ঢাকা ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
English

রিজার্ভ নিয়ে লুকোচুরি বরদাশত করা হবে না: ইসলামী আন্দোলন মহাসচিব

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৪, ০৯:৩৭ পিএম
রিজার্ভ নিয়ে লুকোচুরি বরদাশত করা হবে না:  ইসলামী আন্দোলন মহাসচিব
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, ‘রিজার্ভ নিয়ে সরকারের নানা মহলে নানা বক্তব্য আসছে। অপর দিকে ভারতের গণমাধ্যমে রিজার্ভ চুরির রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিজার্ভ নিয়ে আসলে কী ঘটেছে তা জাতির সামনে স্পষ্ট করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি রিজার্ভ নিয়ে কোনো প্রকার লুকোচুরি বরদাশত করা হবে না বলেও সরকারকে কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

শুক্রবার (২৪ মে) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইউনুছ আহমাদ আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিনের সমস্যা শুধু ফিলিস্তিনের নয়। মসজিদুল আকসা টোটাল মুসলিম উম্মাহর সম্পদ। উম্মাহর সম্পদ রক্ষা করার জন্য ওআইসিসহ মুসলিম বিশ্বকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আগামী ৩১ মে রাজধানী ঢাকায় স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের দাবিতে গণমিছিল সফল করার জন্য শান্তিকামী জনতার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।’
নগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, আলহাজ আলতাফ হোসাইন, আনোয়ার হোসেন, আবদুল আউয়াল, ডা. শহীদুল ইসলাম, কে এম শরীয়াতুল্লাহ, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, ফজলুল হক মৃধা, নজরুল ইসলাম খোকন, মাওলানা নজরুল ইসলাম, এম এম শোয়াইব প্রমুখ।

সবুজ/এমএ/
 

 

প্রয়োজনে ঢাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে শপথের আয়োজন করা হবে: ইশরাক

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১০:২৭ এএম
প্রয়োজনে ঢাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে শপথের আয়োজন করা হবে: ইশরাক
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে অবিলম্বে তার শপথ গ্রহণের আয়োজনের ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ঢাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়েই শপথের আয়োজন করা হবে।

মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরের পর ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগর ভবনে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

এ সময় তিনি আরও বলেন, মেয়রের চেয়ারে কে বসবেন তা নির্ধারণ করবেন ঢাকা দক্ষিণের বাসিন্দারা। নগর ভবনে বহিরাগতদের কোনো ঠাঁই হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। একই সঙ্গে ঈদ সামনে রেখে আজ থেকে আন্দোলন স্থগিতের কথাও জানান ইশরাক হোসেন। বলেন, দাবি আদায় না হলে এই ছুটির পর আবারও আন্দোলন করা হবে। সেই আন্দোলন হবে আরও কঠোর।

ইশরাক বলেন, এই নগর ভবনে কোনো বহিরাগত প্রশাসক ও কোনো উপদেষ্টা প্রবেশ করতে পারবেন না। ঈদে নগরবাসীর সেবা নিশ্চিত করা ও জনগণের ভোগান্তি বিবেচনায় নিয়ে আপাতত কর্মসূচি শিথিল করা হয়েছে। সরকার এর মধ্যে শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিলে জনগণই তাদের মেয়রকে শপথ পড়িয়ে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন।

অবিভক্ত ঢাকা সিটির মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক মাস দু-এক আগে আদালতের রায়ে মেয়র হওয়ার সুযোগ পান। এরপর নির্বাচন কমিশন তাকে মেয়র ঘোষণা করলেও আইনি জটিলতার কথা বলে তার শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ নিয়ে তার সমর্থকরা প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে নগর ভবনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সর্বশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস। এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেননি ইশরাক। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।

এর আগে গতকাল সকাল থেকেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ঢাকা মহানগরের বাসিন্দারা।

‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে নগর ভবন প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি শুরু হয়। করপোরেশনের কর্মচারীরাও এতে অংশ নেন। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিক্ষোভকারীরা বলেন, আদালতের রায়ের পরও ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোর কারণে পরিষ্কার হলো যে অন্তর্বর্তী সরকার আসলে নিরপেক্ষ নয়। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে নগর ভবনের মূল ফটকে ১৫ মে থেকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এতে কার্যত বন্ধ হয়ে আছে সিটি করপোরেশনের সব ধরনের দৈনন্দিন সেবা কার্যক্রম। বন্ধ হয়ে আছে হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স, জন্মনিবন্ধনসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা।

