ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশে মানুষের মাঝে অস্থিরতা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে মনে করছে বিএনপি। ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাসাবাড়ি ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। এমন পরিস্থিতি উত্তরণে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় জনমনে স্বস্তি ফেরানোর লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি।
এরই অংশ হিসেবে শনিবার (১০ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু সকালে বাংলামোটর ও বিকেলে যাত্রাবাড়ী, বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল, সকালে মহাখালী টিভি গেট মন্দির ও বিকেলে তেজগাঁও গির্জা, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বেলা ৩টায় রামকৃষ্ণ মন্দির পরিদর্শন করেন। এ সময় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের খোঁজ-খবর নেন এবং যেকোনো বিপদে তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
বাংলামোটর ও হাতিরপুল এলাকায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু বলেন, ‘লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতন ঘটেছে। শহিদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা যাবে না। যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হয়েছে, তাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে।’
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সুযোগ-সন্ধানীরা অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাচ্ছে। আপনারা অতীতে যেভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেছেন, এখনো সেভাবে পরিচালনা করুন। যদি বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী হামলা-চাঁদাবাজি করতে আসে তাদের প্রতিহত করুন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিন। তারেক রহমানের নির্দেশ পুরো দেশকে দখলমুক্ত করতে হবে, প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন, সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।’
বিএনপিতে কোনো দুষ্কৃতকারী এবং লুটেরার স্থান নেই বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সমন্বয়ক শেখ রবিউল আলম রবি বলেন, ‘সরকার পতনের পর থেকেই বিএনপি জাতীয় সম্পদ ও জনগণের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যদি বিএনপির নাম ব্যবহার করে লুটপাট চালানো হয়, অরাজকতা চলে, তাহলে তাদের আটক করে বিএনপি এবং এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাদের খবর দেবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন।’
রামকৃষ্ণ মন্দির পরিদর্শনের সময় বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেন, ‘এই দেশ আপনার-আমার সবার, কেউ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন না। এখানে আমাদের নেতা-কর্মীরা দিনরাত পাহারা দেবে। আপনাদের ঘরবাড়ি ও মন্দির পাহারা দেওয়ার জন্য সবখানে বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত আছেন, এবং থাকবেন। কোনো সমস্যা হলে তাদেরকে জানাবেন।’
এ ছাড়াও খুলনা, যশোর, বাগেরহাট, মেহেরপুর, সিলেট, বগুড়া, জামালপুরসহ সারা দেশে সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধ ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গণসংযোগ চালিয়েছেন বিএনপির দায়িত্বশীল নেতা ও কর্মীরা। পাশাপাশি দিনরাত পর্যায়ক্রমে মন্দির পাহারা দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা।