ঢাকা ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
English

আগস্টকে ‘দ্রোহের মাস’ হিসেবে পালন করুন: আ স ম রব

প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৩৯ পিএম
আপডেট: ০১ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৫৪ পিএম
আগস্টকে ‘দ্রোহের মাস’ হিসেবে পালন করুন: আ স ম রব
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। ছবি: সংগৃহীত

বিদ্রোহের আগুনে দগ্ধ আগস্ট মাসকে ‘দ্রোহের মাস’ হিসেবে পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে, আন্দোলনে অতুলনীয় সংগ্রামী বীরদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য পুরো আগস্ট মাসকে দ্রোহের মাস হিসেবে পালন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এখন থেকে আগস্ট মাস হবে ‘দ্রোহের মাস’। দ্রোহের মাসের প্রতীক হবে লাল রঙ। মাথায়, হাতে এবং বুকে লাল রঙ ধারণ করে সন্তানদের আত্মত্যাগের মহিমাকে সমুন্নত করতে হবে। 

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতি তিনি এ আহ্বান জানান। আগস্টকে ‘দ্রোহের মাস’ হিসেবে উল্লেখ করার কারণ হিসেবে ৩ দাবি ও ৪টি করণীয় তুলে ধরেন জেএসডি সভাপতি।

আ স ম রব বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে জুলাই মাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। রক্তাক্ত জুলাইয়ে সরকারের নিষ্পেষণ আর স্টিমরোলারের অত্যাচারে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে দেশ। মরণপণ লড়াইয়ে নেমেছে ছাত্র-জনতা। 

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অভূতপূর্ব ও অকল্পনীয় গণজাগরণ স্তব্ধ করতে সরকার অসংখ্য নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করেছে। এই মাসটি ‘রক্তাক্ত জুলাই’, ‘গণহত্যার জুলাই’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এবারের আন্দোলনে ছাত্র-তরুণদের সঙ্গে নারীদের যে তেজর্স্বিতা প্রকাশ পেয়েছে, তাতে বিজয় অনিবার্য হয়ে পড়েছে। সংগ্রামের উর্বর ভূমিতে গণঅভ্যুত্থান আসন্ন। এই লড়াইয়ে সবাইকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিন দাবি হল- ভয়ংকর রক্তাক্ত জুলাই বা জুলাই ম্যাসাকারে সংঘটিত প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। হত্যার শিকার বীর ভাই-বোনদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্মৃতিস্তম্ভ করতে হবে। বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ অর্থাৎ সর্বাত্মক গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে হবে। 

দ্রোহের মাসে ৪ করণীয় হল- রক্তাক্ত জুলাইয়ের গণহত্যার শিকার এই প্রজন্মের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানার্থে নতুন করে ‘শহিদ মিনার’ নির্মাণ করতে হবে। যেখানে যে-বীর ও সূর্য সন্তান হত্যার শিকার হয়েছেন, সেখানেই রাস্তা, অ্যাভিনিউ, স্থাপনা-তাদের নামে চিহ্নিত করতে হবে। সকল বীরের নাম ভূমিকাসহ পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিত্র প্রদর্শনীসহ শহিদদের পোর্ট্রেট করতে হবে।

শফিক/এমএ/

জামায়াত যেকোনো সময় নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত: ডা. শফিকুর রহমান

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৩:০২ পিএম
জামায়াত যেকোনো সময় নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত: ডা. শফিকুর রহমান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ভোটের সমতল মাঠ তৈরি হয়ে গেলে যেকোনো সময় নির্বাচনে অংশ নিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা ফেব্রুয়ারি টু এপ্রিল একটা ফ্লেক্সিবল টাইম মেনশন করেছি। প্রথমে ফেব্রুয়ারি বলেছিলাম, পরে এপ্রিল পর্যন্ত আমরা এটাকে ফ্লেক্সিবল করেছি। 

অন্যদিকে বিএনপি ডিসেম্বরকে স্ট্রিক্ট করেছে। এখন যদি ডিসেম্বরে ইলেকশন হয়, সেখানে আমাদের ভূমিকা কী হবে? ডিসেম্বর কেন, আজকেও যদি আমি দেখি সমতল মাঠ তৈরি হয়ে গেছে এবং এখন ফেয়ার ইলেকশনের পক্ষে জাতি প্রস্তুত, সব অর্গান প্রস্তুত, সেই ইলেকশনে তো আমরা যাব। আমাদের তো যেতে কোনো সমস্যা নেই। এটা ডিসেম্বর নিয়ে কোনো কথা না।’

মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন। জামায়াতের নিবন্ধন বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিয়ে অবস্থান জানাতে এই ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘এ বিষয়গুলো পরিষ্কার না করে ডিসেম্বরে, এপ্রিলে নির্বাচন হলেও কোনো লাভ হবে না। এ জন্য এ বিষয়গুলো পরিষ্কার হওয়াই হচ্ছে বড় ব্যাপার, বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী রোজার আগে অথবা যদি কোনো কারণে সম্ভব না হয়, তাহলে এপ্রিলের মধ্যেই নির্বাচন হওয়া উচিত। কারণ, আবহাওয়ার কারণে মে মাসের পর নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আমরা সময় বেঁধে দিতে চাই না।’

প্রবাসীদের ভোটের ব্যবস্থা করা দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের অবশ্যই ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু ইসির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।’

বাংলাদেশের ওপর কারও আধিপত্য মেনে নেওয়া হবে না জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘প্রতিবেশীদের সঙ্গে সহজ সম্পর্ক রক্ষার পক্ষে জামায়াত। বাংলাদেশকে ন্যায্য সম্মান দিতে হবে।’

নির্বাচন কমিশন নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন তুলেছে এনসিপি। বিদ্যমান কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কি না- প্রশ্নে শফিকুর রহমান বলেন, ‘জামায়াত আরও দেখতে চায়। কমিশনের কাজেই প্রমাণ হবে তাদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি না। এ ক্ষেত্রে সুপারিশ হলো, জাতীয় নির্বাচন ভাগ্যনির্ধারণী। ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়া স্থানীয় সরকারে আর কোথাও জনপ্রতিনিধি নেই। জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে। তাই আগে স্থানীয় নির্বাচন দেওয়া উঠিত। স্থানীয় নির্বাচনের মাধ্যমে কমিশনের সক্ষমতা এবং সদিচ্ছার প্রমাণ পাওয়া যাবে।’

জামায়াত আমির বলেন, ‘জামায়াত নেতারা ট্রাইব্যুনালে হত্যার শিকার হলেও, আওয়ামী লীগ ন্যায়বিচার পাক। ন্যায়বিচার হলে তাদের সাজা হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘আশা করছি, দ্রুতই নিবন্ধন এবং প্রতীক ফিরে পাব। এখনকার নির্বাচন কমিশন যেন চেয়ারের সম্মান করে জামায়াতকে প্রতীক ফিরিয়ে দেয়। ব্যতিক্রম হলে জামায়াত চুপ থাকবে না।’ 

‘মিট দ্য প্রেসে’ আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির মজিবুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুমসহ অন্য সিনিয়র নেতারা।

নির্বাচন সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়, বিচার স্বাধীনভাবে চলবে: সালাহউদ্দিন

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০২:১২ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ০২:১২ পিএম
নির্বাচন সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়, বিচার স্বাধীনভাবে চলবে: সালাহউদ্দিন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এখন জাতীয়ভাবে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। নির্বাচন সম্পূর্ণ আলাদা বিষয় এবং বিচার স্বাধীনভাবে চলবে। এই সরকারের পরে যারা সরকারে আসবে, তাদের সেটা টেনে নিয়ে যেতে হবে।

মঙ্গলবার (৩ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণ অধিকার পরিষদ আয়োজিত ‘গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। সেগুলোর বিচার করতে গেলে অনেক সময় লাগবে এবং সেই সময়ে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে বিচারের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে। সুতরাং, বিচারের সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক সরাসরি আছে, সেটা বলা ঠিক হবে না। আর বিচারের জন্য সময় নির্ধারণ করে দেওয়া অবিচারের শামিল। কারণ, বিচারের দীর্ঘ প্রক্রিয়া আমরা সবাই জানি এবং সুবিচার করতে হলে সময় দিতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘এ দেশে কেউ অপরাধ করে পার পাবে না। দেশে এবং বিদেশে বসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অস্থিরতা সৃষ্টির অনেক চেষ্টা হয়েছে। অস্থির পরিস্থিতি বন্ধের উপায় হলো, একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তি প্রতিষ্ঠিত করা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সেটি যত দ্রুত বাস্তবায়ন হবে, ততই জাতির জন্য মঙ্গল।’

প্রধান উপদেষ্টা জবাব দেন না, মিষ্টি হাসি দিয়ে বিদায় করে দেন
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘একটিমাত্র রাজনৈতিক দল নির্বাচন চায়- অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তার এ বক্তব্যের বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি এবং তিনি কোনো জবাবদিহি করেন না। এমনকি সামনাসামনি প্রশ্ন করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তিনি প্রশ্নের জবাব না দিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বিদায় করে দেন অথবা কোনো কথাই বলেন না।’