এই বাজেটের সঙ্গে হাসিনার বাজেটের পার্থক্য কী: রিজভী

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৯:৫৫ এএম
এই বাজেটের সঙ্গে হাসিনার বাজেটের পার্থক্য কী: রিজভী
ছবি: সংগৃহীত

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, ‘এই বাজেটের সঙ্গে শেখ হাসিনার বাজেটের পার্থক্য কী? শেখ হাসিনা কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিলেন, আপনারাও তা দিয়েছেন। এটা তো অন্তর্বর্তী সরকার, এটা ড. ইউনূসের সরকার। মানুষ জানে এ সরকার সৎ সরকার। এই সরকারের হাত দিয়ে কেন খারাপ কাজ হবে, এটা মানুষ জানতে চায়।’

মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক অনুষ্ঠানে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকীতে দুস্থদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল।

রিজভী বলেন, ‘যে লুটেরা, ব্যাংক ডাকাতদের কাছে কালোটাকা রয়েছে, তারা যদি ওনার (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) হাত দিয়ে সেই টাকা সাদা করতে পারে এবং যদি স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য সেক্টর বঞ্চিত হয়, ওই সব খাতে যদি বরাদ্দ না থাকে, সামাজিক সুরক্ষা খাতে যদি বরাদ্দ কম থাকে, তাহলে মানুষের কল্যাণের কী হবে?

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটের ২৩ শতাংশের ওপরে চলে যাবে শুধু প্রশাসনের বেতনের জন্য। তাহলে গরিব মানুষের জন্য, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আপনি কী রেখেছেন? লাভের গুড় তো পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলছে। তাহলে জনগণের জন্য কী করলেন? আপনি স্বাস্থ্য খাতে, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছেন। বরাদ্দ বেশি দরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। মানুষের ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা রাষ্ট্র দেখবে। ড. ইউনূস পৃথিবীব্যাপী অনেক কথা বলেছেন। আজকে যখন তার হাতে ক্ষমতা, তিনি তো গরিব মানুষকে ভালো রাখবেন।’

রিজভী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল ড. ইউনূসকে সমর্থন দিয়েছে। বাজেটে গরিবের জন্য বরাদ্দ নেই। গরিবকে আরও গরিব করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি কমানোর পদক্ষেপ বাজেটে আমরা দেখতে পাচ্ছি না। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাজেটে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর চাপ আরও বাড়বে।’ 

তাঁতী দলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

বাগেরহাটে বিএনপি নেতা শিপন কাজীর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৯:৪৬ এএম
বাগেরহাটে বিএনপি নেতা শিপন কাজীর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়
বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য খায়রুজ্জামান শিপন ওরফে শিপন কাজী

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাগেরহাট-৪ আসনের মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা এলাকায় দখল ও চাঁদাবাজির জন্য নিজস্ব বলয় গড়ে তুলেছেন বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য খায়রুজ্জামান শিপন ওরফে শিপন কাজী। এই আসনে তার কথাই যেন শেষ কথা। ক্ষমতার পালাবদলের পর মোড়েলগঞ্জ-শরণখোলার শত শত বিঘা মাছের ঘের দখলের অভিযোগ উঠেছে শিপন কাজী ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।

সূত্রের দাবি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, প্রশাসন, সরকারি অফিস- সবই এখন শিপনের নিয়ন্ত্রণে। তার রোষানলে পড়ে বিএনপির ত্যাগী অনেক নেতা-কর্মীও এলাকাছাড়া। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গত বছরের ১২ আগস্ট দেশে ফিরেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরও দলে টেনেছেন তিনি। ইতোমধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও শিপন কাজী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন একাধিক ভুক্তভোগী। সম্প্রতি চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে শিপন কাজীকে দ্বিতীয় দফায় শোকজ করেছে বিএনপি।

