
কিশোরগঞ্জের বৌলাই ইউনিয়ন পরিষদের শূন্যপদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৭ জুলাই। এরই মধ্যে এক চেয়ারম্যান প্রার্থী পুলিশকে আহত করে ৭০ রাউন্ড গুলি রেখে দেওয়ার এক মিনিট ২৬ সেকেন্ডের বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল সেই বক্তব্যকে এডিটিং দাবি করে বুধবার (১০ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ৬নং বৌলাই ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বৌলাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. মুজিবুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
তিনি সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশের ওপর হামলার বক্তব্যটি মিথ্যা প্রমাণ করতে চাচ্ছেন।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, পুলিশকে আহত করে ৭০ রাউন্ড গুলি রেখে দেওয়ার যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেটি এডিট করে ছড়ানো হয়েছে।
এদিকে ভাইরাল ভিডিওটি বৌলাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দাবি করে স্থানীয় ভোটাররা জানান, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোট নিতে এসব বক্তব্য দিয়েছেন তিনি।
পুলিশের ওপর হামলা করে গত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে পাটধা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর এবং পুলিশের অস্ত্র ও গুলি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর মামলা হয়েছে, তবে অস্ত্র এবং সেই ৭০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে কি-না, সে সম্পর্কে কেউ কিছুই জানেন না।
ছিনিয়ে নেওয়া সেই ৭০ রাউন্ড গুলি কি এখনো উদ্ধার হয়েছে কি-না, সে সম্পর্কে পুলিশ সূত্রেও কিছু জানা যায়নি।
তবে আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটের ১নং আসামি হচ্ছেন মো. মুজিবুর রহমান।
এ বিষয়ে স্থানীয় বৌলাই আওয়ামী লীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলন তো শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো। বৌলাই ইউনিয়নের পাটধা কুড়ের পাড় বডু মার্কেটে মুজিবুর মাইকে যে বক্তব্য দিয়েছে তা শত শত মানুষ শুনেছে। বক্তব্য কি এডিট করা যায় নাকি!’
তিনি আরও বলেন, ‘গত নির্বাচনে পুলিশকে আহত করে গুলি রেখে দেওয়ার কথা বলে, পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে, ভোটারদের মাঝে একটা আতঙ্ক তৈরি করেছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে যদি ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো হয়, তা হলে নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে আসবে না। এ ছাড়াও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় যে মামলাটি হয়েছিল সে সম্পর্কে সবাই জানে। বক্তব্য দিতে গিয়ে সত্যি কথাটা মুজিবুরের মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে। এখন সংবাদ সম্মেলনের নাটক করছে।’
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘যখন বৌলাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তখন আমি ছিলাম না। তবে এইটুকু জানি মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।’
এ বিষয়ে সদর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফাওজুল কবীর খান বলেন, ‘ভিডিওর বক্তব্যটি আমি দেখেছি। বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিবুর রহমানকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন শেষ হওয়ার পরের দিন পর্যন্ত যেন নির্বাচনি আচরণবিধির লঙ্ঘন না করে নোটিশের মাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছে। এর পরও যদি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে, তা হলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তাসলিমা মিতু/সাদিয়া নাহার/অমিয়/