ঢাকা ৩ আশ্বিন ১৪৩১, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিক্ষার্থীদের একদফা-অসহযোগ আন্দোলনে বিএনপির সমর্থন

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৪, ০২:০৩ পিএম
আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০২৪, ০৪:১৯ পিএম
শিক্ষার্থীদের একদফা-অসহযোগ আন্দোলনে বিএনপির সমর্থন
ছবি: খবরের কাগজ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঘোষিত সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি ও চলমান অসহযোগ আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি।
 
রবিবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ কথা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
 
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগ দাবিসংবলিত ছাত্র-জনতার এক দফা ঘোষণাপত্রের সঙ্গে বিএনপি সম্পূর্ণ একাত্মতা ঘোষণা করছে। বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল আগে থেকেই গণতন্ত্র হত্যাকারী, ভোটাধিকারসহ জনগণের মৌলিক অধিকার হরণকারী ও লুটেরা দুর্নীতিবাজ আওয়ামী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। সেই আন্দোলনও দমন করতে সরকার হত্যা, গুম, দমন, নিপীড়নের স্টিমরোলার চালিয়ে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন কায়েম করেছে।’

তিনি বলেন, ‘জাতির এই চরম ক্রান্তিলগ্নে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে দেশবাসী ও দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক এবং শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি রাজপথে নেমে এসে ছাত্র-জনতার সঙ্গে একাত্ম হয়ে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে অসহযোগ আন্দোলন সফল করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শত শত শহিদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। ছাত্র-জনতার বিজয় অবশ্যম্ভাবী। ছাত্র-জনতার ঐক্যের চূড়ান্ত আন্দোলন সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে, তাকে স্তব্ধ করার ক্ষমতা কারও নেই। এই ভয়াবহ দানবীয় খুনি শাসকগোষ্ঠীর পতনের লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি, পেশাজীবী, শ্রমিক, কৃষকসহ আপামর জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগের নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা ইতিহাসে বিরল

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার যে নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতার আশ্রয় নিয়েছে তা উপমহাদেশের ইতিহাসে বিরল ঘটনা। ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা নির্বিচারে গুলি করে লাশের স্তূপ সৃষ্টি করেছে, ব্যাপক রক্তপাত ঘটিয়েছে, হাজার হাজার মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন। সরকার তাদের এই বর্বরতা আড়াল করতে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে কিছু স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে এর দায় বিরোধী দলের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করছে।’

তিনি বলেন, ‘মিথ্যা অভিযোগে নিরীহ ছাত্র-জনতার সঙ্গে দেশব্যাপী বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের আটক করা হয়। যা এখনো চলছে। আন্দোলন দমাতে সান্ধ্য আইন দিয়ে, সেনাবাহিনী নামিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে রাতে বিভিন্ন এলাকায় ‘ব্লক রেইড’ দিয়ে নিরীহ ছাত্রসহ বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। আটক করতে গিয়ে বাসাবাড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা পরিবার-পরিজনের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছে, আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে না পেয়ে তাদের বাবা, ভাই ও অন্যদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছে।’ 

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘মূলত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সরকারের হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসযজ্ঞ আড়াল করতেই তৃতীয় পক্ষ আবিষ্কারের জন্য সরকারের বিরামহীন এই প্রচেষ্টা চলছে, যা জনসাধারণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশে আজ অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জনগণের ওপর যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। চারদিকে শুধু অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা। এর সম্পূর্ণ দায় রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ আওয়ামী লীগ সরকারের।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনে হত্যা, নৈরাজ্য, ধ্বংস, দমন, নিপীড়ন দেখে সারা বিশ্ব স্তম্ভিত। সরকারের মানবতাবিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিশ্ববিবেক জাগ্রত হয়েছে। দেশ-বিদেশে সরকার ধিক্কৃত ও ঘৃণিত। দেশের সব মানুষ এবং গণতন্ত্রকামী বিশ্ব হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং আটক নেতা-কর্মীসহ নিরীহ ছাত্র-জনতাকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানালেও সরকার কূটকৌশল করে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।’

গড়ে উঠেছে জনগণের ঐক্য 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সমগ্র দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ, সুশীল সমাজ, শিক্ষক, অভিভাবক, সাংবাদিক, আইনজীবী, লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, শ্রমজীবী মানুষসহ ধর্ম-বর্ণ, দল-মত নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে শামিল হয়ে গণজাগরণের সৃষ্টি করেছে। গড়ে উঠেছে অভাবনীয় জাতীয় ঐক্য, জনগণের ঐক্য। সমগ্র দেশ আজ হত্যাকারী সরকারের বিরুদ্ধে একাট্টা। গ্রাম ও শহরের ঘরে ঘরে আর্তনাদের সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে খুনি সরকারের পদত্যাগের দাবি।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার কর্মসূচি বানচাল করতে সরকার আবারও নিরাপত্তা বাহিনীসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদেরকে ছাত্র জনতার ওপর লেলিয়ে দিয়ে আরও হত্যা ও দমন-নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে। যার ফলশ্রুতিতে দেশ আজ অগ্নিগর্ভ। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সব জনপদ ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ বিদ্রোহে মুখরিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে আজ এক অভ্যুত্থানের সূচনা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সাঈদ, মুগ্ধসহ শত নিরীহ ছাত্র, শিশু ও জনতার হত্যার প্রতিবাদে দল মত নির্বিশেষে জনগণ রাস্তায় বেরিয়ে আসছে। দ্রোহের মিছিলে শরিক হচ্ছে সব শ্রেণির সব বয়সের মানুষ। সবার দাবি একটাই, খুনি সরকারের পদত্যাগ এবং অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর।’

শনিবার দিনভর ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়ি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের হামলার চিত্র তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। 

এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তীব্র গণআন্দোলনে পতন অবশ্যম্ভাবী জেনে আওয়ামী লীগ আবার সংঘাত, সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে হামলা চালালেও তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।’ 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও বেগম সেলিনা রহমান। 

শফিকুল/পপি/অমিয়/

সাবেক এমপি বাদলের কবর ভাঙচুরের ঘটনায় বাংলাদেশ জাসদের নিন্দা

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২২ এএম
আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২২ এএম
সাবেক এমপি বাদলের কবর ভাঙচুরের ঘটনায় বাংলাদেশ জাসদের নিন্দা
বাংলাদেশ জাসদ

দলের সাবেক কার্যকরী সভাপতি, প্রয়াত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মঈন উদ্দিন খান বাদলের কবর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ জাসদ। 

মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ‘মঈন উদ্দিন খান বাদল একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি একজন প্রখ্যাত সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি আমৃত্যু দেশের নির্যাতিত-নিপীড়িত মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে লড়াই করে গেছেন।’

নেতারা বলেন, ‘যারা মরহুম বাদলের কবরস্থান ভাঙচুর করেছেন তারা শুধু বিকৃত মানসিকতারই পরিচয় দেননি; ধর্মীয় ও লৌকিক শিষ্টাচারেরও গুরুতর লঙ্ঘন করেছেন।’ 

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাসদ। 

জয়ন্ত সাহা/সালমান/

মামলা প্রত্যাহারে অন্তর্বর্তী সরকারকে চিঠি দেবে বিএনপি

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৫০ পিএম
মামলা প্রত্যাহারে অন্তর্বর্তী সরকারকে চিঠি দেবে বিএনপি
বিএনপি (লোগো)

২০০৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিএনপি ও বিরোধী দলীয় সব নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা, গায়েবি ও বানোয়াট মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দেবে বিএনপি। 

আগামী সপ্তাহে সরকারপ্রধান ও তার উপদেষ্টাদের এই চিঠি দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। 

দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, জাতীয়বাদী আইনজীবী ফোরামের সব জেলার কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহ করে তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

বিএনপির দেওয়া তথ্যমতে, গতকাল সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আরও বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। বাণিজ্যিক সংস্থার প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও মনিটরিং করার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও আব্দুল আউয়াল মিন্টুকে সদস্যসচিব করে এই কমিটি গঠন করা হয়। তারা শিল্পে বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করবেন। দেশে ব্যবসায়ী পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতেও তদরকি করবেন তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, জনপ্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশন পুনর্গঠনে অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। এ ছাড়া রাষ্ট্র মেরামতে বিএনপিঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখায় অধিকতর ও সম্প্রচারের জন্য উদ্যোগ নিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বিশেষ নির্দেশনা দেন।

সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাত ৮টায় ৩৫ মিনিটে এ বৈঠক শুরু হয়। আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক শেষ হয় রাত ১১টার দিকে। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (ভার্চুয়ালি), সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান (ভার্চুয়ালি), ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (ভার্চুয়ালি) মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম) এবং ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

ইসির নিবন্ধন পেল গণসংহতি আন্দোলন

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬ পিএম
ইসির নিবন্ধন পেল গণসংহতি আন্দোলন
নিবন্ধন সনদ গণসংহতি আন্দোলনের নেতাদের হাতে তুলে দেন নির্বাচন কমিশনের সচিব শফিউল আজিম। ছবি : সংগৃহীত