বাগেরহাট-৪ আসন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে লিজ দিয়েছেন এবং স্বয়ং খালেদা জিয়া বললেও কাজ হবে না- শিপন কাজীর এমন একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। তা ছাড়া শিপন কাজীর বিরুদ্ধে ঢাকার মতিঝিলের ওয়ান ব্যাংকের ঋণখেলাপিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এলাকায় আলোচনা আছে, এই আসনে কোথায় কী হবে, সবই ঠিক করে দেন শিপন কাজী। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেলেই প্রতিপক্ষকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ ট্যাগ দিয়ে মোবাইল ফোনে প্রাণনাশের হুমকি এবং হামলা-মামলার ভয়ভীতি দেখানো হয়।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ প্রসঙ্গে খবরের কাগজকে বলেন, ‘তাদের অভিযোগপত্র আমি হাইকমান্ডে পাঠিয়েছি। তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই চলছে। ইতোমধ্যে শিপন কাজীকে শোকজ করা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘দলীয় নির্দেশ অমান্য করে চাঁদাবাজি ও দখল-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত থাকলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

অভিযোগ উঠেছে, শেখ হাসিনার পতনের পর মোড়েলগঞ্জের ১২ নম্বর জিউধরা ইউনিয়নের শনিরঝোর-ডেওয়াতলা এলাকায় তানিয়া ইসলামের নামে থাকা ৬০ বিঘা এবং ১৫ বিঘার দুটি মাছের ঘের দখল করে নিয়েছেন শিপন কাজী ও তার সহযোগীরা। অভিযোগ করে খবরের কাগজকে তানিয়া ইসলাম বলেন, ‘শিপন কাজীর নেতৃত্বে বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম সোহাগ সরদার, ইউনিয়নের সাবেক সহসভাপতি মহিউদ্দিন খান রিপন, রাখি, ইব্রাহিম, মন্টু তালুকদার, আসাদুল, ওসিকুল, সাদ্দাম গং অস্ত্রের মুখে আমার কাছ থেকে জমির লিজ চুক্তিনামায় সই করিয়ে নিয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে ইতোমধ্যে নগদ ৫০ হাজার টাকা ও ৩০ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে বিকাশের মাধ্যমে দিয়েছি। তিনটি ঘেরে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’ 

তানিয়া ইসলাম জানান, ১৯৮৮ সাল থেকে নিজস্ব জমিতে ঘের করে আসছে তার পরিবার। ঘের দখলের ঘটনায় শিপন কাজী ও তাদের সহযোগীদের নামে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বাগেরহাট জেলা বিএনপি ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো ঢাকার তিনটি থানায় তার নানা ও দুই মামার নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন শিপন কাজীর সহযোগীরা।

এদিকে জিউধরা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলামের বাড়িঘর ভাঙচুর ও ১৭ বিঘা মাছের ঘের লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে শিপন কাজী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে এলাকায় থাকতে পারলেও বর্তমানে আমি পরিবার নিয়ে ঘরছাড়া। অথচ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে শিপন কাজীর সঙ্গেই রাজপথে আন্দোলন করেছি। শেখ হাসিনার পতনের পর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দলে ভিড়িয়ে এখন বিএনপির লোকজনের ওপর হামলা চালাচ্ছেন তারা। ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।’