প্রশ্ন রেখে মান্না বলেন, ‘ডিসেম্বরের আগে একটিমাত্র দল নির্বাচন চায়। এমন একটা ভুল করা কি অধ্যাপক ইউনূসের জন্য সংগত? এটা কি মানায় তার কাছে? মানে তিনি ভুল করে বলেছেন- এমন কি হতে পারে? তিনি জানতেনই না যে, ১টারও বেশি প্রায় ২৯টা দল ইতোমধ্যে ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট চেয়েছে। এই ভুল তো তার হওয়ার কথা নয়। তিনি কোনো ব্যাখ্যা দেননি।’

নির্বাচনই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংস্কার
এদিকে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেছেন, ‘নির্বাচনই বাংলাদেশের বড় সংস্কার। নির্বাচন দিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না এবং সবকিছু শেষও হবে না। কিন্তু নির্বাচনই জনগণকে ক্ষমতায়িত করার একমাত্র পথ। নির্বাচনই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংস্কার। আর বাকি সব সংস্কার সময়ের ব্যাপার।’

নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে পার্থ বলেন, ‘ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা আমরা বলিনি, আপনি বলেছেন ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা। আমরা বলেছি, আপনার সেই ওয়াদা আপনি রাখেন। আমাদের মুখ থেকে ডিসেম্বরের কথা আসেনি।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ফারুক হাসানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, এলডিপির মহাসচিব রেদওয়ান আহমেদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফওজুল হাকিম, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান প্রমুখ।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:১৩ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:৫৯ পিএম
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি
ছবি: খবরের কাগজ

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই অন্তর্বর্তী সরকার দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে গতানুগতিক বাজেট প্রক্রিয়া সংস্কার করারও দাবি জানিয়েছে দলটি। 

বুধবার (৪ জুন) বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা জানান। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি। 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, 'দেশে এখন যেহেতু সংসদ বা গণতান্ত্রিক কোন সরকার নাই- আমরা আশা করে ছিলাম অন্তবর্তীকালীন সরকার ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে এবং সাধারণ মানুষের মতামত নিয়ে বাজেট ঘোষণা করবে। কিন্তু সরকার তা করেনি। বাজেট ঘোষণাটা পুরোপুরি গতানুগতিক।'

আমীর খসরু বলেন, 'শিক্ষাক্ষেত্রে কর আরোপের কোনো যুক্তি নেই। আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষার কর মওকুফ করা হবে।' 

তিনি বলেন, 'বাজেটে আমাদের আউট অফ বক্স চিন্তা করতে হবে। গতানুগতিক বাজেট থেকে বের হওয়ার সুযোগ ছিল।' 

বাজেট প্রক্রিয়া সংস্কার প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, 'বাজেট অনুমোদনের জন্য প্রচলিত সাংবিধানিক পদ্ধতি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। জবাবদিহিতা এবং বাংলাদেশে সংসদীয় তদারকি শক্তিশালী করার জন্য মৌলিক সাংবিধানিক ও পদ্ধতিগত সংস্কারও করা হবে। সংসদীয় কমিটিকে শক্তিশালী করা, বচ্ছতা এবং জনসাধারণের অংশগ্রহণ, নির্বাচনপূর্ব কেয়ারটেকার সরকারের জনা পরিষ্কার নির্দেশিকাসহ বিস্তৃত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।'

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'একদিকে মুলস্ফীতি অন্যদিকে জনগণের আয় কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্যাক্স বাড়িয়ে দিলে জনগণের ওপর প্রভাব পড়বে। তাই জনগণের জীবনযাত্রার মান বাজেটের প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত।  কিন্তু আমরা বৈষম্যের জন্য আন্দোলন করেছি। বাজেট উল্টো দিকে দেখছি।' 

আমীর খসরু বলেন, 'আমরা ক্ষমতায় আসলে আমাদের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করব। কোনো কিছু বাতিল প্রসঙ্গ আসবে না।' 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহবুব হোসেন শ্যামল, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ। 

শফিকুল/মেহেদী/

প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জিত হবে না, কমবে না মূল্যস্ফীতি

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:০৮ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:১০ পিএম
প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জিত হবে না, কমবে না মূল্যস্ফীতি
খবরের কাগজ ইনফো

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনায় ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। 

মঙ্গলবার (৩ মে) তাদের কেউ সংবাদ সম্মেলন করে, কেউ গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনা নিয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানান।

সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থ উপদেষ্টা।

তিনি বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ‘আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে এবং মধ্য মেয়াদে ৬ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আমরা আশা করছি।’

অন্যদিকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামার আশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এ প্রত্যাশার কথা বলেন।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘এই বাজেটের প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী। প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী হলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা সম্ভব হবে না, স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাহত হবে এবং কম রাজস্ব আদায় হবে। মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। এপ্রিল পর্যন্ত এই হার ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ পর্যন্ত আনা সম্ভব হয়েছে। সামনের দিকে মূল্যস্ফীতির হার কমবে এমন কোনো লক্ষণ আমরা দেখছি না।’

প্রবৃদ্ধির নিম্নগামী অবস্থানের কারণে কর্মসংস্থান ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মন্দাভাব দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করে তিনি বলেন, ‘প্রাক্কলিত মূল্যস্ফীতি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয়। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। ফলে সাধারণ মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর অবস্থায় পৌঁছাবে।’

বর্তমান বাজেট ‘বাস্তবায়নযোগ্য নয়’ উল্লেখ করে জি এম কাদের আরও বলেন, ‘রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে, তা অবাস্তব বা কাছাকাছি যাওয়াও সম্ভব নয় বর্তমান প্রেক্ষাপটে। যতদিন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না আসে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, ততদিন বিদেশি ঋণ বা সাহায্য পাওয়া নিয়েও সংশয় আছে। ফলে বাজেট ঘাটতির আকার অনেক বড় হবে।’ 

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বৈষম্য দূর করার কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না থাকায় দেশে বেকারত্ব ও দারিদ্র্য আরও বাড়বে।’ বাম জোট নেতারা বলেন, ‘এই বাজেটে বৈষম্যহীনতা ও টেকসই উন্নয়ন ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হলেও বাস্তবে মুক্তবাজারের পুরোনো ধারাবাহিকতার পুনরাবৃত্তি ঘটানো হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেট বৈষম্য, বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগসংকট কোনোটাই মোকাবিলা করতে পারবে না।’

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ ও মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রস্তাবিত ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি এবং ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার সুদ পরিশোধের বোঝা রয়েছে। স্পষ্টত এ বোঝা তথা করের চাপ পড়বে জনগণের ওপর।’
 
উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাস্তবতায় ব্যক্তি করদাতাদের করমুক্ত সীমা না বাড়ানো এবং ই-কমার্সসহ বিভিন্ন খাতে কর বৃদ্ধির প্রস্তাব সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলবে বলে মন্তব্য করেন খেলাফত মজলিসের নেতারা।

প্রয়োজনে ঢাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে শপথের আয়োজন করা হবে: ইশরাক

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১০:২৭ এএম
প্রয়োজনে ঢাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে শপথের আয়োজন করা হবে: ইশরাক
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে অবিলম্বে তার শপথ গ্রহণের আয়োজনের ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ঢাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়েই শপথের আয়োজন করা হবে।

মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরের পর ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগর ভবনে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

এ সময় তিনি আরও বলেন, মেয়রের চেয়ারে কে বসবেন তা নির্ধারণ করবেন ঢাকা দক্ষিণের বাসিন্দারা। নগর ভবনে বহিরাগতদের কোনো ঠাঁই হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। একই সঙ্গে ঈদ সামনে রেখে আজ থেকে আন্দোলন স্থগিতের কথাও জানান ইশরাক হোসেন। বলেন, দাবি আদায় না হলে এই ছুটির পর আবারও আন্দোলন করা হবে। সেই আন্দোলন হবে আরও কঠোর।

ইশরাক বলেন, এই নগর ভবনে কোনো বহিরাগত প্রশাসক ও কোনো উপদেষ্টা প্রবেশ করতে পারবেন না। ঈদে নগরবাসীর সেবা নিশ্চিত করা ও জনগণের ভোগান্তি বিবেচনায় নিয়ে আপাতত কর্মসূচি শিথিল করা হয়েছে। সরকার এর মধ্যে শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিলে জনগণই তাদের মেয়রকে শপথ পড়িয়ে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন।

অবিভক্ত ঢাকা সিটির মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক মাস দু-এক আগে আদালতের রায়ে মেয়র হওয়ার সুযোগ পান। এরপর নির্বাচন কমিশন তাকে মেয়র ঘোষণা করলেও আইনি জটিলতার কথা বলে তার শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ নিয়ে তার সমর্থকরা প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে নগর ভবনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সর্বশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস। এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেননি ইশরাক। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।

এর আগে গতকাল সকাল থেকেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ঢাকা মহানগরের বাসিন্দারা।

‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে নগর ভবন প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি শুরু হয়। করপোরেশনের কর্মচারীরাও এতে অংশ নেন। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিক্ষোভকারীরা বলেন, আদালতের রায়ের পরও ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোর কারণে পরিষ্কার হলো যে অন্তর্বর্তী সরকার আসলে নিরপেক্ষ নয়। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে নগর ভবনের মূল ফটকে ১৫ মে থেকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এতে কার্যত বন্ধ হয়ে আছে সিটি করপোরেশনের সব ধরনের দৈনন্দিন সেবা কার্যক্রম। বন্ধ হয়ে আছে হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স, জন্মনিবন্ধনসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা।