
আমাদের দেশে বর্তমানে যে নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, সেই প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফর অবশ্যই একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে এগিয়ে নিতে নানা ধরনের চিন্তাভাবনা ও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। নতুন করে সবকিছু সাজানোর কথাবার্তা বলা হচ্ছে। আর্থসামাজিক উন্নয়নে গতিশীলতার কথা বলা হচ্ছে। সব দেশের সঙ্গেই আমাদের একটা ইতিবাচক সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। বৃহৎ প্রতিবেশী রাষ্ট্র হওয়ায় ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে সেই সম্পর্কে বড় ধরনের একটা ধাক্কা লেগেছে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, তা নিয়েও নতুন করে ভাবার দরকার আছে। নতুন সরকার এসেছে, তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারে নিশ্চয় ভিন্নতা আছে। যারা আমাদের উন্নয়ন অংশীদার, তাদেরও ভাবনায় এটা আছে। আমরা যেভাবেই দেখি না কেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটা সময়ের পর নির্বাচন দেবে। নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তারা বিদায় নেবে। সে ক্ষেত্রে আমাদের অংশী রাষ্ট্রগুলো কতটুকু সম্পর্ক রাখবে বা কতটুকু কী করবে- প্রশ্নগুলো তাদের মনে ঘুরপাক খাওয়া খুবই স্বাভাবিক। সে কারণে সবার সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে এক ধরনের পুনর্বিন্যাস ও নতুন গতি সঞ্চারের প্রয়োজন রয়েছে। বর্তমানে সম্পর্ক যে পর্যায়ে আছে, সেখান থেকে আরও কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়, কতটুকু গুরুত্বের সঙ্গে তা গতিশীল করা যায়- সবকিছু নতুন করে ঠিক করতে হবে।
ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে যেমন গতিশীলতা প্রয়োজন, তেমনি যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গেও তা প্রয়োজন কিংবা রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গেও। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, বিগত সরকারের সময়ে বৈদেশিক বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে অংশীদার রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যেরূপ সম্পর্ক ছিল, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরও সেই জায়গাগুলোয় তেমন কোনো বড় পরিবর্তন হয়নি বা সহযোগিতা বন্ধ করে দেওয়া হয়নি। এটা অবশ্যই ইতিবাচক দিক। অর্থাৎ সবকিছু যেখানে ছিল প্রায় সেখানেই আছে।
এ ক্ষেত্রে শুধু কিছুটা গতিশীলতা কমেছে। সেখানেও নতুন করে আমাদের গতিসঞ্চার করতে হবে। যেহেতু জাতীয় স্বার্থে নাটকীয় পরিবর্তন হয় না, তাই আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হঠাৎ করে অবিবেচক পরিবর্তন করা কাম্য নয়। বর্তমানে একটা চেষ্টা চলছে, সবার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছে, কথাবার্তা হচ্ছে। তার পরও আনুষ্ঠানিকভাবে সব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় সাক্ষাৎ ও কথাবার্তা বলাটা খুবই জরুরি। সবকিছুই একসঙ্গে হবে এমন নয়। প্রথমে চীন সফর হলো। অনেকে মনে করতে পারেন যে, চীনের ক্ষেত্রে বিশেষ মাত্রা অর্থাৎ বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। তার মানে এই নয় যে, অন্যদের গুরুত্ব কম। সেভাবে চিন্তা করাটা সঠিক নয়। আসলে এটা সুযোগের ব্যাপার। চীনে যাওয়ার সুযোগ আগে এসেছে। সুযোগমতো বা সুযোগ করে অন্য দেশের সঙ্গেও সফর ও আলোচনা হবে।
বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারত্ব আছে। এর মধ্যে তিনটি দেশ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ- ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। এক একটা দেশ এক এক কারণে গুরুত্বপূর্ণ। ভারত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এ জন্য যে পারস্পরিক ভৌগোলিক অবস্থান, ইতিহাস, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, কৃষ্টি সব বিষয়ে গভীর ঐতিহ্যগত সংযুক্তি ও নির্ভরশীলতা, আমাদের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব ইত্যাদি নিশ্চিতের ব্যাপারে ভারতের বিশেষ ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই। এ ক্ষেত্রে অন্য কেউ সেভাবে ভূমিকা রাখতে পারবে না। আমাদের জন্য দ্বিতীয় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আর্থসামাজিক উন্নয়ন। সেখানে চীনের ভূমিকা অনেক বেশি।
চীন আমাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। তাদের সঙ্গে যৌথভাবে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প চলমান। আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনের অংশগ্রহণ সবচেয়ে বেশি। সত্যিকার অর্থে দৈনন্দিন জীবনে আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে বেশি ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বিদ্যমান। যদিও অর্থের অঙ্কে দেখতে গেলে যুক্তরাষ্ট্র কখনো কখনো এগিয়ে যায়। আমাদের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র একক প্রধান গন্তব্য। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের কাছে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র খুব গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমাদের যে পরিচয়, পরিচিতি, ভাবমূর্তি, বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অংশগ্রহণ, সেখানে আমরা যে ভূমিকা রাখি, সে ক্ষেত্রে আমেরিকা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, হিউম্যান রাইটস-এর ক্ষেত্রে আমাদের যে অবস্থান- যেদিকেই যাই না কেন, পরাশক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের মতের সঙ্গে প্রায়শই মেলে না।
প্রবাসে আমাদের অনেক অভিবাসী শ্রমিক রয়েছেন, কর্মী রয়েছেন, তাদের স্বার্থ আমাদের দেখতে হয়। এসব নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অনেক বেশি সক্রিয়, সেই সক্রিয়তা সম্ভব হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মতো মোড়ল দেশ আমাদের সহ্য করে নেওয়ার কারণে। মোদ্দা কথা হলো- ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র- তিনটি দেশের সঙ্গেই আলাদা আলাদাভাবে আমাদের সম্পর্ক নতুনভাবে একই সঙ্গে জোরালোভাবে সাজিয়ে নিতে হবে। কারণ, সামনে আমাদের অনেক নতুন উদ্যোগ ও সংস্থান আসছে। সুতরাং সহযোগী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন ছাড়া আমাদের এগোনো মুশকিল। চীন সফরের আগে পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা সাংবাদিকদের ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করে বলেন, সব দেশের সঙ্গে ‘ভারসাম্যমূলক’ সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। সেদিক বিবেচনায় আমাদের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার চীন সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের যে সহযোগিতার সম্পর্ক আছে, সেগুলোয় নতুন করে গতি সঞ্চার করতে হবে।
আমাদের অর্থনৈতিক সংকট চলছে। তা উত্তরণে সবার কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা দরকার। এসব নিয়ে আগেও অনেক কথাবার্তা হয়েছে। আমাদের উপদেষ্টা মহোদয় চীন সফরে গেলেন। তিনি যাওয়ার আগে কতগুলো বিষয় বলেছিলেন- তাদের কাছ থেকে যেসব ঋণ নেওয়া হয়েছে, তার মেয়াদ বাড়ানো যায় কি না। সুদের হার কমানো যায় কি না, আমাদের বাজেট সংকুলানে সাহায্য করার জন্য সহজ শর্তে তারা কোনো নতুন ঋণ দিতে পারবে কি না- এসব নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। আমরা যতদূর জানি, তারাও এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে দেখবে, কীভাবে সাহায্য করা যায়। একই সঙ্গে চলমান প্রকল্পগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হয়েছে। তিস্তার কথা এসেছে।
আমার মনে হয়, এখনই ব্যাপকভাবে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তিস্তার বিষয়ে একটা সমঝোতা চুক্তি আছে। যার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে, তা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এর মানে এই নয় যে, নতুন কোনো সুনির্দিষ্ট প্রকল্প গ্রহণের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য বিষয় আছে যেগুলো অল্প সময়ে করা যায় বা করা প্রয়োজন। বলা হচ্ছে, বড় একটি আধুনিক নতুন হাসপাতাল নির্মাণের কথা। বিষয়টি অবশ্য একেবারে নতুন নয়।
চীনারা বাংলাদেশে বড় হাসপাতাল করবে, আগে থেকেই আলোচনায় ছিল। সেটাকে আরও ত্বরান্বিত করার সময় এসেছে এবং সেটা হবে আশা করছি। যদি মানুষ ভারতে যেতে না পারে, তাহলে নতুন নতুন জায়গা খুঁজবে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে যেহেতু এখন স্থবিরতা তৈরি হয়েছে, অনেকেই ভারতে যেতে চাচ্ছে না বা যেতে পারছে না। ভিসার ক্ষেত্রে নানা রকম অসুবিধা আছে। ভারতে না হলে অন্য জায়গায় যাবে তারা। থাইল্যান্ডে, সিঙ্গাপুরে, আরও অন্যান্য জায়গায় যেমন- কুনমিংয়েও যাবে, যদি যাওয়াটা সহজ ও ব্যয়বহুল না হয়।