সূত্রের দাবি, জিউধরা ইউনিয়নের শুধু এই দুই ঘের নয়, মৌলভীবাজার টু ঘরামী বাজারের মাঝে পারভেজ মৃধার ৭০ ও ৫০ বিঘার দুটি ঘের, ইমরান খানের ১৯০ বিঘা, মাহবুব খানের ৭৫ বিঘা এবং সাইদুল মেম্বারের ২০ বিঘার ঘেরের মাছ লুটসহ দখল করে নিয়েছেন শিপন কাজীর অনুসারীরা। এসব ঘেরে তিন থেকে চার কোটি টাকার মূল্যের মাছ ছিল। শিপন কাজীর এপিএস বদর শিকদার, ইউনিয়নের সভাপতি কামাল খান, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হাওলাদার, দাউদ মৃধা, লোকমান তালুকদার, গিয়াস মৃধা, সোহেল তালুকদার, আলতাফ খান, বাচ্চু মৃধা, জুলহাস, কামাল ঘরামী, রুবেল হাওলাদার, মুকুল খান, কামাল খান গং এসব ঘের দখল করেছেন। এদের মধ্যে দাউদ, গিয়াস ও সোহেল আওয়ামী লীগ থেকে রাতারাতি বিএনপি নেতা বনে গেছেন। আর এদের আশ্রয়দাতা শিপন কাজী। জমির প্রকৃত মালিকদের লিজের টাকাও দেননি। হামলার ভয়ে তারা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বহরবুনিয়া ইউনিয়নের রিপন তালুকদার চেয়ারম্যানের ৮০ বিঘা, মিলন তালুকদারের ১০০ বিঘা, আলী ফরাজীর ৬০ বিঘা, রফিকুল ফরাজীর ৫০ বিঘা, মামুন শেখের ৪০ বিঘা, মাসুদের ৮০ বিঘা, তরিকুল ইসলাম গোলাপের ১০০ বিঘা, বয়াসিংগার মোস্তফার ২২ বিঘা এবং রুম্মানের ৬৫ বিঘা মাছের ঘের লুটপাটসহ দখল করে নিয়েছেন শিপন কাজীর অনুসারীরা। বহরবুনিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি নজরুল ইসলাম, কৃষক দলের আহ্বায়ক মাসুম হাওলাদার, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাজমুল ইসলাম রাকির নেতৃত্বেই এসব ঘের দখল হয়েছে। এ ছাড়া বারইখালী ইউনিয়নে সুমনের ৩০ বিঘার ঘের জোর করে দখল নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শিপনের অনুসারী রিপন খান ও কামাল খানের বিরুদ্ধে। তবে হামলার ভয়ে এসব ঘেরমালিকরা মুখ খুলতে বা থানায় অভিযোগও করতে ভয় পাচ্ছেন। আবার অনেকে তাদের টাকা দিয়েও নিজেদের রক্ষা করতে পারেননি। তারা এখন এলাকাছাড়া। 

এদিকে মোবাইল ফোনে শিপন কাজী ২০ লাখ টাকা চাঁদা ও মাসোহারা দাবি করেছেন গ্রিসের বাঙালি কমিউনিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইসলামের কাছে। জাহিদ গ্রিসের ‘বয়েজ ফর গ্লোবাল’ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এবং ‘জাহিদ ইসলাম’ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতাও। চাঁদা দাবির এই কল রেকর্ড খবরের কাগজের হাতে রয়েছে। জাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমি দুই দশক ধরে গ্রিসে থাকি। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। গ্রিসের একটি বাঙালি কমিউনিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকায় নানা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন শিপনের অনুসারীরা। অথচ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গেই আমার বেশি ছবি রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গেও বৈঠকের ছবি রয়েছে। তা ছাড়া আমার ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।’

জাহিদ ইসলাম বলেন, ‘শিপন কাজীর ভয়ে দেশে এসেও অসুস্থ বাবা-মায়ের সঙ্গেও দেখা করতে পারিনি। সর্বশেষ আব্বা-আম্মার দোয়া মাহফিলের খাবারও ফেলে দিয়েছেন। আমাকে মোবাইল ফোনেও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি বাগেরহাটের এসপিকে জানিয়েও প্রতিকার পাইনি। পরে এসব অভিযোগ লিখিতভাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।’ 

মোড়েলগঞ্জ উত্তর সুতালড়ী শফিজউদ্দিন দাখিল মাদ্রাসায় ১৪ লাখ চাঁদাবাজির অভিযোগ ও হামলার ঘটনায় শিপন কাজীসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মাদ্রাসার সুপার এম জহিরুল আলম। ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর বাগেরহাট জেলা জজ আদালতে এই মামলা করা হয়েছে। জহিরুল আলমের কাছে চাঁদা দাবি ও মারার হুমকি দেওয়ার কল রেকর্ডও খবরের কাগজের হাতে রয়েছে। 

শরণখোলার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদলের পর সুন্দরবন এলাকায় শিপন কাজীর সহযোগী শরণখোলা উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আনোয়ার হোসেন পঞ্চায়েত ও তার গ্রুপের নেতৃত্বে বিভিন্ন চর দখলে নিয়েছে। এর মধ্যে ইলিশাচর, ছাপরাখালী, খেলারচর, কটকা, কচিখালী- এসব অভয়ারণ্যে চর ও জেলেরা তাদের নিয়ন্ত্রণে। 

স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, জিউধারা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর বাদশা ও শিপন কাজী সম্পর্কে বেয়াই। তার চাচাতো ভাই যুবলীগ নেতা কাজী সাইফুজ্জামান রাসেল। এদের হাত ধরেই আওয়ামী লীগের মতিউর রহমান বাচ্চুসহ অনেকেই এখন বিএনপিতে যোগদান করেছেন। নব্য বিএনপির দাপটে অনেক সিনিয়র নেতা চুপ হয়ে গেছেন। অথচ ওয়ান-ইলেভেনের সময় থেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলেছেন শিপন। খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতারা জেলে থাকলেও শিপন ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার চড়ে বাড়িতে আসতেন। তার সামনে-পেছনে থাকত পুলিশ ও র‌্যাবের গাড়ি।

এলাকার অনেকে জানান, মূলত একশ্রেণির নারীকে ব্যবহার করে এবং তাদের মাধ্যমে টোপ দিয়েই প্রথমদিকে রাজনীতিতে শিপন কাজীর প্রবেশ। এভাবে সমাজের প্রভাবশালীদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে সারা দেশে চাঁদাবাজি ও দখলের সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। কিন্তু এখন তিনি এতটাই শক্তিশালী যে তার বিরুদ্ধে হাইকমান্ডের নির্দেশনা সত্ত্বেও অভিযোগ থাকলে অদৃশ্য শক্তির কারণে ব্যবস্থা গ্রহণ আটকে যায়। 

মোড়েলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মতলুবুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘এই এলাকায় দখল-বেদখল চলে। কিছু অভিযোগ শুনেছি। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

শিপন কাজীর দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকরাম হোসেন তালিম খবরের কাগজকে বলেন, ‘দপ্তর থেকে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আমরা শিপন কাজীকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিলাম। কিন্তু কী কারণে হাইকামান্ড ব্যবস্থা নেয়নি তা জানি না।’ এদিকে জেলা বিএনপির সমন্বয়ক এম এ সালাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘মোড়েলগঞ্জে দু-একটা অভিযোগ আসছিল। আমি বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।’ 

বিএনপির গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম বলেন, ‘যারা চাঁদাবাজি ও দখলবাজি করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ও দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

অভিযোগের বিষয়ে বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য খায়রুজ্জামান শিপন কাজী খবরের কাগজকে বলেন, ‘কোথাও আমার একটাও মাছের ঘের নেই। আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপির লোকজনের ঘের দখল হয়েছিল, সেগুলো বিএনপি ও সাধারণ মানুষ উদ্ধার করেছেন। এখানে আমার বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নেই। একটা কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে রাজনীতিতে অবস্থান নিতে না পেরে এগুলো প্রচার করছে।’

তিনি বলেন, ‘সামনে আমি নমিনেশন চাইব। বিএনপির আরেকটা গ্রুপ আছে যারা এলাকায় যায় না, জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় তারা বিএনপিকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে নীলনকশায় নামছে। তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে, ষড়যন্ত্র করছে।’

মাদ্রাসার সুপারকে চাঁদা দাবি ও হুমকি দেওয়ার বিষয়ে শিপন বলেন, ‘এই মাদ্রাসায় আমার বাপ-দাদারা ২০ বিঘা সম্পত্তি দিয়েছেন। আমার দাদার নামের এই মাদ্রাসার প্রধান আওয়ামী লীগের ওলামা লীগের সদস্য। প্রভাব খাটিয়ে টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে আওয়ামী লীগের লোকজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। মাদ্রাসা শেষ করে দিয়েছেন, এখন কোনো ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয় না।’

প্রবাসী জাহিদ ইসলামের বাড়িতে হামলার প্রসঙ্গে শিপন কাজী বলেন, ‘তারা নিজেরা বাড়িতে হামলা করে বিভিন্ন মিডিয়ায় নিউজ করিয়েছে। এর সঙ্গে আমি কোনোভাবে সম্পৃক্ত নই।’ 

নির্বাচনি রোডম্যাপ দিতে দেরি হলে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠবে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১০:২২ পিএম
নির্বাচনি রোডম্যাপ দিতে দেরি হলে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠবে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা দিতে যত দেরি হবে, তত বেশি সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে জাতির মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে প্রাজ্ঞ ও সামর্থ্যের মধ্যে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, যার শুরু হওয়া উচিত দ্রুত নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার মাধ্যমে।’

মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। বর্তমানে বিএনপি মহাসচিব থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ফেসবুক পোস্টে মির্জা ফখরুল লেখেন, ‘চোখের একটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনের পর চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী বিমান ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে। তবু আমি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং চেষ্টা করছি একটি ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসতে।’