আইনি লড়াই শেষে আদালতের নির্দেশে দেশের ৪৮তম রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধন পেয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। দলটির জন্য নির্ধারিত প্রতীক ‘মাথাল’ ও নিবন্ধন নম্বর ৫৩। 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নিবন্ধন সনদ দলটির নেতাদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেন নির্বাচন কমিশনের সচিব শফিউল আজিম। এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেলসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

নিবন্ধনসংক্রান্ত ইসির ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নং ১৩৮০৫/২০১৮-এর বিগত ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশনে দেওয়া রায় ও আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ‘দ্য রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার, ১৯৭২ চ্যাপ্টার ৬(এ)-এর বিধান অনুযায়ী গণসংহতি আন্দোলনকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করেছে। দলটির প্রধান কার্যালয় ৩০৬-৩০৭ রোজ ভিউ প্লাজা, ১৮৫ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, হাতিরপুল, ঢাকা ১২০৫। 

গত ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগের আগে বিদায়ী হাবিবুল আওয়াল কমিশন আপিল না চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে নির্বাচন কমিশনের করা আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। একই দিনে দলটির বিষয়ে কারও কোনো দাবি আপত্তি রয়েছে কি না, সে জন্য ছয় দিনের সময় দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন। গত রবিবার ছিল তার শেষ সময়। ওই সময় দলটির বিরুদ্ধে কোনো আপত্তি উত্থাপিত না হওয়ায় মঙ্গলবার নিবন্ধনের প্রজ্ঞাপন করে নির্বাচন কমিশন। 

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন চেয়ে ইসিতে আবেদন করে গণসংহতি আন্দোলন। গণ অধিকার পরিষদের নিবন্ধন নম্বর ৫১ হলেও এর আগে শর্ত পূরণে ব্যর্থ এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের (জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা) নিবন্ধন বাতিল করে। এরপর দলটির পক্ষে প্রধান সমন্বয়ক মো. জোনায়েদ সাকি হাইকোর্টে রিট করেন। ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল ৩০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আপিল আবেদন করে। তবে ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর কমিশন তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলে দলটি ইসির নিবন্ধন পায়।

ইসির নিবন্ধন ছাড়া কোনো দল নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। গণসংহতি আন্দোলন নিয়ে বর্তমানে সংস্থাটির নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৮। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদের আগে প্রথম নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। সে সময় ১২৬টি দল আবেদন করলেও শর্ত পূরণ করে ৩৯টি দল নিবন্ধন পায়। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ৪৩টি দল আবেদন করে। আরও তিনটি দল ২০১৩ সালে নিবন্ধন পায়। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ৭৬টি দল আবেদন করলেও একটি দলও নিবন্ধনের যোগ্য বিবেচিত হয়নি। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ইসির নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ছিল ৪৪টি।

রাসুলের আদর্শ ছাড়া বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয়: চরমোনাই পীর

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭ পিএম
রাসুলের আদর্শ ছাড়া বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয়: চরমোনাই পীর
ছবি: সংগৃহীত

চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য দেশের নাগরিকদের ব্যক্তি সংস্কার প্রয়োজন। আর রাসুল (সা.)-এর সিরাত ও ইসলামের সুমহান আদর্শ ছাড়া ব্যক্তি সংস্কার ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয়। দেশের মানুষ কোরআনের পথে ফিরে এলে বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন ও বসবাসযোগ্য নিরাপদ রাষ্ট্র।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত ‘মদিনা সনদ ও মক্কা বিজয়ের চেতনা হোক বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথনির্দেশ’ শীর্ষক সিরাত সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেজাউল করীম বলেন, সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য নীতি ও আদর্শবান মানুষ তৈরির বিকল্প নেই। আর এমন নীতি ও আদর্শবান মানুষ তৈরির লক্ষ্যেই ইসলামী আন্দোলন ও এর সব সহযোগী সংগঠন নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নৈতিকতাসম্পন্ন উত্তম চরিত্রবান ও দেশপ্রেমিক যুবসমাজ গড়তে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে ইসলামী যুব আন্দোলন। 

রেজাউল করীম বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন কখনো নিছক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের জন্য আন্দোলন করে না, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকে ইসলামের সুমহান আদর্শের ভিত্তিতে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। ইসলাম ক্ষমতায় গেলে জঙ্গিবাদে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে- যারা এমন অপপ্রচার করে বেড়ায় তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলতে পারি, ইসলাম ক্ষমতায় গেলে দেশ সন্ত্রাসবাদ ও তথাকথিত জঙ্গিবাদমুক্ত হবে। মানুষ জানমালের নিরাপত্তাসহকারে নির্বিঘ্নে জীবন যাপন করতে পারবে।’

আয়োজক দলের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ আল-আমিন সোহাগের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ ওয়ালিউল্লাহ্ তালুকদারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের কৃষি ও শ্রমবিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহমান, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি মানসুর আহমাদ সাকী, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল করীম আবরার, আইএফএ কনসালট্যান্সিলের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম প্রমুখ।

শফিক/এমএ/

অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না: তারেক রহমান

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম
আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৪ পিএম
অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না: তারেক রহমান
ছবি: মাসুদ মিলন

অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ার‌ম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, এ সরকারের ব্যর্থতা হবে আমাদের সবার ব্যর্থতা, গণতন্ত্রকামী জনগণের ব্যর্থতা। অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশ-বিদেশ থেকে নানা রকমের উস্কানিতেও জনগণ ব্যর্থ হতে দেবে না। তবে অন্তর্বর্তী সরকার যাতে নিজেরাই নিজেদের ব্যর্থতার কারণ না হয়ে দাঁড়ায় সে ব্যপারে তাদেরকেও সতর্ক থাকতে হবে।   

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার হাজারো শহিদের রক্তের বিনিময়ে লাখো কোটি জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফসল। এ সরকারের কোনো কোনো কার্যক্রম সকলের কাছে হয়তো সাফল্য হিসেবে বিবেচিত নাও হতে পারে কিন্ত ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে এবং রাখবে। 

তিনি বলেন, কিন্তু কোনো এক পর্যায়ে অন্তর্বর্তী সরকারের জবাবদিহিতাও কিন্তু নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমেই নিশ্চিত করা হয়। সুতরাং জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সংসদ এবং সরকার প্রতিষ্ঠাই তাদের সব সংস্কার কার্যক্রমের প্রথম এবং প্রধান টার্গেট হওয়া জরুরি।

বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, এ জন্যই অগ্রাধিকারভিত্তিতে জনগণের ভোটে নির্বাচিত জবাবদিহিমূলক সরকার এবং সংসদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে সামনে রেখেই সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া দরকার। কারণ জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ছাড়া সংস্কার কার্যক্রমের প্রক্রিয়া ছাড়া উন্নয়ন-গণতন্ত্র কিংবা সংস্কার কোনোটিই টেকসই এবং কার্যকর হয় না। সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোট প্রদানের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। 

তারেক রহমান বলেন, বিশেষ করে নির্বাচন কমিশন জনপ্রশাসনের সংস্কার এবং আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে 'সক্ষম এবং উপযুক্ত' গড়ে তুলতে অগ্রাধিকারভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। বিএনপি মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এজেন্ডা সেটিংয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে না পারলে গণ অভুত্থানের সাফল্য ব্যাহত করতে ষড়যন্ত্রকারী চক্র নানা সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। এর কিছু আলামত ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

বন্দুকের সামনে জনগণ বুক পাততে রাজি তবুও স্বৈরাশাসন মানবে না

গণতন্ত্রকামী বীর জনগণকে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ছাত্র-জনতা নারী শিশু কৃষক শ্রমিক সব শ্রেণি-পেশার মানুষ বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের জনগণ বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিতে রাজি তবুও স্বৈরশাসন মেনে নিতে রাজি নয়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যারা শহিদ এবং আহত হয়েছেন, হাত পা চোখ হারিয়েছেন কিংবা চিরতরে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ আজীবন তাদের এই আত্মত্যাগ এবং অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। হতাহতদের প্রতিটি পরিবারের প্রতি অবশ্যই রাষ্ট্র যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে।

তিনি বলেন, স্বাধীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্র-রাজনীতি শাসন প্রশাসন হওয়ার কথা ছিল গভর্নমেন্ট অফ দ্যা পিপল বাই দ্যা পিপল ফর দ্যা পিপল। অথচ গত ১৫ বছর বাংলাদেশে মাফিয়া শাসন চালু করা হয়েছিল। পলাতক স্বৈরাচার বিনাভোটের সরকারের পরিচয় হয়ে উঠেছিল গভর্নমেন্ট অফ দ্যা মাফিয়া বাই দ্যা মাফিয়া ফর দ্যা মাফিয়া।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এ মাফিয়া চক্র দেশকে সর্বক্ষেত্রে ভঙ্গুর করে সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর, ঋণ নির্ভর এবং পরনির্ভরশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। ব্যাংকগুলো দেউলিয়া করে দিয়েছে। আর্থ-সামাজিক সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক রীতিনীতি এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। বিচার বিভাগের সূতিকাগারে পরিণত করেছিল। দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। গত দেড় দশকে ১৭ লক্ষ কোটি টাকার বেশি বিদেশে পাচার করেছে। বৈদেশিক ঋণ বর্তমানে ১০০ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশে প্রতিটি শিশু জন্ম থেকেই মাথা পিছু ঋণ কমপক্ষে দেড় লক্ষ টাকা।

মাফিয়া সরকারের জঞ্জাল এখনো দূর হয়নি

তারেক রহমান বলেন, গণ বিস্ফোরণে মাফিয়া চক্রের প্রধান দেশ ছেড়ে পালানোর মধ্য দিয়ে একটি-গণতান্ত্রিক-মানবিক বাংলাদেশ গড়ার পথে প্রধান বাধা দূর হয়েছে। তবে বাধা দূর হলেও মাফিয়া চক্রের রেখে যাওয়া ১৫ বছরের জঞ্জাল দূর হয়নি। এ জঞ্জাল দূর করে জনগণের ভোটে জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। 

তিনি বলেন, স্বৈরাচারের বেনিফিশিয়ারি অপশক্তি প্রশাসনের অভ্যন্তরে থেকে কিংবা রাজনীতির ছদ্মাবরণে অন্তর্বর্তী সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।  

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এবারের গণঅভ্যুথানের মধ্য দিয়ে জনগণ ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা পেয়েছে। জনগণ গুম-খুন-অপহরণ আর বিভীষিকাময় ‘আয়নাঘরে’র আতঙ্কমুক্ত স্বাধীন। এবার দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা সুরক্ষায় প্রথম কাজ হতে হবে রাষ্ট্র এবং জগণের গণতান্ত্রিক ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। কারণ প্রায় আড়াই কোটি নতুন ভোটার একটি জাতীয় নির্বাচনেও ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি। 

সংষ্কার কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করুন

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি মনে করে দেশের জনশক্তির অর্ধেক নারী এবং তারুণ্যের এ বৃহৎ অংশকে রাজনৈতিক অংশীদারিত্বের বাইরে রেখে একটি বৈষম্যহীন মানবিক রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয়। সংবিধান কিংবা প্রবিধানে যাই থাকুক জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা না গেলে, সংস্কার প্রক্রিয়ায় জনগণকে সম্পৃক্ত করা না গেলে শেষ পর্যন্ত কোনো সংস্কার কার্যক্রমেরই কার্যকর ফল পাওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র কিংবা রাজনীতি, সকল ক্ষেত্রেই সংস্কার কার্যক্রম একটি ধারাবাহিক এবং চলমান প্রক্রিয়া। সুতরাং, রাষ্ট্র এবং রাজনীতি সংস্কারে বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচির আরও প্রয়োজনীয় পরিবর্তন পরিমার্জনকেও বিএনপি স্বাগত জানায়।  

কেউ যদি মনে করেন, উন্নত এবং নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য নতুন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন রয়েছে, তাতেও দোষের কিছু নেই বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, জনগণই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তারা কাকে সমর্থন জানাবে। গণঅভ্যুত্থান কিংবা সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে রাজনীতির মাঠে নানারকম কথা হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, ফৌজদারি অপরাধের বিচার যেমন বিচারিক আদালতে হয় ঠিক তেমনি  রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড কিংবা রাজনৈতিক আচরণের বিচার হয় জনগণের আদালতে। 

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কোনো প্রলোভন কিংবা উস্কানিতে বিভ্রান্ত না হয়ে জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র এবং সমাজের নেতৃত্ব দানের জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত রাখুন। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াতে হয়তো আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। তবে সে পথ সন্ত্রাস-সংঘর্ষ-প্রতিশোধ নয়। সে পথ হবে ধৈর্য-সহনশীলতা ও সমঝোতার। সংস্কার কার্যক্রমের পথ ধরে নির্বাচনী রোডম্যাপে উঠবে দেশ। আসুন আমরা সবাই কাজের মাধ্যমে জনগণের বিশ্বাস ও ভালোবাসা অর্জন করি। 

বিএনপি প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা) সাইদুল ইসলাম বাবুল, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জারিফ তুহিন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক হোসেন খান, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির প্রমুখ।

শফিক/এমএ/