আবার যদি ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন হয়, ভিসাসহ নানা বিষয়ে উন্নতি হয়, তাহলে মানুষ ভারতে যাবে না- তা মনে করার কারণ নেই। যখন যার জন্য যেটা সহজ হয়, সে তাই করবে। তার পরও একটা সুযোগ তৈরি হচ্ছে। চলমান যে প্রকল্পগুলো আছে তা চালিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে উভয় পক্ষই গুরুত্ব আরোপ করছে। যে প্রজেক্টগুলো শুরু হয়েছে, তা শেষ করা এবং যেগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে সেগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। উভয় পক্ষের জন্যই এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমাদের এই মুহূর্তে দুটো সমস্যা আছে। একটা হলো আর্থিক সমস্যা। নতুন প্রজেক্টে হাত দেওয়ার জন্য যে পরিমাণ অর্থ লাগবে, যা বাস্তবায়নকারী দেশের কাছ থেকে নিতে হবে এবং তা করতে সময় লাগবে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে বাংলাদেশে বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার আছে। এই সরকার বেশি দিন স্থায়ী হওয়ার কথা নয়। নতুন প্রজেক্টের জন্য তা একেবারেই অনুপযুক্ত।
যদি প্রাইভেট সেক্টরে প্রজেক্ট থাকে তাহলে সেগুলো এগিয়ে যাবে। হাসপাতাল হলে প্রাইভেট সেক্টরেই হওয়ার কথা। এগুলো সহজেই এগিয়ে যাবে। নতুন করে বড় কোনো প্রজেক্ট নেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। চীন, ভারত অথবা যুক্তরাষ্ট্র যে-ই হোক, বর্তমানে আমাদের যে অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতা চলছে, এই পর্বটা কীভাবে আমরা পার করব সেটাও ভেবে দেখবে। আমরা আরও বেশি স্থায়ী ব্যবস্থা কীভাবে নেব- সেই বিষয়ে অপেক্ষা করতে হবে এবং এটিই স্বাভাবিক। সুতরাং, বর্তমান সরকারের জন্য বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন সহযোগী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক যদি এগিয়ে যেতে থাকে, স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকে- তাহলে জনগণ স্বস্তি বোধ করবে। কিন্তু তার চেয়েও বড় ব্যাপার হলো অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো। যেসব বৃহৎ সমস্যা আছে, সেগুলো সরকার সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করছে কি না, মূল্যস্ফীতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা- সবখানে নতুন গতি সঞ্চার হয়নি, এটা একেবারে নিশ্চিতভাবে বলা যায়।
একটা স্থবিরতা তৈরি হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ এ ব্যাপারে চিন্তিত, শঙ্কিত এবং অনেকটাই নিরাশ। সরকারকে ওই দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। তার মানে এই না যে, বৈদেশিক সম্পর্কগুলোকে উপেক্ষা করে তা করতে হবে। আমাদের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার কাজ বিদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখা। সেদিক থেকে দেখতে গেলে তার কাজগুলো তিনি করার চেষ্টা করছেন। কথাও বলছেন, আমাদের সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে। ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে হবে। কাজেই আমি স্বস্তি বোধ করি যে, আমরা পথ একেবারে হারিয়ে ফেলিনি। যদিও এখন সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- আমাদের অভ্যন্তরীণ অবস্থার উন্নতি করা। আমাদের অভ্যন্তরীণ অবস্থা আছে, অবস্থান আছে, ব্যবস্থা আছে, প্রয়োজন আছে, স্বার্থ আছে ইত্যাদি। সেগুলো যদি আমরা একটা পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারি, সেগুলোয় স্থিতিশীলতা নিয়ে আসতে পারি, তাহলেই আমাদের বৈদেশিক সম্পর্কগুলো সত্যি সত্যি এগিয়ে যাবে। তা না হলে কিন্তু একটা পর্যায়ে সবকিছুই দাঁড়িয়ে থাকবে, এগোবে না, যদি আমরা অভ্যন্তরীণভাবে এগোতে সক্ষম না হই।
আমাদের অভ্যন্তরীণ সংকটগুলো যা আছে তা মোকাবিলা করতে হবে। আমরা আরও সফল না হওয়া পর্যন্ত অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কগুলো খুব বেশি গুরুত্ব বহন করবে না। একটা জিনিসের ওপর সবকিছু নির্ভর করে না। এর পরও নির্ভরশীলতার ব্যাপার আছে। সুতরাং আমাদের অভ্যন্তরীণ সংকটের ওপর গুরুত্ব দিতে হচ্ছে। যেখানে অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার নিশ্চয়তা দিতে হবে। এগুলো যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই বৈদেশিক সম্পর্কগুলো একেবারে ফেলে দিলে হবে না। সেখানেও সবকিছু ধরে রাখতে হবে এবং সম্ভবমতো নতুন গতি সঞ্চার করতে হবে। অভ্যন্তরীণ সংকট মোকাবিলায় প্রায় সব বৈদেশিক কারিগরি, প্রযুক্তি ও আর্থিক সহায়তার গুরুত্ব রয়েছে। যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত সবাই আমাদের অভ্যন্তরীণ বিশেষ করে অর্থসংকট থেকে উত্তরণে বড় রকমের সাহায্য করতে পারে। তা ছাড়া বিদেশে আমাদের অংশীদার যারা আছেন, তাদের সঙ্গে সম্পর্কগুলো যদি মোটামুটি একটা নিশ্চয়তার মধ্যে থাকে বা সংকট না থাকে, তাহলে আমাদের সরকারের পক্ষে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া অপেক্ষাকৃত সহজ হবে।
লেখক: সাবেক রাষ্ট্রদূত