ঢাকা ১৬ বৈশাখ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ‘প্রটোকল বাহিনী’র দৌরাত্ম্য চরমে

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১১:২০ এএম
আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১১:২৩ এএম
ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ‘প্রটোকল বাহিনী’র দৌরাত্ম্য চরমে
ছবি : সংগৃহীত

ধানমন্ডির ৩ নম্বর রোডের কার্যালয়ে ‌‘প্রটোকল বাহিনী’র দৌরাত্ম্য বেড়েছে। এ বাহিনীর কারণে দলের দুর্দিনের সাবেক ছাত্রনেতাদের আসা কমে গেছে এই কার্যালয়ে। তাদের হাতে সারা দেশ থেকে আসা জেলা আওয়ামী লীগের নেতারাও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। অভিযোগ আছে, দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তোলা ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে চাঁদাবাজি, পদ-বাণিজ্যসহ নানা অপকর্ম করছেন এদের অনেকে। 

কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন সুবিধাবাদী ও হাইব্রিডরা আওয়ামী লীগে ভিড়তে থাকেন। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই কার্যালয়ে হাইব্রিড ও অনুপ্রবেশকারীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। তাদের ১০-১২ জন মিলে তৈরি হয় একটি চক্র। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও মন্ত্রী-এমপিরা গাড়ি থেকে নেমে দলীয় সভাপতির কার্যালয়ের ভেতর যাওয়ার সময় এই চক্রের সদস্যরা চারপাশ ঘিরে নেতাদের কার্যালয়ের ভেতর নিয়ে যান। শুধু কার্যালয়ে নয়, দলের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যাওয়ার জন্য গাড়ি থেকে নামলে মঞ্চ পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যান এই চক্রের সদস্যরা। এ কাজের জন্য কার্যালয়ের কর্মচারী ও সাবেক ছাত্রলীগের নেতারা এই চক্রের সদস্যদের নাম দিয়েছেন ‘প্রটোকল বাহিনী’। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এদের কেউই ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বলে। 

আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পাঁচজন নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, একসময় আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের নেতা ও মন্ত্রীদের চারপাশে ছাত্রলীগের তুখোড় নেতারা থাকতেন। কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর এই প্রটোকল বাহিনীর তৎপরতা বেড়ে যায়। যাদের হাত থেকে রেহাই পাননি আওয়ামী লীগের দুর্দিনের ত্যাগী ও সাবেক ছাত্রনেতারা। এই কারণে অভিমানে ছাত্রলীগের সাবেক অনেক নেতাই এই কার্যালয়ে যাতায়াত তুলনামূলক কমিয়ে দিয়েছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের সাবেক এক সাধারণ সম্পাদক খবরের কাগজকে বলেন, ‘এসব বাহিনী নিয়ে কিছু বলতে চাই না। দলীয় নেতাদের কাছে নতুনরা আপন হয়েছেন আর পুরাতন ছাত্রনেতারা হয়ে গেছেন পর।’

কার্যালয়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের দিকে এই কার্যালয়ে প্রটোকল বাহিনীর প্রধান মাহমুদুল আসাদ রাসেলকে মাঝেমধ্যে দেখা যেত। বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত থাকায় সে সময় সাবেক ছাত্রলীগের নেতারা তাকে বহিরাগত বলেও ডাকতেন। ২০১৮ সালের দিকে রাসেলের সঙ্গে প্রটোকল বাহিনীতে যোগ দেন নাহিদ কামাল পলাশ, ওয়ালিউর রহমান বুলেট, নাজমুল মুন্সিসহ আরও কয়েকজন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে এই বাহিনীতে যোগ দেন পরশ খান শাকিব। কার্যালয়ে শাকিব নতুন করে একক বলয় তৈরি করতে চাইলে বাহিনীর অন্য সদস্যদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, এই বাহিনীর সদস্যরা মূলত নেতাদের প্রটোকল দেওয়ার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। নেতাদের সঙ্গে প্রতিদিনের তোলা ছবি প্রটোকল বাহিনীর মূল পুঁজি। অভিযোগ আছে, নেতাদের সঙ্গে ছবি দেখিয়ে তৃণমূল থেকে আসা দলীয় নেতা-কর্মীদের পদ ও মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেয় ওই বাহিনী। সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা বলে তারা বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ আছে। সচিবালয়ে একাধিক মন্ত্রীর দপ্তরে এই বাহিনীর সদস্যদের নিয়মিত যাতায়াত করতেও দেখা যায়। তবে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পরও চাকরি দিতে না পারায় আওয়ামী লীগের দপ্তরে এসব সদস্যের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগও দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগের একাধিক কপি খবরের কাগজের হাতে এসেছে। 

বিতর্কিত রাসেলকে শুধু শোকজ নয়, বহিষ্কারের দাবি 
নিজেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রটোকল অফিসার পরিচয় দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেন মাহমুদুল আসাদ রাসেল। এক সাংবাদিককে মারধর করে আবার আলোচনায় আসেন প্রটোকল বাহিনীর শীর্ষে থাকা মাহমুদুল আসাদ রাসেল। গত সোমবার দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দৈনিক যুগান্তরের নিজস্ব প্রতিবেদক রফিকুল ইসলামের ওপর অতর্কিত হামলা করেন রাসেল ও তার সঙ্গে থাকা প্রটোকল বাহিনীর সদস্যরা। তারা তাকে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি দিতে থাকেন। পরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এগিয়ে আসার পর রাসেল তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে সরে পড়েন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাহমুদুল আসাদ রাসেল সবার কাছে মাস্তান রাসেল ওরফে কিসলু ওরফে সেলফিবাজ রাসেল ওরফে তদবিরবাজ রাসেল নামে পরিচিত। রাজবাড়ী জেলার নেতা হলেও বসবাস করেন ঢাকায়। আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতার বদান্যতায় পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের মতো পদ। এখন সার্বক্ষণিক অবস্থান করছেন ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ অফিসে। দলের এক সিনিয়র নেতাকে (শীর্ষ) দেন বিশেষ ‘প্রটোকল’। রাসেলের নিজের ফেসবুকের টাইমলাইনে নেতাদের প্রটোকল দেওয়ার ছবিও নিয়মিত শেয়ার করেন। পরে বিভিন্ন সময় নেতাদের কাছ থেকে নেন বিশেষ সুবিধা। রাসেলের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা ও প্লট দখলের অভিযোগ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বরাবর একাধিক অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

চলতি বছরের মে মাসে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বরাবর রাসেলের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া নিয়োগ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ করেছেন ওয়া ওয়েনসে মারমা নামের এক নারী। অভিযুক্ত রাসেল ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত প্রটোকল অফিসার বলে নিজেকে পরিচয় দিয়ে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন ওই নারী। এই পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন রাসেল। এই পরিচয়ে দলের উপকমিটিতে পদ দেওয়ার কথা বলে তিন নেতার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তারা। এ ক্ষেত্রে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে তোলা ছবিগুলো রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করেন রাসেল। 

রাজবাড়ী জেলার এক কৃষকের ছেলে রাসেলের ঢাকার আজিমপুর ইরাকি মাঠের পাশে দুটি ফ্ল্যাট ও কামরাঙ্গীরচরে জমির খোঁজ পাওয়া গেছে। ফ্ল্যাট দুটির মধ্যে একটি তিনি কিনেছেন, অন্যটি দখল করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কোনো আয় না থাকলেও চলেন ব্যক্তিগত গাড়িতে। রাজবাড়ী জেলায় নিজেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত অফিসার বলেও পরিচয় দেন রাসেল। রাজবাড়ী আওয়ামী লীগের তিনজন নেতা তাকে শুধু শোকজ নয়, দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান। 

প্রটোকল অফিসার পরিচয় দিয়ে মহিলা আওয়ামী লীগের পদ দেওয়ার কথা বলে রিমা নামের এক নারীর কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন রাসেল। কিছু টাকা রাসেলকে দেন রিমা। কিন্তু সময়মতো পুরো টাকা রাসেলকে দিতে না পারায় দলীয় পদ পাননি রিমা। জানতে চাইলে রিমা খবরের কাগজকে বলেন, ‘রাসেলকে কিছু টাকা দিয়েছিলাম পদের জন্য। কিন্তু পুরো টাকা দিতে না পারায় দলীয় পদ পাইনি, তবে টাকা ফেরত নিয়েছি। চা খাওয়ার জন্য কিছু টাকা রাসেল আমার কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছেন।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা বলেন, ‘সে (রাসেল) নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলে দাবি করত। তবে সে কখনোই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল না। ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে মুহসিন হলে থাকত। সে সময় তাকে ‘কিসলু রাসেল’ বলে ডাকা হতো। ২০১০ সালে মোটরসাইকেল ছিনতাই চক্রের মূল হোতা হিসেবে রাসেলকে মেরে ছাত্ররা পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়। সে সময় শাহবাগ থানা-পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এ বিষয়ে অবগত করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় যখন রাসেলকে বহিষ্কারের জন্য তদন্তে নামে, তখন দেখা যায় রাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই না। একইভাবে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কারের জন্য তদন্ত করে দেখা যায় সে ছাত্রলীগের কোনো পদে ছিল না।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মাহমুদুল আসাদ রাসেল নিজেকে ‘সেফ’ করার অনুরোধ জানিয়ে খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি না হয় একটা ভুল (সাংবাদিককে মারধর) করেছি। তাই বলে সবাই এভাবে আমাকে ধরবেন?’ তদবির-বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এসব আমি কিছুই করিনি।’ 

রাসেলের মতো তার সঙ্গীরাও ছাত্রলীগের পরিচয় ব্যবহার করলেও তাদের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে নাহিদ খান পলাশ আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে আনাগোনা শুরু করেন। তিনি এই প্রটোকল বাহিনীর সদস্য। দৃশ্যমান কোনো ব্যবসা না থাকলেও ঢাকা শহরে ফ্ল্যাট নিয়ে বসবাস করেন তিনি। রাসেলের অন্যতম সহযোগী এই পলাশ। দলের শীর্ষ পর্যায়ে এক নেতাকে প্রটোকল দিয়ে ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সদস্য হয়েছেন পলাশ। 

নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে শেয়ার করেন প্রটোকল বাহিনীর সদস্য নাজমুল মুন্সি ও ওয়ালিউর রহমান বুলেট। তাদের নামেও অভিযোগের কমতি নেই। অর্থের বিনিময়ে উপকমিটি পদ ও তদবির-বাণিজ্য করে থাকেন তারা। চাকরি দেওয়ার কথা বলে রাসেলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন নাজমুল ও বুলেট। সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনের এই প্রটোকল বাহিনীতে যোগ দেন পরশ খান শাকিব। অষ্টম শ্রেণি পাস পরশ বছরখানেক আগে মেট্রোরেল প্রজেক্টে চতুর্থ শ্রেণির চাকরি করেছেন। চাকরি চলে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেন শাকিব। নোয়াখালীর শাকিব এক বছরের মধ্যে নিজের চালচলন পরিবর্তন করে নিজেকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতার ঘনিষ্ঠ লোক বলেও পরিচয় দিতে শুরু করেন। আওয়ামী লীগের ওই নেতার চেম্বারের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকেন শাকিব। কাউকে পছন্দ না হলে ওই নেতার চেম্বারে ঢুকতে দেন না তিনি। তার বিরুদ্ধেও তদবির-বাণিজ্য, টাকার বিনিময়ে চেম্বারে ঢুকতে দেওয়া, পদ-বাণিজ্য ও দলীয় নেতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। 

ওই কার্যালয়ে দীর্ঘদিন চাকরি করেন এমন একজন এই প্রটোকল বাহিনীর বিষয়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দুর্নাম করছে এই প্রটোকল বাহিনী। একজনকেও ২০১৪-১৫ সালে দেখিনি। কোথা থেকে এসে নিজেদের আওয়ামী লীগ বলে পরিচয় দিতে থাকেন। কারও ভালো কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। নেতাদের প্রটোকল দিয়ে নিজেরাও নেতা হয়ে গেছেন।’ 

শাকিবের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছেলেটাকে এক বছর ধরে কার্যালয়ে দেখছি। সে নতুন করে বেশি উৎপাত করছে। কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না। নেতাদের নাম ভাঙিয়ে চলে। এক বছরের মধ্যে ছেলেটা কী থেকে কী হয়ে গেল। কোথা থেকে এত টাকা পায় এরা। আমরা তো ছাত্ররাজনীতি করেছি। আমাদের তো এত টাকা নেই।’ 

জানা গেছে, রাসেল বাহিনীর এমন বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে বিব্রত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গত মঙ্গলবার দলীয় এক যৌথ সভা শেষে ক্ষোভ প্রকাশ করে বাহিনীর প্রধান মাহমুদুল আসাদ রাসেলকে শোকজের নির্দেশ দিয়েছেন।

সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় ওবায়দুল কাদের দুঃখ প্রকাশ করেন এবং দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াকে অভিযুক্ত মাহমুদুল আসাদকে শোকজ করার নির্দেশ দেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতোপূর্বেও তার (রাসেল) বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। সে আমার নাম ব্যবহার করেও নাকি অপকর্ম করেছে।

এ সময় ওবায়দুল কাদের মাহমুদুল আসাদ রাসেলসহ তার সঙ্গীদের ২৩ নম্বর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগের কার্যালয় এবং দলের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রবেশ না করতে নির্দেশ দেন।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বিব্রত হন। খবরের কাগজকে তিনি বলেন, ‘এরা কারা এবং কাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এসব অপকর্ম করে সেগুলো খুঁজে বের করুন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্রয়দাতাদের কাছে জানুন।’

চাঁদপুর মেহের কলেজের সভাপতি পদে বৃটিশ নাগরিক, প্রত্যাহার চান সদস্যরা

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৩ পিএম
চাঁদপুর মেহের কলেজের সভাপতি পদে বৃটিশ নাগরিক, প্রত্যাহার চান সদস্যরা
ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের মেহের ডিগ্রি কলেজের সভাপতি হিসেবে বৃটিশ নাগরিক ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকনকে মনোনীত করায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে তার মনোনয়ন প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছেন কলেজটির গভর্নিং বডির ৮ সদস্য। সম্প্রতি এ বিষয়ে তারা চিঠি দিয়েছেন।

চিঠিতে বলা হয়, গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে আনোয়ার হোসেন খোকনকে মনোনীত করেছেন, যা অধ্যক্ষের মাধ্যমে জানাতে পারি। আমাদের জানামতে, তিনি একজন বৃটিশ নাগরিক এবং বর্তমানেও তিনি দেশ ও লন্ডন মিলিয়ে অবস্থান করছেন। গত ২০ বছরে তিনি বাংলাদেশে হাতেগোনা কয়েকবার এসেছেন। তাও আবার বৃটিশ পাসপোর্টে। এরকম একজন ব্যক্তিকে সভাপতি মনোনীত করায় আমরা চরমভাবে হতাশ এবং কলেজ পরিচালনা সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছি। এমতাবস্থায় এই বিদ্যাপিঠটির সুনাম ও কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনার স্বার্থে মেহের ডিগ্রি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতির মনোনয়ন প্রত্যাহার করে, কলেজ কর্তৃক দাখিলকৃত প্রস্তাব অনুসারে সভাপতি মনোনয়ন পদে নিয়োগ দেওয়ার পুনঃর্বিবেচনার দাবি জানানো হচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে, মূলত বিএনপির নাম ভাঙিয়ে আনোয়ার হোসেন খোকন এই কলেজের সভাপতি পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির নীতিমালা ৯নং অনুসারে অধিভুক্ত কলেজে গভর্নিং বডির সভাপতি ও সদস্যরা বাংলাদেশের নাগরিক হবেন এবং তাহারা সাধারণভাবে বাংলাদেশের বাসিন্দা হবেন। ওই হিসেবে এ নিয়োগ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নীতি বহির্ভূত ও সাংঘর্ষিক।

জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ই মার্চ সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দীন আহমেদ ও কলেজ অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান প্রতিস্বাক্ষর করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট কলেজ পরিদর্শক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর প্রেরণ করেন। প্রস্তাবে কলেজের সভাপতি পদে ৩ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়। তারা হলেন- যথাক্রমে মো. আবু ইউসুফ, মোহাম্মদ কামরুল আহসান মজুমদার এবং মো. আবদুল সাত্তার। 

গভনিং বডির সদস্য ও দাতা প্রতিনিধি মো. আয়েত আলী ভূঁইয়া বলেন, আমাদের প্রস্তাবকৃত ৩ জনের নামের তালিকায় তার নাম নেই। তারপরও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি একজন বৃটিশ নাগরিককে কিভাবে নিয়োগ দিল? 

সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র আবেদনকারী সদস্যরা হলেন, মো. আবু ইউসুফ, সুফিয়া আক্তার, যদু চন্দ্র শীল, মো. জাকির হোসেন, গাজী মো. কবির হোসেন, মো. আবুল কাশেম, মো. আয়েত আলী ভূঁইয়া এবং মো. ইকবাল হোসেন। 

এই বিষয়ে বিএনপির আন্তজার্তিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

শফিকুল/সিফাত/

জনগণ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায়: আমিনুল হক

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৬ পিএম
জনগণ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায়: আমিনুল হক
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের জনগণ একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর বাংলা কলেজ মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে জিয়া আন্তঃ থানা ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫ এর উত্তরা পশ্চিম থানা বনাম তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার মধ্যকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

এসময় আমিনুল হক বলেন, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দ্রুত সময়ের ভিতরে দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। কারণ বাংলাদেশের জনগণ ভোটের আশায়, সুষ্ঠু নির্বাচনের আশায় ফ্যাসিষ্ট হাসিনাকে বিদায় করেছে।

একটি মহল তারা ক্ষমতার মোহে পরে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময়ে কেউ ভোট দিতে পারে নাই। মানুষ এখন ভোট দিতে চায়। মানুষের ভোটের অধিকার নষ্ট করার জন্য পিছিয়ে দেওয়ার জন্য একটি গোষ্ঠী নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। 

পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নেমে আন্দোলন করব উল্লেখ করে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, গত ১৭ বছর ধরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মানুষের ভোটাধিকার ও দেশের গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথে আন্দোলন করেছে সংগ্রাম করেছে। প্রয়োজনে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আবারও রাজপথে নেমে দেশে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত করব। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব মো. মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এবিএমএ রাজ্জাক, আকতার হোসেন, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, হাজী মো. ইউসুফ, আফাজ উদ্দিন আফাজ, মাহাবুব আলম মন্টু, মহানগর সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, শামীম পারভেজ, জিয়াউর রহমান জিয়া, হাফিজুর রহমান শুভ্র, নূরুল হুদা ভূইয়া নূরু, হান্নানুর রহমান ভূঁইয়া, তাসলিমা রিতা, উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপি নেতা মো. আবদুস ছালাম, মিরপুর থানা বিএনপি আহ্বায়ক হাজী আব্দুল মতিন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী দেলোয়ার হোসেন দুলু, বিমানবন্দর থানা বিএনপি যুগ্মআহ্বায়ক মহিউদ্দিন তারেক, খিলক্ষেত থানা বিএনপি যুগ্মআহ্বায়ক মোবারক হোসেন দেওয়ান প্রমুখ।

উত্তরা পশ্চিম থানা বনাম তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার মধ্যকার ম্যাচে উত্তরা পশ্চিম থানা ১-০ গোলে জয়ী হয়।

 

গাজার মতো আরেকটি পরিস্থিতি চাই না: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৫ পিএম
আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৪ এএম
গাজার মতো আরেকটি পরিস্থিতি চাই না: মির্জা ফখরুল
ঠাকুরগাঁওংয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: খবরের কাগজ

