ঢাকা ২১ কার্তিক ১৪৩১, বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪

উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগের গুরুত্ব ৫ বিষয়ে

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ১১:৩৮ এএম
আওয়ামী লীগের গুরুত্ব ৫ বিষয়ে
আওয়ামী লীগ

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপ শেষ। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন আরও বেশি চ্যালেঞ্জ আওয়ামী লীগ ও দলের তৃণমূল নেতাদের জন্য। স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই দলটির নেতা-কর্মীদের আশঙ্কা, তৃণমূলের প্রার্থীদের মধ্যে সহিংসতা বাড়বে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রে বেশিসংখ্যক ভোটার আনা কঠিন হয়ে পড়বে।

কারণ উপজেলার প্রথম ধাপের নির্বাচনে এবার ভোটার উপস্থিতি ছিল সবচেয়ে কম। এই নির্বাচনে ১৩৯টি উপজেলার মধ্যে ৮১টিতেই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন নির্বাচনি এলাকার মোট ভোটারের ২০ শতাংশের কম ভোট পেয়ে। আর নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। এই ঘটনায় জনগণ কিছুটা নির্বাচনবিমুখ হচ্ছেন বলে খোদ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই মনে করছেন। তারা বলছেন, নির্বাচনের প্রতি জনগণের অনাগ্রহ সরকারের জন্য ভালো নয়। তাই পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ দ্বিতীয় এবং পরের ধাপগুলোর নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে। যদিও বিষয়টি নিয়ে দলের কেন্দ্র উদ্বিগ্ন। তাই ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট তৃণমূল নেতাদের তাগিদ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।

এমন প্রেক্ষাপটে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের অনাগ্রহের কারণ খুঁজে পরবর্তী ধাপের নির্বাচনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তারা ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা শনিবার খুলনায় এক মতবিনিময় সভায় উপজেলার প্রথম ধাপের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। সেই সঙ্গে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, পরবর্তী ধাপের নির্বাচনগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে কাজ করছে কমিশন। রাশেদা সুলতানা বলেন, প্রার্থীদের দায়িত্ব ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসা। আর নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ভোটারদের নিরাপত্তা বিধান ও নির্বিঘ্নে ভোটদানের পরিবেশ সৃষ্টি করা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার ১৩৯টি উপজেলায় অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির ১৭ জন স্বজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে নির্বাচিত হয়েছেন ১২ জন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে একাধিকবার স্বজনদের বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনেও পার পেয়ে যাবেন মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা। জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে ১৬০টি উপজেলায় প্রায় মন্ত্রী-এমপির ১৮ জন স্বজন নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মন্ত্রী-এমপির স্বজন হওয়ার কারণে তারা দলীয়, এমনকি প্রশাসনিকভাবেও বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন। যার ফলে প্রতিপক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে তাদের সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রথম ধাপের নির্বাচনে প্রায় ৫০টি উপজেলায় সহিংস ঘটনা ঘটেছে নিজ দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেই।

গত বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মাদারীপুর সদর, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া, সুনামগঞ্জের শাল্লা, নোয়াখালীর সুবর্ণচরের কিছু কেন্দ্রে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই সব এলাকায় বোমাবাজি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করতে বাধ্য হয়। 

এদিকে ভোটে অনিয়মের অভিযোগে বগুড়ায় দুই সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ওই জেলার আরেক কেন্দ্রে আটক করা হয় প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ দুজনকে।

যদিও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, দলীয় নির্দেশ অমান্য করলে শাস্তি পেতেই হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৭৩ জন এমপি মনোনয়ন পাননি, ২৫ জন মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছেন। শাস্তিটা অনেকভাবেই আসতে পারে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম খবরের কাগজকে বলেন, ‘নির্বাচনে কেউ প্রভাব বিস্তার করতে চাইলে এবং সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ঐকমত্য এবং ভিন্নমতও হয়। তবে কেউ যেন কোন্দলে না জড়ায়। দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যারা ভালো করে দল তাদের পুরস্কৃত করে আবার অন্যায় করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে আমরা তৃণমূলে বার্তা দিচ্ছি। কেউ যেন প্রভাব বিস্তার না করে, সেদিকেও লক্ষ রয়েছে। ভোটাররা যেন নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারেন আমরা সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চাই।’ 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পরবর্তী ধাপের উপজেলা নির্বাচনে বিতর্ক এড়াতে অন্তত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নজর দিয়েছে আওয়ামী লীগ। 

ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো: 
প্রথম ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রত্যাশার চেয়ে ভোট কম পড়েছে। আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে ৬৮ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছিল। দ্বিতীয় দফায় ৬১ শতাংশ ভোটার উপজেলা নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন। ২০১৯ সালে এই হার ছিল ৪০ শতাংশের বেশি। এবারের প্রথম ধাপের নির্বাচনে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পড়েছে, যা নিয়ে আওয়ামী লীগের মাঝে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। পরবর্তী ধাপের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের ভোটারদের ‘ডোর টু ডোর’ গিয়ে ভোট চাইতে বলা হয়েছে। 

তৃণমূলে কোন্দল নিয়ন্ত্রণ: 
গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী ও দলীয় স্বতন্ত্রের মধ্যে দ্বন্দ্ব এখনো নিরসন হয়নি। এর মধ্যে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল দেখা দিয়েছে। কারণ একাধিক প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এর ফলে কর্মীরাও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন, যা নিয়ন্ত্রণ করে দলের ঐক্যের বার্তা দিচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। 

মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের দলীয় নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য করা:
প্রথম ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্দেশ অমান্য করে মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা প্রার্থী হয়েছেন। তা সত্ত্বেও তৃণমূলে বিশৃঙ্খলা রোধে এখনই স্বজনদের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। ফলে বিপাকে পড়েছেন দলের প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য প্রার্থীরা। কারণ এমপি-মন্ত্রীর ইমেজ কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে সুবিধা করে যাচ্ছেন স্বজনরা। তাই পরবর্তী ধাপের নির্বাচনে স্বজনদের বুঝিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের চেষ্টা করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

স্থানীয় পর্যায়ে আধিপত্য নিয়ন্ত্রণ: 
উপজেলা নির্বাচনে একাধিক স্থানে প্রভাবশালীদের আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেতারা। একাধিক উপজেলায় সংঘাতের ঘটনাও ঘটেছে। পরবর্তী ধাপের নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখতে পরিবারতন্ত্র বা আধিপত্য বিস্তার করলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

নির্বাচন সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করা: 
বিএনপিবিহীন উপজেলা নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে চায় আওয়ামী লীগ। কারণ স্থানীয় নির্বাচনে প্রতিযোগিতা হলে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। সেই লক্ষ্যে এবার প্রতীক বরাদ্দ না দিয়ে প্রার্থিতা উন্মুক্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার নেতা-কর্মীদের বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক এবং সুষ্ঠু নির্বাচন করার বার্তা দিয়েছেন। কেউ প্রভাব বিস্তার করতে চাইলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

গিয়াস উদ্দিন কাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ বিএনপির

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৬ পিএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৬ পিএম
গিয়াস উদ্দিন কাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ বিএনপির
বিএনপি

চট্টগ্রামের রাউজানে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তার, হামলা, নেতা-কর্মীদের অসম্মানসহ নানা অভিযোগে দলের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। আগামী ৩ দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে লিখিত জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ কারণ দর্শানো হয়। 

বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার।

তিনি বলেন, ‘রাউজান থেকে কেন্দ্রীয় দপ্তরে গিয়াস উদ্দিন কাদেরের নামে নানা অভিযোগ এসেছে। এ জন্য তাকে কেন্দ্র থেকে ওই নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’

নোটিশে বলা হয়, দলমত নির্বিশেষে ওই এলাকার ধনী ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওমান প্রবাসী সিআইপি ব্যবসায়ী ইয়াসিনের কাছে দেড় কোটি টাকা এবং সিআইপি ব্যবসায়ী মো. ফোরকানের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন গিয়াস উদ্দিন। চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ইয়াসিনের রাউজানের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া এবং ফোরকানকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে বলে জানা যায়।

এতে আরও বলা হয়েছে, গিয়াস উদ্দিনের সন্ত্রাসীরা দোকান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থানরত রাউজানের ব্যবসায়ীদের ওপর ঢালাও চাঁদাবাজির মাধ্যমে এলাকাকে আতঙ্কের জনপদে পরিণত করেছে। রাউজানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্রের অনুমোদন ছাড়া। এটা বিএনপির নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ বলেও উল্লেখ করা হয়। 

এ ছাড়া দীর্ঘ ৬ বছর বিদেশে থেকে নতুন সরকারের শুরুতে দেশে এসে দেশ-বিদেশের সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে রাউজানে অস্থিরতা ও মারাত্মক আতঙ্ক তৈরি করেছেন গিয়াস কাদের।