তিনি বলেন, ‘গতকালের (সোমবার) বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ায় আমি আশা বোধ করেছি। আমি অপেক্ষা করছি, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণের ক্ষেত্রে স্পষ্ট অগ্রগতি, গত ১৫ বছরে (বিশেষত জুলাই ২০২৪-এ) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের প্রতি ন্যায়বিচার এবং কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের জন্য অপেক্ষায় আছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে গণতান্ত্রিক পথে উত্তরণ, বিচার ও সংস্কার—এই তিনটি বিষয় একে অপরের পরিপন্থি নয়। এগুলো এক সঙ্গেই হতে পারে। এটাই আমাদের জাতির জন্য সামনে এগিয়ে যাওয়ার উত্তম পথ। আসুন, বাংলাদেশকে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রে রূপান্তরের পথে এগিয়ে নেওয়ার এই সুযোগ যেন হাতছাড়া না করে ফেলি।’

টালবাহানা বাদ দিয়ে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন: আমিনুল হক

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১০:০১ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ১০:০৩ পিএম
টালবাহানা বাদ দিয়ে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন: আমিনুল হক
শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করেন আমিনুল হক। ছবি: সংগৃহীত

অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেছেন, টালবাহানা বাদ দিয়ে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনের সকল রাজনৈতিক দল আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। অনতিবিলম্বে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।

মঙ্গলবার (৩ জুন) দিনব্যাপি মিরপুর ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে পল্লবী থানা যুবদল, দোয়ারীপাড়ায় রূপনগর ৯২নং ওয়ার্ড বিএনপি ও ট-ব্লক স্বেচ্ছাসেবকদল রূপনগর থানাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) এর ৪৪ তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।  

অন্তবর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে সংস্কার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে আমিনুল হক বলেন, আপনারা সংস্কার চান, আমরাও অনেক আগে থেকেই সংস্কার চাই। এদেশের সাধারণ মানুষ সংস্কার চায়। কিন্তু সেটা হতে হবে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকারের অধীনে। কারণ সংস্কার ও বিচারের নামে গত ১০ মাসে এখন পর্যন্ত আপনারা কোনো সংস্কার করতে পারেন নাই। আপনারা এখন পর্যন্ত পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে পারেন নাই। আপনারা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাঙ্ক্ষিত অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেন নাই।

বাংলাদেশের মানুষের ভিতরে স্থিতিশীল অবস্থা আসেনি ও অস্থিরতা বিরাজ করছে মন্তব্য করে আমিনুল হক বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অবস্থা ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। তারপরও আমরা আশা করছিলাম পতিত স্বৈরাচার সরকার বাংলাদেশের অর্থনীতিকে যে দূর্বল করে দিয়ে গেছে, এই অন্তবর্তী সরকারের সময়ে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সুদৃঢ় হবে। দূর্বল অর্থনীতিতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। কিন্তু ১০ মাস পার হয়ে গেছে এখনও পর্যন্ত দেশে কোনো বিনিয়োগ আসছে না। বিনিয়োগ না আসার অন্যতম কারণ বাংলাদেশের মানুষের ভিতরে স্থিতিশীলতা আসেনি, মানুষের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এটার মূল হচ্ছে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। তাই সেই দিক থেকে চিন্তা করলে নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং আমরা আশা করব, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করে মানুষের ক্ষমতা মানুষের হাতে ফিরিয়ে দেবে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা। 

অন্তবর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা শুরু করে দিয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, অন্তবর্তী সরকারের ভিতরে কিছু পতিত আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রকারী, কিছু বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী এবং এই অন্তবর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টারা তারা নির্বাচনকে পিছিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করছে। কারণ তারা ক্ষমতার মোহে পড়ে গেছে।  

তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছর ধরে এদেশের সাধারণ মানুষ তারা ভোট দিতে পারেনি। মানুষ ভোট দিতে চায়। ভোটের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে জনকল্যাণে কাজ করবে বলেও তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।  

বিকেলে পল্লবীতে অসুস্থ বিএনপি নেতা মো. হারুনকে দেখতে তার বাসভবনে যান আমিনুল হক। এসময় স্হানীয় বিএনপিও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন।