ঢাকা ২৮ কার্তিক ১৪৩১, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

ডোনাল্ড লু’কে দাওয়াত করা হয়নি, নিজেই এসেছেন: কাদের

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ০৩:১১ পিএম
আপডেট: ১৪ মে ২০২৪, ০৩:৪১ পিএম
ডোনাল্ড লু’কে দাওয়াত করা হয়নি, নিজেই এসেছেন: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’কে দাওয়াত করে আনা হয়নি, তিনি নিজ দেশের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে আলোচনা করতে এসেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে আসলেও তাদের ভিসা নীতিসহ কোনো ইস্যুকেই আমরা কেয়ার করি না। তিনি কোনো মন্ত্রীও নন, তাকে নিয়ে এত মাতামাতি কেন? তাকে আমরা নিমন্ত্রণ করে আনছি না, তারা তাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে এদেশে আসেন। সম্পর্ক থাকলে আসতে হয়।’

মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি একথা বলেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ডোনাল্ড লু-কে বিএনপি উপরে উপরে পাত্তা না দিলেও তলে তলে আবার কি করে কে জানে!’

বিএনপি তাদের সমমনাদের সঙ্গে বৈঠকে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলনে জোর দিয়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ভারতীয় পণ্য বয়কটের আন্দোলন তাদের ব্যর্থ চেষ্টা। বিএনপি’র কোনো নেতাই ভারতীয় পণ্য বর্জন করবে না। 

তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে টেস্ট কেস দেখলাম। এটা কি সম্ভব! ভারতীয় মসলা ছাড়া কি চলে! শাড়িসহ আরও অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আছে আনতে হয়। আমার মনে হয়, এটা বিএনপির উদ্ভট চিন্তা, ব্যর্থ চেষ্টা। আসলে সব হারিয়ে বিএনপি এখন খড়কুটো ধরে বাঁচতে চায়। তাদের কোন ইস্যু নেই। এখন ভারতীয় পণ্যকে ইস্যু করে নিয়েছে। বাংলাদেশের কাছে এটা নন ইস্যু।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ও সমমনাদের আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা নেই। সম্প্রতি ঢাকায় তাদের দুটি সমাবেশও ফ্লপ হয়েছে। তাদের কর্মীরা হতাশ, তারা তাদের নেতাদের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। 

মেট্রোরেলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, এটি বাস্তবসম্মত নয়। পৃথিবীর কোনো দেশেই মেট্রোরেলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের  নজির নেই। প্রতিবেশি দেশে ৫ শতাংশ পর্যন্ত নজির আছে। বাংলাদেশে এর যৌক্তিকতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভেবে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। 

ঢাকায় গণপরিবহনে লক্কর ঝক্কর বাস অপসারণ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, চলাচলে অযোগ্য লক্কর ঝক্কর বাসগুলো ডাম্পিং করা হবে। তবে সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনায় রেখে যেগুলো একরকম চলে সেগুলো এখনই ডাম্পিং নয়। 

ইলেকট্রিক বাস আমদানি নিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ইলেকট্রিক বাসের কথা আমরা বিবেচনা করছি। ইলেকট্রিক যানবাহন ব্যবহারকে উৎসাহিত করার আগ্রহ আছে সরকারের।

অমিয়/

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রোজি কবির আর নেই

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৯ এএম
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রোজি কবির আর নেই
রোজী কবির

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং সাবেক সংসদ সদস্য বেগম রোজী কবির আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) ভোর ৫টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

তিনি দীর্ঘদিন যাবত লিভারজনিত রোগে ভুগছিলেন। রোজি কবির দুই ছেলে, দুই মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও রাজনৈতিক সহকর্মী রেখে গেছেন।

জানা যায়, ঢাকা থেকে মরদেহ চট্টগ্রাম নিয়ে আসার পরে জানাজার সময় ঠিক করা হবে। 

এদিকে বেগম রোজি কবিরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। 

এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, বেগম রোজি কবিবের মৃত্যুর সংবাদ ছিল আমার জন্য ভীষণ কষ্টের। বিএনপির রাজনীতিতে তিনি ছিলেন একজন সৎ, ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতা। বিএনপি প্রতিষ্ঠার সময় থেকে চট্টগ্রামে দলকে সুসংগঠিত করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। সংসদ সদস্য থাকাকালীন চট্টগ্রামের উন্নয়নে তিনি কাজ করে গেছেন। স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। তিনি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার একদফা আন্দোলনে সাহসী নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ছিলেন দল-অন্তঃপ্রাণ নেতা।  চট্টগ্রামে বিএনপির রাজনীতিতে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

তিনি মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবার ও স্বজনের গভীর সমবেদনা জানান।

রাজনৈতিক জীবনে রোজী কবির তিন বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিএনপির জন্মলগ্ন থেকে দলটির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অসামান্য ভূমিকা পালন করেন বেগম খালেদা জিয়ার বিশ্বস্ত এই সহযোদ্ধা।

তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দল চট্টগ্রাম নগর কমিটির সভাপতি, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারীসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। 

মূলত, তার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় বড় ভাই সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও পরিকল্পনামন্ত্রী ব্যারিস্টার সুলতান আহমেদের হাত ধরে।

জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ছাড়াও তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বোর্ড মেম্বার ছিলেন। 

সফল এই রাজনীতিবিদের রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিচরণ ছিল উল্লেখ করার মতো। তিনি লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট, বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি, ডায়বেটিক অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ থ্যালেসামিয়া সমিতি, সাহিক, বিএনএসবি, শিশু একাডেমি, মহিলা ক্রীড়া সমিতি এবং আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। 

বেগম রোজী কবির চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর হালিশহরে প্রখ্যাত জমিদার পরিবার আজগর আলী চৌধুরীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দক্ষিণ হালিশহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবদুল মাবুদ সওদাগরের ছেলে এবং বন্দর থানা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং চট্টগ্রামের বিখ্যাত হোটেল শাহজান এবং এশিয়াটিক কটনমিলের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। রত্নগর্ভা বেগম রোজী কবিরের দুই ছেলে, দুই মেয়ে বিদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশ-বিদেশে কর্মরত আছেন। 

তার মৃত্যুতে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

অমিয়/

অবশেষে জানা গেল ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪০ এএম
অবশেষে জানা গেল ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের আলোচিত-সমালোচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ভারতে পালিয়ে গেছেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই তিনি কোথায় আছেন তা নিয়ে নানা কৌতূহল ও গুঞ্জন ছিল। কিন্তু তার অবস্থান সম্পর্কে গতকাল মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

কলকাতায় অবস্থানকারী আওয়ামী লীগের অন্তত তিনজন কেন্দ্রীয় নেতা খবরের কাগজকে নিশ্চিত করে বলেছেন, গত শনিবার সকালে স্ত্রীসহ কলকাতায় এসেছেন ওবায়দুল কাদের। গত শুক্রবার শেষ রাতে উত্তরবঙ্গের কোনো একটি রুট দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে ঢোকেন আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই নেতা।  

দলটির একজন সাংগঠনিক সম্পাদক খবরের কাগজকে বলেন, ‘দেখা হয়নি, ফোনেও কথা হয়নি। তবে তিনি (কাদের) কলকাতায় এসেছেন এটুকু জানি। তবে তিনি সেখানে অবস্থান করবেন না। দুই-তিন দিন কলকাতায় থেকে আগামী সপ্তাহে দিল্লি চলে যাবেন। তিনি সাধারণ সম্পাদক থাকবেন কি না, এরপরে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’  

কলকাতায় আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের মধ্যম সারির কয়েকজন নেতা জানান, ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকে দলীয় নেতা-কর্মীরা তাকে ভালোভাবে নেননি। বিশেষ করে দ্বিতীয়বার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে তার প্রতি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বিভিন্ন সময় বেফাঁস কথাবার্তা বলে দলকে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল করে দেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের মতো একটি দল ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পেছনে কেউ কেউ তাকে দায়ী করে থাকেন। ফলে কলকাতায় অবস্থান করলে এখানে থাকা ক্ষুব্ধ নেতারা ওবায়দুল কাদেরকে দেখলে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারেন। আর এমন পরিস্থিতিতে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটাও অস্বাভাবিক নয়। তাই তিনি দিল্লি চলে যাবেন। দেশে থাকলেও একই ঘটনা ঘটতে পারত। তার ওপর নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ। 

গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করে  ভারতে চলে যান। ওই দিন থেকেই দলটির মন্ত্রী-এমপিসহ উচ্চপর্যায়ের নেতারা কলকাতায় পালাতে শুরু করেন। এরপর থেকে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ও এর বাইরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ভারত যাওয়ার সময় ওবায়দুল কাদেরকে সঙ্গে নিয়ে যাননি। ফলে ঢাকায় ঘুরেফিরে প্রশ্ন ওঠে তাহলে দলটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা ওবায়দুল কাদের কোথায়?

অনেকে ধারণা করেছিলেন ভারত হয়ে তিনি সিঙ্গাপুর চলে গেছেন। আবার কেউ কেউ মত দেন তিনি দেশেই আছেন। ওবায়দুল কাদের যশোরের একটি বাড়িতে অবস্থান করছেন- এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে গত আগস্টে সেখানে অভিযানও চালানো হয়। সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কারের ঘোষণাও দেয় সরকার। গত ১৯ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এমন ঘোষণা দিয়েছেন। 

সর্বশেষ গত শনিবার রাতে চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আছেন- এমন সন্দেহে একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালানো হয়। হালিশহরের শান্তিবাগের ওই ফ্ল্যাটে ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী ইশরাতুন্নেসার বড় ভাই নুরুল হুদাকে পায় পুলিশ।

শেখ মুজিবের ছবি সরাতে গণঅধিকার পরিষদের আলটিমেটাম

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২২ পিএম
আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৪ পিএম
শেখ মুজিবের ছবি সরাতে গণঅধিকার পরিষদের আলটিমেটাম
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান। ছবি : সংগৃহীত

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারি সব অফিস-আদালত থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানোর আলটিমেটাম দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান। 

তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে প্রথম ভোট চুরির ইতিহাসের রচনাকারী। বাকশাল প্রতিষ্ঠার জনক। সুতরাং এ রকম একজন গণতন্ত্র হত্যাকারীর ছবি বাংলাদেশের সরকারি কোনো অফিসে থাকতে পারে না।’

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানোর দাবিতে গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। 

দলটির সদস্যসচিব ফারুক হাসান বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে গণতন্ত্র হত্যার মাধ্যমে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলেন। তার কন্যা শেখ হাসিনা দীর্ঘ ১৬ বছর বাকশালের চূড়ান্ত পর্যায়ে এ দেশকে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা সেই বাকশালের কবল থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করেছি। কিন্তু বাকশালের জনক শেখ মুজিবের ছবি আমাদের মাথার ওপরে, এটা মানতে পারছি না।’ 

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সদস্যসচিব তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা আর শেখ মুজিবের ছবির পূজা দেখতে চাই না। অতিদ্রুত শেখ মুজিবের ছবি সরাতেই হবে। মুজিবের চেহারা দেখিয়ে যেহেতু স্বৈরতন্ত্র কায়েম হয়েছে, মুজিবের এই ছবিটা আমরা কোনো দপ্তরে থাকতে দেব না। মুজিবের ছবি টাঙ্গিয়ে গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের অসম্মান করা হচ্ছে।’

মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ফয়সাল আহমেদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. ইরান, জিয়াউর রহমান, আব্দুল্লাহ আহমেদ প্রমুখ।

 

লন্ডনে সর্বদলীয় ওলামা সমাবেশে জামায়াতের আমীর ওলামাদের মধ্যে রুহানী ঐক্য প্রয়োজন

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭ পিএম
আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০১ পিএম
ওলামাদের মধ্যে রুহানী ঐক্য প্রয়োজন
পূর্ব লন্ডনের মায়েদা গ্রিল হলে বৃটেনের সর্বদলীয় ওলামা সংগঠন ‘বাংলাদেশি ওলামা মাশায়েখ ইউকে’ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ওলামাদের রূহানী ঐক্য প্রয়োজন। রূহানী ঐক্য হলে আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবারিত বারাকা লাভ করব। আমরা ঐক্য চাই। আবার বিভিন্ন শর্ত দিয়ে বসে থাকি। একজন শর্ত দিলে তো অন্যজনও শর্ত দেবেন। এভাবে শর্তের বেড়াজালে শেষ পর্যন্ত ঐক্য প্রক্রিয়া কঠিন হয়ে যায়। আমাদের দেশে আলেম ওলামার মধ্যে ছোট-খাটো বিষয়ে কিছু মতানৈক্য রয়েছে। সবার চিন্তা ও কর্মপরিধি একই ধরনের নয়। কিন্তু যারা জীবনের পাথেয় হিসেবে কোরআনকে কবুল করেছেন, হযরত মুহাম্মদ (স.) এর নেতৃত্বকে অকুন্ঠচিত্তে গ্রহণ ও স্বীকৃতি দেন এবং সাহাবায়ে কেরাম (রা.) কে আল্লাহ ও রাসূল (স.) এর আনুগত্যের ক্ষেত্রে বাস্তব মডেল মনে করেন, এই তিন জায়গা ঠিক থাকলে আমাদের মধ্যে ঐক্য হওয়া সম্ভব।’

সোমবার (১১ নভেম্বর) তিনি পূর্ব লন্ডনের মায়েদা গ্রিল হলে অনুষ্ঠিত বৃটেনের সর্বদলীয় ওলামা সংগঠন ‘বাংলাদেশি ওলামা মাশায়েখ ইউকে’ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বর্তমানে বৃটেনে সফররত জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘দ্বীন সবার। সুতরাং আমরা সবাইকে নিয়ে দ্বীনের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। কেউ আমাদের স্বীকৃতি বা মর্যাদা দিল কি না আমরা তার পরোয়া করব না। আমরা সবাইকে ভাই ও বন্ধু মনে করে সামনে আগানোর চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ। 

মতবিনিময় সভায় তিনি উপস্থিত ওলামা মাশায়েখদেরকে উদ্দেশে বলেন, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য যত ইসলামী সংগঠন ও মারকায রয়েছে, আপনারা আমাদের মধ্যে কোনো ভুল দেখলে সংশোধন করে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। আপনারা সহযোগিতা করলে আমাদের জন্য দ্বীনের পথে চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে। 

তিনি আলেমদের ভুল ধরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপনাদের ও আমাদের মধ্যে পারস্পরিক দোয়া, ভালবাসা ও সহযোগিতা থাকলে আমরা এগিয়ে যেতে পারব। 

তিনি বলেন, বৃটেনকে বিশ্বের বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এমন একটি পরিবেশে আপনারা আছেন যেখানে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়েও বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছেন। এখানে আপনাদের মেধার বিকাশের ক্ষেত্রে কেউ বাধা দেয় না, যেমনটি বাংলাদেশে বিভিন্নভাবে দেওয়া হয়। এখানে মেধার চর্চা বেশি হওয়ার কারণে আপনাদের ওপর আমাদের হকও বেশি। আপনারা সে হক আদায় করবেন ইনশাআল্লাহ। 

বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন ‘বাংলাদেশি ওলামা-মাশায়েখ ইউকে’র সভাপতি মাওলানা এ কে মওদুদ হাসানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা শাহ মিজানুল হক ও মাওলানা এফ কে এম শাহজাহান এর পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন ‘কাউন্সিল ফর মস্ক’ ও ‘ইশায়াতুল ইসলাম’ এর চেয়ারম্যান মাওলানা হাফেজ শামসুল হক, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল কাদির সালেহ, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি শাহ সদরদ্দীন, দাওয়াতুল ইসলাম ইউকের আমীর শায়খ আব্দুর রহমান মাদানী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ডক্টর শুয়াইব আহমদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা ফয়েজ আহমদ প্রমুখ।

মতিবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শেখ ইসহাক আল মাদানী, অধ্যাপক মফিজুর রহমান, মাজাহিরুল উলুম মাইল্ড এর প্রিন্সিপাল শেখ ইমদাদুর রহমান মাদানী, ড. আব্দুস সালাম আজাদী, বাংলাদেশি উলামা-মাসায়েখ এর সাবেক সভাপতি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা রেজাউল করীম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ইউকের সহ সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা আতাউর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সহ সভাপতি মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ, মসজিদে আয়েশা টটেনহামের খতীব মাওলানা খিজির হোসেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ইউকে’র সেক্রেটারি মুফতি সালেহ আহমদ, জমিয়তে উলামা ইসলাম ইউকে’র সেক্রেটারি মাওলানা সৈয়দ নাঈম আহমদ, খেলাফত মজলিস ইউকে সাউথ এর সহসেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশি ওলামা মাশায়েখ ইউক’র অর্থ সম্পাদক মাওলানা মুমিনুল ইসলাম ফারুকী, মাওলানা রফিক আহমদ রফিক, বাংলাদেশি উলামা মাশায়েখ ইউকে’র প্রচার সম্পাদক মাওলানা তায়ীদুল ইসলাম, দারুল উম্মাহ মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল হাসানাত চৌধুরী, খেলাফত মজলিস লন্ডন শাখার সহসম্পাদক মাওলানা দিলাওয়ার হোসেন প্রমুখ।

