
ছাত্র আন্দোলনকে ভুল পন্থায় নিয়ন্ত্রণ ও নির্দয়ভাবে দমন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পুরো দেশকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি।
দলটি বলেছে, ‘সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এখন বিএনপি-জামায়াত ও তারেক রহমানকে সবকিছুর জন্য দায়ী করে প্রচারণা চালাচ্ছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর ওপর চাপিয়ে প্রকারান্তরে বিএনপিকেই জনপ্রিয় করা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে হিরো বানানোর মিশন নিয়েছে সরকার।’
বুধবার (২৪ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে এবি পার্টির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ও সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু এসব কথা বলেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পার্টির দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রিপন মাহমুদ প্রমুখ।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় তথ্য প্রবাহ বন্ধ রেখে সরকার সব সংবাদমাধ্যমকে নিজেদের বানানো কাহিনি প্রচারে বাধ্য করেছে, এতে হিতে বিপরীত হচ্ছে। মানুষ এখন এতটাই বিরক্ত যে, সরকারের এসব একতরফা প্রচারণায় দুয়েকটা সত্য তথ্য থাকলেও মানুষ তাও বিশ্বাস করছে না। সরকারের পজিটিভ মোটিভেশনকেও জনগণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে বিবেচনা করছে।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে সরকার নতুন প্রজন্মকে জোরপূর্বক যা গলাধঃকরণ করাতে চেয়েছিল, মাত্র ৩ সপ্তাহের আন্দোলনে তরুণ প্রজন্ম সব কিছু উল্টে দিয়েছে। সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে গণমানুষের এত বিরক্তি ও ক্ষোভ দেখে কোনো বিবেকবান নাগরিক হতবাক না হয়ে পারেননি। জাফর ইকবালের মতো দলান্ধ লেখকও হতাশায় মুষড়ে পড়তে বাধ্য হয়েছেন।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের শিল্পী, কলাকুশলী, খেলোয়াড়, শিক্ষক সমাজ এমনকি সোশ্যাল মোটিভেটররাও ছাত্রদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে সরকারকে বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু সরকার সে বার্তা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। জনগণের মতামতকে গুরুত্ব না দিলে ইতিহাসের করুণ পরিণতি বরণ ছাড়া ক্ষমতাসীনদের আর কোনো পথ থাকবে না।’
ছাত্রদের আন্দোলন ‘সরকারের একটা সাজানো প্লট’ বলে মন্তব্য করে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘কারণ রেল ট্রানজিটের নামে ভারতকে একতরফা করিডোর দেওয়া ও সরকারের বড় বড় কর্তাব্যক্তিদের হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে সব রাজনৈতিক দল রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলছিল। আন্দেলনের দিক থেকে জনগণের দৃষ্টি সরাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আগেই সমাধান হয়ে যাওয়া কোটা প্রসঙ্গটিকে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে সামনে আনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ-বিজিবির বেপরোয়া গুলি ও গণহারে ছাত্রহত্যার পর পরিস্থিতি আর কারও নিয়ন্ত্রণে থাকেনি। কত মানুষ মারা গেছে, কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সেসব বিষয়ে জনগণ এখনো অন্ধকারে আছে।’
আওয়ামী লীগের ভুল রাজনীতির কারণে দেশে গৃহযুদ্ধ আসন্ন এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করে মঞ্জু বলেন, ‘অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহার, গণগ্রেপ্তার বন্ধ, সবার জন্য ইন্টারনেট সেবা চালু ও আন্দোলনরত ছাত্রদের দাবিগুলো মেনে না নিলে সরকার গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবে এবং এর পুরো দায় তাদের ওপরই বর্তাবে।’
শফিকুল/সালমান/