শফিকুল/সালমান/

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের আহ্বান জামায়াতের

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৩ পিএম
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের আহ্বান জামায়াতের
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

যথাযোগ্য মর্যাদায় ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালন করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

বুধবার (৬ নভেম্বর) গণমাধ্যম পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান তিনি।

জামায়াতের আমির বলেন, সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার দীপ্ত শপথ গ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস, যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য জামায়াতের সব শাখা ও দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং দেশের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত মোকাবিলায় ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সব মুক্তিকামী জনতা রাজপথে নেমেছিলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মেজর জে. খালেদ মোশাররফ পাল্টা সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র করেছিল। তখন আমাদের দেশপ্রেমিক সিপাহী ও জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে ৭ নভেম্বর নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার স্লোগান দিয়ে রাজপথে নেমে খালেদ মোশাররফের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত প্রতিহত করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হেফাজত করেছিলেন।
 
জামায়াতের শীর্ষ নেতা বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক সামরিক বাহিনী বারবার দেশকে বিদেশি আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেছে। ৫ আগস্ট দেশের ছাত্র-জনতা অনেক তাজা প্রাণ ও রক্তের বিনিময় দেশকে সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত করেছে এবং দেশের সামরিক বাহিনী ছাত্র-জনতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আমরা এমন এক সময় ৭ নভেম্বর পালন করতে যাচ্ছি, যখন জাতি নানা সংকটের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। জাতিকে আবার ফ্যাসিবাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নানামুখি চক্রান্ত শুরু হয়েছে। জাতি আবার ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদীরা পুনরায় ফিরে আসলে জাতি এক মহাসঙ্কটে নিপতিত হবে। এ অবস্থায় জাতিকে রক্ষা করার জন্য দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দল-মত নির্বিশেষে এবং বর্তমান সরকার ও সামরিক বাহিনীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

জাহেলিয়াত দূর করে ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি ফেরাতে হবে: শিবির সভাপতি

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০১ পিএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০২ পিএম
জাহেলিয়াত দূর করে ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি ফেরাতে হবে: শিবির সভাপতি
প্রকাশনা উৎসবে ছাত্রশিবিরের নেতারা। ছবি: খবরের কাগজ

জাতির মন-মগজে জেঁকে বসা হীনমন্যতা ও জাহেলিয়াতকে দূর করে ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতি প্রতিস্থাপন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সমাজে প্রচলিত জাহেলিয়াতপূর্ণ চিন্তা ও মূল্যবোধ আমাদের জাতির অগ্রগতি ও মঙ্গলকে বাধাগ্রস্ত করছে। এসব ভুল ধারণার বিরুদ্ধে ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রতিস্থাপন অপরিহার্য।’

বুধবার (৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ছাত্রশিবিরের ২০২৫ সালের প্রকাশনা সামগ্রীর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ও ঢাকার বিভিন্ন শাখা সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, ‘ইসলাম শুধুমাত্র একটি ধর্ম নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যা মানবতার সঠিক পথপ্রদর্শন করে। ইসলামী সংস্কৃতি ও নীতির মাধ্যমে আমরা আমাদের চিন্তা ও নীতি-নৈতিকতায় আমূল পরিবর্তন আনতে পারব, যা সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে যাবে। এটি আমাদের জাতির প্রকৃত মুক্তি ও সমৃদ্ধির পথে একমাত্র সঠিক দিশা।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির সঠিক অনুধাবন তরুণ ছাত্রদের মধ্যে গড়ে তোলার প্রয়াসে ছাত্রশিবির কাজ করে যাচ্ছে। পশ্চিমা বয়ান শুনে যারা ইসলামকে শুধুমাত্র একটি ধর্ম হিসেবে মনে করেছে, তাদেরকে ইসলামের বিশালতা বোঝানোর জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে, যার ধারাবাহিকতায় আমরা আমাদের প্রকাশনা-সামগ্রী সেই আলোকে সাজিয়েছি।’

সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মূল স্পিরিট ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ধারণ করে আসছে। জুলুম ও নির্যাতনের মূল উচ্ছেদ করে একটা বৈষম্যহীন সমাজ গঠন করার লক্ষ্যেই ইসলামী ছাত্রশিবির গঠিত হয়, যা জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের মূল চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই এ বছর আমরা আমাদের প্রকাশনায় এই আন্দোলনের শহিদদের আত্মত্যাগ ও সাহসী ভূমিকা বীরত্বগাথা গল্পগুলো স্থান দিয়েছি।’

প্রতি নতুন বছরেই আকর্ষণীয় প্রকাশনা সামগ্রী প্রকাশ করে ছাত্রশিবির। 

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

ক্যাম্পাস সংস্কারে ১২ দফা দাবি জবি ছাত্রশিবিরের

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ পিএম
ক্যাম্পাস সংস্কারে ১২ দফা দাবি জবি ছাত্রশিবিরের
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

জুলাই বিপ্লবের চেতনা রক্ষায় ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও বৈষম্যহীন ক্যাম্পাস বিনির্মাণসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহিদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন শাখা ছাত্রশিবির। 

এর আগে এসব দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিমের কাছে স্মারকলিপি দেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র শিবিরের পক্ষে স্বাগত বক্তব্য দেন জবি শাখার সেক্রেটারি জেনারেল আসাদুল ইসলাম এবং লিখিত দাবি উপস্থাপন করেন শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ইকবাল হোসেন শিকদার।

লিখিত বক্তব্যে, জুলাই বিপ্লবের চেতনা রক্ষায় শহিদদের মরণোত্তর ও আহতদের বীরত্বের সম্মাননা প্রদান, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিগত ১৫ বছরের সব নিয়োগ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ধারার ছাত্ররাজনীতি প্রবর্তনের লক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ কার্যকর, ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে স্থায়ী নীতিমালা এবং পরবর্তী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে জকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা। 

বর্তমান ক্যাম্পাসকে মূল ক্যাম্পাস রেখে কেরানীগঞ্জে নির্মাণাধীন ক্যাম্পাসকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়াসহ বর্তমান ক্যাম্পাসের পুরাতন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো পুনঃনির্মাণ এবং ক্লাসরুম সংকটে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখাকে স্থানান্তরেরও দাবি জানান তারা।

এছাড়া দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ ৬০ দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের দাবি জানানো হয়। 

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় বেদখল হওয়া হলগুলো উদ্ধার, ভবন পুনঃনির্মাণ এবং মাসিক আবাসন ভাতার ব্যবস্থা, দ্রুত দ্বিতীয় সমাবর্তনের আয়োজন এবং প্রতি দুই বছর অন্তর অন্তর সমাবর্তনের আয়োজনের দাবি জানান তারা।

এ ছাড়াও অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে জরুরি হটলাইন চালু, সব দলীয় সুপারিশ বা রাজনৈতিক পরিচয়ে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দুটি আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স, ক্যাফেটেরিয়ায় মানসম্মত খাবার নিশ্চিত এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন পুলে বাস বাড়ানোর দাবিও জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে শাখা শিবিরের অফিস সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক ইব্রাহিম আলী, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক শাহিন আহমেদ, দাওয়াহ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, বাইতুলমাল সম্পাদক মোহাম্মদ শাওন সর্দার, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মাইনুদ্দিন, স্কুল বিতর্ক ও তথ্যপ্রযুক্তি নাহিদ হাসান রাসেল, সমাজসেবা ও ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক মো. জুবায়ের আহমেদ, আবাসন ও পাঠাগার সম্পাদক মো. মাসুম বিল্লাহ, এইচআরডি ও ব্যবসায় শিক্ষা সম্পাদক মো. জাহেদ, আইন সম্পাদক মো. সোহান আহমেদসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অমিয়/

সিলেট মহানগর বিএনপি সুদিনের কমিটিতে স্থান পাননি দুর্দিনের নেতারা

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৬ পিএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৯ পিএম
সুদিনের কমিটিতে স্থান পাননি দুর্দিনের নেতারা
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

সিলেট মহানগর বিএনপির কাউন্সিলের ২০ মাস পর ঘোষণা করা হয়েছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি। সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করে ১৭০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।

গত সোমবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। 

কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময়কে ‘সুদিন’ আখ্যা দিয়ে এই কমিটি ঘোষণার পরই অভিযোগ ওঠে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পাননি বিগত কমিটির পদধারী এবং আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখা নেতা-কর্মীরা। এই কমিটি প্রকাশের পর পদবঞ্চিত নেতাদের পক্ষে ক্ষুব্ধ কর্মীদের একটি অংশ গত রবিবার রাতে সিলেট নগরীতে বিক্ষোভও করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এর আগে ২০২৩ সালের ১০ মার্চ কাউন্সিলরদের ভোটে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক পদে এমদাদ হোসেন চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সৈয়দ সাফেক মাহবুব নির্বাচিত হন। গত জুলাইয়ে নাসিম হোসাইনের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এখন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আবারও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পদে পরিবর্তন আনা হলো। এমনকি সদস্য পদেও স্থান পাননি দলের দুর্দিনে বিএনপির ব্র্যান্ড হিসেবে খ্যাত নেতা, সিসিকের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। 

কমিটি প্রকাশের পর খবরের কাগজের কাছে ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন পদবঞ্চিত নেতা। সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি, সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী খবরের কাগজকে বলেন, ‘এই কমিটির ব্যাপারে আমার কোনো ক্রিয়াও নেই প্রতিক্রিয়াও নেই। এই কমিটির বিষয়ে আমি কোনোভাবেই অবগত না। তাই কমিটিতে কে পদ পেল, কে পেল না এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে আমি রাজি না।’

দুঃখ প্রকাশ করেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সদস্য সালেহ আহমদ খসরু। তিনি বলেন, ‘নতুন কমিটি দেখার পর আমার স্পষ্ট মনে পড়ছে, ওই ছেলেগুলোর মুখগুলো। গুলিকে উপেক্ষা করে তারা পুলিশের গাড়িতে ইটপাটকেল মারছে। সেই যুবকগুলো যখন কমিটিতে থাকে না তখন আমার মতো ৬৪ বছরের রাজনীতি করা মানুষের কমিটিতে না থাকার কোনো আক্ষেপ নেই। শুধু দুঃখ আমার একটাই, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্বাধীনতায় সিলেট মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীরা বৈষম্যের শিকার। আরিফুল হক চৌধুরীর মতো নেতা যে কমিটিতে সম্মানিত সদস্য হতে পারেন না, তখন পুলিশের গুলিতে আমার যে রক্ত ঝরেছিল সে রক্তের ফোটা উৎসর্গ করলাম বৈষম্যের শিকার সব নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে।’ 

‘এই কমিটিতে বিগত আন্দোলনে যারা ছিলাম তারা তেমন কেউ নেই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই কমিটির ১৬৯ জনের মধ্যে পাঁচ থেকে সাতজন আন্দোলনকারী নেতা আছেন কমিটিতে। আর বাকি ১৫০ জনই আছেন যারা আন্দোলন-সংগ্রামে ঘরে বসে ছিলেন। 

সালেহ আহমদ খসরু আরও বলেন, ‘দল একটি কমিটি দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। যারা আমাকে এই কমিটিতে আনেনি, তারাও বলতে পারবে না যে আন্দোলন-সংগ্রামে আমি পিছনে ছিলাম। আমি হাসিনা সরকারের আমলের পুলিশের গুলি খেয়েছি। ৪৬ বছরের রাজনীতি করার পর আজও বৈষম্যের শিকার হতে হয় আমাকে। অথচ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফসল আজকের এই দেশ এবং ১৭ বছরের সংগ্রামের ওপর দাঁড়িয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত করেছি আমরা। তাহলে কি আমরা নিজ দলেই বৈষম্যের শিকার হলাম? দলের নেতার ওপর আমার কোনো অভিযোগ নেই। কারণ এত ছোটখাটো বিষয় দেখার কোনো সুযোগ তার নেই। কিন্তু যারা এই জিনিসটা করলেন, তাদের কি একবারও বিবেক সাড়া দেয়নি যে, আমরা কাদেরকে কমিটিতে আনছি আর কাদেরকে ফেলে দিচ্ছি!’

সিলেট মহানগর বিএনপির গত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বিগত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন আহমদ মাসুক খবরের কাগজকে বলেন, ‘এখনো আমাদের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতাদের নেতৃত্বে সংকল্পবদ্ধ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিগত আন্দোলনে যারা কোনো কিছুতেই যুক্ত ছিলেন না, অনেকেই আবার আওয়ামীঘেঁষা ছিলেন, এমন মানুষও কমিটিতে এসেছেন। আমরা ঘোষিত কমিটির বিরোধিতা করছি না। কিন্তু আমাদের ভবিষ্যৎ পথচলাকে মসৃণ করার জন্য ওয়ার্ড পর্যায়েও যেসব ত্যাগী নেতা-কর্মী বাদ পড়েছেন তাদের সংযোজন করার দাবিতে আমরা বিক্ষোভ করেছি। তবে আমরা অবশ্যই দলের নীতি-আদর্শ মানতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’