এমএ/

মঙ্গলময় রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়াই এখন প্রধান উদ্দেশ্য: ড. মঈন খান

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১১ পিএম
মঙ্গলময় রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়াই এখন প্রধান উদ্দেশ্য: ড. মঈন খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর এখন একটি মঙ্গলময় রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলাই প্রধান উদ্দেশ্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে 'সংবিধান সংস্কার' শীর্ষক সেমিনারে তিনি একথা বলেন।

মঈন খান বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো এমন একটি সিস্টেম তৈরি করা যার মাধ্যমে আমরা একটি রাষ্ট্রব্যবস্থার সৃষ্টি করবো যা জনগণের জন্য মঙ্গলকর হবে। এর জন্য যে কাজ করা প্রয়োজন তাই আমরা করবো। আমাদের উদ্দেশ্য সৎ হলে এতে কোনো বাধা থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ আর ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান পরস্পরবিরোধী নয় বরং একটি অপরটির পরিপূরক। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিষয়টিকে পর্যালোচনা করলে কোনো সংঘাত থাকবে না। এটা স্পষ্ট করতে হবে সংঘাতের রাজনীতিতে কোনো উন্নয়ন হবে না।

সেমিনারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, তিন মাসের মধ্যে ঐক্যের মধ্যে ফাটল দেখা যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী শক্তি ফিরে আসতে পারে।

আওয়ামী লীগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের চেয়ে বড় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল দেশে নেই। কিন্তু তারা গণতন্ত্রের কথা বলে দেশকে ধ্বংস করেছে। নিজেদের স্বৈরাচারী শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। গণতন্ত্রের মুখোশ পরে স্বৈরশাসকে অবতীর্ণ হয়েছে। পরে আবার গণঅভ্যুত্থানে তারা হারিয়ে গেছে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ক্ষমতার এমন ভারসাম্য তৈরি করতে হবে যাতে কেউ জনগণকে ছাপিয়ে যেতে না পারে। সেইসঙ্গে কার্যকর করতে হবে সংসদকে।

সাকি বলেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হলে দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না এমন বিধান চালু করা উচিত।

প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানোসহ সংবিধান সংস্কারে নাগরিক ঐক্যের ৫ প্রস্তাব

সেমিনারে সংবিধান সংস্কারের লক্ষ্যে ৫ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেছে রাজনৈতিক দল নাগরিক ঐক্য। সংবিধান সংস্কারবিষয়ক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার। 

তিনি বলেন, সংবিধানের পুনর্লিখন বা বর্তমান সংবিধান ছুড়ে ফেলে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে গেলে যে প্যানডোরার বাক্স খুলে যাবে, তা বন্ধ করা অসম্ভব হয়ে উঠবে। কেউ ইসলামিক প্রজাতন্ত্র চাইতে পারে, কেউ চাইতে পারে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকে ভিত্তি করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, কেউ আবার চাইতে পারে চব্বিশের আন্দোলনকে ভিত্তি ধরে নতুন করে বাংলাদেশের ইতিহাস লেখা হবে। রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজসহ অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে বিভাজন এত স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে যে, তা সংঘাতে রূপ নিতে পারে।

নাগরিক ঐক্যের যে পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরে রয়েছে, তা হলো—সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্রের উৎস প্রধানমন্ত্রীকেন্দ্রিক জবাবদিহিতাহীন স্বেচ্ছাচারী কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা ব্যবস্থার বদল ঘটিয়ে সংসদ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার পৃথককরণ ও যৌক্তিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা; সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার করে আস্থা ভোট ও বাজেট পাস ছাড়াই সব বিলে স্বাধীন মতামত প্রদান ও জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার নিশ্চিত করা; জনগণের ওপর নিবর্তনমূলক আইন প্রয়োগের সাংবিধানিক ক্ষমতা বাতিল করা; বিচার বিভাগের পরিপূর্ণ কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করে গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠা করা; নির্বাহী বিভাগের আর্থিক জবাবদিহি নিশ্চিত করতে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ রহিত করা।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। 

জয়ন্ত সাহা/এমএ/