রাখাইনে মানবিক করিডোর দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও এ অঞ্চলের ভবিষ্যৎ শান্তি ও স্থিতিশীলতার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রাখাইনে মানবিক প্যাসেজের সিদ্ধান্ত। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের শেখ বাজার এলাকায় গণসংযোগকালে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খবরে জানতে পারলাম, বাংলাদেশ আরাকান আর্মির জন্য মানবিক প্যাসেজ দিয়েছে। এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের আগে সরকারের উচিত ছিল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা। মানুষের পাশে দাঁড়াতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই, তবে বিষয়টি অবশ্যই জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে হওয়া উচিত। আমরা আরেকটি গাজার মতো পরিস্থিতি চাই না।’

রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশের ওপর ইতোমধ্যেই চাপ তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নতুন কোনো সংকটে আমরা জড়াতে চাই না।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান সরকারের প্রধান দায়িত্ব একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা, যেখানে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে। বিগত ১৫ বছরে আমরা সুষ্ঠুভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারিনি। আওয়ামী লীগ দেশটাকে জাহান্নামে পরিণত করেছিল। এখন আল্লাহর রহমতে একটি পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। আসুন, সবাই মিলে একটি সুন্দর দেশ গড়ার চেষ্টা করি।’

পরে তিনি বড় খোঁচাবাড়ি এলাকায় আরেকটি গণসংযোগ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

নবীন হাসান/মাহফুজ 

 

ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে গণসংহতি আন্দোলন

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩১ পিএম
আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৩ পিএম
ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে গণসংহতি আন্দোলন
গণসংহতি আন্দোলন

বাংলাদেশে একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে অধিকতর সমঝোতা ও ঐক্য তৈরি করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় ঐক্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর এ বিষয়ে তৎপরতা জোরদার করতে গণসংহতি আন্দোলন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ বিষয়ে দলের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘জনগণের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে তাকে বাস্তবায়ন করা সব রাজনৈতিক দলের কর্তব্য, এ বিষয়ে সবাই একমত। কিন্তু সেটা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, কোন কোন ক্ষেত্রে পার্থক্য কমিয়ে অধিকতর ঐক্যমত্য সৃষ্টি করা যায়, সেসব বিষয়ে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলব।’

দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, ‘সংস্কার এবং নির্বাচন উভয়ই দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য আবশ্যক। ফলে গণতান্ত্রিক উত্তরণের যে আকাঙ্ক্ষা জনগণের ভেতরে আছে তাকে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে আমরা শিগগিরই অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে বসতে শুরু করব।’

এ সময় দলটির নেতারা আশা প্রকাশ করেন যে, বর্তমান জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ভেতর দিয়েই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ও মানবিক রূপান্তর সম্ভব।

সুমন/

জনগণ কারা, প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চান খসরু

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫১ পিএম
জনগণ কারা, প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চান খসরু
ছবি: খবরের কাগজ


জনগণ বলতে কাদের বুঝিয়েছে? প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, জনগণ বলতে যদি কোনো একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে অথবা কোনো বিশেষ সুযোগ-সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধাচারণ করছে। এটা তো কারো বুঝতে সমস্যা হওয়ার কারণ নেই।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এক প্রতিক্রিয়া তিনি এসব কথা বলেন।

আমির খসরু বলেন, কোনো মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন সংগ্রাম করে নাই, ত্যাগ শিকার করে নাই। আর কোনো মহামানব কোনো দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য বাংলাদেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নাই।

তিনি বলেন, গত ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অর্ডার ফিরিয়ে আনার জন্য। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি থাকবে। সেটা যেই সরকারই হোক।

নির্বাচন প্রসঙ্গে আমির খসরু বলেন, যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমাদের সাথে যারা রাস্তায় ছিলো ইতিমধ্যে প্রায় ৫০টি দল পরিষ্কারভাবে বলেছে ডিসেম্বরের আগে নির্বাচনের জন্য এবং সঙ্গে সঙ্গে সংস্কারের যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেই সংস্কার দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়ে নির্বাচনের দিকে যাওয়ার জন্য। 

এদিন বিকালে ন্যাপ ভাসানী, আমজতার দল ও পিপলস পার্টি- তিন দলের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। বিএনপির পক্ষ থেকে আমির খসরু ছাড়াও বৈঠকে অংশ নেন ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।

শফিকুল/সিফাত/