরা সিদ্ধান্ত নেবেন তারা বিভিন্ন বর্ণ ধারণ করে যে ‘বর্ণবাদী’ রাজনীতি করেন, তা অব্যাহত রাখবেন, না নতুন কোনো কিছু করবেন। কয়েকটি পুরোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল শিক্ষক সারা বছর কোনো না কোনো নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাদের এই তৎপরতাকে অপতৎপরতা হিসেবে দেখা যায়। দেশে এই যে পরিবর্তন তার অনুষঙ্গ হিসেবে শিক্ষকদের সনাতনী কিছু তৎপরতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠালাম এবং ভেবে দেখতে অনুরোধ করি। করণীয়ের ফিরিস্তি অনেক দীর্ঘ করা যায়। কিন্তু অনেক কিছু দেখার আছে। তারপর ক্রমশ তা আনা যাবে।
স্বাধীনতার অর্জন সফল না হওয়ার আক্ষেপ তো সবার। জেনারেল এরশাদের ক্ষমতা দখল ও শোচনীয় পতন। তারপর ২০০৫ থেকে ২০০৬ সালের আন্দোলনে বিএনপি সরকারের পতন ও একই বছরের ৩ নভেম্বর ১৯৯৬-এর আন্দোলন এবং পরপর দুটি সাধারণ নির্বাচন, সেনা ছত্রচ্ছায়ায় দুই বছরের ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’। সবই দেখা হয়েছে।
এর মধ্যে বড়-ছোট আন্দোলন কম হয়নি। কিন্তু অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন সর্বত্র প্রশ্নসাপেক্ষ। কোনো না কোনোভাবে সুবিধাভোগী একটি শ্রেণির করায়ত্বে সব চলে যায়। এ ক্ষেত্রে ছয় মাস-এক বছর একটি নতুন নির্বাচন হওয়ার পর রাষ্ট্র, সমাজ, প্রশাসন ও দেশের রাজনৈতিক দলগুলো কতটুকু সঠিক পথে আসে তা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
লেখক: রাজনীতি বিশ্লেষক ও স্থানীয় শাসন বিশেষজ্ঞ